ক্যানভা দিয়ে তৈরি
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি চলে এসেছি চোর ধরার দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। এর আগের পর্বে আমি বলেছিলাম আমাদের বাড়ির পাশের একটা বাড়িতে চুরি হয়েছিল। তারা বাড়ির অনেক সরঞ্জাম চুরি করেছে। কিছু সরঞ্জাম নিয়ে গিয়েছিল এবং কিছু সরঞ্জাম নেওয়ার আগেই সবাই তাদেরকে ধরে ফেলেছিল। অর্থাৎ ছোট ছেলেটাকে ধরেছিল শুধু বড়টাকে ধরতে পারেনি। কয়েকজন লোক বড় ছেলেটার পেছনে দৌড়িয়ে ছিল কিন্তু তাকে ধরতে পারেনি। কিছু মুহূর্তের মাঝেই ছেলেটা কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিল তাই তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারপরে সবাই মিলে সেই ছোট ছেলেটাকে কি করবে তা ভাবতে লাগলো। আজকের পর্বে ছোট ছেলেটার সাথে কি করেছে তা নিয়েই বলবো।
আসলে ছেলেটা যেহেতু কিছুটা ছোট ছিল তাই তাকে তেমন কিছুই করেনি। প্রথমে ছেলেটাকে এমনিতে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছিল। প্রায় কয়েক ঘন্টা এমনিতেই বেঁধে রাখার পরে ছেলেটার চুল একেবারে ফেলে দিয়েছিল একটা লোক। তারপরে এই অবস্থায় তাকে কিছুক্ষণ আবারও বেধে রেখেছিল। তারপরে আমাদের এই এলাকার কমিশন কে ডাকা হয়েছিল তাকে কি করবে এটা জিজ্ঞেস করার জন্য। ছেলেটাকে সবাই অনেক জিজ্ঞেস করেছিল তার সঙ্গী সাথীরা কোথায় থাকে। ছেলেটা বলেছিল তাদের তেমন কোন থাকার জায়গা নেই তারা যেখানে পারে সেখানেই থাকে। এরপর ছেলেটার থেকে তার মালিকের নাম্বার সংগ্রহ করে সবাই মিলে।
এরপর একটা লোক তার মোবাইল থেকে কমিশনের সামনে চোরের মালিককে ফোন দেয়। ফোন দেওয়ার পরে কেউই ফোন ধরেনি অনেকবার ট্রাই করেছিল। চোরের মালিক অচেনা নাম্বার দেখেই বুঝতেই পেরেছিল এখান থেকেই কেউ ফোন দিতেছে। চোরের সঙ্গী চোরের মালিক কে গিয়ে সবকিছু বলেছিল প্রথমেই। আসলেই সঙ্গী যাওয়ার সময় ভ্যান গাড়িটি নিয়ে যেতে পারেনি। ভ্যান গাড়িটি পরে নিয়ে যাওয়ার জন্য যখন কেউ আসছিল না তখন কমিশন বলল এই ছোট ছেলেটি অর্থাৎ চোরটিকে যেন ছেড়ে দেয়। চোরটিকে চলে যাওয়ার আগে সবাই ভাত খাওয়ার জন্য গিয়েছিল। এবং ছেলেটি ভাত খাওয়ার পরে অনেক মানুষই এসেছিল তাকে দেখার জন্য।
চোরটিকে যখন বেঁধে রেখেছিল বাড়ির সামনে তখন আমরা সবাই দেখেছিলাম তাকে। ও এমন ভাবে বসে ছিল যে তার কোন চিন্তাই ছিল না। সে নিশ্চিন্তে বসেছিল। তাকে সবাই ছেড়ে দেওয়ার আগে অনেকবার বলেছে আর যেন চুরি না করে। ছেলেটা যদিও সবাইকে বলেছিল সে আর চুরি করবে না কিন্তু সে চুরি করবে না কি করবে না তা তো আর কেউই জানে না। ছেলেটার ভ্যান গাড়ি রেখে দিয়েছিল সবাই। আর যে আসবাবপত্রগুলো নিয়ে যেতে পারেনি তা ঘরে ঠিকমতো রেখে দিয়েছিল। ছেলেটিকে ছাড়ার আগে তার ফ্যামিলিকে ফোন দেওয়া হয়েছিল। আসলে তার ফ্যামিলি এইখানে থাকেনা। তারা থাকে অন্য একটা গ্রামে। যেখানে এই ছেলেটি যায় না। চুরি করে যে টাকা পায় তার ফ্যামিলির কাছে পাঠিয়ে দেয়। আর এমনিতে তার বাবা দোকান করে।
যখন তার ফ্যামিলি চুরির কথা শুনলে তখন অনেক কান্নাকাটি করেছিল। তখন তারা কান্না করতে করতে তাদের ছেলেকে বলতে লাগলো," তোকে আমরা পাঠিয়েছিলাম এখানে কোনরকম কাজ করে আমাদের টাকা পাঠানোর জন্য. তোর ফ্যামিলির খরচ চালানোর জন্য. কিন্তু তুই এখানে এসে যে চুরি করবি তা আমরা কখনোই জানতাম না"। এভাবে অনেক কথাই বলেছিল তার ফ্যামিলি থাকে। আসলে ছেলেটা ছিল তার ফ্যামিলির একেবারে ছোট ছেলে। তারা মোট ভাই বোন ৯ জন। তার বড় আরো ৮ জন ভাইবোন রয়েছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে ফ্যামিলির জন্য টাকা পাঠায়। কেউ বাড়িতে থেকে দোকান করে। এভাবেই তাদের সংসার চলতো। এরপর সবাইকে তার ফ্যামিলি সব কিছু বলে।
আসলে তাদের ফ্যামিলির আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। সবাই তাদের ফ্যামিলির কথা যখন শুনেছিল তখন বুঝতে পেরেছিল তাদের এরকম কষ্ট। কিন্তু তাদের ছোট ছেলেটা যে চুরি করবে তা তারা কখনোই বুঝতে পারেনি। তারপরে ছোট ছেলেটা তার ফ্যামিলির পা ধরে অর্থাৎ বাবা-মার পা ধরে ক্ষমা চেয়েছিল। তারপরে কয়েকজন লোক তাদেরকে কিছু টাকা দিয়েছিল। ছেলেটির বাবার হাতে কিছু টাকা দিয়ে বলেছিল, "আপনার ছেলেকে দেখে শুনে রাখবেন. সে যেন আর চুরি না করে তাকে বলবেন"। এরপর তারা বলে আমাদের ছেলে আর কখনোই চুরি করবে না। এরপর তাদেরকে সবাই বিদায় দেয়। তারপরে সবাই ভাবতে লাগে ভ্যান গাড়িটি দিয়ে কি করবে। এরপর তারা ভ্যান গাড়িটি বিক্রি করে যাদের ঘরে চুরি হয়েছিল তাদেরকে সেই টাকাগুলো দেয়। কারণ তাদের অনেক টাকার জিনিস প্রথমেই নিয়ে গিয়েছিল।
এভাবেই চুরির এই ঘটনাটার সমাপ্তি ঘটে। আসলে আমাদের সবারই উচিত নিজেদের সন্তানদেরকে বাইরে কাজ করানোর আগে তাদেরকে একটা কাজ খুঁজে দেওয়া এবং তারা যেন চুরি না করে তার জন্য ছোট থেকেই শিক্ষা দেওয়া। এই ছোট ছেলেটির মতো অনেক ছেলেই রয়েছে মালিকের কথা শুনে চুরি করে। তাদের মালিক যখন তাদেরকে চুরি করার কথা বলে তখন তাদের উচিত মুখের উপর জবাব দেওয়া এবং সেখান থেকে চলে আসা। যাইহোক এভাবেই আমি আমার আজকের গল্পটা শেষ করছি। আশা করছি সম্পূর্ণ গল্পটা পড়ে আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করার। আশা করছি সম্পূর্ণটা পড়বেন।
( সমাপ্ত )...
আমার পরিচয়
আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।
🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀 |
---|
বড় ছেলেটাকে না ধরতে পারলেও ছোট ছেলেটাকে ধরতে পেরেছিল। সবশেষে এই চোরকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছিল কমিশন। ছেড়ে দেওয়ার আগে ভাত খাওয়ার জন্য দিয়েছিল তাকে। তারপরে ছেলেটার ফ্যামিলি কে জানানো হয়েছিল এবং অনেক কিছুই হয়েছিল সেখানে বুঝতেই পারছি। আসলে পরিবার থেকে দূরে চলে এসেছিল ছেলেটা, টাকা রোজগার করার জন্য। এখানে এসে সে অন্যের সাথে চুরি করার জন্য লেগে গিয়েছিল। এরকম চোর গুলো গ্রামের দিকে এখন অহরহ দেখা যাচ্ছে। এরকম চোরদের কারণে দিনে দুপুরেও ঘর থেকে বাহির হওয়া যাবে না। খুবই সুন্দর লিখলেন চিচকে চোর গল্পটা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন এখন এই ধরনের চোরের কারণে ঘর থেকে বাহির হওয়া যায় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit