মেয়ের টিকা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

in hive-129948 •  6 months ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছোট নুসাইবা কে টিকা দিতে গিয়েছিলাম। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা দিতে গিয়ে যেসব অভিজ্ঞতা হয়েছে তা আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। চলুন তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রের টিকা দেওয়ার বর্ণনা আপনাদের মাঝে শেয়ার করি।

Device- Redmi not-8
Date-11-03.2024

আজকে আমার মেয়ের ৪৫ দিন পুর্ণ হয়েছে। ৪৫ দিনের ভিতরে নাকি শিশুদের টাকা দিতে হয়। আবার তার মাঝেও কালকে থেকে মাহে রমজান। রমজান মাসে বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন অফিস আদালত বন্ধ থাকে। যদি কালকে থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বন্ধ থাকে তার জন্য আজকে নুসাইবা কে টিকা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ যাওয়া। আমি আমার হাজবেন্ডের সাথে ঢাকা নারায়ণগঞ্জে থাকি। আমি বাসা ছাড়া কোন কিছুই চিনি না। মুসাবার আব্বু অফিস থেকে আমাকে ফোন করে বলেছে যে সাড়ে বারোটার সময় নারায়ণগঞ্জ স্বাস্থ্য উপজেলা কমপ্লেক্স এ থাকতে। আমি আবার ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উনার সাথে একদিন ঘুরতে গিয়েছিলাম। তাই ওই জায়গাটা আমি চিনি। যাই হোক আমি দুপুরের রান্না শেষ করে মেয়েকে নিয়ে দুপুর একটা বাজে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেসে যাওয়ার পর দেখি বিশাল বড় এক লাইন। কালকে থেকে যেহেতু পবিত্র মাহে রমজান। সেহেতু অনেকে রমজান মাসে বাচ্চাকে বা নিজেদের টিটি টিকা দিতে পারবে না। তাই শিশুসহ বিভিন্ন মানুষ ঠিকা কেন্দ্রে হাজির হয়েছে। এমন এমন ভীর ও বিশাল বড় লাইন দেখে আমার মাথা ঘুরে গিয়েছে। আমি আমার হাজব্যান্ডকে এত মানুষের মাঝে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তারপর চিন্তা করলাম একটু ভিতরে উকি দিয়ে দেখি। তখন দেখতে পেলাম তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ম্যাডামের সাথে কথা বলছেন। পর আমি যখন ঢোকার চেষ্টা করছি অনেকে আমাকে বাধা দিচ্ছে। আমি সবাইকে বলে দিয়েছি যে আমার হাজব্যান্ড ভেতরে আছে। তারপর সবাই আমাকে ভেতরে ঢুকতে দিলো। এখানে বোঝা গেল যে একজন নারীর পাশে একজন পুরুষ থাকলে তার যেকোনো কাজ সহজ হয়ে যায়। যেমন আমারও এত বড় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো বাবুকে নিয়ে। কিন্তু বাবা কিছুক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে আমার লাইনে দাঁড়ানোর কষ্টটা কমিয়ে দিয়েছে।

মেয়েকে নিয়ে ঢোকার পরে, মেয়ের নাম আমার নাম ও আমার হাজবেন্ডের নাম ভালোভাবে লেখার জন্য দুইজনেরই জন্ম নিবন্ধন কার্ড লাগে। আমি তো আমার জন্ম নিবন্ধন কার্ড নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসিনি। তাই আমার অনার্সের রেজিস্ট্রেশন কার্ড দিয়ে নুসাইবার বাবা টিকার কার্ডটি তৈরি করান। তারপর মেয়ের বাম হাতে প্রথম একটি টিকা দেয়, আমার খুব খারাপ লাগে। টিকাটি যখন দেয় তখন বাবু অনেক কান্না করে। তারপরে ডানহাতে আরেকটি টিকা দেয়। এমন করে পর পর ডান হাত বাম হাত ও ডান পায়ে তিনটি টিকা দেয়া হয়। পিসিভি নামক একটি টিকা বাকি থাকে। পিসিভি টিকাটি তখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেসে ছিল না। তাই আমাদেরকে বলে দেয়া হয়েছে পরের মাসের ১১ তারিখ অন্যান্য টিকার সাথে এই টিকাটি দিয়ে দিতে।আবুর আব্বু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আপুকে খুশি হয়ে কিছু টাকা দেয় মিষ্টি খেতে। তারপর আমরাও মেয়েকে নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।

আমরা বেরোনোর পরে অনেকক্ষণ রাস্তা চলে এসেছিলাম। আমার হাজবেন্ডের মোবাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ম্যাডাম অনেকগুলো ফোন দেই। তখন উনি ফোন রিসিভ করে জানতে পারে যে সেই টিকাটি এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেসে এসেছে। তাই যেন শীঘ্রই মেয়েকে নিয়ে আবার ওইখানে উপস্থিত হয়। তখন আমরা আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। যাওয়ার পরে ভেতরে ঢুকতে অনেক মহিলারা আমাদেরকে বাধা দেয়। তখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ম্যাডাম বলে যে উনারা সম্পূর্ণ টিকা দিয়েছে বাকি ছিল একটা তাই উনাদেরকে একটু সুযোগ দিন। তখন আমাদেরকে সুযোগ দেয়া হয়। তারপর মেয়েকে চতুর্থ নাম্বার টিকাটি দিয়ে আমরা চলে আসি। সবগুলো টিকা দেওয়ার সময় বাবু তেমন কান্না করেনি। তবে চতুর্থ নাম্বারটি দেওয়ার পর বাবু অনেক কান্না করেছিল। এখনো পর্যন্ত হাত পা নাড়াতে পারছে না। শুনেছি দুদিন বা তিন দিন হাত-পা নাড়াতে পারবে না জ্বরও আসতে পারে।

আমি যদি আগে জানতাম মেয়েকে চারটি টিকা একসাথে দেয়া হবে। তাহলে মেয়েকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত হতাম না। আমি ইনজেকশনটা অনেক ভয় পাই। আর সেই জায়গায় নিজের চোখের সামনে মেয়েকে এমনভাবে ইনজেকশন দেয়া হবে ভাবতেও পারিনি। এখন মেয়েও কান্না করে আমার খুব কান্না আসে। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন। যাতে তাড়াতাড়ি করে বাবুর ব্যাথা সেরে যায়।

আজ এই পর্যন্তই বন্ধুরা। কালকে আবার নতুন একটি ব্লক নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব ইনশাল্লাহ। সবাই আমার বাবুর জন্য দোয়া করবেন। সবার জন্য দোয়া রইল আল্লাহ হাফেজ।

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

আপনার মেয়ে যেন সর্বদা সুস্থ থাকে। আজকে ৪৫ দিন পূর্ণ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। তা ঠিক কথা বলেছেন রমজান মাসে বিভিন্ন অফিস আদালত বন্ধ থাকে। আসলেই একটা নারীর পাশে একটা পুরুষ থাকলে সব কিছু যেন সহজ হয়ে যায়। আসলেই আমাদের প্রত্যেকটা পুরুষের উচিত তার প্রিয় মানুষটির পাশে থাকা। আপনার মেয়ের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল, সে যেন সর্বদা সুস্থ থাকে।

Posted using SteemPro Mobile

জি একটি নারীর পাশে একজন পুরুষ থাকলে তার সবকিছুই যেন সহজ হয়ে যায়। আর পুরুষ মানুষের সর্বদাই উচিত তার প্রিয় মানুষের পাশে থেকে তাকে সব সময় সাহায্য করা। হে ভাইয়া দোয়া করবেন আমার মেয়েটি যেন সুস্থ থাকে। আপনার জন্য দোয়া রইল। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Posted using SteemPro Mobile

আপনার মেয়ের বয়স পয়চল্লিশ পূর্ণ হয়েছে, জেনে খুশি হলাম। আসলে প্রত্যেক শিশুর জন্য টিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।টিকা দিলে শিশুরা বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকে সুস্থ থাকে। আপনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আপনার মেয়ের টিকা নিয়েছেন। আসলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনামূল্যে অনেক ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে আমাদের কে। আমার মেয়ের জন্য দোয়া রইলো। আপনার মেয়ে যেন সব সময় সুস্থ সবল থাকে।

জি ভাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনামূল্যে ভালো ধরনের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হয়। বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে এই টিকাগুলো প্রতিরোধ করে থাকে। তাইতো এই টিকা গুলো দিয়েছি নয়তো দেওয়ার কোনো আগ্রহ ছিল না।

Posted using SteemPro Mobile

এমন অনেক মানুষ আছে যারা ইনজেকশন দেখে অনেক বেশি ভয় পায় আপনি তো দেখছি খুবই ভয় পান তাহলে বুঝতেই পারছেন যে ছোট মানুষের কতটা ব্যথা লেগেছিল। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুদের পর্যাপ্ত বয়স হবার পরপরই টিকা দেওয়া হয়। আর এই টিকা দেওয়াটা নাকি শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো, আশা করি খুব দ্রুতই তার ব্যথা ঠিক হয়ে যাবে। ধন্যবাদ আপনাকে মুহূর্তটা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

জি ভাইয়া আমি ইনজেকশনকে অনেক ভয় পাই আর আমি নিজেও ইনজেকশন নিতে চায়না। আজকে আমার নিজের মেয়েকে নিজের চোখের সামনেই এতটা ব্যাথা সহ্য করতে হচ্ছে। আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile