মর্মান্তিক একটি সড়ক দুর্ঘটনা

in hive-129948 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।



image.png

Link


আজ আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি । আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমাদের আশেপাশে ঘটে যাওয়া সত্যিকারের একটি মর্মান্তিক ঘটনা । যে ঘটনাটা সত্যিই শোনার সাথে সাথে অনেক খারাপ লেগেছিল । মানুষের জীবনে অহরহ কত ঘটনায় ঘটে থাকে কিন্তু এ ধরনের ঘটনা আমাদের আসলেই কাম্য নয় ।সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জীবনটাকে একেবারেই তছনছ করে দেয় । আর এরকম দুর্ঘটনা যখন নিজের কোন প্রিয়জনের সাথে ঘটে তাহলে তো একেবারে সব শেষ হয়ে যায় । আর মোটরসাইকেল যদি কারো কখনো এক্সিডেন্ট হয় তাহলে কখনো শোনা যায় যে জায়গার উপরেই সে মারা গিয়েছে । বেঁচে ফিরে আসে খুব কম । সেরকম একটি কাহিনী আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি ।


একটা ছোট ছেলে খুব গরীব সে গ্রাম থেকে শহরে এসেছে কাজের তাগিদে । ছেলেটার বয়স একেবারে অল্প 10-12 বছর হবে হয়তো । একেবারে ইনোসেন্ট একটা চেহারা অথচ যে বয়সে তার লেখাপড়া করার কথা সে বয়সে সে কাজের জন্য ছুটছে । যার বাসায় কাজের জন্য এসেছিল সে বাসার ম্যাডাম তাকে দেখে খুব অবাক হয়েছিল যে এতোটুকু একটু বাচ্চা তাকে দিয়ে কেন কাজ করাতে হবে । সে তখন তার হাজবেন্ড কে বলেছিল এটুকুন ছেলেকে কেন তুমি কাজে রেখেছো । তখন তার হাজবেন্ড বলেছিল ছেলেটা নিতান্তই গরিব তার কাজ করা ছাড়া উপায় নেই । এজন্য সে কাজে এসেছে । আমরা যদি না রাখি হয়তো সে অন্য কোথাও কাজ করবে । সেই থেকে ছেলেটাকে ওই বাসায় রেখে দেওয়া হয়েছিল ।


সেই থেকে সে তাদের অফিসের ছোটখাটো কাজ করত এবং পাশাপাশি ড্রাইভিং শিখত । এই অল্প বয়সে তার কাজের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল তার ছোট ভাইকে মানুষ করা । সে তার ছোট ভাইকে অনেক বেশি ভালবাসত এবং তার জন্য সে শহরে এসেছে কাজ করে তার ভাইটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করবে , সেটাই তার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল । সে সুন্দরভাবে পালন করেও যাচ্ছিল । ছোট ছোট শখগুলো সে তার কখনোই পূরণ করত না সবকিছু তার ভাইয়ের জন্য রেখে দিতে । মনে করত যে এটুকু তার ভাইয়ের জন্য করলে সে অনেক খুশি হবে ।


এভাবে করে সে তার ভাইকে মানুষ করছিল এবং সেই ছেলেটা অনেক বেশি ভাল ছিল এবং অনেক সৎ ছিল যার কারণে সেই বাসার লোকেরা তাকে খুব পছন্দ করতো । ছেলেটা তাদের ছেলে মেয়ে গুলো কেউ খুব ভালোভাবে টেক কেয়ার করতো । এমনকি তারা যখন দেশের বাইরে যায় তখন তারা তাকে সাথে করে নিয়ে যেত । ছেলেমেয়েগুলোকে রেখে যেন তারা দুজনে একটু ঘুরতে পারে । এভাবে করে সে তাদের বিশ্বাস অর্জন করেছিল এবং তাদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা পেত । এভাবে করে ছোট ভাইটাকে মানুষ করছিল । কিন্তু সে কাজের বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা নিত ।সে এবং তার ভাই কখনো কারো কাছে হাত পাততো না । তাদের আত্মসম্মত বোধ অনেকটাই বেশি ছিল ।


দেখতে দেখতে ছোট ভাইটার লেখাপড়ার প্রায় শেষের পর্যায়ে চলে আসে । সে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছিল । এর ভিতরে হঠাৎ করে একদিন তার ছোট ভাইটা বাইক এক্সিডেন্ট করে একেবারে জায়গার উপর মারা যায় । লোকজন ও পুলিশরা তাকে নিয়ে তার ছবি দিয়ে একটা বিজ্ঞাপন দেয় সেখান থেকেই তার বন্ধুবান্ধবরা খোজ খবর পেয়ে সবাই যোগাযোগ করে । তারা চিনতে পেরে সেখানে যায় পরে দেখা যায় যে ছেলেটা এমনভাবে অ্যাক্সিডেন্ট করেছে যে সে জায়গার উপরে মারা গিয়েছে । এখন এই ঘটনাটা ছেলেটার ভাইটা কিভাবে নিবে এটাই একটা ভাবনার বিষয় । যার জন্য সে তার সমস্ত জীবনটা একেবারে বিলিয়ে দিল সেই হঠাৎ করে এভাবে না ফেরার দেশে চলে গেল । এটা কি সে মেনে নিতে পারবে কিন্তু মেনে তো তাকে নিতেই হবে । তা ছাড়া যে তার কোন উপায় নেই । ঘটনাটা একেবারে রিসেন্ট ঘটেছে । এরকম ঘটনা আমাদের কারোরই কাম্য নয় । এরকম সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের কতজনের আপনজন কেড়ে নিচ্ছে । আল্লাহ যেন ছেলেটাকে তার ভাইয়ের শোক সইবার ক্ষমতা দেন এই কামনাই করছি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসsamsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বর্তমান সময়ে বাইক এক্সিডেন্ট গুলো এত মর্মান্তিক আকার ধারণ করেছে সত্যিই খুব খারাপ লাগে। তবে বড় ভাইটা অনেক কষ্ট করে ছোট ভাইকে মানুষ করল। কিন্তু শেষমেশ তার ভালো দেখে যেতে পারলো না। অবশেষে ছোট ভাইটা এত খারাপ অবস্থায় মারা গেল। শুনে অনেক খারাপ লেগেছে আপু।

সত্যি ছেলেটার জন্য আসলেই খুব খারাপ লাগছে । একমাত্র ভাইকে লালন-পালন করে বড় করলেও অথচ সেও তার থেকে চলে গেল ।

আসলে এমন বড় ভয় পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার যে ছোট ভাইয়ের জন্য নিজের জীবনটা বিসর্জন দিতে পারে তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট লেগেছে ছেলেটির বাইক এক্সিডেন্টে মৃত্যুর সংবাদটি শুনে। আসলেই বড় ভাই ছোট ভাইয়ের জন্য জীবন বিসর্জন দিয়ে দিল আর এই দুর্ঘটনার সংবাদ শুনে সে কি রকম রিঅ্যাকশন করবে সেটা ভাবতেই বেশি খারাপ লাগছে।

Posted using SteemPro Mobile