হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা কেমন আছেন। আশা কির সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের ব্লগের বিষয় হলো আমারা এক আজব জাতি। আমি কেন আমার আজকের ব্লগের এমন একটি শিরোনাম দিলাম। নিচে তা প্রকাশ করছি।
আমি শিরোনামটা আজব জাতি না দিয়ে হুজুগে জাতি দিলেও পারতাম। কারন আমরা বাঙ্গালী জাতি ঢেউয়ের তালে তালে নাচি। কোন একটা বিষয় ভালো ভাবে জানার চেষ্টা করি না। যে যেটা বলে আমরা সেটাই বিশ্বাস করি। মানে আমরা অন্যের কথায় কান দেয় বেশি। আমরা নিজের দায়িত্ব অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পছন্দ করি। আমরা অন্যের ভুল ধরতে উস্তাদ। আমরা ডাক্তার না হয়েও কেউ অসুস্থ হলে তাকে কি কি ঔষুধ খেতে হবে সেই সাজেশন্স দিতে পারি। আমরা আলেম,মুফতি না হয়েও,মাদ্রাসায় না পড়েও যে কোন ইসলামি বিষয়ে ফতুয়া দিতে পারি। যে কোন ইসলামি আইন বানিয়ে নিতে পারি। কোন বিষয়ে বিস্তারিত না জেনে একজন মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি। উড়ো কথায় বিশ্বাস করি।
আমাদের মুখ সবার আগে চলে। কিন্তুু কাজের বেলায় ঠন ঠন। এই কিছুদিন আগে আমাদের দেশে পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়েছে। পহেলা বৈশাখ পালন নিয়ে নানা জনে না কথা বলছে। কেউ আবার চারুকলা বিভাগের ছাত্রদের কাজ ও চিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আপনারা অনেকেই অনলাইনে দেখেছেন যে, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন হাওরের রাস্তায় চিত্র অঙ্কন করেছিল। সেটা নিয়েও অনেক প্রশ্ন তুলেছে। এখন আবার বাংলাদেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে সবাই ফেসবুকে পোষ্ট করছে আমরা গাছ লাগাবো। আমরা গাছ লাগিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়বো। অথচ কেউ কিন্তুু একটা গাছও লাগাচ্ছে না।
আমাদের দেশের মানুষের আবেগ শুধু ঐ ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ থাকে। বাস্তবে তার রুপান্তর হয় না। এখন সবার মনে গাছ লাগানোর ঢেউ উঠেছে। তাদের আবেগ দেখলে মনে হয় তারা গাছ লাগিয়ে বাংলাদেশকে অ্যামাজন বানিয়ে ফেলবে। অথচ যেখানে সেখানে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে গাছ কাটছে সেটার প্রতিবাদ করছে না। রাস্তা মোটা করবে,রাস্তা ডাবল লাইন করবে বলে অনেক মোটা মোটা গাছ কেটে ফেলেছে। যেহেতো প্রয়োজন হয়েছে গাছ কাটতেই পারে। সেই জাগায় তো আবার গাছও লাগাতে পারে। অনেক জাগায় দেখা যায় রাস্তা ডাবল করে মাঝখানে বেশ কিছু জায়গা ফাঁকা রেখে সে জাগায় ফুল গাছ লাগিয়েছে। আরে ভাই ফুল গাছ গিয়ে কি বড় গাছের কাজ হবে..? ফুল গাছ গিয়ে কি ছায়া পাওয়া যাবে..ফুল গাছ দিয়ে কি রোদ থেকে বাঁচা যাবে। এমন গাছ লাগাতে হবে যে গাছে রাস্তার ক্ষতি হবে না আবার ছায়াও দিবে। এসব নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না।
গাছ লাগিয়ে ভরে ফেলবে, এটা করবে,সেটা করবে, ফেুসবুকে আবেগের ঠেলায় থাকা যায় না। অথচ নিজের বাসার ছাদে বা বারান্দায় গাছ লাগাতে দেয় না। গাছ লাগিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়বে অথচ বেল্ডিং করার সময় রাস্তায় এক ইন্চি জায়গা ছাড়ে না। বিশাল বড় বড় বেল্ডিং করে অথচ বাসার পাশের ড্রেনটা একটু বড় করে তৈরী করে না। ঢাকা শহরে গাছ লাগানোর জায়গার কি অভাব আছে...? ফেসবুককে উত্তাল পাত্তাল না করে গাছ লাগানো শুরু করুক। জায়গা না পেলে সরকার সব বাড়ি ওলাদের ছাদে গাছ লাগানো বাধ্যতামূলক করে দিক। গাছ লাগালে উৎসাহ দিয়ে পুরষ্কার দিবে,এমন ঘোষনা দিক, যে জাতি সামন্য একটা বুড়িগঙ্গা নদী রক্ষা করতে পারে না,সে জাতি গাছ লাগিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়বে। এই জাতি চাপাবাজি করে বিশ্ব রেকর্ড করতে পারবে,সেটা বিশ্বাস করা যায়। দূর্নীতি করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে পারবে, সেটা বিশ্বাস করা যায়। হিংসা করে,অন্যের ঘাড়ে পা দিয়ে বড় লোক হতে পারবে,সেটা বিশ্বাস করা যায়।
আর যায়হোক পরিবেশ রক্ষা করে বিশ্ব রের্কড গড়বে সেটা আমার মাথায় পিস্তল ধরলেও বিশ্বাস করবো না। কয়েকদিন পরে বৃষ্টি হবে,ঢাকা শহর,চট্রগ্রাম শহর বঙ্গপসাগর হয়ে যাবে। তখন আবার নদী খাল রক্ষায় ফেসবুকে প্রচারনা চালাবে। এই সেই আজব জাতি,হুজুগে জাতি,বাঙ্গালি জাতি।।
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবার করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপ করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লেগেছে আপু। আপনি আমার মনের মত কথা গুলো বললেন। কেউ ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়ে বড় বড় হাদিসের বর্ণনা দিতে পারেন সেটা আমাদের বাংলাদেশের বাঙালি। আবার অনেকে আছেন বড় বড় ওয়াদা করে কিন্তু কাজের বেলায় কিছু নেই। একদম ঠিক বলছেন ফেসবুকের পোস্ট করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে কথাগুলো। এরপরে কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। মূল্যবান কথাগুলো শেয়ার করলেন অনেক ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হে আপু কথা বলে ঠনঠন কাজের বেলায় নেই। এটাই আমাদের বাঙালি জাতি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক বলেছেন আপু আমরা শুধু কথাই ষোল আনা কাজের বেলায় নেই। আর আমাদের মনের কথা প্রকাশ শুধু ওই ফেসবুকেই করতে পারি। আপনার প্রত্যেকটা কথা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। একদম বাস্তব কথাগুলো আপনি তুলে ধরেছেন আপনার পোস্টে। জানিনা আমরা কখনো প্রকৃত মানুষ হতে পারব কিনা। সারা জীবন শুধু অন্যের তালে তাল মিলিয়েই চলছি আমরা। যাইহোক সব মিলিয়ে আজকের পোস্টটি অসাধারণ ছিল আপু। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit