আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে আবার শেয়ার করব আমার ছেলের দাঁতের সেই প্রবলেমের বাকি অংশটুকু । আসলে হঠাৎ করে ছেলের দাঁতের সমস্যা হয়ে গিয়েছিল যেটা আমরা আগে থেকে বুঝতেই পারিনি । ছোট থেকে বড় ধরনের একটা সমস্যা কখন যে হয়ে গিয়েছে সেটা প্রথমদিকে বোঝাই যায়নি । নরমাল দাঁত পড়ে যাবে সেটা ভেবেই আমরা চুপ করে বসে ছিলাম কিন্তু সেখান থেকে যে এরকম ব্লিডিং শুরু হয়ে একটা পর্যায়ে চলে যাবে সেটা ভাবতেই পারিনি। গত পর্বে শেয়ার করেছিলাম ব্লিডিং দেখে ভয় পেয়ে সরাসরি আমরা ডাক্তারের কাছে চলে গিয়েছিলাম । আসলে সেদিন ঘটনাটা ঘটেছিল অনেক বেশি বিশ্রী হয়ে এবং সেটা অনেক সময় নিয়ে আমাদের ভিতরে ঘুরপাক খাচ্ছিল যার কারণে পুরা ঘটনাটা বর্ণনা করতে একটু সময় লাগছে ।
সরাসরি চলে গেলাম ডাক্তার এর চেম্বারে । আমাদের এলাকায় আবার একটা সুবিধা আছে নিচে নামলেই সব ধরনের ডাক্তার এর চেম্বার এবং প্রয়োজনীয় সবকিছুই পাওয়া যায় । আমরা তখন একটা ওষুধের দোকানে ঢুকে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিলাম কোন ডাক্তারের কাছে ভালো হবে । ওরা বলে আমাদের পাশেই একজন ডাক্তার বসে ডাক্তার টা খুব ভালো আপনারা ওনার কাছে যেতে পারেন । যেহেতু দাঁতের কোন প্রবলেম আমার এবং ওর বাবার আগে থেকে নেই এজন্য দাঁতের ডাক্তার সম্বন্ধে তেমন কোন ধারণা নেই । আমরা তাদের কথা মতো সেখানে চলে গেলাম । যাওয়ার সাথে সাথে প্রথমে তারা দেখে বলল যে হঠাৎ করে এই দাঁত টা নড়ল কেন এই দাঁতের সাথে কি হয়েছিল সেটা বলেন । আমি তখন বললাম শুধু পোকা খেয়েছে কিন্তু আর কিছু হয়নি । তখন ওরা বলল যে এটা হতেই পারে না হয়তো এটাতে ও বড়সড় আঘাত পেয়েছে কিংবা কেউ ঘুষি মেরেছে হয়তোবা শক্ত কোন জিনিস কামড় দিয়েছে । আমি বললাম ও কামড় দিয়ে শক্ত কোন জিনিসই তেমন খায় না আর ঘুষি মারা তো দূরের কথা ।
সবকিছু শুনে প্রাথমিকভাবে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করল এবং অনেকক্ষণ চেষ্টার পরে ব্লাড কিছুটা বন্ধ হল কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ হলো না । তখন তো টেনশনে আমার সারা হাত-পা কাঁপছে এবং তারা বলল যে আপনারা ওর ব্লাড টেস্ট করেছেন কবে ?এর ভিতরে ওর কোনো জ্বর কিংবা কোন সমস্যা হয়েছে কিনা সেটা জানতে চাইলো । আমি বললাম যে না এর ভিতরে ওর কোন জ্বর আসেনি আর ব্লাড টেস্ট অনেক আগে করানো হয়েছে এর ভিতর করা হয়নি । সাথে সাথে ওর ব্লাড টেস্ট করাতে দিল এবং সম্পূর্ণ দাঁতের একটা এক্সরে করতে বলল ।বলল যে সব কিছু আগে থেকে আমাকে দেখতে হবে তারপর বুঝা যাবে কেন এই ব্লিডিং হচ্ছে । ওরা কিছুক্ষণ চেষ্টা করার পরে দাঁতের ব্লিডিং থামাতে সক্ষম হলো । বলল প্রাথমিকভাবে আমরা ব্লাড টা বন্ধ করেছি এবং একটু ফিলিং করে দিচ্ছি কিন্তু পরের দিন রিপোর্ট নিয়ে দেখার পরে বোঝা যাবে যে কি করতে হবে । আজকে যাওয়ার সময় ব্লাড টেস্টটা দিয়ে যাবেন আর এক্সরে কালকে করাবেন । সাথে কিছু এন্টিবায়োটিক ও ব্যথার ওষুধ লিখে দিলো খাওয়ানোর জন্য ।
সেই মোতাবেক আমরা চলে গেলাম পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে । সেখানে গিয়ে প্রথমে ব্লাড টেস্টটা করালাম ব্লাড নেওয়ার সময় ছেলেটা অনেক চিৎকার করেছে সেটা দেখেও আমি কিছুটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম । কারণ আমি কখনোই ব্লাড দিতে পারি না আমার খুব ভয় লাগে । তারপরও যাই হোক সব কিছু করে আমার বাসায় চলে আসলাম । বাসায় এসে একটু রেস্ট নিয়ে রাতের বেলা ওকে খাওয়ালাম । খাওয়ানোর কিছুক্ষণ পরে সে বলল যে মা আমার মুখের ভিতরে কেমন যেন লাগছে । তখন আমি হা করে দেখলাম যে আবারও ব্লিডিং শুরু হয়েছে এবং সেটা দেখে সাথে সাথে ওর বাবাকে বললাম । বললাম যে আগে ডাক্তারের চেম্বারে তাড়াতাড়ি ফোন করো । কারণ রাত হয়েছে ডাক্তার নাও থাকতে পারে । ডাক্তার কে ফোন করলাম এবং ডাক্তার বলল যে এখনই ওকে নিয়ে আসেন । সাথে সাথে ওকে নিয়ে গেলাম এবং ডাক্তার আবার বেশ খানিকটা সময় নিয়ে নতুন করে ফিলিং করে সেট করে দিল । আর বলল যে ভাগ্য ভালো এখনই হয়েছে না হলে তো একটু পর আর আমাদের পেতেন না । আমি জিজ্ঞাসা করলাম আবার কি ব্লিডিং হতে পারে কিনা বলল যে দাঁতের নিচে পোকায় খেয়ে গিয়েছে এবং সেখানে একটু মাংস বেড়েছে এবং পলিপ জমেছে যার কারণে সেখানে আঘাত লাগছে আর বিল্ডিং হচ্ছে । রাতে আবার হলেও হতে পারে তখন একটু ভয় পেয়ে গেলাম । বললাম যে রাতে আবার হলে তখন কি করবো তখন প্রাথমিকভাবে একটা ওষুধ দিল বলল যে যদি হয় তখন এটা একটা ভেঙে দাঁতের গোড়ায় দিয়ে রাখবেন আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাবে তবে সময় লাগবে । যাই হোক তখন বাসায় চলে আসলাম কিন্তু আল্লাহর রহমতে রাতে আর তেমন কিছু হয়নি ।
কিন্তু সারাটা রাত অনেক টেনশনে গিয়েছে এবং ভয়ে ভয়ে রাতটা পার করেছি এরপর পরের দিন যথারীতি আবার চলে গেলাম পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেখানে গিয়ে প্রথমে ব্লাডের রিপোর্টটা নিলাম এবং সাথে সাথে রিপোর্টগুলো দেখতে থাকলাম । দেখলাম যে আল্লাহর রহমতে ব্লাডের রিপোর্টে কোন সমস্যা নেই । এখনকার রিপোর্টগুলোতে নিজেরা দেখলেই বোঝা যায় যার কারণে আমি টেস্ট করতে যাওয়ার আগে রিপোর্টটা দেখে নিলাম একটু শান্তির জন্য । তারপর চলে গেলাম দাঁত এক্স-রে করতে সেখানে গিয়ে পুরো দাঁতের এক্সরে করা হলো এবং সেই এক্সরে রিপোর্ট সাথে সাথে দিয়ে দিলে সেটা নিয়ে চলে আসলাম ডাক্তারের কাছে । ডাক্তার রিপোর্টটা দেখে বলল যে ওর ব্লাডে কোন সমস্যা নেই । সমস্যা দাঁতে রয়েছে । দাঁতের নিচে এরকম পলিপ জমেছে এবং মাংস বেড়েছে এই কারণে দাঁতে একটু আঘাত লাগলে ব্লিডিং হচ্ছে । তখন বলল যে ওর দাঁত রুট ক্যানেল করতে হবে । রুট ক্যানেলের কথা শুনে তো আমি একেবারে ভয় পেয়ে গেলাম । কারণ ছোট মানুষ অনেক কষ্ট হবে বড়রাই রুট ক্যানেলের কষ্ট সহ্য করতে পারেনা । তখন সবকিছু শুনে গেলাম এবং পরের দিন থেকে আসতে হবে সেটাও বলে দিল । আমরা ঐদিন বাসায় চলে আসলাম । পরে আমরা কি সিদ্ধান্ত নিলাম সেটা আর এক দিন শেয়ার করব ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit