জীবনের একনিষ্ঠ সঙ্গী- মাইগ্রেন ও সাইনাস

in hive-129948 •  15 days ago 

হ্যাল্লো বন্ধুরা

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমি সুস্থ আছি।তবে গত চারটা টা দিন অসহ্য মাথাব্যথায় ভীষণ ভাবে কুপোকাত ছিলাম! তাই তেমনভাবে কোন কিছুই করতে পারি নি। আজ আপনাদের সাথে এই নিয়েই একটি নতুন পোষ্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি। তো চলুন, আর বেশি কথা না বাড়িয়ে চলে যাই আজকের পোষ্ট টি তে.... ৷

hemicramia-6785454_1280.png


সোর্স:- www.pixabay.com

সাইনাস আর মাইগ্রেন আমার কাছে রীতিমতো দুইটা বিভীষিকার নাম! সেই ছোট্টবেলা থেকেই এই দুইটা বিভীষিকা আমাকে সঙ্গী বানিয়ে নিয়েছে! তখন আমি কেবল ক্লাস ফাইভে পড়ি। তখন থেকেই সাইনাস আর মাইগ্রেন আমার জীবনে উপস্থিতি জানান দেয়। চোখে চশমা যুক্ত হয়৷ খুব মনে আছে, তখন বান্ধবীদের মাঝে চশমা কেউ পড়তো না ওভাবে। চশমা পড়লে বেশ সিরিয়াস স্টুডেন্ট এর একটা ফীল আসতো- স্কুলে তখন কদিন বেশ ভাব নিয়ে চলাচল করতাম! বান্ধুবীরা আবার মাঝে মাঝে আমার থেকে চশমা নিয়ে নিজেরা চোখে দিয়ে দেখতো তাদের কেমন লাগবে চশমা চোখে!! এখন চিন্তা করলে হাসি পায় সেসব দিনের কথা!! সেই মজা কখন যে জীবনের সাজা হয়ে দাঁড়িয়েছে তা টের পেতে অবশ্য আমার বেশি সময় লাগে নি!!



মাইগ্রেন আর সাইনাস- মুখে আমার হাসি রাখতে দেয় না যেন বেশিক্ষণ! আমার সাথে যে এদের কি শত্রুতা - আমি তো আজও বুঝি না বাপু! কদিন ভালো থাকলেই যেন এদের আর সহ্য হয় না! জ্বালাতে চলে আসে আমাকে! সেই যে ক্লাস ফাইভের কথা বললাম, তার পর থেকে মনে হয় জীবনে এমন কোন মাস আসে নি, যে মাসে এই দুই সঙ্গী আমাকে সঙ্গ দেয় নি!! অর্থাৎ প্রতি মাসেই, সারাবছরই ওরা আমাকে অন্তত একবার হলেও সঙ্গ দেয়ই দেয়। কখনো বা কম পাত্তা দেই, আবার কখনো বা টানা ৬/৭ দিনও কাইত হয়ে থাকতে হয় ব্যাথার যন্ত্রণায়!


গত চারটা দিন ধরে এমন ভীষণ মাথা ব্যাথার সাথে দিন কাটাচ্ছিলাম। তখন এমন অবস্থা হয় যে চোখ ভীষণ সেন্সিটিভ হয়ে যায়। কোন ধরণের আলো একদমই সহ্য হয় না! আর শব্দে তো আমি বরাবরি সেন্সিটিভ। এমন সময়গুলোতে সেই সেন্সিটিভিটি আরোও বহুগুণ বেড়ে যায়। কোন বাসায় কে কি কথা বলছে, রাস্তায় কোন গাড়ি কতবার হর্ণ দিচ্ছে সেগুলোও যেন মাথায় আঘাত হানতে থাকে প্রতিনিয়ত!! এ যে কী বিভীষিকা,, যে এর মধ্য দিয়ে যায়, একমাত্র সেই জানে! তখন আমার রীতিমতো রুম দরজা জানালা লাগিয়ে মাথার উপরে নিচে দুইটা বালিশ দিয়ে চাপা রেখে আলো এবং শব্দ দুইই যতটুকু পারা যায়, প্রতিরোধ করা ছাড়া আর উপায় থাকে না।! তাই বলি, যাদের এই দুইটা সঙ্গী আছে, তাদের আসলে জীবনে অন্য কোন শত্রুর প্রয়োজন হয় না। আর যাদের এই দুইটা সঙ্গী নাই জীবনে, তারা যে উপরওয়ালার থেকে কতটা আশির্বাদ প্রাপ্ত, তা হয়তো তারা অনুভবও করতে পারেন না! বিশেষত এই মাইগ্রেন,তা আমার ক্ষেত্রে কোনো ওষুধেও কমে না! একদম পুরোপুরি মন মর্জির উপর! কখনো বা ৩ ঘন্টাতেই শেষ, কখনো টানা ৩ দিন বা ৭ দিনও চলতেই থাকবে! তখন আর চেহারার দিকে তাকানোর অবস্থা থাকে না! আমার স্কুল লাইফ এ কত পরীক্ষা এমন গিয়েছে যে পরীক্ষার আগের রাতে টিউশনির স্যার এসে মুখে মুখে পড়া রিডিং পড়ে গেছেন, সেই শুনেই পরের দিন পরীক্ষায় কোনমতে বসে পরীক্ষা দিয়েছি। ভার্সিটি লাইফেও তাই ই হয়েছে। হলে রুমমেট জোরে জোরে পড়তো, সেই পড়া চোখ বন্ধ করে শুনে শুনেই পরীক্ষা দিয়েছি বেশ অনেকগুলো! চোখ খুলে লাইট সহ্য করে বই পড়ার অবস্থায় ছিলাম না বলে! তবুও উপরওয়ালার অশেষ কৃপায় একাডেমিক রেজাল্ট যথেষ্ট ভালো আমার। মানে আমার যে রুমমেট এর পড়া শুনে শুনে আমি পড়েছি, তার থেকেও যখন আমার মার্কস বেশি আসতো তখন তো অনেকেই অবাক ই হতো! যেন তাদের বিশ্বাস ও হতে চাইতো না এটা কীভাবে সম্ভব!




যাই হোক, আজ সকাল থেকেই কিছুটা কমেছে ব্যাথা। তবে এখনো পুরোপুরি ছাড়ে নি। আশা করছি আজ যদি ফ্রেশ একটা ঘুম দিতে পারি, কাল থেকে যেনো আবারো সুস্থ আছি সেটুকু বলতে পারি! দেখা যাক কি আছে কপালে! আজ আর কথা বাড়াচ্ছি না। আমার জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো আপনাদের কাছে। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি।

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

PUSS.png

2ADPRBseKViTiLXUVCVcyKFFWwAQqRwPpNQSzHtUi2RNRAqmtaYXVePNznvthWTiKKFEk4EbRfwux6CuwsJ5AdzuSvjS6fzMA5fAA4Y1CW...qejroL7Ny1fgjD8vjRSRCARb7j8ome286FSutyVqFH96mi8ANj6PyFMjnWZcArE6PJDNk8DXMW8gVmYMokCaY4CX44YupoyUxF6CSnmBhY5cK3FBL7XWc4rv6.webp

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

মাইগ্রেন জিনিসটা আমার নেই তবে আমার মায়ের আছে। সেজন্য আমি কিছুটা জানি এটা কতটা অসহনীয়। আপনার কথাটা ভেবে বেশ খারাপ লাগছে আপু। এই চেয়ে বাজে কিছু আর সত্যি হতে পারে না। আপনার সুস্থতা কামনা করছি।

আপনার শুভকামনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। ভালোবাসা নিবেন।