হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় পরিবারসহ সুস্থ আছি, ভালো আছি। যদিও আবহাওয়াগত কারণে কম বেশি সকল বাসায় সকলেই অসুস্থতায় ভুগছেন। আমাদের ও কিছুটা তেমন ই অবস্থা। তবে সেটা এই আবহাওয়ায় স্বাভাবিক বলেই মেনে নিয়েছি। যাই হোক, আজ আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি। আমার আজকের পোষ্ট এ আমি আমার নিজের ভীষণ ভালোলাগার একটি বিষয় শেয়ার করতে চলেছি। পোস্ট টি আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন অবশ্যই... তো চলুন, আর বেশি কথা না বাড়িয়ে চলে যাই আজকের পোষ্ট টি তে.... ৷
মানুষের জীবনের একেক টা স্টেজ থাকে। জন্মের পর থেকে বড় হওয়া, আস্তে আস্তে কাঁধে দায়িত্ব আসা.. দায়িত্ব পালন করতে করতে একসময় বুড়ো হয়ে যাওয়া.. তারপর হুট করে মৃত্যুর ডাকে সাড়া দেয়া... ব্যাস! জীবন শেষ!! এই সকল স্টেজের মাঝামাঝি একটা স্টেজ আছে... যাদের বয়স ২৬ থেকে ৩৫ এর মাঝে, তাদের একটা বাজে স্টেজ হচ্ছে তারা তাদের চোখের সামনে তাদের আব্বু- আম্মুকে বয়স্ক হতে দেখছেন... আস্তে আস্তে বয়স্ক হতে দেখা মানে কর্মচঞ্চল মানুষ গুলোকে আস্তে আস্তে কিছুটা কাহিল হইতে দেখা.... সুস্থ বাবা - মা কে ধীরে ধীরে অসুস্থ হইতে দেখা এবং তারচেয়েও পেইনফুল পার্ট হচ্ছে বাবা - মা কে চোখের সামনে ধীরে ধীরে বৃদ্ধ হইতে দেখার বিষয় টা....
আমার ক্ষেত্রেও বিষয় গুলো একই.. তবে সাথে কিছু ভীষণ আনন্দের মুহূর্ত এর সাক্ষীও হচ্ছি আমি, এইটাই আমার জন্য ভীষণ আনন্দদায়ক বিষয়। আমার বাবা প্রায় দুই বছর হয়ে যাচ্ছে সরকারি চাকুরি থেকে রিটায়ারমেন্টে গিয়েছেন। এরমধ্যে আমরা তিন ভাই বোন তিন জায়গায় স্যাটেল। বাবা- মা এর হাতে এখন অফুরন্ত সময়.. তাই ক' দিন পর পর তারা বেশ দেশে- বিদেশে ট্যুর দিয়ে বেড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমার বাবা আমেরিকা, ফ্রান্স, সুদান, সিঙ্গাপুর ঘুরে ফেলেছেন। এবং মা কে সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের নানা জায়গা ঘুরে দেখেছেন। সামনে আরোও ইচ্ছে আছে... ডিসেম্বর মাসের ০৪ তারিখে তারা দুজন এবং আরোও এক সমবয়সী কাপল সহ গিয়েছেন শ্রীলঙ্কা ঘুরতে... এখনো শ্রীলঙ্কা তেই অবস্থান করছেন তারা। সকাল, বিকাল, সন্ধ্যায় তারা যেখানেই যাচ্ছেন, নিজেরা তো ইঞ্জয় করছেন ই.. পাশাপাশি আমাদের তিন ভাই বোন কেও ভিডিও কল দিয়ে জায়গা গুলো দেখাচ্ছেন পালা করে করে.... এই বিষয় টি আমি ভীষণ আনন্দ পাচ্ছি সত্যি কথা বলতে!
আমার বাবা চাকুরীরত অবস্থায় ভীষণ ঘরকুনো মানুষ ছিলেন। বাড়তি কোনো ছুটি তিনি কাটাতেন না। অফিস আর ঘর এই নিয়েই ছিলো তার দিনযাপন। আর প্রয়োজন এ গ্রামের বাড়িতে যাওয়া বছরে কয়েকবার। তবে চাকরির সুবাদেই যখন শান্তিরক্ষা বাহিনীর মিশনে যাওয়া পরে, তারপর থেকে তার নানা জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার শখটা প্রবল হয়। আর এখন রিটায়ারমেন্টের পর দুজনে মিলে সেই শখ পূরণ করছে একসাথে, সময়টা ইঞ্জয় করছে তাদের মতো করে - সন্তান হিসেবে এইটা যেনো আমার জন্য অনেক বড় পাওয়ার! অনেক বেশি আনন্দের। অবশ্য সকলে মিলেই ভারতেই সিক্কিম এও গিয়েছিলাম আমরা। তখন ও সকলে মিলে ভীষণ আনন্দ করেছি একসাথে। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি এই বিষয়টার জন্য অনেক অনেক কৃতজ্ঞ যে আমায় এমন আনন্দের ভাগিদার হবার সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি। আমার বাবা -মা আগামী কাল ভোরে শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশ এর উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন। সকলের কাছে আমার বাবা- মায়ের জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো। উপরওয়ালা যেন তাদের মনের সকল অপূর্ণ ইচ্ছে পূরণ করে দেন। তারা যেনো আরোও অনেকগুলো বছর সুস্থ থাকেন, এভাবেই ইঞ্জয় করতে থাকেন একসাথে... সন্তান হিসেবে এখন তো তাদের সাথে সবসময় থাকা টা সম্ভব হয়ে উঠে না। তবে তারা ভালো আছেন, আনন্দে দিন কাটাচ্ছেন - দূর থেকে হলেও এটুকু দেখেই চোখের শান্তি, মনের শান্তি। 😍😍 তাদের উপর যেন সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ সর্বদা থাকে, সেটাই কাম্য।
যাই হোক, আর কথা বাড়াচ্ছি না। আমার জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো আপনাদের কাছে। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই একই জিনিস আমার বাবা-মা ও করেন। প্রতি দু মাসেই কোথাও না কোথাও বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু বাবা একেবারেই দেশের বাইরে যেতে চান না, আর এদিকে মায়ের প্রচন্ড বিদেশ ঘোরার শখ। একজনের ইচ্ছেতে তো আর সবটা হয় না তাই ওরা দেশের মধ্যেই ঘোরে। তবে এই ঘোরাঘুরির মধ্যে আমিও এক দুটো ট্রিপ আমার সাথে নিয়ে বেরোনোর চেষ্টা করি। কারন আমার মনে হয় যেন সময় ফুরিয়ে আসছে এই দিনগুলো আমি আর পাব না। বাবা মাকে যতটা পারি কাছে রাখি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সেটাই দিদিভাই! সময় যা ফুরিয়ে যায়, তা তো আর ফেরত আসবে না। যত বেশি মেমোরি তৈরি করা যায়, জীবন ততোই সুন্দর! 😍
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ। আপনার বাবা-মা খুব সুন্দর ঘুরে বেড়াচ্ছেন বোন। এভাবেই ঘুরেফিরে তাদের জীবন কাটুক আনন্দে। বয়স হয়েছে ভাবলেই তো বয়স। অন্যথায় তারা চিরকালই ইয়ং থাকতে পারবে। সবকটি ছবি দেখে খুব ভালো লাগলো। এভাবেই সকলে মিলে আনন্দে হেসে দিন কাটান। জীবন তো ছোট। যে কদিন পৃথিবীতে থাকা আনন্দে থাকাই উচিত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মনের বয়সেই আসল হোক না কেন, শরীরে কিছুটা অসুবিধে তো চলেই আসে দাদা বয়সের সাথে। তবে সুস্থতার সাথে হাসিতে খুশিতে মেতে দিনগুলো ভালোয় ভালোয় কাটুক, সেইটাই চাওয়া আমার।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্ট টা দেখে যেমন ভালো লাগল তেমনি কিছুটা খারাপ ও লাগল। প্রতিটা সন্তানের ইচ্ছা থাকে তাদের বাবা মা কে তারা এভাবে দেখবে। সাধারণত এই মানুষ গুলো সারাটা জীবন নিজের বাড়িতেই কাটিয়ে দেয়। বাবা কে আর কোথাও নিয়ে যেতে পারব না। কিন্তু সামর্থ্য হলে আমি আমার মা কে প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্য গুলো ঘুরিয়ে দেখাব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মহান সৃষ্টিকর্তা আপনার এমন নেক ইচ্ছে পূরণ করে দিক ভাই। আব্বুর জন্য যে আক্ষেপ আছে, সেটা যেনো আম্মুর বেলায় না থাকে। আন্টিকে নিয়ে খুব সুন্দর সুন্দর স্মৃতি তৈরি করার তোফিক দান করুক উপরওয়ালা, সেই দোয়া রইলো ভাই। 😍😍 আমার বাবা মা এর সুস্থতার জন্যও দোয়া করবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit