ইউ কে থেকে বাংলাদেশে পরিবারের সাথে প্রথম ভিডিও কলের অনুভূতি

in hive-129948 •  yesterday 
আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভালো আছি।

IMG_5216.jpeg

Copy right free image

ভিডিও কলের কারণে আজ পুরো পৃথিবীটা এখন হাতের মুঠোয়।বাংলাদেশ থেকে যখন প্রথম ইউ কে-তে এসেছিলাম তখন স্মার্টফোনের ব্যবহার ছিল খুবই কম, ছিল না বললেই চলে।তাই তখন শুধু মোবাইল ফোনে কথা বলতাম সবার সাথে, কিন্তু দেখা আর যেত না।এভাবে চলতে চলতে তিনটি বছর কেটে গেল কাউকে না দেখেই, শুধু ফোনে কথা চলতো।এরপর একদিন আমার বাসায় আমার বড় ভাসুরের ছেলে এলো। তখন সে আমাকে বলল আমি বাংলাদেশে ভিডিও কলে সবার সাথে কথা বলতে পারব ল্যাপটপ থেকে।সেক্ষেত্রে স্কাইপ ডাউনলোড করতে হবে।হাজব্যান্ড তখন এদেশে আসার পরপরই আমাকে একটি ল্যাপটপ কিনে দিয়েছিল।কারণ তখন একা একা ভালো লাগতো না তাই ল্যাপটপে বিভিন্ন ধরনের ড্রামা দেখতাম।যেহেতু বাসায় ল্যাপটপ ছিল তাই দ্রুত Skype ডাউনলোড করে নিলাম, এরপর একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিলাম।আমার মনে হয় তখন প্রথম স্কাইপেই ভিডিও কল চালু হয়।

আমি তো একা একাই স্কাইপ ডাউনলোড করে রেডি। কিন্তু বাংলাদেশে যারা রয়েছে তাদেরও তো স্কাইপ একাউন্ট থাকা লাগবে, তা না হলে তাদেরকে কল দিব কিভাবে? এরপর আমি বাসায় কল দিয়ে বললাম SKype একাউন্ট খুলতে।বাসায় তখন ডেক্সটপ ছিল তাই তারাও দ্রুত স্কাইপ অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলতে পেরেছিল।এরপর সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত যখন কল দিলাম তখন তারা আমাকে দেখছে আমার কথা শুনছে কিন্তু আমি তাদেরকে দেখতে পাচ্ছিলাম না।কারণ তাদের ডেক্সটপে ওয়েবক্যাম ছিল না।তখন অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করছিল কারণ তিন বছর পর তারা আমাকে দেখছিল ভিডিও কলে।ওই সময় আমার বড় মেয়ে কেবল জন্ম গ্রহণ করেছিল।তাকেও তারা দেখছিল প্রথম বারের মত। কিন্তু আমার কষ্ট হচ্ছে আমি কাউকে দেখতে পাচ্ছিলাম না।এরপর তাদেরকে পরের দিনেই পাঠালাম ওয়েবক্যাম নিয়ে আসতে।বেশ তারপর থেকে নিয়মিত প্রতিদিন ভিডিও কলে বাবা-মা ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজন সকলের সাথেই কথা হতো।সেই ল্যাপটপ এখনো আমার কাছে রয়েছে, অনেক যত্নে রেখে দিয়েছি।এখনো ভালোভাবে কাজ করে, কোন প্রবলেম হয় না।

এরপর তার কিছু দিন পরই হাজবেন্ড আমাকে একটি স্মার্টফোন কিনে দিল।স্যামসাং এর প্রথম স্মার্ট ফোন যখন বেরিয়েছিল।তখন ওই স্যামসাং ফোনেও স্কাইপ ডাউনলোড করা যেত।আসলে ল্যাপটপ থেকে ফোন ইউজ করা যে কত আরাম তা বলে বোঝানো সম্ভব না। যখন ইচ্ছে তখন হাতের কাছে মোবাইলটা পেলাম ফোন দিয়ে দিলাম, কিন্তু ল্যাপটপ নিয়ে বসতে অনেক ঝামেলা।যাকে ফোন দিব তাকেও ল্যাপটপ নিয়ে বসতে হবে, সুতরাং এটি বড় একটি ঝামেলার কাজ।মোবাইল পেয়ে ল্যাপটপ তখন ছেড়ে দিলাম। তখন মোবাইল থেকেই বেশি কল করা হতো।এরপর মোবাইলে এল প্রথম ভিডিও কল ইমো, ভাইভার সহ আরও কিছু ভিডিও অ্যাপস।এরপরপর যত দিন যাচ্ছে তত উন্নত হচ্ছে, একটি পর একটি অ্যাপস আসতে শুরু করছে। কিন্তু প্রথম যে পরিবারের সঙ্গে স্কাইপে কথা বলেছিলাম সেটি ছিল অন্যরকম এক অনুভূতি, অন্যরকম এক ভালোলাগা, অন্যরকম এক স্মৃতি।

যেহেতু আগে বেশি ল্যাপটপে ভিডিও কল হতো তখন আমার মেয়েও তার নানু বাড়ির সকলকে চিনে গিয়েছিল।এরপর যখন তাকে প্রথম বাংলাদেশে নিয়ে গিয়েছিলাম তখন প্রথম এয়ারপোর্টে তার মামা ও নানুকে দেখে একেবারে স্ট্রেঞ্জ হয়ে বলেছিল "নানু ল্যাপপপ, মামা ল্যাপপপ" তখন সে ভালোভাবে কথা বলতেও শিখেনি। শুধু দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল ল্যাপটপে যাদেরকে দেখেছিল তাদেরকে এখন সে বাস্তবে দেখতে পাচ্ছে। তাই বারবার বলছিল নানু ল্যাপপপ, মামা ল্যাপপপ।তারকাছে অন্যরকম মনে হয়েছিল তখন।আসলে ভিডিও কলের বদৌলতে সকলকে সে চিনতে পেরেছিল।বিজ্ঞানের অন্যতম একটি অবদান এই ভিডিও অ্যাপসগুলো।দূরের মানুষগুলোকে কাছে এনে দেয়।ভিডিও কলের সুযোগ থাকাতেই আমি আমার বাবার মুখখানি শেষবারের মতো দেখতে পেয়েছিলাম। যাইহোক আমার জীবনের অন্যতম সেরা একটি স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করে ফেললাম।

বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।

ধন্যবাদ,

@tangera

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


[witness_vote.png](https://steemitwallet.com/~witnesses

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রথম ভিডিও কলে কথা বলার অনুভূতি পড়েও নিজের কাছে অনেক ভালো লাগে। এটাই আসলে চিন্তার বিষয় যখন ইমু মেসেঞ্জার হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদি অ্যাপস গুলো ছিল না তখন মানুষরা দূর থেকে মানুষের সাথে কিভাবে কথা বলতো। তখনকার সময়টা কেমন ছিল।SKype দিয়ে তখন কথা বলতে পেরেছিলেন শুনে ভালো লাগলো। যাই হোক পরিবারের সাথে প্রথম কথা বলার সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

তারা এই আবেগটা বুঝতে পারে, যেমন আপনার মেয়ে যখন ছোট ছিল পুরোপুরি সবকিছু বোঝা শেখেনি তখন ল্যাপটপে সব সময় মামা নানুকে দেখতো এজন্য এয়ারপোর্টৈ নামার পরে যখন সরাসরি সামনে থেকে দেখলো এই জন্য মামা নানার পাশাপাশি ল্যাপটপটা ইউজ করেছিল।

আপু পোস্টটি পড়ে পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। স্কাইপের মাধ্যমে ভিডিও কলে পরিবারের সাথে কথা বলতে যে তখন কতটা ভালো লাগতো,সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তাছাড়া স্কাইপের পাশাপাশি ভাইবার নিয়মিত ইউজ করতাম। আসলে বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।