বাংলায় যাত্রাপালা

in hive-129948 •  12 hours ago 

নমস্কার বন্ধুরা,


আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকে আমি কিছু লিখতে চলেছি।আশা করি ভালো লাগবে।

17348171958688842907659454450872.jpg

Image created by AI


যাত্রাপালা, বাংলার ঐতিহ্যবাহী নাট্যধারা, একসময় গ্রামবাংলার সংস্কৃতির অঙ্গ ছিল।এটি কাহিনী, গান, নৃত্য এবং সংলাপের এক অপূর্ব মিশ্রণ যা গ্রামের মানুষের কাছে বিনোদনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয় ছিল।তবে সময়ের সাথে সাথে যাত্রাপালা হারিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান যুগে টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট এবং OTT প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয়তা গ্রামীণ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে।এই আধুনিক প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ার কারণে মানুষ সহজে বিনোদনের বিভিন্ন বিকল্প পাচ্ছে। যাত্রাপালার ধীর গতির গল্প এবং দীর্ঘস্থায়ী পরিবেশনা আজকের দ্রুতগতির জীবনের সঙ্গে মানানসই নয়।

যাত্রাপালার আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে।যাত্রাদলের সদস্যরা উপযুক্ত পারিশ্রমিক পান না,ফলে অনেক শিল্পী এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।এছাড়া স্থানীয় পৃষ্ঠপোষকদের আগ্রহও কমে গেছে।গ্রামীণ জনজীবনে পরিবর্তন এবং শহুরে সংস্কৃতির প্রভাব যাত্রাপালার জনপ্রিয়তাকে হ্রাস করেছে।গ্রামাঞ্চলে সন্ধ্যার সময় যেখানে আগে যাত্রা দেখার জন্য মানুষ ভিড় জমাত এখন সেই সময়টায় টিভি বা অন্যান্য বিনোদন মাধ্যম মানুষকে আকর্ষণ করছে।

যাত্রাপালার অনেক দল গুণগত মান বজায় রাখতে পারছে না।সঠিক প্রশিক্ষণের অভাব, নিম্নমানের কাহিনী এবং সৃজনশীলতার ঘাটতি দর্শকদের আগ্রহ হারাতে বাধ্য করছে।অনেক জায়গায় যাত্রাপালা নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক বাধা সৃষ্টি হয়েছে।এর কিছু কাহিনীকে অশ্লীল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে যা এর জনপ্রিয়তাকে ব্যাহত করেছে।এছাড়া, প্রশাসনিক অনুমতি পেতে এবং অনুষ্ঠান আয়োজন করতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

বর্তমান প্রজন্ম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি এবং শিল্পের প্রতি উদাসীন।তারা পাশ্চাত্য সংস্কৃতি বা আধুনিক ধারার প্রতি বেশি আকৃষ্ট।ফলে যাত্রাপালা তাদের কাছে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।

বর্তমান মঞ্চ নাটক এবং থিয়েটারের উন্নত উপস্থাপনা ও কাহিনী যাত্রাপালার চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। তাই দর্শকরা সেসবের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

যাত্রাপালাকে পুনরুজ্জীবিত করতে কিছু উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।প্রশিক্ষণ এবং আর্থিক সহায়তা দিয়ে শিল্পীদের মান উন্নত করা। যাত্রাপালাকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে উপস্থাপন করা।সরকার থেকে ভর্তুকি এবং প্রণোদনা প্রদান।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাত্রাপালার পরিবেশনা এবং কর্মশালা আয়োজন।পুরনো গল্পের পাশাপাশি আধুনিক প্রেক্ষাপটে নতুন গল্প সৃষ্টি করা।

যাত্রাপালা বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।এটি হারিয়ে গেলে আমরা আমাদের এক অনন্য ঐতিহ্য হারাব।তাই এই ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ এবং পুনরুজ্জীবিত করা জরুরি।



VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 4.821081545755147 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.

আসলেই দিদিভাই, ভীষণ বাস্তবতা তুলে ধরেছেন আপনার লেখায়। যাত্রাপালা এখম তো দেখাই যায় না কোত্থাও! আমার মনে পড়ে যে খুব ছোট বেলায় দশমী পূজোর রাতে আমাদের বাড়িতে যাত্রাপালার আয়োজন হতো! সে অনেক বছর আগের কাহিনী। এছাড়া আর কোথাও যাত্রাপালা দেখার সুযোগ হয় নি। তবে বর্তমানে মঞ্চনাটক গুলোও কিছুটা আকর্ষণ তৈরি করেছে বটে, সেটাও মনে হয় হারিয়ে যাবে পৃষ্ঠপোষকতা এবং আগ্রহের অভাবে। আমরা তো সেই পশ্চিমাতেই আগ্রহী বেশি কি না! নিজেদের এসব ঐতিহ্য নিয়ে কয়জন আর মাথা ঘামাই আমরা.. 😔

যাত্রাপালা শিল্পটা প্রায় গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে গেল। আমার মনে আছে ছেলেবেলায় দু-একটা যাত্রাপালা দেখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে শহরাঞ্চলে তো শোনাই যায় না, এমনকি গ্রামের দিকেও কটা হয় খুব সন্দেহ আছে। ডিজিটাল জীবনে চলতে চলতে কোথাও আমরা গ্রাম বাংলার এইসব নিজস্বতাকে পিছনে ফেলে চলে এসেছি। যাত্রাশিল্প এখন ধুঁকছে। সেদিক থেকে আপনার এই পোষ্ট ভীষণ প্রাসঙ্গিক মনে হলো।