যখন নৌকাগুলি তাদেরকে নিয়ে রওনা দিলো। তখন শাকিল বুঝতে পারলো এই নৌকা গুলি বেশিক্ষণ ভেসে থাকতে পারবে না। তারা যতো মানুষ রওনা দিয়েছে হয়তো তাদের ভেতর বেশিরভাগ মানুষই মারা পড়বে। একটা সময় গিয়ে শাকিলের ধারণায় সত্যি হোলো। তাদের সামনে থাকা একটি নৌকাকে সে চোখের সামনে ডুবে যেতে দেখলো। কিন্তু চোখের সামনে এতগুলো মানুষ ডুবে গেলেও তাদের করার কিছু ছিলো না। কারণ তাদের আরও যে দু তিনটে নৌকা ছিলো সবগুলি নৌকা ওভারলোডেড ছিলো। তারপরেও তারা কয়েকজন চেষ্টা করেছে কিছু লাইফ জ্যাকেট তাদের দিকে ছুড়ে দিতে। যদিও সে জানে এটা দিয়ে তাদের শেষ রক্ষা হবে না।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
দীর্ঘ সময় ধরে তারা কোন রকম খাবার-দাবার ছাড়াই এই নৌকায় সাগরের বুক চিরে চলতে লাগলো। উদ্দেশ্য এটা ইতালিয়ান সীমান্ত। কখনো দিনের বেলায় তাদের নৌকা সমুদ্রের বুক চিরে চলতে লাগলো। আবার কখনো রাতের নিকষ কালো অন্ধকার চিড়ে তাদের নৌকা এগিয়ে যেতে থাকলো। এইভাবে কয়েকদিন চলার পরে তারা দূরে কিছু জাহাজের আলো দেখতে পেলো। তবে সেই জাহাজগুলো তখনও তাদের নৌকা থেকে অনেক দূরে ছিলো। জাহাজের আলো দেখতে পেয়ে নৌকার সমস্ত মানুষেরা উল্লাসিত হয়ে উঠলো। সবার মৃত প্রায় চোখে জীবনের আশার আলো দেখা যেতে লাগলো। এভাবে আলো দেখার পরে সবগুলো নৌকা সেই জাহাজের আলো উদ্দেশ্য করে চলতে লাগলো।
শাকিলদের নৌকাটা যখন সেই আলো থেকে আর মাত্র দু এক কিলোমিটার দূরে ঠিক তখন শাকিলদের নৌকাটা ডুবে গেলো। যখন যাত্রা শুরু করে তখন শাকিলদের সবাইকে একটা করে লাইফ জ্যাকেট দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু শাকিলদের সামনে যখন আরেকটা নৌকা ডুবে যাচ্ছিলো তখন শাকিল তার লাইফ জ্যাকেটটা সেই নৌকার একজনকে ছুড়ে দিয়েছিলো। যার ফলে উত্তাল সমুদ্রে শাকিল অল্পক্ষণের ভেতরেই ডুবে গেলো। আর সেই সাথে তার স্বপ্নেরও সলিল সমাধি হোলো। আর পিছে পড়ে রইল তার পরিবারের কিছু উৎসুক চোখ। যারা হয়তো বাকি জীবনটা শাকিলকে খুঁজে ফিরবে। তবে উত্তাল সমুদ্রে ডুবে যাওয়া এই শাকিলদের আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।