জি,পি (জেনারেল প্র্যাকটিশনার) সম্পর্কে সাধারণ ধারনা, পর্বঃ ১

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামুআলাইকুম,

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। হয়তো আপনারা কেউ কেউ এই বিষয়টি জেনে থাকবেন। যারা জানেন না তাদের জন্য এই আয়োজনটি।বিষয়টি হচ্ছে ইংল্যান্ডে জি,পি সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা ।যারা রোগীদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন, মূলত তাদেরকে জি পি বলা হয়। তবে সরকারি বা বেসরকারি হসপিটালের ডাক্তার কে জি পি বলা যায় না।এ বিষয়টি নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে যাচ্ছি, আশা করি আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন। চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূলপর্বে।

B4E70304-3687-46C4-9441-2D3EB0775F61.jpeg

আমাদের স্থানীয় মেডিকেল সেন্টার।

ইংল্যান্ডের প্রতিটি এলাকায় একটি মেডিকেল প্রাক্টিস সেন্টার থাকে যেখানে জি,পি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।এক্ষেত্রে আপনি শুধু আপনার নিজের এলাকার জি পির সাথে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট করতে পারবেন। অন্য এলাকার জি পির সাথে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট করতে পারবেন না কোন প্রবলেম হলেও।এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার নাম রেজিস্টার থাকতে হবে জি পি এর খাতায়। বাংলাদেশে যখন আমাদের কোন সমস্যা হয় তখন আমরা যে কোন ডক্টরের কাছে যাই প্রাইভেটলি অথবা সরকারি হাসপাতালে। কিন্তু এখানে আপনাকে অবশ্যই আগে জি,পি এর কাছে যেতে হবে, অবশ্য সিরিয়াস কোন মেটার হলে তো সাথে সাথেই হসপিটালে যেতে হবে।এটি ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এর অন্তর্ভুক্ত যা সরকারের আন্ডারে।জি পি এর কাছে যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে টেলিফোন অ্যাপোয়েন্টমেন্ট অথবা গিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করতে হবে যেভাবে বাংলাদেশেও হয়ে থাকে। অ্যাপোয়েন্টমেন্ট এর সময় আপনারা আপনাদের পছন্দের ডক্টরকে চয়েজ করতে পারবেন, এছাড়া মেল অথবা ফিমেল ডক্টরকে পছন্দ করতে পারবেন। আর যদি কোনো পছন্দ না থাকে তাহলে তারাই ঠিক করে দেন ওই বিষয়ের উপর পারদর্শী কোন ডক্টরকে দিয়ে। এপয়েন্টমেন্ট করার সময় রোগের ধরন অনুযায়ী তারা সরাসরি রোগী দেখে থাকেন অথবা টেলিফোন এপয়েন্টমেন্ট দিয়ে থাকেন।

0474FC20-FF19-492F-831B-62FCBDD58426.jpeg

স্থানীয় মেডিকেল সেন্টার।

আরেকটি ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে এখানে কিন্তু ডক্টরের চার্জ ফ্রি, এমনকি হসপিটালেও কোন চার্জ নেই। কিন্তু দাঁত ও চোখের ডাক্তার ফ্রি নয়। অবশ্য স্যালারি ডিপেন্ড করে, এখানে স্যালারি কম হলে চোখের ডাক্তার ফ্রী কিন্তু দাঁতের জন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে পে করতে হবে।আপনি যদি বেসরকারি কোন হসপিটালে যান তখন আপনাকে পে করতে হবে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সুজোগ সুবিধা সরকারি হসপিটাল থেকে অনেক কম। তাই এখানে সকলেই সরকারি হসপিটালকেই আগে পছন্দ করেন, বাংলাদেশের ঠিক উল্টো। সরকারি হসপিটাল গুলোতে আপনি যতদিন থাকুন না কেন? অথবা যত উন্নত মানের চিকিৎসা নেন না কেন আপনাকে কোন ফি দিতে হবে না। অবশ্য বাংলাদেশের সরকারি হসপিটালগুলোতেও ভর্তি হলে কোন ফি দিতে হয় না, কিন্তু সেখানকার চিকিৎসার মান খুবই নিম্নমানের। এ দেশের অর্ধেকের বেশি জনগণ ফ্রি ঔষুধ ও পেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে তাদের স্যালারি ডিপেন্ড করে, একটি নির্দিষ্ট পরিমান নির্ধারণ থাকে , ওই নির্দিষ্ট পরিমানের কম হলে কাউকে কোন ফি দিতে হয় না। অবশ্য এক্ষেত্রে বাচ্চাদের কথা ভিন্ন, বাচ্চারা জন্ম থেকেই 16 বছর পর্যন্ত ফ্রি ওষুধ পেয়ে থাকে, এমনকি গর্ভবতী মা গর্ভধারণ থেকে বাচ্চার বয়স দুই বছর পর্যন্ত ফ্রি ওষুধ পেয়ে থাকেন।অনেক সুজোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন এদেশের নাগরিকগন।এছাড়া নানা ধরনের বেনিফিট ও পেয়ে থাকেন সরকার থেকে।অন্য একদিন এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আজকে তাহলে এটুকুই আগামী পর্বে জিপিতে রেজিস্টার সহ তাদের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

Photographer@tangera
DeviceI phone 13 Pro Max

বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে।

পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

ধন্যবাদ,

@tangera

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার পোস্ট করে খুবই ভালো লাগলো। আমি একটা মেডিকেল পেশায় নিজেকে জড়িয়েছি যার কারণে এই পোস্ট ভালোভাবে পড়লাম। আসলে বিদেশিরা অনেক সুবিধা দিয়ে থাকে কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি হসপিটাল গুলোতে ওরকম সুবিধা দেয় না। যার কারণে যাদের একটু টাকা-পয়সা আছে তারা সরকারি হসপিটালের চিকিৎসা নিতে চায়না। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার নামে শুধু রুগীদের প্রতি অবহেলা করা হয়।

শুধু তাই নয় ভাইয়া সরকারি হাসপাতালে গুলোর পরিবেশও খুবই খারাপ। একেবারে নোংরা করে রাখে। এক্ষেত্রে ভালো মানুষ গেলেও রোগী হয়ে ফিরে আসবে।

যেহেতু নিজে মেডিকেল প্রফেশনের সঙ্গে বিগত ছয়টা বছর কাটিয়ে দিয়েছে , তাই বেশ আগ্রহ নিয়েই পড়ে ফেললাম আপনার লেখাটা । শুনে বেশ ভালোই লাগলো সেখানে দাঁতের ডাক্তারের কদরটাই আলাদা ।

আর বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা , কিছুই বলার নেই আমার।

কয়েক মাস আগে মনের দুঃখেই ডাক্তারী পেশা ইস্তফা দিয়েছি ।

কিন্তু পেশাটি আপনার ছাড়া ঠিক হয়নি, বাংলাদেশে ডক্টরের অনেক কদর রয়েছে। হয়তো ভবিষ্যতে আপনার আরও সুদিন আসতে পারতো।

এইটা ঠিক তবে বর্তমানে তো টিকে থাকা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছিল ম্যাডাম।

আসলে আমাদের দেশে এই ধরনের সুযোগ-সুবিধা একদমই কম। প্রত্যেকটা অসুস্থ রোগীর জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা খুবই প্রয়োজন। যেটা সু পরিকল্পিতভাবে লন্ডনে করা হয়েছে। এই সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম খুবই ভালো লাগলো। প্রত্যেকটা কাজের পরিকল্পনা দিক নির্দেশনা সঠিক না হলে কখনোই সেই দিকে সফলতা পাওয়া যায় না অনেক ভালো লাগলো।

আপনি মনে হয় ভালোভাবে বুঝতে পারেননি ভাইয়া প্রাথমিক চিকিৎসা বলতে আমি বুঝিয়েছি। আমাদের শরীর খারাপ হলে আমরা প্রথমে যার কাছে যাই,বাংলাদেশে বলে ডাক্তার আর ইংল্যান্ডে বলে জিপি।

বেশ দারুন তো,ভালোই সুযোগ সুবিধা। বাংলাদেশ সম্পূর্না আলাদা,সরকারি হাসপাতালগুলোতে কি বাজে রকম চিকিৎসা দেওয়া হয়।এটা জেনে ভালো লাগলো টিনে জার আর গর্ভবতী মায়েদের জন্য সুযোগ সুবিধা আছে অনেক।ভালো লাগলো পড়ে।ধন্যবাদ

আপু আগে আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা ছিল গর্ভবতী মায়েদের জন্য। গর্ভবতী হলেই তারা অতিরিক্ত আরো বেশি অর্থ পেত। সেটি এখন তুলে নিয়েছে।

জিপি এই বিষয়টি একেবারেই নতুন আমার কাছে। প্রথম জানলাম এটা সম্পর্কে। এবং চিকিৎসা ব‍্যবস্থা টাও বেশ অন‍্যরকম। সবার জন্য সমান সুবিধা।

আমারও জেনে অনেক ভালো লাগলো নতুন কিছু জানতে পারলেন।

আর বাংলাদেশে তো একটু টাকা পয়সা থাকলেই লোকজন সরকারি হসপিটালে আর যেতে চায় না । কারণ সরকারি হসপিটালের মান এত খারাপ এবং চিকিৎসা ব্যাবস্থা ও ভালো না। বিদেশী সুযোগ সুবিধার জন্য সবাই বিদেশে যাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকে। ভালো লাগলো আপনার ইনফরমেশন গুলো পড়ে।

সরকারি হাসপাতালের যে অবস্থা,তা কে যেতে চাইবে ওই পরিবেশে?

বাহ আপু আপনার কথাগুলো শুনে মনে হচ্ছে আপনাদের সেখানকার অনেক কিছুতেই সুবিধা পাওয়া যায়। বিশেষ করে ওষুধপত্র নানান দিক থেকে সুবিধা পাওয়া যায়। আর আমাদের দেশে এই সকল ধরনের অবস্থা নেই বললেই চলে। দেখতে পেলাম গর্ভবতীদের জন্য অনেক বেশি সুবিধা। আপনার কথাগুলো শুনে বেশ ভালোই লাগলো।

বাংলাদেশ আর এদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে পার্থক্যগুলো তুলে ধরার জন্যই এই পোস্টটি করেছিলাম। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

আসলে আপু জিপি সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিল না। তবে অবশ্য যারা বাইরে থাকে অথবা বাইরে যাতায়াত করে তাদের মোটামুটি ধারণা থাকা স্বাভাবিক। আর বাহিরে এত সুযোগ সুবিধা সত্যি অকল্পনীয়। বাংলাদেশের নিম্নমানের চিকিৎসা মানুষকে শুধু ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। জিপি এবং কি সরকারের এত সুন্দর সুবিধা জনগণ তো ভোগ করবে। জিপি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক অভিনন্দন এবং আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। পরবর্তী পর্বটিও আজকে পোস্ট করে ফেললাম।অবশ্যই পড়ে দেখবেন।

আরেকটি ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে এখানে কিন্তু ডক্টরের চার্জ ফ্রি,

আমাদের দেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে সেবা খুবই নিম্নমানের। আর সবাই বেসরকারি হাসপাতালগুলোর উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ইংল্যান্ডে তার পুরোটাই উল্টো চিত্র। সরকারি হাসপাতালগুলোতেই সেবা ভালো পাওয়া যায় এবং বেসরকারি গুলোতেই সেবার মন খারাপ। আসলে পুরো ব্যাপারটি বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। এরকম যদি প্রত্যেকটি দেশে হতো তাহলে হয়তো অনেক ভালো হতো।

ঠিক বলেছ আপু বাংলাদেশে যদি এই সিস্টেম থাকতো তাহলে গরিব মানুষগুলোর এত কষ্ট হতো না চিকিৎসা ক্ষেত্রে। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।

বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সুজোগ সুবিধা সরকারি হসপিটাল থেকে অনেক কম। তাই এখানে সকলেই সরকারি হসপিটালকেই আগে পছন্দ করেন, বাংলাদেশের ঠিক উল্টো।


আসলে আমাদের দেশে প্রায় অনেক ডাক্তারদের মানবতা বোধ একেবারেই কমে গেছে।কারন ডাক্তার চিনে টাকা। টাকা নেই তো সেবা নেই, নেই কোন চিকিৎসা। আর সরকারি হাসপাতাল সেটা তো লুটপাটের আড্ডাখানা।জি,পি সম্পর্কে আপনার লেখাটি পড়ে খুব ভালো লাগলো।বিদেশে এত সুযোগ সুবিধার জন্যই যারা পারছে তারা বিদেশ চলে যাচ্ছে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, জি,পি সম্পর্কে এত সুন্দর ভাবে বিষয়টি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।

আপনার জি,পি (জেনারেল প্র্যাকটিশনার) পর্ব-১ এ ইংল্যান্ডের চমৎকার চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারলাম। সত্যিই আমাদের বাংলাদেশ আর ইংল্যান্ড অনেক তফাৎ। আমাদের বাংলাদেশের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা যতটুকু পাই তা খুবই নগণ্য। আপনার আগামী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম আপু। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।