জীবন যুদ্ধে টিকে থাকা জেরিন।।10% beneficary for @shyfox & 5% abb-school ❤️

in hive-129948 •  last year 

image.png

Llink

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি জেনারেল পোষ্ট শেয়ার করবো। আমি যার গল্প শেয়ার করবো সে আমার ক্লাসমেট, আমার বান্দবী। যার জন্য আমি তার ছবি শেয়ার করতে পারছি ন। যদিও তার ছবি আমার মোবাইলে আছে তারপরও তার ছবিটা শেয়ার করার ইচ্ছা আমার নেই।

গতকাল আমি আর আমার আম্মু হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। ডাক্তার থেকে ঐষুধ নিয়ে আসার পথে আমার এক বান্দবীর সাথে দেখা হয়। তার নামই জেরিন। আমি তার নামের একটি অক্ষর এখানে ব্যবহার করেছি। সম্পূর্ণ নামও ব্যবহার করিনি। কারন এই কমিউনিটিতে আমার আরেকজন বান্দবীকে ইনভাইট করেছি। সে যদি এখানে আমার প্রফাইলে তার নামের পোষ্ট দেখে সে আবার জেরিনকে বলতে পারে। তখন জেরিন হয়তো কষ্ট পাবে। তাই ছদ্ম নাম ব্যবহার করেছি।

জেরিনরা তিন বোন। জেরিন সবার বড়। জেরিন ষষ্ট শ্রেণীতে আমাদের ক্লাসে ভর্তি হয়। ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণীতে তার সাথে আমার তেমন বেশি কথা বার্তা হয়নি। তবে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় সে আমার ক্লোজ বান্দবীতে পরিনত হয়। পরে খোজঁ খবর নিয়ে জানতে পারি জেরিন আমাদের গ্রামের মেয়ে। সে তার নানা বাড়িতে থাকে,সেখানে থেকেই পড়াশোনা করছে। তবে ‍দুঃখের সংবাদ হলো তার বাবা বেচেঁ নেই। তার সবার ছোট বোনটা তার মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় তার বাবা মারা যায়। তারপর থেকে তারা সবাই নানার বাড়িতে থাকে। জেরিন যখন ক্লাস সেভেনে পড়ে তখন তার ছোট বোন মানে দ্বিতীয় জন চতুর্থ শ্রেনীতে পরে। জেরিনের মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে তাদের দুইবোনকে পড়াশোনা করাচ্ছে।

আমরা একদিন প্রাইভেট পড়ে আশার সময় আমাদের রেলওয়ে স্টেশনে ছোট একটি মেয়েকে শাক বিক্রয় করতে দেখি। আমার এক বান্দবী আমাকে জানায় যে সে জেরিনের ছোট বোন। আমি তখন মেয়েটার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলাম। জেরিনকে প্রায় সময় দেখতাম ছেড়া,জোড়া তালি জামা পড়ে স্কুলে যায়তো। একদিন আমার আর আমার বোনের কয়েকটা জামা একটি ব্যাগে করে আমি জেরিনের বাসার খাটের উপর রেখে এসেছিলাম। যেটা আমি এখনো কাউকে বলি নাই। এমনকি জেরিনও জানে না। পরের দিন জেরিন সেখান থেকে একটি জামা পড়ে স্কুলে গিয়েছিল। তখন তাকে দেখে আমি এত খুশি হয়েছি যা বলার অপেক্ষা রাখে না।

মানুষকে কোন কিছু গিফট করলে এত আনন্দ লাগে সেটা আমি ঐদিন উপলব্দি করেছিলাম। তাদের সংসারের এত কষ্ট,অভাব জেরিনকে পড়াশোনা থেকে আটকাতে পারে নি। জেরিন এইট পাশ করে আমাদের সাথে সাইন্স নিয়ে পড়েছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি জেরেন পুরাতন মোবাইল ক্রয় করে বিভিন্ন জাগায় বিক্রয় করতো,টিউশনি করতো। সেখান থেকে কিছু লাভের টাকা দিয়ে আর তার মায়ের অনেক কষ্টে জমানো কিছু টাকা দিয়ে তারা একটি গরু ক্রয় করেছিলো। তারপর সেটা মা আর মেয়ে পালন করে বড় করে ঈদুল আজহায় বিক্রয় করে আবার গরু কিনেছিলো। এভাবে তারা গরু পালন করে টাকা জমিয়ে তাদের নানার দেওয়া অল্প একটু জায়গাতে একটি ঘর তৈরী করে। সেখানে তার তিন বোন আর মাকে নিয়ে বসবাস করে।

একসময় জেরিনের ভাল একটি জায়গা থেকে বিয়ে আসে। জামাই হলো ডাক্তার। জেরিন একটু মোটা আর গায়ের রং শ্যামলা সুন্দর। জেরিনকে দেখে ডাক্তার জামাই পছন্দ করে। যার সাথে যার জোড়া লেখা আছে,তার সাথে বন্ধন হবেই। তারপর জেরিনের মা দুইটি বড় গরু বিক্রয় করে জেরিনের বিয়ে দেয়। এখন জেরিনের একটা ছেলে বাবু আছে,সে হাসবেন্ডের সাথে ঢাকায় থাকে এবং সুখে আছে। জেরিন তার নিজের হাত খরচের টাকা থেকে কিছু কিছু টাকা দিয়ে তার দুই বোনের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। জেরিনের মা এখনো গরু পালন করে। সব মিলিয়ে বর্তমানে মোটামুটি ভাল অবস্থানেই আছে। জেরিন সুখে আছে জেনে আমার খুব ভাল লেগেছে। মানুষ চেষ্টা করলে তার ভাগ্য বদলাতে পারে, তার বাস্তব প্রমান জেরিন।

জীবনটা হলো একটি যুদ্ধ ক্ষেত্র। এই যুদ্ধে সবাইকে লড়াই করে বাচঁতে হয়। জীবনে যত বাধাঁই আসুক না কেন, সব বাধাঁ পেড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যেখানে আমাদের চেষ্টা শেষ হবে সেখান থেকেই সফলতার বীচ বপন হবে। সবাইকে ধন্যবাদ।।

APJuWYdNufXfexVJdadzh84ubwxgJmQjFLw8A4brEnLhiN3yPNYivGJdqH6B9D1B9GXFbD3dJzQrYgDA2fPfS3ZHNhhEkcpTcJnN3QULYgUTRVotiJ123jGrA41SH2EjaT7L14Q39dw5rYykqAVuEdE1gSbZnp5vSsPJrcnUbUBfGHFw64k.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqrigHRpcui9esXgmzET2bzsQeMg4RmCSqymiE62YF9FX9CSeYHcZbStqFqiFen18HjyXNbtXG.png

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7J8W9NZEbNsUTLEMkrtgqwUMHmRbAh6UqX4xVw4ivcS7bbpBquT2w2543nYruerj3XBGzuKvCPijibJe6h1hHzcjF.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

আপনি ঠিক বলেছেন আপু। জীবনটা হলো একটি যুদ্ধ ক্ষেত্র। অনেক সুন্দর একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করেছেন। জেরিন সুখে আছে জেনে আমিও খুব খুশি হলাম। সংসারের অভাব সব চেয়ে বড় অভাব। জেরিন এর পরিবারের জন্য দোয়া রইল।

জি ভাইয়া জেরিনের এই সুখ যেন সব সময় থাকে, আমিও ওর জন্য দোয়া করি। আপনারও দোয়া করবেন।ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগল। সত্যি আপু জীবন হলো যুদ্ধ ক্ষেত্র। মানুষ অনেক চেষ্টার বিনিময়ে আর ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে। যাইহোক আপু জেরিনের জন্য অনেক দোয়া রইল। ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।

  ·  last year (edited)

জ্বী ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন মানুষ অনেক চেষ্টার বিনিময়ে তার ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে যেমন জেরিন তার ভাগ্যকে পরিবর্তন করেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

অনেক সময় বড়দেরকে অনেক দায়িত্ব নিতে হয়। তাইতো জেরিন নিজের দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছে এবং এখনো নিজের হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে তার আপন মানুষগুলোকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

জি আপু বড়দের অনেক দায়িত্ব নিতে হয়, তেমনই জেরিন ও তার দায়িত্বে পিছপা হয়নি। ওর জন্য দোয়া করবেন। আপনার জন্য ও দোয়া রইল। ধন্যবাদ আপু।

জেরিন এর জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার বিষয়টা পড়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে আপু। অনেক কষ্ট করে তিনি গরু ক্রয় করেছিল এবং ঘর দিয়েছিলো। সে সময় তিনি আবার অনেক ছোট ও ছিলেন। আসলে যার ভাগ্য যেখানে লেখা থাকে তার তো বিয়ে সেখানেই হয়। ডাক্তারের সাথে বিয়ে হওয়ার পর তার লাইফটা একেবারে সেটেল হয়ে গিয়েছিল। তিনি এখন নিজের বোনদের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছে এবং তাদের সবার অবস্থান ভালো এটা জেনে ভালো লাগলো।

জি আপু ওর জীবনটা অবাক করার মত, ওর কঠোর পরিশ্রমে ওকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।ধন্যবাদ আপু।