পকেটমার হতে সাবধান ।

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য বন্ধুরা । কেমন আছেন সবাই । আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন ।আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ । আজকে আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি । আমার পোস্টের বিষয় হলো পকেটমার হতে সাবধান । আমার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে ঘটনাটি শেয়ার করছি। হয়তো এর মাধ্যমে আপনাদের কোন উপকার আসতে পারে।

comic-characters-gd449af41c_1280.png

LINK

অনেকদিন আগের একটি ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো । ২০২২ সালের রমজান মাসের একদিন আমার বড় আপু হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যাই। আমার আপুর বাড়ি হল নবীনগর থানা উরখুলিয়া গ্রামে । ঐখানে তেমন ভালো কোন ডাক্তার ছিলনা। তাই আপুর জন্য আমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে যেতে হয়েছিলো । আমার দুলাভাই আমাকে আগেই ফোন করে বলেছিল, যে তুমি আগে হাসপাতালে গিয়ে তোমার আপুর জন্য একজন গাইনি ডাক্তারের টিকিট সংগ্রহ করো। আমরা আসতেছি আর টিকেট সংগ্রহ করে তুমি লাইনে দাড়িয়ে থেকো। সদর হাসপাতাল যেহেতো বুঝতেই পারছেন কত বড় লাইন হবে। তাই আমি সকাল আটটায় বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম। প্রথমে লাইন ধরে টিকেট কাটলাম । তারপর যে ডাক্তারের কক্ষের নাম্বার দেয়া হয়েছিল । সেইখানে আমি লাইন ধরে দাড়িয়ে ছিলাম। দুলাভাই আপুকে নিয়ে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে এসেছিলো নয়টার সময়। । আপু এতটাই অসুস্থ ছিল যে সবকিছু আমাকে করতে হয়েছে । প্রচুর জ্বর প্লাস ইনফেকশনের সমস্যা ছিল । তাই অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়েছিল ।

হাসপাতাল মানেতো শত শত রোগীর কারখানা। কত এলাকার মানুষ আসে হাসপাতালে রোগী দেখাতে তার কোন হিসাব নেই । তাই অনেক ভিড়ের মধ্যে কত মানুষের যে কত কিছু হারিয়ে যায়, কেউ টেরও পায় না । যেমন আমার সাথে হয়েছিল । আমার দুলাভাই একজন হুজুর মানুষ। যেহেতু মহিলাদের লাইন, সেহেতু দুলাভাই মহিলাদের পাশে যায়নি । আমাকে আমার আপুকে ধরে ধরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হয়েছে । ডাক্তার আপুর কথা শুনে নিচ তলা থেকে তিনতলায় একজন ডাক্তারের নাম্বার লিখে দেয়। আপুকে নিয়ে তিনতলায় যাওয়ার পরে আপুকে কতগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা দিয়ে দেয় ।পরীক্ষা করার জন্য আমাকে আবার যেতে হয়েছে তিন তালার অপর পাশে। ওইখানে যে কাউন্টারে টাকা জমা দিতে হয়। আমি টাকা জমা দেওয়ার জন্য কাউন্টারে যাই। যে যে পরীক্ষাগুলো দিয়েছিল সে সে পরীক্ষার জন্য টাকা দেই । তখন আমি আমার ব্যাগ খুলেছিলাম । আমার ব্যাগে তখনো টাকা ছিল । যেহেতু আমি লাইন ধরেছি দুলাভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নেইনি। আমার পকেট থেকে টাকা দিয়ে দিয়েছি। কারণ ওই সময় আমি একটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতাম আমার কাছেও টাকা থাকতো। আমার কাছে চারহাজার টাকা ছিল।

