ভ্রমণ :- মুছাপুর ভ্রমণ ।

in hive-129948 •  3 months ago 

20240613_112810.jpg

হ্যালো বন্ধুরা,

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। ভ্রমন করতে কম বেশি আমরা সবাই পছন্দ করি। আর ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে বলুন, আমি তো যেকোনো জায়গায় ঘুরতে খুবই পছন্দ করি। তাই জন্য মাঝেমধ্যেই সময় পেলে ঘোরাঘুরি করার চেষ্টা করি। আসলে সারাদিন ঘরে থাকলে প্রতিনিয়ত কাজের মধ্যেই কাটে। আর মাথার মধ্যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের চাপ ঘুরে বেড়ায়। তাই জন্য যদি একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসতে পারি ভীষণ ভালোই লাগে। তেমনি আজকে আপনাদের মাঝে ভ্রমণ করার মুহূর্ত শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের ও ভীষণ ভালো লাগবে।

20240613_153954.jpg

হঠাৎ করে ঘুরতে যাওয়ার জন্য দাওয়াত পেলাম। আসলে আমরা প্রতিনিয়ত নিজ ইচ্ছামত ঘুরতে যাই বিভিন্ন জায়গায়। কিন্তু হঠাৎ করেই একজন বড় ভাই বললেন তাদের সাথে যাওয়ার জন্য। ঘোরার কথা শুনলে আমরা আবার নিষেধ করি না ‌ । শুধু যাওয়ার পরিকল্পনা করি। আসলে বড় ভাইয়ের একটি কোচিং সেন্টার রয়েছে। তার স্টুডেন্টদের নিয়ে একটি পিকনিকের আয়োজন করেছে। আবার একসাথে বিদায় অনুষ্ঠান করবে। সেজন্য আমাদের তাদের সাথে যাওয়ার কথা বলেছে।

20240613_104538.jpg

আমরা শুনে এক কথায় রাজি হয়ে গেলাম। এবং তারা দুটি মাইক্রোবাস নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা গিয়েছিলাম মোটরসাইকেল করে। যাওয়ার সময় আমরা তিনজন একসাথে মোটরসাইকেল করে গিয়েছিলাম। নাশিয়া গাড়িতে অনেক দুষ্টামি করেছিল। এরপরেও মুহূর্তটা বেশ ভাল ছিল। আসলে মুছাপুর যাওয়ার আগ মুহূর্তের রাস্তাটা অনেক বেশি সুন্দর। দুই পাশে সবুজ গাছপালা গুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে ভীষণ ভালো লাগে। যতবারই আমি গিয়েছি ততবারই এই মুহূর্তটা অনেক বেশি অনুভব করেছি। এবং যাওয়ার সময় দেখলাম নদীর মধ্যখানে অনেকগুলো গরু। এ বিষয়টা দেখে আমাদের অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। গরুগুলো খুবই শান্তভাবে সেখানে বসে আছে। উপরের ছবিতে আপনারা দেখতে পেলেন।

IMG-20240625-WA0001.jpg

এর কিছুক্ষণ পর দেখলাম রাস্তার মধ্যে হাজার হাজার গরু একসাথে। আসলে মুছাপুর চর এলাকা এজন্য সেখানে অনেক গরু পালন করে থাকে। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হয়েছে যেন গরুর মিছিল হচ্ছে। এরপর আমরা পৌঁছে গেলাম মুছাপুর ক্লোজার। অনেক সুন্দর এবং বাতাস ছিল অনেক বেশি। যখন সাগরের জোয়ার আসে তখন অনেক বেশি ভালো লাগা কাজ করে সবার মাঝে। আমরা যখন গিয়ে পৌঁছেছি তখন জোয়ার ছিল না। যার কারণে এত বেশি ভালো না লাগলেও চিন্তা করেছি জোয়ার আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করব। কারণ যখন জোয়ার আসে তখন অনেক বড় বড় ঢেউ দেখা যায় সাগরের মধ্যে।

IMG-20240625-WA0002.jpg

এরপর দেখলাম একটি ব্যাঙের ছাতা 🤪☂️। আসলে মানুষদের নদীর পাড়ে বসার জন্য ব্যাঙের ছাতার মত করে বসার স্থান তৈরি করেছেন। এটি দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছিল। আমরা অনেকক্ষণ পর্যন্ত সেখানে বসে ছিলাম। বসে বসে নদীর দিকে তাকিয়ে সময় কাটিয়েছিলাম। এবং বাকি স্টুডেন্টরা আসার জন্য অপেক্ষা করলাম। তারা আসতে অনেক দেরি করে ফেলেছিল। এরমধ্যে আমরা নিজের মত করে ঘুরাঘুরি করলাম। নদীর পাড়ে বসে সময় কাটাতে আমার ভীষণ ভালো লেগেছিল। আসলে নদীর পারে প্রচুর বাতাস থাকে। মনে হয় যেন বাতাসে আমাদের ফেলে দিবে। নদীর পাড়ে বসে বসে নদীর দিকে তাকিয়ে থেকে অনেক সময় কাটিয়েছি।

20240613_125043.jpg

এরপর গেলাম একটি নারিকেল বাগানের পাশে। সেখানে আমার এবং আমার মেয়ের অনেকগুলো ছবি তুলেছি। সেখান থেকে কয়েকটা ছবি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি। নিজের ছবি তুলতে ভালো না লাগলেও তুলেছিলাম। কিন্তু নাশিয়ার বেশি ছবি তোলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু মেয়েটার দুষ্টামির জন্য ছবি তুলতে পারি না বেশি। তার বাবা অনেক কষ্ট করে কয়েকটা ছবি তুলেছিল। ছবিগুলো আমার বেশ ভালো লেগেছিল। প্রথমে আমি যে ছবিটা আপনাদের মাঝে দিয়েছি সেটি আমার খুবই পছন্দ হয়েছিল। যার কারণে সর্বপ্রথম ওই ছবিটা ব্যবহার করেছি। আশা করি আপনাদের কাছেও অনেক ভালো লাগবে।

20240613_120104.jpg

আসলে গাছ দুইটির সাথে মেয়েটির ছবি আমার বেশি ভালো লেগেছিল । আমার থেকে তার বাবার অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। কারণ তার ছবি তোলার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। যখনই গাছটি দেখেছে, সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে নিয়ে বসিয়ে দিয়ে ছবি তুলে ফেলল। যখন ছবি তুলল এবং আমাদের সবার অনেক ভালো লেগেছে, সে অনেক বেশি খুশি হয়েছিল। মেয়েটার ছবিগুলো সবার কাছেই অনেক পছন্দ হয়েছিল।

20240613_112810.jpg

এ ধরনের মুহূর্তগুলো আসলে সব সময় অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে নাশিয়া অনেক বেশি মজা করেছিল। নদীর পাড়ে গিয়ে এত দুষ্টামি আর কখনো করে নাই। সারাক্ষণ হাসিখুশি ছিল। এরপর আমরা অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন জোয়ার আসে। আসলে জোয়ারের ঢেউ আমি কখনো দেখি নাই। বিভিন্ন সময় সাগরে গেলেও ঢেউ দেখেছি কিন্তু জোয়ারের ঢেউ কখনো দেখা হয় নাই। তাই জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন জোয়ার আসে। জোয়ারের পরবর্তী সপ্তাহে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। পরের পর্বে অনেক মজার কিছু স্মৃতি শেয়ার করব। আজকের মত এখানে শেষ করলাম আল্লাহ হাফেজ।

20240613_120630.jpg

আমার পরিচয়

DSC00912.jpg

আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।

🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀

আসুন সবাই মন খুলে বাংলায় ব্লগিং করি

IMG-20220501-WA0005.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

মুছাপুর আমার খুব প্রিয় একটি জায়গা। আমার যখনই মন খারাপ থাকে তখন আমি মুছাপুর যাই। আপনারা মুছাপুর ঘুরতে গেলেন জেনে খুব ভালো লাগলো। মুছাপুর দেখার মত অসাধারণ কিছু জায়গা রয়েছে। বামনি নদী এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য গুলো সত্যিই অসাধারণ। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

মুসাপুর আসলেই অনেক বেশি সুন্দর একটা জায়গা।

মুছাপুর ভ্রমণ করতে গিয়ে সুন্দর সময় উপভোগ করেছেন। আপু এধরনের জায়গা গুলোতে ভ্রমণ করতে গেলে অটোমেটিক মন ভালো হয়ে যায়। আপনার মেয়ে মাশাআল্লাহ ভীষণ কিউট। আপনার মেয়ের হাসি আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। মা এবং মেয়ের ছবিতে সুন্দর লাগতেছে। আপনার মেয়ের জন্য দোয়া রইল। আমাদের সাথে আনন্দ উপভোগ করার মুহূর্ত গুলো ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলে নাশিয়া তো অনেক বেশি ভালো সময় কাটিয়েছিল মুছাপুর। সব সময় আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন এভাবে।

মামনির মিষ্টি হাসি দেখে প্রাণ জুড়িয়ে গেল। মুছাপুর ভ্রমণ করেছেন দেখে ভালো লাগলো। পরিবার নিয়ে ঘুরতে যেতে অনেক ভালো লাগে। নাশিয়া অনেক আনন্দ পেয়েছে জেনে ভালো লাগলো। দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।

হ্যাঁ নাশিয়া অনেক আনন্দ পেয়েছে।

আমারও ভালো লাগে ঘোরাঘুরি করতে। বিশেষ করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নতুন কোন জায়গায় ঘুরে আসতে পারলে বেশ ভালো লাগে। আপনারা তো ঘুরতে গেলেন মুছাপুর। আপু জায়গাটি দেখতে খুবই সুন্দর যা আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে বুঝতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ আপু খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করলেন আমাদের সাথে।

আপনিও ঘুরাঘুরি করতে পছন্দ করেন শুনে খুব ভালো লাগলো।

মুছাপুর ভ্রমণ করতে গিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করলেন আপু। নাশিয়া নদীর তীরে গিয়ে অনেক মজা করছে সব সময় হাসি খুশি থেকেছে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। কোন জায়গায় গিয়ে বাচ্চারা এমন মজা করলে নিজেদের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে আপনি পরবর্তী পর্বে আমাদের সাথে নদীর জোয়ার আসার পর্ব শেয়ার করবেন জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আপনার পরবর্তী পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম আপু।

পরবর্তী পর্বে ওইটা দেখতে পাবেন। অপেক্ষায় থাকুন তাড়াতাড়ি শেয়ার করার চেষ্টা করবো।

আপনার মেয়ের মিষ্টি হাসিতে মন জুড়িয়ে গেলো আপু।খুবই কিউট লাগছে আপনার মেয়েকে।দারুন একটি জায়গায় ঘুরতে গিয়েছেন দেখে ভীষণ ভালো লাগলো।মুছাপুর জায়গাটি দেখছি খুবই সুন্দর।সকলে মিলে বেশ মজা করেছেন তা আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলোর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

আসলে সবাই মিলে যাওয়াতে অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি।

প্রথমেই বলবো ছোট্ট পরীটাকে বেশ কিউট লাগছে। মাশাল্লাহ হাসিটা অনেক সুন্দর। একদম ঠিক বলেছেন আপু সারাদিন বাসায় কাজ করতে করতে অনেক চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায় তখন বাহিরে ঘোরাঘুরি করলে একটু ভালো লাগে। বিশেষ করে বিকেলে ঘোরাঘুরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আপনাদের ঘুরাঘুরির মুহূর্ত দেখে বেশ ভালো লাগলো আপু। ধন্যবাদ আপু আপনাদের কাটানো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

আসলে আমাদের থেকেও আমার মেয়েটা বেশি আনন্দ করেছিল মুছাপুর গিয়ে। তার আনন্দ দেখে আমাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছিল। অনেক দুষ্টামি করেছিল সে।

মুসাফির ভ্রমণ করতে গিয়ে খুব সুন্দর সময় উপভোগ করেছেন আপনি। বাবুর মিষ্টি হাসিটা দেখে প্রাণ যেন জুড়িয়ে গেল। বিশেষ করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কোন জায়গায় ঘুরতে গেলে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। বামনি নদী ও প্রাকৃতিক দৃশ্য গুলো সত্যি দেখতে অসাধারণ লাগছে।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি ভ্রমন পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

  ·  3 months ago (edited)

আসলেই সবাইকে নিয়ে এরকম জায়গায় যেতে অনেক বেশি ভালো লাগে। কারণ সবাই গেলে ভালো সময় কাটানো যায়।

জি আপু আপনি ঠিকই বলেছেন।