আসসালামুআলাইকুম,
আশাকরি সকলেই ভাল আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।মেরাজ যাত্রার শেষ পর্বে হাজির হয়ে গেলাম আজ। গত পর্বে আলোচনা করেছিলাম আমাদের নবী হযরত মুহামাদ (সঃ)এর সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত পৌঁছানো। সিদরাতুল মুনতাহা হচ্ছে বিশাল আকৃতির একটি বৃক্ষ যার শিকর ৬ষ্ঠ আসমান থেকে সপ্তম আসমান পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।নবী (সঃ)বলেছেন গাছটি প্রতিনিয়ত তার রং পাল্টাচ্ছিল এবং এই রং পৃথিবীর কোন রংয়ের সাথে মিল নেই, অদ্ভুত সুন্দর যা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। দুনিয়া থেকে যা কিছু আসে তা সিদরাতুল মুনতাহা এ গিয়ে পৌঁছায় এবং আল্লাহর কাছ থেকে যা কিছু যায় তা সিদরাতুল মুনতাহার মাধ্যমে দুনিয়ায় এসে পৌঁছায়। এখানেই জিবরাঈল আলাইহিস সাল্লাম তার পূর্ণ রূপ প্রকাশ করেছিলেন নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর সম্মুখে, যদিও এর আগেও তিনি একবার নবীর সামনে প্রকাশিত হয়েছিলেন। জিবরাঈল আলাইহিস সাল্লাম এর ৭ম আকাশে যাওয়ার অনুমতি ছিলনা, অর্থাৎ আল্লাহর আরশে যাওয়ার অনুমতি ছিল না, শুধু নবী মুহাম্মদ (সঃ)একাই গিয়েছিলেন।
এরপর সপ্তম আকাশে গিয়ে আল্লাহর প্রিয় হাবিব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর সাথে আল্লাহর সরাসরি কথোপকথন হয়। নবীজি আল্লাহকে দেখতে পাননি, শুধু তাঁর নুরের হিজাব দেখতে পেয়েছিলেন অর্থাৎ কেউ আল্লাহকে দেখতে পারবেনা কেয়ামতের আগ পর্যন্ত। শুধুমাত্র জান্নাতে আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দাদের সামনে দেখা দিবেন। আল্লাহ তাআলা নবীজীকে তিনটি উপহার দিয়েছিলেন। একটি উপহার ছিল ফরজ নামাজ, দ্বিতীয় উপহার ছিল সুরা বাকারার শেষের দুই আয়াত এবং তৃতীয় উপহার ছিল যারা কোনদিন আল্লাহর সাথে শিরক করেননি অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করেননি তাদের বড় বড় গুনাহ গুলো সব মাফ করে দেওয়া হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া সেটিও আমরা পেয়েছি মেরাজ থেকে। এছাড়া নবীজি এবং আল্লাহর সাথে আরো অনেক বিষয়ে কথপোকথন হয়।
দুনিয়াতে আমাদের সময়ের হিসাব আর আল্লাহর সময়ের হিসাব এক নয়। কারো কারো মতে নবীজির মেরাজে সময় ছিল মাত্র ৪/৫ সেকেন্ড অর্থাৎ নবীজি মেরাজে যাওয়ার আগে অজু করছিলেন সেই অজুর পানি তখনও গড়ে পরছিল যখন তিনি ফিরে আসেন।কিন্তু নবীজির মেরাজ যতক্ষণ সম্পন্ন হয়েছিল তা ছিল এই পৃথিবীর ৪০ বছরের সমান যা মাত্র ৪/৫ সেকেন্ডেই শেষ হয়ে গিয়েছিল যা ঘটানো একমাত্র আল্লাহর পক্ষেই সম্ভব।
এরপর জিবরাঈল (আঃ)নবীজিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে জান্নাত ও জাহান্নাম পরিদর্শন করান।সেখানে জাহান্নামে কোন ধরনের মানুষ,কি কারনে, কোন ধরনের শাস্তি পাচ্ছে তা দেখানো হয়েছে।আর জান্নাতে কোন ধরনের মানুষ বেশি যাবে, কি কি উপভোগ করবে সব কিছু দেখানো হয়েছে। এছাড়া নবীজি দাজ্জালকেও দেখেছিলেন, দাজ্জাল যার একচোখ অন্ধ ছিল। আমরা জানি দাজ্জাল কেয়ামতের আগে এই পৃথিবীতে আসবে এবং এবং তাকে অনেক পাওয়ার দেওয়া হবে। যাদের ঈমান দুর্বল তারা দাজ্জালের ফাঁদে পা দিয়ে ঈমান হারা হয়ে যাবে এবং যাদের ঈমান মজবুত তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা। এরপর ঈসা আলাইহিসসাল্লাম এসে দাজ্জালকে হত্যা করবেন।
অবশেষে মেরাজ যাত্রা শেষ হয়ে যায়। সত্যিই এটি ছিল এক বিস্ময়কর যাত্রা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আল্লাহর প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে দেওয়া হয়েছিল এক বিশেষ পুরস্কার। নবীজি নিজ চোখে জান্নাত জাহান্নাম ও আল্লাহর আরশ পর্যবেক্ষণ করে এসেছেন, সুতরাং আমাদের অবিশ্বাস করার আর কোন অবকাশ নেই। আমাদের নবীজির জীবনে কখনো মিথ্যা কথা বলেননি, একারণেই মক্কাবাসীরা তাঁকে আল আমিন বলে ডাকতেন। সুতরাং মেরাজ মিথ্যে হতে পারে না। এছাড়া আল্লাহ কুরআনেও বলেছেন নবীজির মেরাজ সম্পর্কে। আমরা সমগ্র মুসলিম চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করি মেরাজ সত্য এবং নবীজির সশরীরে তা ঘটেছে, এটি কোন স্বপ্ন ছিলনা। আল্লাহ সত্য, নবী সত্য এবং মেরাজ সত্য।
বন্ধুরা এটাই ছিল আমার আজকের পর্ব।আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞানে পরিসরে যতটুকু পেরেছি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি, ভুল ভ্রান্তি হলে অবশ্যই ক্ষমাপ্রার্থী।পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
তখন কার সময় আমাদের নবী যে সিদরাতুল মুনতাহার গিয়েছিলো কাফেরা বিশ্বাস করছিলো না,যার জন্য নবী কতজন কত কি বলেছিলো।নবীজির সাহাবী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেছিলো আমাদের নবী যা বলে তা ১০০% সত্যি।আমাদের সকলের নবী কত ভাগ্যবান আর কত সম্মানিত নবী ছিলেন।আমরা তার উম্মত হতে পেরেছি সত্যিই আমরা ভাগ্যবান।আমরা যেন নবীর দেখানো পথে চলতে পারি এই প্রত্যাশা করি।ভালো লাগলো আপু।ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক বলেছো আপু এ কারণেই হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহুকে সিদ্দিকী উপাধিটা দেয়া হয়। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিরাজ যাত্রা শেষ পর্বে আপনি অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন খুবই ভালো লাগলো ।
সূরা বাকারার শেষের দুই আয়াত মুখস্ত করা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী অর্থসহ কেননা এতে রয়েছে অনেক বড় ফজিলত।।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মেরাজ ভ্রমণের সময়টা ছিল সম্পূর্ণ অলৌকিক একমাত্র আল্লাহই জানেন তিনি কত সময় নিয়ে ভ্রমণ করেছিলেন।। তবে আমরা বিশ্বাস করি যে তিনি সবকিছু ভ্রমন করে দেখেছেন একজন মুসলমান হিসেবে।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া, ভ্রমণের সময় সম্পর্কে একেক জন একেক মতবাদ দিয়েছেন, তবে এই অলৌকিক শুধু আল্লাহই জানেন।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যেহেতু জীবরাঈল (আ:)কে ষষ্ঠ আসমান পর্যন্তই পরিসীমা বেঁধে দিয়েছিলেন আল্লাহ।তাই নবী করিম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম কে বলেছিলেন আমি যদি এর থেকে বেশি সামনের দিকে অগ্রসর হয় তাহলে আমি পুড়ে যাব। সপ্তম আসমানে আল্লাহর সাথে দিদার হয় আল্লাহর বন্ধুর। ওখানে অবশ্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু সালাম আল্লাহকে দেখতে পারে না, শুধু তার নূরের হিজাব দেখতে পান।নবী করীম (সাঃ) মেরাজে গিয়েছিল বলেই ৫০ ওয়াক্ত নামাজের জায়গায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শেষ উম্মতের জন্য ধার্য করা হয়েছিল।নবী করীম সাল্লাল্লাহু সালামের এই মেরাজের বহু গুরুত্ব রয়েছে আর সবগুলোই তার উম্মতের কল্যাণের জন্যই। যা জান্নাত জাহান্নামের বিবরণ দাজ্জাল থেকে দূরে থাকা এক কথায় আমাদের কোনটা কল্যাণ এবং কোনটা অকল্যান এই সম্পর্কে আমাদেরকে সাবধান হতে বলেছেন।আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদেরকে তার দেওয়া আদেশ উপদেশ গুলো মেনে চলার তৌফিক দান করুন আমীন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসসালামু আলাইকুম আপু। আজ মেরাজের শেষ পর্ব পড়ে ও খুব ভাল লাগলো। মুসলিম হিসেবে আগে থেকেই এ ঘটনাগুলো জানি।তবে রিমাইন্ড করে দিলেন আবার পোস্টের মাধ্যমে তা খুব ভাল লাগলো। এই সকালবেলা পোস্ট পড়তে পড়তে চোখটা ভিজে যাচ্ছিল।আল্লাহর কাছে কি নিয়ে যাব?? আল্লাহকে ভুলে আমরা ইহকাল নিয়ে কতই না ব্যস্ত আছি।আপু অনেক ভাল লেগেছে। আপনি অন্য অন্য পোস্টের মতো বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরবেন এমনটাই আশাকরি। অনেক ধন্যবাদ আপু। খুব ভাল লেগেছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ইনশাল্লাহ আপু চেষ্টা করব অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের প্রিয় নবী মেরাজ শরীফ থেকে আমাদের জন্য নামাজ উপহার নিয়ে এসেছেন। এটা আসলে আমাদের সকলের জন্য অনেক বড় পাওয়া। অনেক ধন্যবাদ আপু অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু অসাধারণ ভাবে মেরাজের মুল কথা গুলো উপ্সথাপন করেছেন, আমি যদিও ইদানীং একটা বই পড়ছি যেখানে মেরাজের সব কিছুই লিখা আছে। তবে সত্যিই বলতে কি জানেন, আল্লাহতালার রহমতের প্রতিটি বিষয় আমরা যতই পড়িনা কেন, তবু ও আফসোস মিটে না। এমন পোস্ট আরও চাই আপু, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে আপু ধর্মীয় বিষয়গুলো যতই পড়া যায়, যতই জানা যায় ততই মনে অনেক প্রশান্তি পাওয়া যায়। চেষ্টা করছি আপু কিছু লিখতে। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit