পরম করুনাময় অসীম দয়াল মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি।
হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে নিজের ব্যক্তিগত অনুভূতি নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করছি। আশা করি আমার আজকের পোস্টটি পড়ে আপনাদের সবার ভালো লাগবে।
আমরা আমাদের এই ছোট্ট জীবনে অনেক কিছুর সম্মুখীন হয়। অনেক সময় আমরা এমন এমন জিনিসের সম্মুখীন হয় যা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারিনা। আমাদের জীবনে অনেক সময় এমন দুঃখ নেমে আসে যা আমাদের কল্পনারও বাহিরে। আবার আমাদের জীবনে এমন অনেক সুখ আছে যা আমরা কখনো আশা করি না। আমরা মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে দুনিয়াতে কিছু সময়ের জন্য এসেছি। আমাদের এই ছোট জীবনে জোয়ার ভাটা লেগেই থাকে। মৃত্যু ছাড়া জোয়ার ভাটা শেষ হয়না। যাইহোক আমি রবের কাছে হাজার কোটি শুকরিয়া জানাই যে আমার রব আমার ফরিয়াদ কবুল করেছেন। চলুন আমার অনুভূতি মূলক পোস্টের মূল ঘটনায় যায়।
আপনারা সবাই অবগত আছেন যে, আমি আমার হাজবেন্ডের সাথে ঢাকা শহরের নারায়ণগঞ্জে বসবাস করি। তিনি একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন। কিছুদিন আগে আমার দেবরের বিয়ে উপলক্ষে আমি আমার শ্বশুর বাড়িতে চলে যায়। আমার হাজবেন্ড অফিসের ব্যস্ততার মাঝেও বিয়েতে উপস্থিত হয়েছিল। বিয়ে শেষ না হতে হতেই আমার অনার্স থার্ড ইয়ার টেস্ট এক্সামিনেশন শুরু হয়ে যায়। তাই আমি আমার বাবার বাড়িতে থেকে যায়। আমার হাজব্যান্ড আমাকে আমার বাবার বাড়িতে দিয়ে ঢাকা চলে আসেন। তিনি এসে দেখেন যে, অফিসের একটি ঝামেলার কারনে তিনিকে সাময়িক সময়ের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই বিষয়টি আমার হাজব্যান্ড আমাকে জানায়নি।
তবে আমার মনে কেমন জানি একটি টেনশন হচ্ছিলো যে আমার হাজবেন্ডের চাকরিতে মনে হয় কোন প্রবলেম হয়েছে। ওই দিনই আমি আমার হাজব্যান্ডকে একটি প্রশ্ন করেছিলাম। আপনার অফিসে কোন প্রবলেম হয়নি তো....। তখন আমার হাজব্যান্ড আমাকেই কিছু বলেনি। আমার হাসবেন্ড আমাকে কিছু না বললেও আমার মনে কেন জানি এরকম একটি চিন্তা হচ্ছিল। আমার চিন্তায় ঘুম হচ্ছিল না খাওয়া দাওয়া করতে পারছিলাম না। তাই ভাবলাম আমার পরীক্ষা না দিয়েই আমি ঢাকা চলে যাবো। তাই কলেজের শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি। কলেজের শিক্ষক আমাকে বলেছে যে, বাসায় পরীক্ষা দিয়ে পরীক্ষার অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়ে দিতে।
আমি এরকম একটি প্রস্তাব পেয়ে এসাইনমেন্টের খাতা সহ তিনিকে না জানিয়ে আমার আম্মুকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসি। বাসায় এসে দেখি তিনি বাসায়। আমি তিনিকে প্রশ্ন করলাম আজকে কি অফিসে যাননি। তিনি বলেন আজ অফিস নেই। আমি আমার হাসবেন্ডকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে গেলাম। তারপর জানতে পারলাম যে তিনি কিছুদিনের জন্য চাকরি থেকে সাসপেন্ড হয়ে গেছেন। সেই কথা শোনার পরে আমি আমার হাজব্যান্ড কে আর কোনো প্রশ্ন করেনি। কারণ আমি বুঝতে পারছিলাম যে, তিনি এই বিষয়টি নিয়ে অনেক চিন্তিত। আমি চেষ্টা করেছি যে তিনিকে হাসিখুশি রাখতে। আর কোন প্রকার কোন বিষয় নিয়ে তিনিকে আমি কোন প্রকার প্রশ্ন করিনি। একটি পুরুষ মানুষ জানে, যে একটি পরিবারকে কিভাবে আগলে রাখতে হয়। তিনির জীবনে এত বড় একটি ধাক্কা আসবে তিনি যেমন ভাবেননি, আমিও তেমনটা ভাবিনি। তবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস রয়েছে।
