"আমার বাংলা ব্লগ"প্রতিযোগিতা - ৩৯ || চিংড়ি শুটকি ও কালোজিরা দিয়ে তৈরি মজাদার ভর্তার রেসিপি

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

আসসালামুআলাইকুম,

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।


IMG_4551.jpeg

আজকে আমিও হাজির হয়ে গেলাম "আমার বাংলা ব্লগ"প্রতিযোগিতা - ৩৯ এ অংশগ্রহনের মাধ্যমে। আমার বাংলা ব্লগ এর এ্যাডমিন প্যানেল দারুন একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন।আসলে যে কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমার খুব ভালো লাগে।অবশ্য সব ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় না।শুধুমাত্র রেসিপি পোস্ট দেখলেই অংশগ্রহণ না করে আর থাকতে পারিনা। আর এই কনটেস্টটি খুব বেশি কঠিন নয়, অতি সহজ ও দারুন একটি টপিক। ভর্তা কে না ভালোবাসে? বাঙালি বলে কথা! ভর্তা, যা ভালো না লেগে তো পারেই না। বাঙ্গালীদের চাহিদার কারণে ইউরোপ ও আমেরিকার মতো বিভিন্ন দেশের হোটেল রেস্টুরেন্ট গুলোতে রয়েছে রংবেরঙের নানান স্বাদের ভর্তা। আমার তো ভর্তা হলে আর কোন কিছুই লাগেনা, শুধু ভর্তা দিয়েই খেয়ে উঠে যাই। আর এই ভর্তা যদি হয় চিংড়ি মাছের শুটকি দিয়ে করা তাহলে তো কোন কথাই নেই। হ্যাঁ বন্ধুরা আমার রেসিপির জন্য আজ সিলেক্ট করেছি চিংড়ি মাছের শুটকি আর সাথে কালোজিরা।কালোজিরার ভর্তাও আমার খুবই ভালো লাগে। তাই ভাবলাম চিংড়ি মাছের সাথে যদি কালোজিরা অ্যাড করি তাহলে হয়তো এর স্বাদটা দ্বিগুণ হবে। এর পূর্বেও আমি চিংড়ি মাছের শুটকি দিয়ে ভর্তা বানিয়েছিলাম কিন্তু তার সাথে কখনো কালোজিরা এ্যাড করিনি। আজকে একটি এক্সপেরিমেন্ট করে দেখলাম। আমার এক্সপেরিমেন্ট সাকসেসফুল, খুবই মজার হয়েছিল আমার এই ভর্তা।

IMG_4556.jpeg

দেখতে সহজ হলেও কিন্তু খুবই পরিশ্রম করেছি এই ভর্তার পিছনে। কারণ আমি এখানে প্রতিটি উপাদান শিলপাটায় বেটে নিয়েছি, ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করিনি। ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করলে এর স্বাদ এতটা পাওয়া যায় না,তাই নিজ হাতে সবগুলো উপাদান শীল পাটায় বেটে নিয়েছি। শিল পাটায় বাটতে হলে অনেক সময় ও পরিশ্রম দিতে হয়। যাইহোক আমার পরিশ্রম সাকসেসফুল হয়েছে, খেতে দারুন স্বাদের ছিল। আসলে প্রতিযোগিতায় প্রাইজ পাওয়াটাই বড় কথা নয়, অংশগ্রহণ করাটাই বড় কথা। ইতিমধ্যেই অনেক সুন্দর সুন্দর রেসিপি দেখে ফেলেছি।সবার রেসিপিগুলোই দারুন ও দুর্দান্ত হয়েছে। সকলের জন্যই শুভকামনা রইল। আশা করি আমার রেসিপিটিও আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন চলে যাওয়া যাক তাহলে মূল পর্বে।

চলুন দেখে নেয়া যাক রেসিপিটি তৈরি করতে আমাদের কি কি উপকরণ এবং কতটুকু পরিমান লাগবেঃ

উপকরণপরিমাণ
চিংড়ি শুটকি৫০০ গ্রাম
পিঁয়াজ কুচি১ কাপ
ধনেপাতা কুচিহাফ কাপ
কাঁচা মরিচ২৩/২৪ টি( ১১ টি ডেকোরশনের জন্য)
রসুনপৌনে ১ কাপ
কালো জিরা৪ টেবিল চামচ
লবনস্বাদমত
সরিষার তেল৩ টেবিল চামচ
ক্যাপসিকাম২ টি, ডেকোরশনের জন্য

কার্যপদ্ধতিঃ

IMG_4554.jpeg

প্রয়োজনীয় উপকরণ।

IMG_4501.jpegIMG_4502.jpeg

প্রথমেই চিংড়ি শুটকি গুলো বয়েল করা পানিতে ১০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রেখেছি।

IMG_4504.jpegIMG_4508.jpeg

এরপর ১০ মিনিট পরে ৬-৭ বার ভালো করে ধুয়ে বেছে পরিষ্কার করে নিয়েছি কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে বালু থাকে। এরপর পেঁয়াজ ও ধনেপাতা কুচি করে কেটে নিয়েছি এবং রসুনগুলো ছুলে নিয়েছি।

IMG_4505.jpegIMG_4507.jpeg

এরপর কালো জিরা গুলো ফ্রাই পেনে অল্প আঁচে কয়েক মিনিট ভেজে নিয়েছি।

IMG_4509.jpegIMG_4510.jpeg
IMG_4511.jpegIMG_4512.jpeg

এরপর ফ্রাই পেনে ২ টেবিল চামচ সরিষার তেল দিয়ে কাঁচা মরিচ গুলো দুই তিন মিনিট ভালোভাবে নেড়েচেড়ে পেঁয়াজ ও রসুন দিয়ে দিয়েছি। এরপর বাদামি রং হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ভেজে নিয়েছি।

IMG_4513.jpegIMG_4514.jpeg

এরপর পেঁয়াজ, রসুন ও কাঁচা মরিচ তেল থেকে উঠিয়ে ওই ফ্রাই প্যানে আরো এক টেবিল চামচ সরিষার তেল দিয়ে চিংড়ি মাছ গুলো দিয়ে দিয়েছি। এরপর চিংড়ি মাছ গুলো মিডিয়াম আঁচে কয়েক মিনিট ভালোভাবে ভেজে নিয়েছি।যখন একটু বাদামি বর্ণের হয় তখন প্যান থেকে উঠিয়ে নিয়েছি।

IMG_4515.jpegIMG_4516.jpeg
IMG_4517.jpegIMG_4518.jpeg

এরপর কালোজিরা গুলো হালকা একটু পানি দিয়ে শীল পাটায় ভালোভাবে বেটে নিয়েছি।এরপর ফ্রাই করা পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ ও রসুনগুলো হালকা একটু লবণ দিয়ে বেটে নিয়েছি।

IMG_4519.jpegIMG_4520.jpeg
IMG_4521.jpegIMG_4523.jpeg

এরপর ধনেপাতা বেটে নিয়েছি। এরপর ফ্রাই করা চিংড়ি মাছগুলো পরিমানমত লবন দিয়ে ভালোভাবে বেটে নিয়েছি।

IMG_4524.jpegIMG_4525.jpeg

এরপর বাটা সব উপকরণগুলো একটি বাটিতে নিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছি।

IMG_4526.jpeg

এরপর একটু একটু করে নিয়ে এভাবে বলের মতো করে নিয়েছি।

IMG_4527.jpeg

এরপর সবগুলো বলের মাঝখানে একটু ফাঁকা করে দিয়ে চারিপাশে কতগুলো মরিচ দিয়ে ডেকোরেশন করে নিয়েছি।

IMG_4528.jpeg

এরপর ভাজা কিছু চিংড়ি মাছ রেখে দিয়েছিলাম ডেকোরেশনের জন্য সেগুলো চারিপাশ দিয়ে সাজিয়ে দিলাম।

IMG_4532.jpeg

IMG_4546.jpeg

এরপর বাকি যে বলগুলো ছিল সেগুলোর মাঝখানে কিছু ভাজা চিংড়ি মাছ এবং চারিপাশে কতগুলো কাঁচা মরিচ ও ক্যাপসিকাম দিয়ে ডেকোরেশন করে নিয়েছি।

Photographer@tangera
DeviceI phone 13 Pro Max

বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে।

পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

ধন্যবাদ,

@tangera

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপু আপনি তো দেখছি আজ আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। দেখে তো আমার জিভে জল চলে এসেছে। না জানি খেতে কত সুস্বাদু ছিল।চিংড়ি শুটকি ও কালোজিরা দিয়ে তৈরি মজাদার ভর্তার রেসিপি। কালোজিরা এবং চিংড়ি শুটকি দুটোই আমার অনেক প্রিয় খাবার। আপু আপনি অনেক দক্ষতার সহিত ধাপে ধাপে তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

অও,অনেক সুন্দর হয়েছে আপু রেসিপিটি।আমার কাছে বেশ ইউনিক লেগেছে।তবে শুটকি জিনিসের গন্ধ নিতে পারি না বলে খাওয়া হয় না।কিন্তু আমি নিশ্চিত এটা অনেক মজার খেতে হয়েছে।কালোজিরা কখনো ভর্তার সঙ্গে খাওয়া হয় নি।আপনি প্রতিযোগিতায় এত সুন্দর রেসিপি নিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো।আপু আপনার পোষ্টের টাইটেলে রেসিপি বানানটিতে একটি অক্ষর মিস গেছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

ভর্তা খেতে আমরা সবাই পছন্দ করি। আর যদি এরকম লোভনীয় ভর্তা হয় তাহলে তো গরম ভাতের সাথে খেতে দারুন লাগবে। চিংড়ি মাছের শুটকি এবং কালোজিরা দিয়ে তৈরি করা এই ভর্তার রেসিপি দারুন হয়েছে আপু। দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে দারুণ হয়েছিল। মন চাচ্ছে গরম ভাতের সাথে এই ভর্তা খেয়ে দেখি।

বেশ চমৎকার কথাই বলেছেন। যেকোন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করতে আমারও বেশ ভালো লাগে। আর সেটা যদিও রেসিপি কনটেস্ট তাহলে তো আর কোন কথাই নাই। চিংড়ি মাছ আর কালো জিরা দুটোই কিন্তু বেশ লোভনীয় খাবার। আর এই লোভনীয় খাবার খেতে কিন্তু বেশ স্বাদেরও হয়। আপনি তো দেখছি সেই লোভনীয় চিংড়ি আর কালো জিরা এক সাথে করে বেশ সুন্দর ও আকর্ষণীয় একটি রেসিপি তৈরি করে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার বানানো ভর্তার কালার এতো সুন্দর হয়েছে আপু। ভাবছি খেতে না জানি কত স্বাদের ছিলো। শুভ কামনা রইল আপনার প্রতি আপু।

আপু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে ভীষন ভালো লাগলো। আপনি চিংড়ি শুঁটকি দিয়ে কালোজিরা দিয়ে ভর্তা করলেন।যদিও দুইটা আলাদা ভাবে খাওয়া হয়েছে আমার।একসাথে খাওয়া হয়নি।একদিন অবশ্যই চেষ্টা করব করার।আপনার ভর্তা পরিবেশনের কাঁচামরিচ দুটো দেখে তো আমার খেতে ইচ্ছে হলো আপু।খুব সুন্দর পরিবেশনা।ধন্যবাদ আপু মজার এই ভর্তা রেসিপি শেয়ার করার জন্য। অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

অনেক ইউনিক একটা ভর্তা রেসিপি নিয়ে, আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে অনেক বেশি ভালো লেগেছে আপু। আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দেখেই বুঝতে পারছি অনেক পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে আপনি এই ভর্তা রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলে তৈরি করতে যতটা সময় লাগে খেতে ততটা সময় একেবারেই লাগে না। এক নিমিষে খেয়ে ফেলা যায়। যাইহোক মজাদার ভর্তা রেসিপিটা সবার মাঝে ভাগ করে নিলেন দেখে ভালো লাগলো।

আপু সত্যি কথা বলতে যে কোন কিছু করতে অনেক বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। তবে রেসিপি তৈরি করতে একটু বেশি সময় লেগে যায়, যদি হয় ভর্তা তাহলে তো কোনো কথা নেই। চিংড়ি শুটকি ও কালোজিরা দিয়ে আপনি ভর্তা রেসিপি তৈরি করেছেন প্রতিযোগিতার জন্য। অনেক সময় ব্যবহার করে এটা তৈরি করেছেন যা বুঝতেই পারছি। ডেকোরেশনটা অনেক সুন্দর ভাবে করেছেন মনে হয় খুব মজা করে খাওয়া হয়েছিল।

চিংড়ি শুটকি দিয়ে কালোজিরা ভর্তা করার দারুন একটা রেসিপি আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। এর আগে আমি কালোজিরা ভর্তা অনেক খেয়েছি। এগুলোতে যদি একটু মরিচের পরিমাণ বেশি দেওয়া যায় তাহলে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়।

শুটকি চিংড়ি আর কালোজিরার সমন্বয়ে খুব সুন্দর একটি ভর্তা রেসিপি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যেখানে বিভিন্ন মসলার ব্যবহার রয়েছে। আর তা খুব সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি ইউনিক রেসিপি নিয়ে কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য।