আমার ছোট্ট সোনার প্রথম হাতে খড়ি

in hive-129948 •  10 days ago 
হ্যালো বন্ধুরা,আসসালামু আলাইকুম। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

আজ আবারও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে চলে এসেছি। সবসময় চেষ্টা করি নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করার। এতে নিজের কাছে যেমন ভালো লাগে তেমনি আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে। যাই হোক এতক্ষণে আমার টাইটেল দেখে নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন কি বিষয়ে আলোচনা করতে এসেছি। হ্যাঁ,আমার ছোট্ট সোনার প্রথম হাতে খড়ি নিয়ে আমার যে অনুভূতি তা শেয়ার করবো। সময় কত দ্রুত চলে যায়। মনে হচ্ছে এইতো কিছুদিন আগে আমার কোল আলো করে আমার সোনামনি এসেছে। এরমধ্যেই কত তাড়াতাড়ি সে বড় হয়ে গেলো। শৈশবের সময়টা কত মধুর থাকে। সারাক্ষণ খেলাধুলা দৌড়াদৌড়ি আর দুষ্টুমিতেই কেটে যায় শৈশব।


IMG_20241109_182136.jpg


কিন্তু বর্তমানের বাচ্চারা যেনো শৈশবের আনন্দ ভালো ভাবে অনুভবই করতে পারে না। তবে গ্ৰামের ছেলে মেয়েরা যাও পারে শহরের ছেলেমেয়েরা একদমই পারে না। তার কারণ বলছি,আমার সময়ের কথা যদি বলি, তখন কিন্ডারগার্টেন বলতে কিছু ছিল না। তারজন্য তাড়াতাড়ি স্কুলে যাওয়ার ও কোনো প্যারা ছিল না। আমার মনে আছে যখন ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হতে গিয়েছি তখন আমাকে ডান হাত মাথার উপর দিয়ে এনে বাম কানে ধরতে বলে। যদি এটা করতে পারি তাহলে স্কুলে ভর্তি নেবে। এই কাজ করতে হলে বেশ ভালোই বড় হতে হয়।


কিন্তু বর্তমানের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একদমই ভিন্ন তাদের ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে স্কুলে ভর্তি হতে হয়। হয়তো দু-একটি স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা নেয়না। তাছাড়া এখন ছোট থেকে ভালোভাবে গড়ে তুলতে হলে কিন্ডারগার্টেন এ দিতেই হবে। কারণ প্রাইমারিতে এখন আর আগের মতো পড়া হয় না যার কারণে অভিভাবকরা প্রাইমারি স্কুলে ভরসা পায় না। কিন্ডারগার্টেনে যেহেতু প্লে থেকে শুরু হয় তারজন্য তাড়াতাড়ি স্কুলে দিতে হয় আর এরজন্য বাচ্চারা একটু বড় হলেই লেখাপড়া শুরু হয়ে যায়। আমিই তো ভেবেছিলাম এই জানুয়ারিতে স্কুলে ভর্তি করাবো।


IMG_20241109_182119.jpg

IMG_20241109_182101.jpg


কিন্তু আমার মা সহ সবাই নিষেধ করে। সবাই বলে এত তাড়াতাড়ি স্কুলে দিলে ছেলে একদমই খেলার সময় পাবেনা। তাছাড়া পড়ালেখার খুব চাপ পড়ে যাবে। আমার ছেলের মার্চের ১ তারিখ ৪ বছর পূর্ণ হবে। তারজন্য চিন্তা করলাম পরের বছর স্কুলে দিবো। স্কুলে দেওয়া মানেই লেখাপড়া শুরু হয়ে যাওয়া। বাসা থেকে যদি লেখা শিখিয়ে দেওয়া যায় তাহলে চাপ একটু কম হবে। সেজন্যই মাঝে মাঝে নিয়ে বসা হয়। আমি চক দিয়ে না লিখিয়ে প্রথমেই পেন্সিল দিয়ে দিয়েছি। কারণ চক দিয়ে লেখা শিখলে পরে বাচ্চাদের পেন্সিল ধরতে একটু সমস্যা হয়। এমন অনেক বাচ্চা দেখেছি।


আমার ছেলে মাশাআল্লাহ একবার দেখানোর পরই সে খুব সুন্দর ভাবে পেন্সিল ধরা শিখে গিয়েছে। আমি লেখা শেখানোর জন্য এর আগেও অনলাইন থেকে একটি ট্যাববুক এনেছিলাম। কিন্তু প্রথমে আনন্দ পেলেও পরবর্তীতে নষ্ট করে ফেলে। কিন্তু এবার ম্যাজিক বোর্ড এনে দিয়েছি আর এটাতে সে লিখে খুব মজা পায়। কারণ এটাতে পাশেই একটা বাটন রয়েছে যেটা টানলে লেখা মুছা যায়। আমার ছেলে খুব সহজেই এই কাজ করতে পারে। যারজন্য তাকে সকাল বিকাল লেখাতে বসতে হয়। আমার ছেলে পড়ালেখার প্রতি মাশাআল্লাহ অনেক আগ্ৰহ রয়েছে।


IMG_20241109_181752.jpg


প্রথম প্রথম আমার হাতে ধরে লিখতো, এরপর বেশ কয়েকদিন এভাবেই চলে। তারপর দু'দিন আগে আমাকে বলে আম্মু দেখো আমি লিখতে পারি। এরপর দেখলাম সে একা একাই লিখে ফেললো। যেহেতু একা একাই এই অক্ষর লিখেছে তাই চিন্তা করলাম স্মৃতি হিসেবে কিছু ছবি তুলে রেখে দেই। আমার ছেলের জন্ম থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত সব ছবি তুলে রেখে দিয়েছি যাতে সে সব কিছু বড় হয়ে দেখতে পারে। আমি কবে যে হাতে খড়ি দিয়েছি কিছুই মনে নেই। তাছাড়া দেখার মতো তো কোনো ছবিও নেই। তারজন্য স্মৃতি হিসেবে ছেলের হাতের প্রথম অক্ষর ছবি তুলে রেখে দিলাম।


এভাবেই হয়তো ছোট ছোট স্মৃতি জমা হতে হতে একদিন পাহাড় সমান হবে আর এরমধ্যেই আমার ছোট্ট সোনা মনি অনেক বড় হয়ে যাবে। যাই হোক অনেক কথা বলেছি আজ আর নয় আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্টের মাধ্যমে। সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।

IMG_20220215_193615.png



IMG_20240506_013055.jpg

আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।

আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।



C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNpz9QdwayY5Yi9CLY9MtT8LrEqRdgJNMVyDhfNXBpAU4Pibi529MgNWfUK56xyKKaicF23jVAW.png


C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ (1).png


PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||

PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9ms6NJyqDC7SoahBpoJnjzoXmRuaVTHyxffJTSjt3HCAJgZmTWQYSXVqA6yXF9TSJcoosKhzkudZxYGzUmXmso6pY5QuuDF.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP


RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png

|| Join Heroism Discord Server for more Details ||


PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png


6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzjgLRjxHs8JAMB6ULKgCguwFsxxDtbaGet2J9gobyymu4ue2NS8bb4qtHrGne8E1HF3v3sd1Ursyhxjwk.png


PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png


C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ (1).png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঠিক বলেছেন আপু আজকাল শহরের ছেলে মেয়েরা খেলার সময়ই পায় না। না আছে খেলার মাঠ না আছে সময়। ৩ বছর হতে না হতেই স্কুলে ভর্তি করতে হয়। অনেক স্কুলেতো প্লে সেকশনে ৪ বছরে বাচ্চাদের নেয় ।এর বেশি হলে নিতে চায়। প্লে সেকশনে ভর্তি পরীক্ষা লাগে না। কিন্তু এরপর আবার ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয়। তাই অনেক বাবা মা প্লে ক্লাসে ভর্তি করে দেয় যাতে বাচ্চার পরীক্ষা দিতে না হয়। তবে বাচ্চা একটু বড় হলেই স্কুলে দেয়া ভালো।

হ্যাঁ আপু বাচ্চারা একটু বড় হলে দেওয়াই ভালো। আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

আপু আপনি ঠিকই বলেছেন এখনকার ছেলে মেয়েরা শৈশবের আনন্দ উপভোগ করতে পারে না। তবে যারা গ্রামে থাকে তারা মোটামুটি আনন্দ উপভোগ করতে পারে। তবে এখন চার বছরের বাচ্চাদেরও স্কুলে ভর্তি নাই। চার বছর হওয়ার পরই ভর্তি করে দেওয়া ভালো আমার মনে হয়। তাহলে বাচ্চারা খেলার সুযোগও পাবে সাথে করে পড়াশুনা ও শিখতে পারবে।

হ্যাঁ আপু সেজন্যই আরও পরে ভর্তি করানোর চেষ্টা করছি। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।

প্রথমে আপু আপনার ছোট শোনার জন্য অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো। আসলে দেখে মনে হচ্ছে হাতের লেখা খুব সুন্দর। আশা করছি খুব সুন্দর ভাবে সে একদিন বড় হয়ে ভালো লেখাপড়া শিখবে। মন থেকে দোয়া রইল। ধন্যবাদ আপু শেয়ার করার জন্য।

ভাইয়া চেষ্টা করছি হাতের লেখা সুন্দর করানো, ইনশাআল্লাহ হয়ে যাবে। দোয়া করবেন। ধন্যবাদ।

আপনার ছেলের জন্য আমার আন্তরিক শুভকামনা রইল। আপনার ছেলের চার বছর বয়স হয়েছে তাই স্কুলে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন। আমাদের এদিকে বাচ্চারা আড়াই তিন বছর বয়স থেকেই স্কুলে যায়। আসলে গ্রামীণ পরিবেশ না থাকার ফলে স্কুলে গিয়ে বাচ্চারা অনেক বেশি সামাজিক হয়ে ওঠে। আমিও আমার মেয়েকে অনেক ছোটবেলায় দিয়েছিলাম। তবে ও স্কুল যেতে বেশ মজাই পেত। আপনার ছেলে লিখতে শিখেছে দেখে বেশ ভালই লাগছে। এত আদর আর ভালোবাসা দিলাম পুচকে সোনাকে।

আপু আমার ছেলেও স্কুলে যেতে চায় কিন্তু আমি চাচ্ছি না এখন দিতে। বাসায় আরও কিছুদিন দুষ্টুমি করে নিক তারপর দেবো। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।

আপনার ছোট্ট সোনার প্রথম হাতে খড়ি দৃশ্যগুলো দেখে খুবই ভালো লাগছে। আসলে ছেলে মেয়েরা যে কখন বড় হয়ে যায় বোঝাই যায় না। এভাবে ধীরে ধীরে লেখালেখি করতে করতে একদিন সবকিছুই শিখে যাবে ইনশাআল্লাহ। আপনার অনুভূতি অনেক সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ।

হ্যাঁ ভাইয়া ছেলেমেয়েরা যে কখন বড় হয়ে যায় বোঝাই যায় না। আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ।

একজন মায়ের কাছে এটি সত্যি খুব আনন্দের একটি বিষয়। আপনার ছেলে লিখতে শুরু করে দিয়েছে। আপনার অনুভূতিমূলক পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপু ।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

ঠিক বলেছেন আপু একজন মায়ের কাছে এটি অন্যরকম এক অনুভূতি। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

এখনকার বাচ্চারা ম্যাজিক বোর্ড দিয়েই লেখা শিখে থাকে। ডিজিটাল যুগে কি আর বাচ্চারা চক দিয়ে লিখবে নাকি হা হা হা। যাইহোক স্কুলে দেওয়ার আগে বাসায় যতটা পারেন সময় দিয়ে অনেক কিছু শেখানোর চেষ্টা করুন,সেটাই ভালো হবে। এক বছরে অনেক কিছুই শিখতে পারবে। তাছাড়া আপনার ছেলের বেশ ভালোই আগ্রহ আছে মনে হচ্ছে। যাইহোক আপনার ছেলের জন্য দোয়া রইলো আপু।

এখনও অনেক জায়গায় চক দিয়ে লেখা শেখানো হয়। কিন্তু আমি তা চাইনি তারজন্য ম্যাজিক বোর্ড নিয়ে আসলাম। হ্যাঁ ভাইয়া ছেলের লেখা পড়ার প্রতি খুব আগ্ৰহ রয়েছে। দোয়া করবেন। ধন্যবাদ।