ছেলের চোখের পরীক্ষার জন্য আবার ডাক্তার এর কাছে যাওয়া

in hive-129948 •  5 months ago 

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।




আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ছেলেকে নিয়ে আবার চোখের ডাক্তারের কাছে গিয়ে চোখ পরীক্ষা করানোর অনুভূতি । আপনাদের সাথে কদিন আগে শেয়ার করেছি যে ছেলেকে নিয়ে আবার নতুন ডাক্তারের কাছে গিয়েছি । সেখানে গিয়ে ডাক্তার ভালো মতো চোখ পরীক্ষা করে দেখেছে এবং আগের কাগজপত্র গুলো দেখে ডাক্তার ছেলের চোখ ভালো মতো পরীক্ষা করার জন্য দুটো টেস্ট দিয়েছে । আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম কোন সমস্যা আছে কিনা । তখন ডাক্তার বলল যে পরীক্ষা করে দেখতে হবে যে কেমন পাওয়ার ওর চোখে আছে এজন্য এই টেস্ট দুটো করতে হবে । ডাক্তার বলেছে যে পরীক্ষা করানোর আগে চোখে একটা ওষুধ এপ্লাই করতে হবে এবং সেই ওষুধটা দেওয়ার তিন ঘণ্টা পরে এসে পরীক্ষাটা করতে হবে । আধা ঘন্টার মধ্যে দুই চোখে দুই ফোঁটা করে দশ মিনিট পরপর দিতে হবে আধা ঘন্টা । এই ওষুধটা দেয়ার ফলে চোখের মনিটা বড় হয়ে আসবে এবং সেই মুহূর্তে চোখের টেস্টটা করতে হয় । এই ড্রপটা দেওয়ার পরে চোখে কিছুটা ঝাপসা দেখা যায় সেটা নিয়ে টেনশন করবেন না ।

20240724_172200.jpg


যথারীতি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা সবকিছু জেনে গেলাম এবং শনিবারে টেস্ট করার জন্য সিদ্ধান্ত নিলাম । আমরা ওইদিন সব প্রিপারেশন নিয়ে নিলাম এবং আগে থেকে ফোন দিয়ে জেনে নিলাম ঐদিন ডাক্তার বসবে কিনা । সেই মোতাবেক আমরা ওষুধ নেওয়া শুরু করলাম । তিন ঘন্টা পরে যেহেতু টেস্টটা হবে সে কারণে আমরা বাসা থেকে ওষুধটা নিয়ে তারপর হসপিটালে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করলাম । প্রথমে দুই চোখে দুই ড্রপ দেওয়ার পরে ছেলেটা তেমন কোন কিছু বলেনি তবে দ্বিতীয় ড্রপটা দেওয়ার একটু পর থেকেই ছেলেটা বারবার বলছে মা আমি চোখে ঝাপসা দেখছি তোমাকে ভালোমতো দেখতে পারছি না । যদিও ডাক্তার বলে দিয়েছিল তারপরও আমার কেন জানি না একটুও ভালো লাগছে না । কারণ ছেলেটার ওষুধ দেওয়ার পর কেমন যেন করছে সেটা দেখে আমার নিজের কাছেই খারাপ লাগছে । তারপর ওকে নিয়ে রেস্টে রাখলাম এবং আরো দশ মিনিট পরে লাস্ট ড্রপ দুটো দেয়ার পরে চোখে আরো বেশি ঝাপসা দেখতে লাগলো । সে হাঁটতেও পারছিল না পড়ে যাওয়ার মত অবস্থা হচ্ছিল । সেটা দেখে আমার ভয়ই করছিল ।

20240713_194712.jpg

20240713_183616.jpg

কোথায় যাওয়ার আগে ড্রেস আপ করা ছেলের অনেক শখ বিশেষ করে জুতা তাকে পড়তেই হবে । এটা তার অনেক পছন্দ তাই ডাক্তার এর কাছে যেতে হলে এটা পরে যেতে হলো ।


তারপর আমরা আরো কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে ডাক্তারের চেম্বারে চলে গেলাম এবং তারা যাওয়ার সাথে সাথে সিরিয়ালটা নিয়ে নিল । এরপর চোখের প্রাথমিক টেস্ট করার জন্য তাদের সাথে করে নিয়ে গেল । যদিও আমরা সাথে গিয়েছিলাম । তারপর সেখানে আরো কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে ওরা বলল যে ডাক্তার পরে দেখবে কারণ তিন ঘন্টা হতে এখনো অনেক সময় বাকি । এরপর ওরা টর্চ দিয়ে কিযেন দেখলে এবং বলল যে এখানে চোখের মনি পুরোপুরি বড় হয়নি । আপনারা উপরে গিয়ে প্রিপারেশন নিতে থাকুন । পরে সেখানে গিয়ে আবার আমরা নাম ঠিকানা লিখালাম এবং সেখানে গিয়ে বসার পরে ওরা আবার টস মেরে চোখটা পরীক্ষা করল । বলল যে এখনো টেস্ট করার জন্য রেডি হয়নি আপনারা আরো আধা ঘন্টা সময় অপেক্ষা করুন । পরে আমরা আধা ঘন্টা সময় অপেক্ষা করার পরে ওরা আমাদেরকে ডেকে নিলো ।

20240713_182628.jpg

ডাক্তার এর জন্য অপেক্ষা করছি সেই সময় রাস্তার ছবিটা তুলেছি


টেস্ট করার জন্য ওর বাবাকে দিয়ে ভিতরে পাঠিয়েছিলাম কারণ এসব ব্যাপারে আমার একটু ভয় লাগে । কিন্তু ছেলে আমাকে ছাড়া যাবে না আর ওখানে একজনই যেতে পারবে । পরে আমি ছেলেকে নিয়ে গেলাম । ওরা টেস্ট করার জন্য ওকে বসালো এবং ওরা ভালোমতো চোখটা দেখে চোখের চারটা ছবি তুলে এক্সরে যাকে বলে । সেটা দেখে ডাক্তাররা বুঝে যায় । আর এর জন্য এত পরীক্ষা নিরীক্ষা । তারপর সেই পরীক্ষাটা হয়ে গেলে আমরা রিপোর্টের জন্য 10 মিনিট অপেক্ষা করলাম এবং দশ মিনিট পরে আমাদেরকে রিপোর্ট দিয়ে দিল । পরে আমরা ডাক্তারের চেম্বারে চলে গেলাম । সেখানে গিয়ে আবার ডাক্তার চোখ পরীক্ষা করল এবং ওই রিপোর্টগুলো দেখল । রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বলল যে চোখের পাওয়ার আছে এবং ওকে সবসময়ই চশমা ব্যবহার করতে হবে । সবজি ,ফ্রুটস , মাছ, মাংস খেতে হবে । সাথে টিভি ল্যাপটপ ফোন এগুলো দেখা নিষেধ করেছে ।


প্রথম ভিজিটের একমাস পরে আবার এসে দেখা করতে বলেছে এবং তারপর থেকে তিন মাস তারপরে আস্তে আস্তে ছয় মাস পরে আসলেও হবে । এভাবে করে রেগুলার ডাক্তার দেখিয়ে যেতে হবে । তারপর ডাক্তার দেখানো হয়ে গেলে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে আসলাম এবং বাইরে এসে আমরা ভাবলাম যে এই হসপিটালে একটা কফি শপ আছে সেখানে গিয়ে কফি খাই । কিন্তু সেখানে গিয়ে জায়গাটা তেমনটা পছন্দ হলো না । দেখে আমরা না খেয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম এবং আসার পথে কিছু নাস্তা কিনে নিয়ে এসে বাসায় বসে খেয়ে নিলাম । এখন আল্লাহ করে ছেলেটা ঠিক মতো চশমাটা পড়লেই হয় । আস্তে আস্তে উন্নতি হবে কিনা জানিনা তবে উন্নতি হওয়ার আশা রাখছি । আপনারা সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন ।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসsamsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png *** VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

চোখ আমাদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ।যা ছাড়া আমাদের চলার পথ অসম্ভব।সন্তানের অসুস্থতা মায়ের মনকে অস্থির করে তোলে।চোখ পরীক্ষার সময় ছেলের কথা শুনে আপনার তাই হয়েছিল।দোয়া করি আপনার ছেলে হাসি খুশি থাকুক সবসময়।ধন্যবাদ আপু পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

আসলেই বাচ্চাকাচ্চার কিছু হলে তখন নিজেকে স্থির রাখা কষ্টকর হয়ে যায় । ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য ।

শুনে আমার নিজেরই তো ভয় লেগেছে। বাচ্চারা যদি এরকম বলে যে চোখে ঝাপসা দেখছি তাহলে মায়েদের কি রকম অবস্থায় বুঝতে পারছি। চোখের সমস্যা তাহলে পার্মানেন্ট হয়ে গেল। তারপরও দোয়া করি যেন ধীরে ধীরে কিছুটা হলেও উন্নতি হয়। সাবধানে রাখবেন টিভি মোবাইল থেকে।

একদম তাই সবকিছু জানা সত্ত্বেও আমি অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ।

প্রথমের দিকটা পড়ে সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগছিল। ছোট মানুষ ঔষধ দেওয়ার পর যদি চোখে না দেখে তাহলে তো ভয় পাওয়ারই কথা। আপনি তো ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন মনে হচ্ছে ।যাক আপনারা ডাক্তার ঠিকমতো দেখাতে পেরেছেন এবং সবকিছু ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যেহেতু করছেন আশা করি খুব দ্রুতই ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।