আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
মানুষের জীবনে বিপদ বলে কয়ে আসে না। হুট করে দেখা যায় যে এমন কোন বিপদ এসে পরে যে তার সমাধান খুবই জটিল। তাছাড়া আমাদের জীবনেরও এক মুহূর্তের ভরসা নেই। তারপরও প্রতিনিয়ত জীবন নিয়ে আমাদের কত রকমের বাহাদুরি। ভবিষ্যতের জন্য কত পরিকল্পনা করে রাখি আমরা। কিন্তু আমরা কেউ জানিনা যে ভবিষ্যতে আমরা কতদিনই বা বেঁচে থাকতে পারবো। বড় কোন বিপদের সম্মুখীন হতে যাচ্ছি কিনা তারও কোন ঠিক নেই। এত কিছুর পরও আমাদের জীবনে স্বাভাবিকভাবে চলতে তো হয়।
আজকে আমার হাজবেন্ডের কাজিন এর মেয়ের কথা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। মেয়েটির বয়স ১৫ বছর। বেশ কিছুদিন ধরে পেটের প্রবলেম হচ্ছিল। ব্যথা এবং পেট খারাপ। সাধারণত এরকম ছোটখাটো প্রবলেমে আমরা ডাক্তারের কাছে খুব কম যাই। ওরাও প্রথমদিকে ডাক্তারের কাছে খুব একটা যায়নি। ফুড পয়জনিং বা গ্যাসের প্রবলেম মনে করে বাসাতেই ট্রিটমেন্ট করছিল। আস্তে আস্তে যখন প্রবলেমটি বড় হতে থাকলো তখন রংপুরে গিয়ে ডাক্তার দেখালো। ডাক্তারও টেস্ট করে প্রথমে বলল যে ওর নাকি পেটের মধ্যে দুটি নাড়ি পেচিয়ে আছে। অপারেশন করে ঠিক করতে হবে। অপারেশন করার জন্য সব প্রস্তুতি নেয়া হলো। অপারেশন করতে গিয়ে ডাক্তার দেখল যে নাড়ির নিচে একটি টিউমার রয়েছে এবং টিউমারটি বেশ ছড়িয়ে গিয়েছে। তাই বায়োপসি করার জন্য স্যাম্পল ঢাকায় পাঠালো এবং কিছুদিন হসপিটালে থাকার পর ও বাড়িতে চলে গেল। তারপরও শরীর কিছুতেই ঠিক হচ্ছিল না। এক সপ্তাহ পর বায়োপসি রিপোর্ট আসলো। রিপোর্টে ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এখন তাকে ভালো চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে এই খবর একটি পরিবারকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে ফেলল। একে তো মানসিক কষ্ট তার উপরে আবার অর্থনৈতিক চাপ। একটি ক্যান্সার রোগের ট্রিটমেন্ট করতে মোটামুটি সচ্ছল পরিবারেরও হিমশিম খেতে হয়। এত ব্যয়বহুল ট্রিটমেন্ট এটি। তাছাড়া দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ। এত দীর্ঘ সময় ধরে এত ব্যয় বহুল চিকিৎসা করার পরেও কোন ভরসা নেই যে আদৌ পুরোপুরি সুস্থ হবে কিনা। একটি সাজানো-গোছানো সংসার হঠাৎ করে এমন একটি খবরে দিশেহারা অবস্থা। ঢাকায় যেহেতু এসেছে আমার হাসবেন্ডকে সবসময় সবকিছুতে সাহায্য করতে হচ্ছে। তাছাড়া কিছুদিন আমাদের বাসাতে এসে ছিল। হসপিটালে দুই সপ্তাহ থাকার পর সব টেস্ট করার পর এখন কেমো শুরু করতে হবে। আগামীকাল থেকে কেমো শুরু হবে। এখন জানি না এই কেমোর ধকল সহ্য করতে পারবে কিনা। কেমোর অনেক সাইড ইফেক্ট থাকে। অনেকেই দেখা যায় যে এ ধকল সহ্য করতে পারে না। যদিও ডাক্তার বলেছে যে ১ বছর ১০ টি কেমো পুরোপুরি দিতে পারলে এই ক্যান্সার সেরে যাবে। বাকিটা আল্লাহ ভরসা। মেয়েটির জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমার হাসবেন্ডকে দেখে শুনে ট্রিটমেন্ট করাতে হচ্ছে এবং আমাদের বাসায় যাওয়া আসা হচ্ছে তার জন্য খুব টেনশনে আছে আমার হাসবেন্ড। দু-একটা কেমো দেওয়ার পর ইন্ডিয়া যাওয়ার কথা। এখন জানি না কতদূর কি হবে।
পরিবারের কারো এরকম অসুখের যেন পরতে না হয় আল্লাহর কাছে সব সময় সে দোয়াই করি। সবাই সাবধানে থাকার চেষ্টা করবেন। আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
@tipu curate
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted 👌 (Mana: 1/8) Get profit votes with @tipU :)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বিপদ সত্যি বলে কয়ে আসেনা।আপনার পোস্টটি পড়ে খুব খারাপ লাগলো। ১৫ বছরের ছোট একটি মেয়ে তার এমন করুন অবস্থা সত্যিই খুব খারাপ লেগেছে জেনে। দোয়া করি কেমো থেরাপিগুলো দিয়ে সুস্থ হয়ে উঠুক।ধন্যবাদ আপু আপনাকে আপনার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খবরটা শোনার পর আমাদের কাছেও খুবই খারাপ লেগেছিল। কি আর করার এখন দেখা যাক আল্লাহ ভরসা। দোয়া করবেন আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি একেবারে বাস্তব কথা বলেছেন আপু। বিপদ কখনো বলে আসে না। আর যখন কোন বিপদ আসে তখন চারপাশ থেকে বিপদ আসতে থাকে। আসলে মেয়েটির কথা শুনে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। আল্লাহ যেন তাকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেই এই প্রার্থনা করি সৃষ্টিকর্তার কাছে। পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কখন যে কে কোন বিপদে পড়ে যায় তার কোন ঠিক নেই। এজন্য সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত আমাদের। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মেয়েটার বাবা মার মনে যে কি চলছে এটাই শুধু ভাবছি আপু। এইটুকু একটা মেয়ে। জীবন এখনো শুরুই হয় নি। কেমোর ধাপগুলো যে কতটা কঠিন নিজের বন্ধুর খোঁজ খবর নিয়ে এখন অনেকটাই বুঝে গিয়েছি। আর তাছাড়া পানির মত টাকা খরচ সব কিছুতে। তারপরও যেন সুস্থ হয়ে উঠে এটাই প্রার্থনা করি সব সময়। আমাদের জীবন যে কতটা আনসার্টেন এই ঘটনা গুলো একদম চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় বার বার।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার হাসবেন্ড সবসময় দোড়াদৌড়ি করছে জন্য বুঝতে পারছি যে এরকম ট্রিটমেন্টে কি রকম অসুবিধায় পড়তে হয়। এখন বাকিটা আল্লাহর হাতে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুবই খারাপ লেগেছে আপনার এই পোস্টটি পড়ে আমার কাছে। ১৫ বছরের একটা মেয়ের এরকম একটা কঠিন রোগ হয়েছে, সত্যি ভাবতেই কিরকম জানি লাগছে। আসলে কার বিপদ কখন আসে এটা কেউ বলতে পারেনা। আর আপনি ঠিকই বলেছেন বিপদ বলে করে আসেনা। মেয়েটার জন্য দোয়া করি। যেন মেয়েটা পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে এটাই দোয়া করি। ক্যান্সার রোগটা অনেক খারাপ। যাদের অনেক টাকা-পয়সা রয়েছে তারাও বেশি কিছু করতে পারে না, মাঝে মাঝে তাদেরও টাকা শর্ট খায়। এই মেয়েটা যেন তার পিতা মাতার কোলে ফিরে যেতে পারে এটাই কামনা করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দুইজন ডাক্তারকে দেখানো হয়েছে দুজনই বলেছে যে কেমো দিলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এখন ধৈর্য ধরা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যিই আপু বিপদ কারো কখনো বলে ফেয়ে আসে না। মহান সৃষ্টিকর্তা যখন যাকে ইচ্ছা তখন তাকে যে কোন অবস্থায় রাখতে পারে। আসলে আপু, মেয়েটির জন্য আমার মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেল। আসলে এত অল্প বয়সে এরকম জটিল রোগ মোকাবেলা করাটা নিঃসন্দেহে খুবই কঠিন। আর এক থেকে দশটি কেমো দেওয়া আরো কঠিন। আমি মেয়েটির সার্বিক সুস্থতা এবং দীর্ঘ আয়ু কামনা করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এমন একটা অসুখ যে কারো হলেই ভেঙে পরাটাই স্বাভাবিক। চিকিৎসা কতদূর কি হয় বোঝা মুশকিল। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য। দোয়া করবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit