জিন্দা পার্কে ঘুরাঘুরি

in hive-129948 •  6 days ago 

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।



আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।



আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। এর আগে আপনাদের সঙ্গে একদিন শেয়ার করেছিলাম স্কুল ছুটির পর আমরা পূর্বাচলের দিকে ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে জিন্দা পার্কে ঘুরতে যাব। জিন্দা পার্কের অনেক গল্প শুনেছি। মাঝেমধ্যে যাওয়ার জন্য প্ল্যান করি কিন্তু সেভাবে সুযোগ হয়ে ওঠেনা। তাছাড়া ঢাকা শহরের পার্কগুলোতে ছুটির দিনে উপচে পড়া ভিড় থাকে। ঠিক মত কোনো কিছু দেখাই যায় না। আমার হাজবেন্ড ছুটির দিনে কোথাও যেতে চায় না এই ভিড়ের কারণে। ছুটির দিন ছাড়া আবার ঘোরার সুযোগ কোথায়। যেহেতু হাজবেন্ড ছুটি নিয়েছিল এই ফাঁকে ঠিক করলাম যে জিন্দা পার্কে গিয়ে ঘুরে আসি। পূর্বাচল থেকে খুব বেশি সময় লাগে না। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে আমরা রওনা দিলাম জিন্দা পার্কের দিকে। আমরা মেইন রোড দিয়ে না গিয়ে ভিতরের রাস্তা দিয়ে গিয়েছিলাম। মেইন রোডের অবস্থা খুবই খারাপ। রাস্তার কাজ হচ্ছে। কোনরকম চলাচল করার মত রাস্তা রয়েছে। ভিতর দিয়ে যাওয়ার পরেও দেখলাম যে রাস্তার মাঝে মাঝে খুব খারাপ অবস্থা। মনে হচ্ছে যে রাস্তার মাঝখান থেকে কিছু অংশ উঠিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছে লোকজন। এত খারাপ অবস্থা। তারপর ম্যাপ চালু করে ধীরে ধীরে আমরা জিন্দাপার্ক গিয়ে পৌছালাম।



IMG_2186.jpeg


IMG_2187.jpeg


জিন্দা পার্কে যখন ঢুকছিলাম তখন মনে হচ্ছিলো যেন কোন এক জঙ্গলে চলে এসেছি। এত গাছপালা। আমার হাজবেন্ডতো খুবই হতাশ হয়েছে গিয়ে। বলছিল যে এই জিন্দা পার্কে আসার জন্য এত অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম। আমিও কিছুটা অবাক হয়েছিলাম যে এই জিন্দা পার্কের প্রশংসা কেন লোকজন এত করেছে। এখানে তো জঙ্গলের মত অবস্থা। তারপরও কি আর করার চলে যখন এসেছি তাহলে তো ভিতরে যেতেই হয়। আমরা গিয়ে টিকিট কেটে নিলাম। ছোট ছেলের টিকিটের টাকা নিলো না। আমাদের তিনজনের টিকিটের টাকা নিলো। টিকিটের দামও খুবই কম ১০০ টাকা করে একেকজনের।


IMG_2192.jpeg


IMG_2193.jpeg


একেতো দুপুরবেলায় গিয়েছি তার ওপরে আবার ছুটির দিন। একদম ফাঁকা ছিল ভিতরে। হঠাৎ দুই একজন লোক দেখা যাচ্ছিলো। কিন্তু ভিতরে ঢোকার পর কিছুটা ভালো লাগছিল। চারপাশের সবুজ গাছপালা আর সামনে খোলা মাঠ এবং ছোট ছোট বসার জায়গা খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো। ঢুকেই আমরা খোলা মাঠটির সামনে একটি বেঞ্চে বসে পড়লাম। আর বাচ্চারা মাঠের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করলো কিছুক্ষণ।


IMG_2194.jpeg


IMG_2195.jpeg


কিছুক্ষণ বসে তারপরে ভিতরের দিকে রওনা দিলাম। ততক্ষণে দুপুরের নামাজের সময় প্রায় চলে যাচ্ছিলো। তাই আমার হাজবেন্ড নামাজ পড়ার জন্য মসজিদ খুঁজছিলো। ছেলেদের জন্য খুব চমৎকার একটি মসজিদ রয়েছে। সেই সাথে পাশে মেয়েদের নামাজ পড়ার জায়গা রয়েছে। মেয়েদের নামাজ পড়ার জায়গাটা একদম ফাঁকা ছিল। কেমন ভুতুড়ে ভুতুড়ে লাগছিল। তাই বড় ছেলেকে পাশে বসিয়ে রেখেছিলাম। আমার কেমন যেন ভয় লাগছিল।


IMG_2199.jpeg


IMG_2202.jpeg


নিচের এই ছবিটি মসজিদের সামনের। ঘাসগুলো এত সুন্দর করে কাটা এবং পরিষ্কার মনে হচ্ছিল যে কার্পেট বিছানো। যতই ভিতরের দিকে যাচ্ছিলাম ততই সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পারছিলাম। বেশ ভালই লাগছিলো তখন।


IMG_2205.jpeg


বিশাল বড় এরিয়া নিয়ে এটি তৈরি। একদিনে শেষ করা সম্ভব নয়। পরবর্তীতে আপনাদের সঙ্গে বাকি অংশের কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।



ধন্যবাদ

@tania

Photographer@tania
Phoneoppo reno5
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি অর্থনীতিতে অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা,আর্ট করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে এবং ব্লগিং করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

IMG_20220106_113311.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png


VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঐদিন পড়েছিলাম আপনাদের দুপুরের খাওয়া দাওয়া করার মুহূর্তটা। আর আজকে আপনি খাওয়া দাওয়ার পরে পার্কে ঘুরাঘুরি করার মুহূর্ত আমাদের মধ্যে শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। এই পার্কের পরিবেশ আমার কাছে দেখতে খুবই ভালো লেগেছে। এরকম পরিবেশে কিন্তু সময় কাটাতে অনেক ভালোই লাগে। আর ওই জায়গাটাতে মহিলা পুরুষ দুজনেরই নামাজ পড়ার জায়গা ছিল, এইটা আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে। এই পার্কের পরিবেশ দেখে সত্যি মুগ্ধ হলাম আমি।

এই বিষয়টি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে মহিলাদের জন্য সুন্দর নামাজের জায়গা করে রেখেছে। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

কিছু কিছু জায়গার ব্যাপারটাই এরকম যে লোকমুখে অনেক নাম ছড়ে যায় কিন্তু বাস্তবে তেমন কোনো রূপ কথা নেই। যেমনটা হয়েছে আপনাদের সাথে জিন্দা পার্ক নিয়ে। আর ঢাকা শহরে শহরের আশেপাশের পার্ক গুলোর কথা কি বলবো এতটাই উপচে পড়া ভিড় হয় যা বলার মত নয়। কিন্তু সেই তুলনায় জিন্দা পার্কে দেখছি জনমানব শূন্য। জিন্দা পার্কের করা ফটোগ্রাফি গুলি দেখে বোঝা যাচ্ছে এটি একটি প্রকৃতিগত পার্ক। যাইহোক আপনার জিন্দা পার্কের পরবর্তী ফটোগ্রাফি গুলি দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

লোক মুখে ভালো বলার কারণ ভিতরে যাওয়ার পর টের পেয়েছি। আসলেই জায়গাটি খুব সুন্দর। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

বিশেষ একটা কিছু নেই বলে আপনাদের হয়তো ভালো লাগেনি শুরুতেই। তবে বেশ ছিমছাম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখে আমার তো ছবিতেই ভালো লাগছে। কত সুন্দর সবুজের দেশে শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ। এত গাছগাছালি শহরের মধ্যে কোথায় আর দেখা যায়।

শুরুতে ভালো না লাগলে কি হবে পড়ে কিন্তু অসম্ভব ভালো লেগেছে জায়গাটি। মনে হচ্ছিল অনেক সময় কাটিয়ে দেই এখানে চুপচাপ বসে।

পূর্বাচল এলাকায় এত বড় এরিয়া নিয়ে এত সুন্দর সবুজ প্রকৃতিতে ঘেরা পার্ক রয়েছে সেটা তো জানা ছিল না। সময় হলে ছুটির দিনে ছাড়া অন্য কোন দিন যাব যাতে মানুষের আনাগোনা কম থাকে জায়গাটার সৌন্দর্য ভালোভাবে উপভোগ করতে পারি।

পূর্বাচলে না ভাইয়া এটি নারায়ণগঞ্জের ভিতরে পড়ে। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

image.png

ঢাকার কাছেপিঠে যাওয়ার জন্য জিন্দা পার্ক আমারো বেশ পছন্দের একটি জায়গা। আমি অবশ্য বেশ আগে গিয়েছিলাম কয়েকবার। ওদের বাহিরটা জঙ্গলের মতো লাগলেও ভেতরটা বেশ গোছানো এবং বিল্ডিং এর স্থাপনা শৈলিও যথেষ্ট উন্নত রুচিসম্মত। আসলেই বিশাল এলাকা জুড়ে পার্কটি। আমি যে কয়বার গিয়েছি, বেশ ভালো সময় কাটিয়েছি।

ঠিক বলেছেন আপু আমাদের এদিক থেকে তো আরো সহজ যাওয়া। খুবই অল্প সময় লাগে যেতে। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

এই পার্কে গিয়ে অনেক ভালোভাবে ঘুরাঘুরি করেছেন দেখেই খুব ভালো লাগলো। আপনার পার্কে কাটানো মুহূর্তটা অনেক ভালো ভাবে উপভোগ করলাম। এরকম সুন্দর পার্কে গেলে অনেক ভালো সময় কাটানো। সুন্দর প্রকৃতি রয়েছে এই পার্কে। পার্কের সৌন্দর্য টা দেখেই আমার অনেক ভালো লেগেছে।

আমার পার্কে কাটানো মুহূর্ত দেখে আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।

জিন্দা পার্কের নামটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আপনার পোস্ট প্রথমে পড়া শুরুতে জিন্দা পার্ক নামটি কেন হয়েছে সেটা জানার আগ্রহ ছিল। যখন বললেন প্রচুর গাছপালা তাছাড়া ফটোগ্রাফির মধ্যে দেখতে পাচ্ছি জঙ্গলের মত সেজন্যই হয়তো জিন্দা পার্ক নাম হয়েছে। এরকম সুন্দর জায়গায় ফ্রী টাইমে সময় পার করা দারুন মজা হয়। অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে।

ওইখানে যাওয়ার পর বুঝতে পারলাম কেন এই পার্কের নাম জিন্দা পার্ক। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

ছুটির দিনে ফাঁকা থাকে ঢাকা শহরে এমন জায়গা হয়তো নেই। সব জায়গাই মানুষ ভর্তি থাকে।। জিন্দা পার্ক নামটাই কেমন জানি অন‍্যরকম। তবে একটু গাছপালা বেশি এবং জঙ্গলাবৃত এমন হলে খারাপ হয় না। একটা প্রকৃতি প্রকৃতি ভাব আসে হা হা। চমৎকার লাগল আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আপু। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

এজন্য আমার হাজবেন্ড ছুটির দিনে কোথাও যেতে চায় না। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

অসাধারণ আপু অসাধারণ, ভাইয়ের ছুটিটা সুন্দরভাবে কাজে লাগিয়েছেন। তবে কিন্তুু এটা ঠিক আপু ঢাকা শহরে ছুটির দিনগুলোতে পার্কের ভিতর প্রচুর পরিমাণে লোকজনের সমাগম হয়। ঢাকা শহরে মানুষগুলো চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি থাকতে থাকতে যখন ছুটির দিন হয় তখন সবাই মনটা ফ্রেশ করার জন্য পার্কে যায় ঘুরতে। তবে আপনার পার্কের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন আপনারা। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু জিন্দা পার্কে ঘুরাঘুরির অনেক সুন্দর একটি অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

একদম ঠিক ধরেছেন ভাইয়া হাজবেন্ডের ছুটিটা পারফেক্ট ভাবে কাজে লাগাতে পেরেছিলাম। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।