ছেলের দাঁত নিয়ে ভোগান্তি শেষ পর্ব

in hive-129948 •  2 months ago 

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।



IMG-20240907-WA0001.jpg


আজকে আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আবার আপনাদের সাথে শেয়ার করব ছেলের দাঁতের শেষ পর্যন্ত কি সমস্যা হয়েছিল সেটার বাকি অংশ । সমস্যাটা আসলেই হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছিল যার কারণে আমরা আগে থেকে কিছু বুঝতেই পারিনি । নরমালি ওয়েট করছিলাম যে ছেলেটার দাঁতটা নড়বে কবে এবং নাড়িয়ে ফেলতে হবে সেই চিন্তাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল । কিন্তু এর ভেতরের যে পাশের দাঁত নড়ে গিয়ে এরকম একটা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হবে সেটা তো ভাবতেই পারিনি । যাই হোক শেষ পর্যন্ত সমস্যাটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি এটাই বড় ।কথা


ঐদিন ডাক্তারের কাছ থেকে ফিরে এসে বেশ চিন্তায় পড়লাম ।তারপরও ডাক্তার আবার বিভিন্ন কথা বলেছিল সেটাও মাথার ভিতরে ঘুরপাক খাচ্ছিল । ওর সামনে দাঁতগুলো এখনো পড়ছে না কেন না পড়লে ফেলে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে সেটা শুনেও আমাদের কাছে তেমন একটা ভালো লাগেনি । কারণ দাস এমনিতেই একা একাই নড়বে এবং একা একা উঠে যাবে সেটাই জানি । আর দাঁত আগেই ফেলে দিতে হয় সেটা প্রথম শুনলাম এজন্য এই ডাক্তার সম্পর্কে মনের ভিতরে কেমন যেন ভয় কাজ করছিল । তাই ভাবছিলাম আর এর ওর পরামর্শ নিতে চেষ্টা করছিলাম যে কি করা যায় । তারপর পাশের বাসার ভাবির সাথে আলাপ করলাম উনিও শুনে কিছুটা অবাক হলো । যে এতটুকু বাচ্চার দাঁত কেন রুট ক্যানেল করতে হবে । কারণ দাঁত ফেলে দিলেই হয় পরবর্তীতে যখন উঠবে তখন দেখা যাবে । তখন ভাবি এটা শোনার পরে বলল যে আমি তোমার ভাইয়ের সাথে একটু আলাপ করি তারপর তোমাকে জানাবো । এরপর ভাবি ভাইয়ের সাথে আলাপ করলেন এবং রাতের বেলা ভাবি আর ভাই দেখলাম বাসায় এসেছে । তখন ওনারা বলল যে এত ছোট বাচ্চার রুট ক্যানেল করলে বাচ্চাটা অনেক কষ্ট পাবে তার থেকে ভালো আমাদের পরিচিত এবং অনেক বড় একজন ডাক্তার রয়েছে যিনি স্কয়ার হসপিটালে বসেন তার কাছে গিয়ে গিয়ে । একটু দেখে আসি দেখি সে কি বলে যদি একই কথা বলে তখন চিন্তা ভাবনা করা যাবে ।


আপনাদের সাথে আগে শেয়ার করেছি ওনারা আমার ছেলেটাকে খুব আদর করে এবং ওনার ছেলের মতই ওকে ভালোবাসে যার কারণে ও ব্যথা পাবে সেটা নিয়ে উনারাও একটু চিন্তিত ছিল । আমরাও রাজি হলাম তখন তারা বলেছে তাহলে ফোন করে ডাক্তারের সিরিয়াল টা নিয়েনি । ভাবীরা যখন বাসায় গিয়ে ফোন দিল সিরিয়ালের জন্য তখন ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়া গেল না । আরো 15 দিন পরে নাকি তার সিরিয়াল রয়েছে তার আগেই সব ফিলাপ হয়ে গিয়েছে । তখন তো ভাবি চিন্তায় পড়ে গেল এবং একটু রিকোয়েস্ট করলো বলল যে ছোট বাচ্চা দাঁত নিয়ে অনেক কষ্ট পাচ্ছে তখন অ্যাসিস্ট্যান্ট বলল যে আপনি যেহেতু পুরনো রোগী তাহলে আপনি সরাসরি রোগীকে নিয়ে চলে আসেন । ডাক্তারের সাথে আলাপ করে দেখেন দেখাতে পারেন কিনা । সেই মোতাবেক আমরা পরের দিন সরাসরি সেখানে চলে গেলাম এবং বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করার পরে ডাক্তারের সাথে দেখা করলে ডাক্তার সিরিয়াল নিতে বলল । পরে আমরা গিয়ে রিসিপশনে টাকা জমা দিয়ে সাথে সাথে সিরিয়ালটা নিয়ে নিলাম ।


বেশ খানিকটা সময় আমরা অপেক্ষা করলাম কিছু রোগী দেখা হয়ে গেলে তারপর আমাদের ডাক পড়লো । ঢোকার সাথে সাথে ডাক্তার এক্সে রিপোর্টটা দেখল এবং ছেলের দাঁত দেখে জিজ্ঞাসা করলে কি সমস্যা । পরে বললাম যে কি কি সমস্যা হয়েছে সেটা শুনে ডাক্তার দাঁত দেখল এবং বলল যে কে ফিলিং করেছে । আমি বললাম কোথা থেকে করেছি পরে ডাক্তার বলেছে এই দাঁত ফিলিং কিংবা রুট ক্যানেল কোন কিছুতেই রাখা যাবে না । এটা সরাসরি ফেলে দিতে হবে এবং পাশে আরো একটি দাঁত ও পোকায় বেশ খানিকটা খেয়ে ফেলেছে সেটাকে ফিলিং করে দিতে হবে । দাঁত ফেলে দিতে হবে সেটা শুনে আমি একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম । দাঁত ফেলতে নাকি অনেক কষ্ট হয় । তখন ডাক্তার আমার চেহারা দেখেই বুঝতে পারল এবং বলল যে দাঁত ফেলতে কোন সমস্যা হয় না । দরকার হয় আপনি আজকে ফিলিং করে যান একটু অভ্যস্ত হয়ে যাবে পরের দিনের এসে ফেলে দিয়েন । পরে আমরা দাঁত ফেলতে চলে গেলাম ফেলার জন্য আবার অন্য রুমে যেতে হয় ।


ডাক্তার সেখানে নিয়ে ছেলেকে শুইয়ে দিল ছেলেটা প্রথমে একটু ভয় পাচ্ছিল কিন্তু ডাক্তারের ব্যবহার এবং ডাক্তারটা এতো ভালো যে ছেলেটার সাথে এমনভাবে কথা বলছিল এবং এমন ভাবে ওকে বোঝাচ্ছিল যে ছেলেটা তখন আর ভয় পাচ্ছিল না । বরং ডাক্তারকে চুপ থেকে একটু হেল্প করলো ।এরপর ফিলিং করা হয়ে গেলে ডাক্তার তখন বলল যে আপনাদের বাসা যেহেতু দূরে তাহলে আপনারা আজকে কিন্তু দাঁত তুলে যেতে পারেন। তখন আমি বললাম যে ব্যথা লাগবে না তখন ডাক্তার বলল যে এটা ফেলতে একটু ব্যাথা লাগবে না অল্প সময়ের ভিতর তুলে ফেলা যাবে । তখন ডাক্তার নিজেই ছেলেকে রাজি করালো এবং সে রাজি হয়ে গেল এবং কিছু সময়ের ভিতরেই দাঁত তুলে ফেলা হলো । যদিও ছেলে এবং আমি প্রথমদিকে ভয় পেয়েছিলাম । আমি কান বন্ধ করে রেখেছিলাম না জানি ছেলেটা চিৎকার করে । কিন্তু দেখলাম যে মাত্র ৫ সেকেন্ডের ভিতর দাঁত তুলে ফেলা হলো যদিও অন্যান্য কাজ করতে একটু সময় লেগেছিল । তারপরও অল্প সময়ের ভেতরে দাঁত তুলে ফেলেছিল । যাই হোক দাঁতটা তুলেও ফেলল এবং পাশেরটা ফিলিং করে দিল মোটামুটি সব দিক দিয়েই ফিট হয়ে গেল আর কোন সমস্যা রইলো না । এরপর আমরা নিচে গিয়ে বেশ জম্পেশ খানাপিনা করলাম এরপর বাসায় চলে আসলাম । এই কদিনে আসলেই আমার খানাপিনাও একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যার কারণে খুব মজা করি ওই দিন খেয়েছিলাম আসার আগে ।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসsamsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png *** VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আপু বাচ্চাদের দাঁতের সমস্যা হলে টেনশনের শেষ থাকে না। আমার ছেলেকে নিয়েও টেনশনে রয়েছি। প্রথম ডাক্তার কেন এই কথা বললো সত্যিই বুঝতে পারলাম। সময় হলে তো দাঁত এমনেতেই পড়ে যায় আর নতুন দাঁত উঠে। তবে আপনারা ডাক্তার চেঞ্জ করে ভালো করেছেন,তা না হলে হয়তো আপনার ছেলের আরও কষ্ট হতো। অবশেষে দাঁত ফেলে দিয়েছেন আর ছেলেও ব্যথা পায়নি জেনে ভালো লাগলো। বাচ্চাদের সমস্যা হলে খাওয়া দাওয়ার খবর থাকে না। আপনারা সেই দিন আসার সময় জমিয়ে খাওয়া দাওয়া করেছেন জেনে খুশি হলাম। আপনার ছেলের জন্য দোয়া রইল।

কষ্ট হবে দেখেই তো শেষ পর্যন্ত ফেলে দিলাম তারপরও ভাগ্যিস ও ব্যথা পাইনি এটাই বড় কথা ।