কাকা আটক হলেন ভয়ংকর এক কিডন্যাপার চক্রের হাতে।।

in hive-129948 •  5 months ago 

migrant-393130_1280.jpg

image source

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ সর্ব অবস্থায় ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। যে ব্লগটি পড়ে আপনারাও সতর্ক হতে পারবেন। চলুন তাহলে আপনাদের মাঝে সতর্কতা মূলক ব্লকটি শুরু করি.....

আপনাদের মাঝে বছর চারেক আগের একটি ঘটনা শেয়ার করতে যাচ্ছি। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৮ সালের শেষের দিকে। তখন আমি সবেমাত্র এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। সেই সময়ে আমাদের পাশের বাড়ির এক কাকার সাথে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিলো। কাকার নাম ছিল জুনায়েদ। আমাদের আর কাকার বাড়ির দূরত্ব শুধু একটি মাত্র রাস্তা। রাস্তাটি পার হলেই কাকার বাড়ি। তিনির পৈত্রিক সম্পত্তি অনেক বেশি থাকলেও কাকার অবস্থান তেমন ভালো ছিল না। আমি যখন ক্লাস এইটে পড়ি, তখন কাকা বিয়ে করেছিলেন। বর্তমানে কাকার একটি সাত বছরের মেয়ে সন্তান আছে। কাকার মেয়েটির নাম নুসরাত। তিনি ছিলেন পরিবারের সবার বড়। যার কারণে কাকাকে ছোটবেলা থেকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছিল। তিনি ইন্টারমেডিয়েট পাস করে আমাদের এলাকায় একটি কোচিং সেন্টার খুলে ছিলেন ২০০৮ বা ২০১০ সালের দিকে। কাকার কোচিং সেন্টারেও আমরা পড়তাম। কাকার কোচিং সেন্টারে যখন আমরা পড়তাম, তখন তিনি আমাদেরকে বিভিন্ন নাচ গানও শেখাতেন। বাচ্চাদেরকে নিয়ে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করাতেন। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে কোচিং সেন্টারের ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে তিনি স্টেডিয়ামের মাঠে যেতেন। বাচ্ছাদের মাধ্যমে তিনি প্রায় অনেক পুরস্কারই অর্জন করতেন। এভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাচ্চাদেরকে নিয়ে কাকা অনেক সুনাম অর্জন করেছিলেন।

এভাবে আস্তে আস্তে কাকার কোচিং সেন্টারটি একটি কিন্ডার গার্ডেনে রূপান্তরিত হয়েছিল। লেখাপড়া নাচ গান সব দিক দিয়েই এই কিন্ডার গার্ডেনটি অনেক সুনাম অর্জন করেছিল। কিন্ডার গার্টেনটির নাম ছিল জননী আদর্শ বিদ্যানিকেতন। বিদ্যানিকেতনে হঠাৎ একদিন একটি চিঠি আসে। চিঠিতে লেখা ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বাচ্চাদেরকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন। সে পত্রটি পেয়ে কাকা তো ভীষণ খুশি। কারণ সেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কাগজটিতে লেখা ছিল যে, কাকার কিন্ডারগার্ডেনের সকল বাচ্চাদেরকে ফ্রিতে নাচ গান শিখানো হবে,তাদেরকে ফ্রিতে ড্রেস দেওয়া হবে। এমনকি কাকার প্রতিষ্ঠানটিকে আরো বড় আকারে স্থাপন করে দেয়া হবে। তাই কাকা যেন তাদের সাথে যোগাযোগ করে।

প্রত্যেক মানুষ চাই তার প্রতিষ্ঠানটি অনেক বড় হোক। এমনই কাকা ও চেয়েছিলেন তিনি তার প্রতিষ্ঠানটিকে অনেক বড় করবেন। আর শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন কিছু শেখাবেন। তাই তিনি সেই পত্রটি অনুযায়ী তাদের সাথে যোগাযোগ করার চিন্তাভাবনা করেন। সেই লোকদের সাথে তিনি যোগাযোগ করে জানতে পারেন যে, এক শুক্রবারে কিছু মাইক্রো বাস আসবে, সে মাইক্রো বাসে জেনো কমপক্ষে ত্রিশ জন শিক্ষার্থী থাকে। কাকার কাছে সেই পত্রের লোক গুলো কোন ঠিকানা দেননি। তাই কাকার মনে একটু খটকা লাগে। তিনি একজন আলেমের সাথে যোগাযোগ করেন। আলেম লোকটি ছিলেন কাকার একজন বিশ্বস্ত বন্ধু। তিনি বলেন যে, এতগুলো শিক্ষার্থী কোথায় নিয়ে যাবে তার ঠিকানা না জেনে মাইক্রোতে উঠানো ঠিক হবে না। তাই কাকা সিদ্ধান্ত নিলেন যে বাচ্চাদেরকে সেখানে পাঠাবেন না।

কাকা পরের দিন সে লোকদের সাথে আলোচনা করে জানালেন যে, তিনি নিজে সেখানে গিয়ে আগে দেখবেন। তারপর বাচ্ছা নিয়ে যাবেন। তখন সেই লোকগুলো কাকার সাথে কিছুটা রাগারাগি করেন। তারা কাকার কথাতে রাজি হয় । কাকা ও ভাবলেন যে, যেহেতু তারা তাদের প্রতিষ্ঠানটি কাকাকে দেখাবেন। তাই তিনি সেই হুজুরকেও সঙ্গে নিলেন। একদিন একটি মাইক্রো বাস এসে কাকা ও কাকার সেই আলেম বন্ধুকে নিয়ে যান। নিয়ে যাওয়ার পর কাকা প্রায় তিন দিন নিখোঁজছিলেন। তারপর চতুর্থ দিন তাদের বাসায় একটি ফোন আসে। ফোনে কল করে বলা হয় যে, যদি আপনার ছেলেকে বাঁচাতে চান। তাহলে এই মুহূর্তে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে আমরা যেখানে বলি সেখানে এসে দাঁড়ান।

ফোন করার পর ফোন আবার বন্ধ হয়ে যায়। কাকার যত আত্মীয়-স্বজন আছে সবাই টাকার জন্য অনেক ছোটাছুটি করে। কাকার বউ অর্থাৎ আমাদের চাচি তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য গলার চেইন ও কানের দুল বিক্রি করে দেন। তারপর কাকার বাড়ির লোকজন তাদের সাথে যোগাযোগ করার অনেক চেষ্টা করেন কিন্তু তাদেরকে ফোনে পাইনি। তারপর আবার রাতের বেলায় একবার ফোন দিয়েছিলো যে টাকা রেডি করেছে কি না। তখন কাকার বাবা এক লক্ষ টাকা দিবে এই কথা বলার পর তারা ফোন আবার ও কেটে দিয়েছিল। সেই থেকে সবার ভিতর এক ভয়ংকর চিন্তা প্রবেশ করে। নানা জন নানা কথা বলতে থাকে। কাকার ভাগ্যে কি আছে জানতে,অপেক্ষা করুন,পরের পর্বের জন্য.... চলবে।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবার করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপ করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

FNeY1coMNUL9WkErUPeUKmtGszS37qoEdLJEhh8bj8LkMZg4ZnLbSCPtsqdFwbPFaU6vxamfJRhKsAXwWBZmAwtf2KFjktn9asDsnKpUF6cbBcNYFzwcTbFb5dfFf7N5Lt5j8KUqpB64Bhu5yFCR9Qn5uG4sQo8t4PYbc7VJq37PW7258mLRbFTrsBTtbAnos9AJnU46Lv3HqXsN7s.gif

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

আপু টানটান উত্তেজনা নিয়ে পড়ছিলাম,কিন্তু এই যে আপনি কি করলেন!অন্য পর্ব পড়তে এখনই ইচ্ছে করছে। কারণ আপনার কাকার সাথে কি হয়েছিল সেটা জানার জন্য মন ব্যাকুল হয়ে পড়েছে। শীগ্রই আমাদের মাঝে পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন আশা করি।

ইনশাআল্লাহ, আপু পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।

খুব ভয়ংকর একটি পোস্ট শেয়ার করলেন আপু আপনি। এই ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজে বর্তমান সময়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। যেহেতু অনেক আগের ঘটনা পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। এই সমাজে কিছু ভালো কাজ হোক তা অনেকে চাই না। বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন কুচক্র সেগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য ওঠে পড়ে লাগে। পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য অপেক্ষায় রইলাম আপু।

আপু ঘটনাটা অনেক আগের হলেও বর্তমানে এসব ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে আমাদের সমাজে। যাই হোক পরে পর্বে সম্পূর্ণ ঘটনাটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ।

আপনি লেখাটা এমন জায়গায় শেষ করেছেন, এখন তো পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ জেগেছে আমার মনে। ভাগ্য ভালো ছিল যে আপনার চাচা বাচ্চাদেরকে নিয়ে যায়নি। না হলে তো সকল বাচ্চাও কিডন্যাপ হতো। আপনার চাচার বাবা এক লক্ষ টাকা দেবে বলেছিল তবুও দেখছি কিডন্যাপাররা শুনে নি। এখন আমি তো এটা ভাবছি আপনার সাথে কি ঘটেছিল শেষ পর্যন্ত। এখন এটাই জানার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম আপু। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী ঘটনা শেয়ার করবেন।

জ্বী আপু অনেকগুলো বা চাঁদের সাথে যে কে হত তাহলে ছাড়া কেউ জানে না। তাছাড়া ওই কিডনাপার গুলো অনেক ভয়ংকর ছিল। আপু খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করব।

বাস্তবের এরকম কিডন্যাপের কথা শুনে আমার তো অনেক বেশি ভয় লেগেছে। এরকম ঘটনা আমি আজকে প্রথম বার শুনলাম তাও আবার আপনার কাছে। ওই লোকগুলোর মনে হয় অনেক বেশি ছিল। একজনের ধারা কিন্তু এটা করা সম্ভব না। কারণ তাদের আগের উদ্দেশ্য ছিল প্রত্যেকটা বাচ্চা সহ কিডন্যাপ করা। ৩০ জন বাচ্চাকে কিডন্যাপের উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু আপনার সেই চাচা ওনার বন্ধুর সাথে বিষয়টা নিয়ে পরামর্শ করার কারণে, বাচ্চাগুলো বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু আপনার ওই চাচাটা তো কিডন্যাপারদের কাছেই ফেঁসে গিয়েছে। এখন কি হবে এটাই দেখার অপেক্ষা।

জি ভাইয়া আমার কাকা যদি ওই বন্ধুর সাথে পরামর্শ না নিতো তাহলে অনেকগুলো বাচ্চা কিডন্যাপ হয় যেতো। অপেক্ষায় থাকেন দ্বিতীয় পর্ব খুব শীঘ্রই আসবে।

কি ভয়ংকর ঘটনা শেয়ার করেছেন ভাইয়া।বাচ্চাদের ভাগ্যে যে কি ঘটতো যদি না ঐ কাকা একটু সন্দেহ না করতো।সব গুলো বাচ্চাদেরকে অপহরন করতেন এবং প্রতিটি বাচ্চার মা,বাবার কাছে মুক্তিপনদাবী করতেন। আপনার কাকাকে অপহরণ করেছে বাচ্চাদের না পেয়ে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

জি আপু ঘটনাটি খুবই ভয়ংকর। বাচ্চাদের না পেয়ে কাকাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিলেন তারা। আপনাকেও ধন্যবাদ আপু