তিনি যেমন আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তেমনি আমাদের রিজিক দিয়েই পাঠিয়েছেন। তাই আমি এই বিষয়টিকে বেশি গুরুতর ভাবে নেইনি। শুধু রবের কাছে প্রার্থনা করেছি। আমার হাজবেন্ডের সকল প্রকার দুশ্চিন্তা যেন আমার রব কমিয়ে দেয়। আর টেনশন মুক্ত একটি জীবন দেন। এই কিছুদিন যাবৎ আমি আমার হাজবেন্ডের মুখের দিকে ভালোভাবে তাকাতে পারতাম না। সৃষ্টিকর্তাকে সঠিকভাবে ডাকতে পারলে তিনি কখনো আমাদেরকে ফিরিয়ে দেন না। আমি আমার হাজবেন্ডের এই বিপদের সময় বিপদের একটি দোয়া বারবার পড়েছিলাম। এই দোয়াটা হলো “ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগিছ”। কঠিন বিপদের সময় এই দোয়াটি পাঠ করলে আল্লাহ বিপদ মুক্তি দেয়।
আল্লাহতালার কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া যে, আল্লাহ তালার অশেষ রহমতে আজকে আবারও আমার হাজব্যান্ড অফিসে জয়েন করেছেন। আল্লাহতালার কাছে শুকরিয়া আদায় করে শেষ করতে পারবোনা। তিনি আমাদেরকে কত নিয়ামত দিয়েছেন। আমাদেরকে কত ভালো রেখেছেন। আমরা তিনিকে ভালোভাবে ডাকতে পারিনা। আল্লাহতালার একটি বড় নিয়ামত হচ্ছে আমার হাজব্যান্ড। আমি তিনিকে পেয়ে অনেক ভাগ্যবতী। তিনি অসুস্থ হলে আমাকে না বললেও আমি বুঝতে পারি। কোন প্রকার কোন পেরেশানি বা দুশ্চিন্তা হলেও আমি বুঝতে পারি। কেননা আমি আমার স্বামীকে অনেক ভালোবাসি।
বন্ধুরা আজ আর কথা বাড়াচ্ছি না। কেমন হলো আমার আজকের এই ব্লগটি, কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আর আমাদের সকলের জন্য দোয়া করবেন। আমরা সবাই যেন যার যার অবস্থান থেকে রবের শুকরিয়া আদায় করতে পারি। সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। এই কামনা করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
![image.png](
যাক, শেষটুকু পড়ে শান্তি পেলাম আপু। ভাইয়ার অফিসের ঝামেকা যে মিটেছে, জেনে বেশ শান্তি লাগলো। আসলে জীবন মানেই তো নানা রকমের উঠা নামা!! আর এটা আপনি ঠিক ই বলছেন, স্বামী এবং স্ত্রী একজন আরেকজনের জীবনে নিয়ামত ই! আর উপরওয়ালা কে ডাকার মতো ডাকতে পারলে তিনি অবশ্যই সারা দেন। আপনাদের জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা। আপনি বিপদের সময়ে একজন স্ত্রীর দ্বায়ীত্ব সঠিকভাবেই পালন করেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বি আপু আপনাদের দোয়ায় তিনার অফিসের ঝামেলা কেটে গেছে।আপু আপনি ঠিকই বলেছেন সৃষ্টিকর্তাকে ডাকার মত ডাকতে পারলে তিনি ঠিকই সাড়া দেন । আপনার জন্য ও দোয়া আর ভালোবাসা রইলো। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শেষ অংশটা পড়ে শান্তি পেলাম। হঠাৎ করেই সাসপেন্ড হয়ে যাওয়া খুবই টেনশনের বিষয়। বিশেষ করে যে সমস্ত সংসারে এক হাত ইনকামের সেই সমস্ত সংসারে এই টেনশন অনেক বেশি। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে চাকরির বাজার খুবই খারাপ। যাইহোক সবকিছু টোপকে আপনাদের জীবন দিয়ে আবার সুন্দর গতিতে এগোচ্ছে এটাই শান্তির। ঈশ্বর আপনাদের মঙ্গল করুন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit