আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আগে অনেক ছিনতাইকারীদের দেখা যেত রাস্তাঘাটে। মানুষজনকে একা পেলে সবকিছু নিয়ে যেত। এখন এরকম ছিনতাইকারীদের ঘটনা খুব একটা শোনা যায় না। হয়তো ডিজিটাল যুগের জন্য এরাও খুব একটা সাহস পায়না পুরোনো নিয়মে কিছু করার। কিন্তু বিকল্প বিভিন্ন উপায়ে এরকম ঘটনাগুলো ঘটছে অহরহ। সেরকম একটি ঘটনায় আজকে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। ঘটনাটি আমার হাসবেন্ড এর সঙ্গে ঘটেছিলো।
আমার হাসবেন্ড তখন লালমনিরহাট থাকতো। চাকরির শুরুর দিকে ওখানে পোস্টিং ছিল। আমার বিয়ের আগের ঘটনা। তখন ঢাকায় আসার জন্য রাতের বাসে উঠত এবং ভোরবেলা এসে নামতো ঢাকাতে। তা না হলে দিনের বেলায় রওনা দিলে সারাদিন চলে যেত। অফিসের ছুটির মাঝে আসতো। সেজন্য খুব একটা সময় নষ্ট করতে চাইতো না। একদিন সে আর তার এক কলিগ ঢাকায় এসে পৌঁছেছিল অনেক সকালবেলায়।
ও যখন একা আসতো তখন বেশি ভোর বেলা হলে অপেক্ষা করতো একটু বেলা উঠার জন্য। কারন রাস্তাঘাটে লোকজন না থাকলে তখন এরকম ঘটনা বেশি হত। কিন্তু সেদিন ওর কলিগ থাকার কারণে বাস থেকে নামার পরেই রওনা দিয়েছিল। চাচার বাসা বাসস্ট্যান্ড থেকে খুব কাছে ছিল। সেজন্য ওরা রিক্সা নিয়েই রওনা দিয়েছিল। কিন্তু রাস্তাঘাট তখনো একদম ফাঁকা। লোকজনের খুব একটা যাতায়াত নেই। অল্প দু-একজন লোক মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছিলো। কিছুদূর যেতেই বিপত্তি ঘটে। এক পাশ থেকে কিছু ছেলে তাদের রিকশা আটকায়। তার কলিগ যেই পাশে ছিল সেই পাশে। একজন তাকে পেটের কাছে ছুরি ধরে এবং সবকিছু চায়। আমার হাজবেন্ড এর পাশ ফাঁকা ছিল। সে চাইলে নেমে চলে যেতে পারতো। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে কি পাশের জনকে ফেলে চলে যাওয়া যায়। তারপর তারা মোবাইল মানিব্যাগ সব নিয়ে নিল। ওরাও আর কিছু বলেনি। সবকিছু দিয়ে দিয়েছে। এখানে কিছু বলেও লাভ হতো না। কারণ কিছু বললেই এদের দিয়ে কোন ভরসা নেই। পেটে চাকু মেরে দিতে পারে। কিন্তু ওরা বারবার অনুরোধ করছিল যেন টাকা পয়সা নিয়ে মানিব্যাগটা দিয়ে দেয়। কারণ ছেলেদের মানিব্যাগে অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস থাকে। বিশেষ করে মোটরসাইকেলের লাইসেন্স বা অন্যান্য ব্যাংকিং কার্ড। এগুলোর জন্য আবার থানায় জিডি করতে হয়। এজন্য ওরা অনেকবার বলছিল যেন দূরে গিয়ে মানিব্যাগটা ফেলে দেয়।
ওরা কোন কিছু শুনতে রাজি না। ওদের কি আর সময় নষ্ট করার মত সময় আছে। দ্রুত এগুলো নিয়ে পালাতে পারলেই বেঁচে যায়। তাড়াতাড়ি করে মানিব্যাগ এবং মোবাইল নিয়ে ওরা চলে যায়। তারপর আমার হাসবেন্ডরা যদিও পাশে গিয়ে একটু খোঁজাখুঁজি করেছিল যদি তারা মানিব্যাগটা ফেলে রেখে যায়। তাহলে অনেক ঝামেলা থেকে বেঁচে যাবে। টাকা পয়সার ক্ষতি পুষানো যায়। কিন্তু ঝামেলাগুলো সবাই এড়াতে চায়।
কিন্তু ছিনতাইকারি গুলো এত ভালো ছিল না। এত ভাল হলে কি আর ছিনতাই করতো। তারা কিছুই ফেলে যায়নি। কি আর করার। ওখান থেকে তারা সরাসরি থানায় চলে যায়। থানায় গিয়ে জিডি করে আসে যাতে পরবর্তীতে কোন সমস্যা না হয়। এদিক দিয়ে সকালবেলায় আমিও বারবার ফোন দিচ্ছিলাম যে পৌঁছালো কিনা। কিন্তু মোবাইল বন্ধ দেখে আমারও বেশ টেনশন হচ্ছিলো।কিন্তু কিছু করার নেই। খোঁজ নেওয়ার কোন উপায় নেই। অনেক পরে বাসায় গিয়ে আমাকে ফোন করে জানায়। তখন ওর ব্যাগে বাটন মোবাইল ছিল এক্সট্রা একটা। সেই মোবাইলটা দিয়ে আমাকে ফোন দেয়। ওই সময় মনে ছিল না যে তার ব্যাগে এক্সট্রা একটা ফোন আছে। বাসায় আসার পর তার মনে পড়ে।
এরকম ভয়ংকর ঘটনা গুলো এখন খুব একটা ঘটে না। কিন্তু তার থেকে বড় বড় ভয়ংকর ঘটনা এখন ঘটে যাচ্ছে আমাদের চারপাশে। তাই সবাই সাবধানে থাকবেন।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি অর্থনীতিতে অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা,আর্ট করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে এবং ব্লগিং করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আগে কিন্তু চুরি-ডাকাতি এগুলো বেশি হত। মানুষ যখন একা চলাফেরা করতো বা রাত্রিবেলা একা ফেলে মানুষের থেকে সব নিয়ে যেত। তবে আপনার হাজবেন্ডের সাথে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে ভাগ্য ভালো সবকিছু নিয়ে গেল তার ক্ষতি করে নাই। তবে অনেক সময় চোরেরা বা ডাকাতেরা টাকা পয়সা নিয়ে মানিব্যাগ গুলো ফেলে দেয়। তবে আপু আমাদের এই দিকে এখনো এরকম ঘটনা ঘটে রাত্রেবেলা। মানুষের কাছ থেকে যা পাই নিয়ে যাই। আর আপু চোর ডাকাত এই কাজগুলো করে তারা কখনো ভাল মনের হয় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন ভাইয়া আগেকার দিনে তো অনেক রাতে অথবা ভোরের দিকে একা বের হওয়াই যেত না। যাই হোক ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হঠাৎ করে এরকম একটা ঘটনা ঘটে গেলে তখন পাশ থেকে দৌড় দিলেও ভয় লাগে যদি কিছু একটা করে বসে । আর দুজনে মিলে একসাথে গিয়েছে একজনকে ফেলে রেখে দৌড় দিলে বিষয়টা আসলেই ভাল হত না । অত সকাল বেলা রাস্তাঘাট সত্যি অনেক নিরিবিলি থাকে তখন ভয় লাগে । আর এটা ঠিক বলেছেন ছিনতাইকারীরা যদি অতটা ভালো হতো তাহলে কি আর ছিনতাই করত । ওরা হাতের কাছে যা পায় তাই নিয়ে দৌড় দেয় ভাগ্যিস ছুরিটা বসিয়ে দেয়নি ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন আপু। কিন্তু পাশের জনকে ফেলে দৌড় দিতেও ইচ্ছা করে না। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে এ ধরনের ঘটনা একটা সময় অনেক বেশি প্রচলন ছিল। এখনো যে একেবারেই নেই তেমনটা বলা যাবে না ।নিরিবিলি পরিবেশ পেলে এখনো এই ছিনতাইকারি গুলো এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। যার কারণে গভীর রাত বা খুব ভোর এই সময়টা এভয়েড করে চলাই ভালো। ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এখন এরকম খুব একটা শোনা যায় না। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে আপু ছিনতাই এর ঘটনা এখন সব জায়গাতেই প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে। তবে একটা জিনিস জেনে একটু ভালো লাগলো যে, আপনার হাজবেন্ডের পাশে থাকা লোকটিকে ছেড়ে আপনার হাসবেন্ড পালিয়ে আসেনি। এটা কিন্তু উনি খুব ভালো একটা কাজ করেছিলেন। আসলে ছিনতাইকারীরা এত খারাপ হয় যে আপনি খালি মানিব্যাগ কেন, কোন কিছু চাইলেই তাদের থেকে পাবেন না। আসলে ওই পরিস্থিতির ভিতর দিয়ে যারা যায়, তারাই একমাত্র বুঝতে পারে যে কি বিপদে পড়েছিল তারা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ওরকম অবস্থায় কি পাশের জনকে ফেলে রেখে পালিয়ে আসা যায়। যাই হোক ভাইয়া ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
না আপু, সেটা তো ঠিক । আসলেই এরকম অবস্থায় কাউকে ফেলে আসা যায় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit