হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় পরিবারসহ সুস্থ আছি, ভালো আছি। যাই হোক, আজ আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি। আজ একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং - গল্প শেয়ার করবো। আশা করবো আপনাদের ভালো লাগবে। গল্প আসলে খুব বেশি লেখা হয় না। তবুও পোস্ট এ ভিন্নতা আনার জন্য চেষ্টা করছি। কমিউনিটি তে অনেকেই দারুণ দারুণ ক্রিয়েটিভ রাইটিং শেয়ার করে থাকেন। নতুন চেষ্টা হিসেবে আমার পোস্ট টিতে কোন ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো। আর গল্প টি আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন অবশ্যই... যে কোন সমালোচনা আগ্রহের সাথে গ্রহণ করবো। তো চলুন, আর বেশি কথা না বাড়িয়ে চলে যাই আজকের পোষ্ট টি তে.... ৷
শীতের রাতে গ্রামে রাত দশটা পার হওয়া মানেই অনেকটা গভীর রাত। রাহেলা বানু রুমের এপাশ থেকে ওপাশ ক্রমাগত হাটাহাটি করে বেড়াচ্ছেন। তার স্বামী গফুর মিয়া এখনো বাড়ি ফেরেন নি। রাহেলা বানু বেশ চিন্তিত হয়ে আছেন একটি বিষয় নিয়ে। গফুর মিয়া ঘরে ফিরলে তার সাথে আলাপ করে একটা সিদ্ধান্তে না আসা পর্যন্ত তার শান্তি হচ্ছে না। গফুর মিয়া ভ্যান গাড়ি করে মালামাল পরিবহন এর কাজ করেন। এতক্ষণে ঘরে ফেরার সময় হয়েই এসেছে। কিন্তু আজ যেনো সময় ই কাটছে না রাহেলা বানুর! তাই এপাশ থেকে ওপাশ হাটাহাটি করেই যাচ্ছেন আর সেই অদ্ভুত মহিলার কথা গুলো চিন্তা করেই যাচ্ছেন! বিকেল বেলা উঠোন ঝাড় দিচ্ছিলেন রাহেলা বানু। হুট করে বলা নাই, কওয়া নাই এক অদ্ভুত মহিলা যেন সামনে হাজির হন, অথচ পায়ের শব্দটি পর্যন্ত পান নি রাহেলা বানু। অদ্ভুত মহিলা বলার কারণ তার চোখেই কেমন যেনো অদ্ভুত একটা ভাব ছিলো, পোশাক এবং চুলও নোংরা, অগোছালো। ঠিক পাগলি নন, তবে সাধু- সন্নাসীর কাতারেও ফেলতে মন সায় দেয় না- এমন। রাহেলার নাম ধরেই বলেন, -" তোর অভাবের দিন ফুরাচ্ছে রে রাহেলা! যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারিস, তোর অভাবের দিন শেষ হতে যাচ্ছে!"
ছবি টি canva এপ দিয়ে বানানো
অপরিচিত অদ্ভুত এক মহিলার কাছে নিজের নাম এবং এমন অদ্ভুত কথা শুনে আরোও ভরকে যায় রাহেলা বানু। জিজ্ঞেস করে - " আপনি কে? কি চান? আমার নাম জানেন কিভাবে? কি বলতে চান? " রাহেলা বানুর এতগুলো প্রশ্ন শুনে হা হা করে হেসে উঠেন সেই মহিলা। প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলেন, -" কাজের কথা শোন! সামনের অমাবস্যার রাতে, ঠিক রাত বারোটার সময় উত্তরের মাঠের বড় তেতুল গাছটার সাথে একটা গাই গরু বেঁধে রেখে আসতে বলবি তোর স্বামীকে। ঠিক তার পরের অমাবস্যায় একদম রাত ১২ টায় গিয়ে সেই গাছের গোড়ার মাটি তোর স্বামী একা খুড়লে দশ ভরি স্বর্ণ পাবি। তবে এই কথা তুই আর তোর স্বামী ছাড়া অন্যকেউ যেনো না জানে। জানলেই সর্বনাশ হবে।! তিন দিন পর অমাবস্যা, এর মাঝেই কি করবি সিদ্ধান্ত নে। অমাবস্যার পর যেনো মনে তিলমাত্র সন্দেহ না থাকে! মনে রাখবি- বিশ্বাস এ মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর !! " বলেই যেন সে মহিলা চোখের পলকেই আবার হারিয়ে গেলো!! রাহেলা বানুর মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো!
স্বামীর সাথে পরামর্শ করে রাহেলা বানু সিদ্ধান্ত নিলো রিক্স একটা নিবেই। গাই গরু তাদের নেই। ধার দেনা করে হলেও এই তিন দিনের মাঝে কিনে রেখে আসবে সেই মহিলার বলে দেয়া জায়গায়! গফুর মিয়া শুনে কিছুটা প্রতিবাদ ই করলো, কিন্তু রাহেলা বানুর এক কথা- যদি মহিলার কথা মিথ্যা হয়, তবে সর্বোচ্চ কটা টাকাই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, কিন্তু যদি সত্যি হয়, তবে বাকি জীবন এর জন্য আসলেই তাদের দুঃখ দুর্দশা ঘুচবে! মেয়েটার বিয়েও তো দিতে হবে!! রাহেলা বানু বুঝালো, যা আছে কপালে! মনের সংশয় মিটায় ফেলেন, যদি গাই- গরুর টাকা গচ্ছা যায়, সেটা মেনে নিয়েন। তবে আমার মন বলছে ভালো কিছুই হবে! রাতে চিন্তা করতে করতে মেনে নেয় গফুর মিয়াও! ধার দেনা করে গাই গরু কিনে মহিলার কথা মতো অমাবস্যার রাতে রেখে আসে সেই গাছের সাথে। পরের অমাবস্যায় গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ খোঁড়ার পরেই সত্যি সত্যি একটা বাক্স পেয়ে যায়! সে বাক্স নিয়ে চুপচাপ ঘরে চলে আসে। দুদিন ধরে ভীষণ জ্বরে পরে থাকে গফুর মিয়া। ওদিকে রাহেলা বানুও ভীষণ চিন্তায় পরে যান। দুদিন পর গফুর মিয়া জ্বর থেকে সেরে উঠলে যেনো দুজনের ই জানে পানি ফিরে আসে, উপরওয়ালার প্রতি লাখ লাখ শুকরিয়া জানায়। যেহেতু বাহিরের কাউকে জানানো যাবে না, খুব ধীরে সুস্থে প্ল্যান করে তারা পরিবার সহ শহরে চলে যান। এক বছর পর বেশ অবস্থা সম্পন্ন ভাবে ফিরে আসেন। গ্রামে সকলে জানে যে শহরে গিয়ে লটারি জিতে সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা করে গফুর মিয়ার দিন বদলাইসে! ওদিকে রাহেলা বানু মনে মনে সেই মহিলার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং রাহেলা বানুর কানে যেনো সেই কথাই বাজে- " বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর! "
যাই হোক, আর কথা বাড়াচ্ছি না। আমার জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো আপনাদের কাছে। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit