নিয়তি।

in hive-129948 •  4 days ago 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
পরম করুনাময় অসীম দয়াল মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি

worried-8728217_1280.webp

Link

হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো আছি। প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আজকে আমি আপনাদের সাথে বাস্তবতা নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করব। আমার আজকের পোষ্টের বিষয় হচ্ছে নিয়তি। চলুন আপনাদের মাঝে নিয়তির সম্পূর্ণ ব্লকটি শেয়ার করি।

বন্ধুরা আমরা সবাই জানি যে, কেউ কারো ক্ষতি করলে তার ও ক্ষতি একদিন না একদিন হয়। আসলে এই দুনিয়াতে কেউ যদি কারো ক্ষতি করে থাকে তাহলে আগে হোক বা পরে হোক তার বিচার ঠিকই হয়। প্রকৃতির নিয়মে মানুষ তার নিজের কর্মের ফল ভোগ করে। যাকে বলে নিয়তি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার এক পরিচিত কাজিনের বিষয়ে বলবো। পৃথিবীতে মানুষ অনেক প্রকারের হয়ে থাকে। তবে কেউ কখনো এমন খারাপ মানুষ দেখেনি। যে কিনা নিজ ভাতিজির বিয়েতে কুটনামি করে। এমনকি বিয়ে না হওয়ার জন্য তাবিজ করে। শুধু তা নয় বিয়ের পর যেনো বাচ্চা না হয় তার জন্য ও খারাপ কিছু করে।যাই হোক আপনাদের কাছে মূল ঘটনাটা শেয়ার করি।

আমার পাশের বাড়ির কাজিন যার নাম দোলনচাঁপা। তার নামটা যেমন সুন্দর সেও অনেক সুন্দর। দোলনচাঁপা পরিবারের একমাত্র কন্যা। তার দুই ভাই রয়েছে। সে তার দুই ভাইয়ের বড়। সে লেখাপড়ায় খুবই ভালো ছিল। তবে তার বাবা থাকে নাইন পর্যন্ত পরিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে দেয়নি। কারণ তিনি মেয়েকে বেশি পড়াতে চান নি। এছাড়া তিনি একজন রাজমিস্ত্রি। তার পরিবারে মোট পাঁচজন মানুষ। তার দুই ভাই একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। তা সত্বেও তার বাবা মা তাকে লেখাপড়া করাইনি। অন্যদিকে তার বড় জ্যাঠার আট মেয়ে। সবাই লেখাপড়া করে। যার জন্য তার বড় জ্যাঠার অনেক ক্ষতি করেছে দোলনচাঁপার মা। দোলনচাঁপার মা কখনোই চাইত না তার বড় জ্যাঠার মেয়েরা শিক্ষিত হোক। এমনকি তিনি তাদেরকে লোকসমাজে অনেক খারাপ বানিয়ে রাখত। আমাদের এলাকায় চাপার মা নামকরা ঝগড়াটে মহিলা। এলাকার এমন কোন মানুষ নেই যে এই মহিলার সাথে ঝগড়া হয়নি। তবে তিনি কখনোই তার ভাতিজি গুলোর ভালো চাইতো না। যার জন্য সুন্দর দোলনচাঁপার খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেয়। দোলনচাঁপাকে এত তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়েছে যে তার জ্যাঠার বাড়ির কেউই তা জানে না।

দোলনচাঁপার বিয়ের পর এলাকার মধ্যে একটাই কথা ছড়িয়ে যায় যে, দোলনচাঁপার বিয়ে হয়ে গেছে। অথচ দোলনচাঁপার জ্যাঠাতো তিন বোন তার চেয়েও বড় তাদেরকে এখনো বিয়ে দেয় না। তার মা মূলত চাইতো যে সবার কাছে তার জ্যাঠাতো বোনগুলোকে বয়স্ক প্রমাণিত করতে। কিন্তু তিনি অন্যের ক্ষতি করতে গিয়ে নিজের মেয়ের ক্ষতি করে দিল। তিনি যাচাই-বাছাই না করে বিবাহিত একটি ছেলের কাছে তার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়। এই ছেলেটি শিক্ষিত ছিল না। গ্রামের একটি জুয়াড়ি তো বটে সে সিগারেট, পান এগুলো খায় । সে যেকোনো কাজ করতে পারে। শশুরকে পর্যন্ত সম্মান করতে জানে না। বিয়ের চার ছয় বছর হয়ে যাওয়ার পরও দোলনচাঁপার কোন সন্তান হয় না। যার কারণে এখন দোলন চাপাকে তার স্বামী রেখে চলে গিয়েছে। শুনতেছি এখন নাকি দোলনচাঁপা কে ডিভোর্স দিবে।

এখন দোলনচাঁপা আমাদের গ্রামেই থাকে। একটা সময় দোলনচাঁপা তার জ্যাঠাতো বোনের বিশাল বড় একটি ক্ষতি করে। যার কারণে তার জ্যাঠাতো বোনের ব্রেইনে আঘাত পড়ে। এখনো তার সেই বোনটি স্বাভাবিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেনি। তবে তার জেঠাতো বোনের ভালো একটি জায়গায় বিয়ে হয়েছে। জ্যাঠাতো বোনের দুইটি সন্তান রয়েছে। সে বর্তমানে অনেক ভালো আছে। এই জ্যাঠাতো বোনটির যাতে সন্তান না হয়, তার জন্য চাপার মা থাকে বিষাক্ত কোন একটি কিছু খাইয়ে ছিল।

তবে একটা জিনিস ভাবলাম যে নিয়তি কাকে কোন জায়গায় নিয়ে দাঁড় করায় কেউ তা বুঝে না। দোলনচাঁপা দিনের পর দিন বোনগুলোর অনেক ক্ষতি করেছে তার মায়ের কুপরামর্শে। এখন নিয়তি তাকে এমন একটি জায়গায় দাড় করিয়েছে যে, সে প্রত্যেক বোনের কাছে ক্ষমা চেয়েও শান্তি পাচ্ছে না। তাছাড়া এখন শুনতেছি তার মায়ের হৃদয় নাকি বড় হয়ে গিয়েছে। যার কারণে তিনি ভালোভাবে খাওয়া দাওয়া করতে পারেন না। এমনকি তার বাবারও হাতে ও পায়ে পচন ধরেছে। তার বাবা তার বড় ভাইকে কখনোই সম্মান করেনি। আমরা ছোটবেলা থেকেই তিনাকে দেখে এসেছি। সবার সাথে তিনি ভালো হলেও নিজের বড় ভাইয়ের সাথে কখনোই ভালো ব্যবহার করেনি। এমনকি দোলনচাঁপার মায়ের কথায় এলাকার সবার সাথে অনেক রকমের ঝগড়াই লিপ্ত হতো।

আমি মনে করি এই ঘটনা থেকে আমাদের একটি শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমরা যেন কারো কোনদিন ক্ষতি না করে বসি। একদিন না একদিন নিজের কর্মফল আমাদের ভোগ করতে হবে। তাই অন্যের ক্ষতি না করে, নিজের মত করে বাঁচতে শিখুন। অন্যকে ভালোভাবে বাঁচতে সহযোগিতা করুন। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। পৃথিবীতে আমরা বেশি দিনের জন্য আসেনি। আমাদের একদিন না একদিন চলে যেতে হবে। তাই আমাদেরকে সর্বদা সকলের সেবা ও ভালো করে জীবনের শেষ প্রান্তিতে যেতে হবে। নইলে নিয়তি যে আমাদেরকে কোন জায়গায় দাড় করায় তা আমরা কল্পনা ও করতে পারবো না। আজ দোলনচাঁপার এই পরিস্থিতি আমাকে তার অতীতে করা কর্মফল গুলো মনে করিয়ে দেয়। তবে রবের কাছে দোয়া করি, যেন দোলনচাঁপার এই দুরবস্থা আল্লাহতালা অতী শীঘ্রই দূর করে দেন আমিন।

বন্ধুরা আর কথা বাড়াচ্ছি না। এই হল আমার আজকের ব্লগ। কেমন হলো আজকের এই ব্লগটি। কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

image.png

![image.png](

Posted using SteemMobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Done

আপনার পোস্ট টি সত্যিই অনেক গভীর এবং শিক্ষণীয়। আমরা কখনোই কারো ক্ষতি না করে, নিজের ভালো কাজ করে চলতে পারি, কারণ একদিন আমাদেরও কর্মফল ভোগ করতে হবে। দোলনচাঁপার পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে, আমাদের সবার উচিত একে অপরের সাহায্য করা এবং জীবনের শেষ প্রান্তে ভালো কাজের স্মৃতি রেখে যাওয়া। আল্লাহতালা দোলনচাঁপাকে তার দুরবস্থা থেকে মুক্তি দিন, আমিন। আপনি অনেক ভালো লিখেছেন, আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

জ্বী আপু এটা আমার ও প্রার্থনা। দোলনচাঁপা যেন তার এই দুরবস্থা থেকে মুক্তি পায়। সেজন্য রবের কাছে দোয়া করি। সুন্দর কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।