রক্ত পরীক্ষা এবং ইউরিন সি পরীক্ষার জন্য আমার কাছ থেকে নয়শত টাকা নেওয়া হয়েছিল। রক্ত পরীক্ষার জন্য মনে হয় আড়াইশো টাকার মতো নিয়েছে । ইউরিন সি পরীক্ষাটা অনেক কঠিন ছিল এটা বের হতে তিনদিন সময় লেগেছিলো । যাইহোক আপুর অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, ডাক্তার ইউরিন সি পরীক্ষাটা ছাড়াই আপুকে হাসপাতলে ভর্তি লিখে দেই। হাসপাতলে আপুকে ভর্তি করিয়ে দেয়া হয়। আমার কাছে একটা এন্ড্রয়েড মোবাইল ছিল। আমার বাড়ি থেকে ফোন আসতে ছিল । আমি ব্যাগ থেকে ফোন বের করে কথা বলছিলাম। কথা বলার পর হাতেই মোবাইলটা ছিল । মোবাইলটা আর বেগে রাখিনি। আপুকে ডাক্তার দেখিয়ে আমি মোবাইল হাতেই রেখেছিলাম । যখন আমি বাড়ি যাবো তখন দুলাভাই বলছিল তোমার কত টাকা খরচ হয়েছে । আমি বলেছিলাম দুলা ভাই টাকা লাগবে না। তখন আমার ব্যাগে হাত দিয়ে দেখি আমার একটা টাকাও নেই। তখন আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছিল ।

আপু তখন বুঝতে পেরেছিল কি হয়েছে। আপু আমাকে তখন বলেছিল যে, তুমি যখন কাউন্টারে টাকা দিচ্ছিলে তখন তোমার পাশে অনেকগুলো মহিলা ছিল। সে মহিলাগুলো হয়তো তোমার টাকাটা নিয়ে গিয়েছে। আমিতো অনেক অসুস্থ ছিলাম আমি এতটা লক্ষ করিনি। তখন তোমার ব্যাগের চেইন খোলা ছিলো। তোমার মোবাইলটা আমার হাতে ছিল। নইলে তো মোবাইলটাও চুরি হয়ে যেত। আমি বলেছিলাম আপু আমার কাছে চার হাজার টাকা ছাড়াও আরো অনেক ভাংতি টাকা ছিল । কিন্তু টাকা গুলো কি করে হারিয়ে গেলো। পরে আমি বুঝতে পারলাম যে আমার টাকাগুলো পকেটমারের হাতে চলে গেছে । তখন থেকে আমি যেখানেই যাই একটু সতর্কভাবে যাই । কারণ যে টাকাগুলো হারিয়েছিল সেগুলো আমার পরিশ্রমের টাকা । একমাস মাদ্রাসায় পড়ানোর পর মাদ্রাসার বেতনের টাকা ছিল ।

আর কথা বাড়াচ্ছি না যেহেতু আমি পকেটমারের শিকার হয়েছি। আপনারাও সাবধানে থাকবেন এবং আমি পোষ্টে যদি কোন ভুল করে থাকি। তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । আজ এ পর্যন্তই বন্ধুরা । আমার জন্য দোয়া করবেন। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

wallet-g5f8055479_1280.jpg

LINK

ddddoo.png

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFaFYLUUkHV6dSwLV7zz7zNE5rVJ5qtN3Zm6SdmcqGFekXXVnJVmd6y7N12FUdQdbdzipDFEFaWmdmFe1K9CCqMuRmX9o7cDLXe7oZxUwNZXbSxanRUefX7PYzUbi2zovtPsG5QcGuGgiyhkJur9LnLhaBtL31haW2181Ss.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81Mzo7WDimR59eqwKXDqmnhF9z4ff4m5qW1wS3z2W4iMcH1ntgYnP4NW5wz5S8vGgfYSeKDERUTqkBRyyXpLgMsU.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

বাহ খুব সুন্দর বিষয় উপস্থাপন করেছেন। অবশ্যই আমাদের সকলকে পকেট মার হতে সাবধান হতে হবে। বিশেষ করে রেলস্টেশন বাসস্ট্যান্ড এবং ভিড়ের মধ্যে পকেটমার বেশি হয়ে থাকে। আমাদের সব সময় পকেটমার থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আপনি পকেটমারের শিকার হয়েছে জেনে খুবই খারাপ লাগলো। আমাদের সমাজে দিন দিন চুরি করা প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে।

দারুন একটি সচেতন মূলক পোস্ট আজ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই এত সুন্দর যেন সচেতন মূলক অনুভূতি পড়ে যেন খুবই খুশি হলাম এবং নিজেকে আরও জাগ্রত করতে পারলাম সচেতন হতে পারলাম। এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।