হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন, আশা করি পরিবারের সাথে সবাইকে নিয়ে অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ সর্ব অবস্থায় ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। চলুন তাহলে শুরু করি.....
বাংলাদেশের গরম আবহাওয়া নিয়ে কম লেখালেখি হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার সহ পত্রপত্রিকার মধ্যেও বাংলাদেশের এই তাপমাত্রা নিয়ে নিউজ প্রকাশ করা হয়েছে। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আমার কোন ব্লগ লেখার ইচ্ছা ছিল না। তারপরেও বিশেষ একটি কারণে আজকে আমি এই ব্লগটি লিখতেছি।
আজকে প্রায় ২০ দিন যাবত বাংলাদেশে গরম আবহাওয়া বিরাজমান আছে। ঈদের পরে প্রথম দিক দিয়ে যখন গরম শুরু হয়েছিল তখন বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ গাছ লাগানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল। একেকজন বলেছিল গাছ লাগিয়ে নাকি বিশ্ব রেকর্ড করে ফেলবে। আজকে তারা ফেসবুক ইউটিউব এ পোস্ট করেই পালিয়ে গেছে। লোক দেখানোর জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কয়েকটি গাছ লাগিয়ে নিউজ পেপারে শিরোনাম করে গরম তাপমাত্রা কমিয়ে ফেলেছে। গত সপ্তাহে ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখলাম ঢাকার সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ঢাকা শহরের রাস্তায় কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরানো হচ্ছে। এর দ্বারা নাকি গরম আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে যাবে। যাইহোক এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতেছি না। দেখা যাক তারা কৃত্রিম বৃষ্টি জড়িয়ে কতটুকু গরম তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। এর থেকে ঢাকা শহরে যে গাছ গুলো আছে সে গুলো সংরক্ষন করার উদ্যোগ নিলেও পারতো।
আমার আজকের মূল বিষয় হলো আমার ভাগ্নিকে নিয়ে। আমি আমার ভাগ্নিকে নিয়ে কোন ব্লগ লিখতাম না। তবে সতর্কতার জন্য আমি আজকের ব্লগটি পাবলিশ করতেছি। আমার চার নাম্বার আপুর বিয়ে হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার জালশুকা গ্রামে। বর্তমানে আপুর বিয়ের বয়স তিন বছর চলতেছে। আপুর হাজবেন্ড বর্তমানে সৌদি আরব প্রবাসী। আপুর বিয়ের দেড় বছর পরেই আপুর কোল জুড়ে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে। খুব আদর যত্ন করেই আপু তার কন্যাকে লালন পালন করতেছিল। ভাগ্নির নাম রাখা হয়েছে মাহদিয়া। মাহদিয়ার দাদা দাদুরাও তাকে খুব আদর যত্ন করে।
রমজানের ঈদের আগে আপু আমার সেই ভাগ্নিকে নিয়ে সৌদি আরবে চার পাঁচ মাস থেকে এসেছে। আপনারা সবাই জানেন সৌদি আরবে কেমন গরম আবহাওয়া। সে আবহাওয়ার মধ্যেও আমার ভাগ্নি এবং আপুর কোন সমস্যা হয়নি। সৌদি আরবের আবহাওয়ার সাথে আপুরা মানিয়ে নিয়ে ৪-৫ মাস থেকে এসেছে। রমজানের ঈদের পরে আপু আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। আর আমরা সবাই জানি যে রমজানের ঈদের দুইদিন পরে তথা পহেলা বৈশাখ থেকেই আমাদের দেশের আবহাওয়া প্রচন্ড আকারে গরম হতে থাকে। তাপমাত্রা দিনকে দিন বাড়তেই থাকে।
কিন্তু আমার ভাগ্নি বাংলাদেশের এই গরম তাপমাত্রা সহ্য করতে পারতেছে না। প্রতিদিন রাতের বেলা কান্নাকাটি করে। দিনের বেলা নদীর পাড়ে, গাছ তলায়, এখানে সেখানে বসে দাঁড়িয়ে সময়টা কেটে যায়। যখন রাতের বেলা ঘুমাতে যাই আর তখনই লোডশেডিং শুরু হয়ে যায়। আর যখন লোডশেডিং থাকে তখন প্রচন্ড গরম শুরু হয়। এই গরমের মধ্যে প্রচুর কান্নাকাটি করে। যদিও মাহদিয়ার জন্য চার্জার ফ্যান আনা হয়েছে। কিন্তুু চার্জার ফ্যান চলে তিন ঘন্টা লোশেডিং থাকে ছয় ঘন্টা। অবশেষে আপু আমাদের বাড়ি থেকে তার শ্বশুর বাড়িতে চলে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে আরো বেশি গরম অনুভব করে। দিনের বেলাও আমার ভাগ্নি কান্নাকাটি করে। আপু বাধ্য হয়ে আবার আমাদের বাড়িতে চলে আসেন। আমাদের বাড়ি থেকে আপুদের বাড়ি বেশি দূরে নয়। সিএনজিতে যেতে মাত্র ২০ টাকা ভাড়া লাগে।
যাইহোক এতদিন যাবত অনেক কষ্ট করেই সবাই গরম সহ্য করে যাচ্ছে। তবে গত কয়েকদিন যাবত আমার ভাগ্নির সারা শরীরে ছোট ছোট ঘামাচি দেখা দেয়। প্রথমে সবাই ঘামাচি দেখে বিষয়টা তেমন আমলে নেয়নি। বিভিন্ন ধরনের পাউডার দিয়ে ঘামাচি গুলো মুছে ফেলার চেষ্টা করে। ঘামাচি গুলো শরীর থেকে সরাতে সক্ষম হয়। তবে গত পরশুদিন আমার ভাগ্নির শরীরে গরমের কারনে ফোসকা তথা ঠসা ফুটে গেছে। গতকালকে সারা শরীর এরকম ঠসা দিয়ে ভরে গেছে। শরীরে কোন প্রকার কাপড় রাখতে পারতেছে না। সারাদিন রাত কান্নাকাটি করতেছে। বিষয়টা আমার কাছে খুবই খারাপ লাগতেছে। ছোট বাচ্চা মানুষ গরমের কারণে কি কষ্ট টাই না করতেছে। আমার ছোট বোন আমাকে ভিডিও কলে ভাগ্নির এই দৃশ্যগুলো দেখিয়েছে।
আজকে আমাদের পাপের জন্য ছোট ছোট বাচ্চারা সহ বিভিন্ন প্রাণীরা গরম সহ্য করতেছে। আমাদের কারণে গ্রীন হাউজ এফেক্ট বাড়তেছে, নদী দূষণ হচ্ছে, মৌসুম পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। যখন বৃষ্টি হওয়ার কথা তখন বৃষ্টি হচ্ছে না, যখন শীত আসার কথা তখন শীত আসছে না। এখনো আমাদের জ্ঞান ফিরতেছে না, আমাদের জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কঠিন কষ্টের মুখোমুখি হবে।
এখনো সময় আছে,আমাদের চারপাশে পর্যাপ্ত পরিমাণ গাছ লাগানো উচিত। সবাই নিজেদের পক্ষ থেকে নদী দূষণ থেকে বিরত থাকি। আমাদের চারপাশ ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত রাখি। এভাবে যদি চলতে থাকে হয়তো একদিন এই পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। আর এটা আমাদের কারো কাম্য নয়।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবার করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপ করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই গরমে প্রায় সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছে বিশেষ করে বয়স্ক লোক এবং বাচ্চারা।আপনার ভাগ্নির অসুস্থতার কথা জেনে খুবই খারাপ লাগলো আপু। সন্তান অসুস্থ হলে কোনো কিছুই ভালো লাগে না এবং আশেপাশে যারা থাকে আত্মীয়-স্বজন সবারই মন ব্যাকুল হয়ে থাকে। আপনাদের মনের অবস্থা বুঝতে পারছি আমি। আপনার ভাগ্নি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এই কামনাই করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit