আমাদের একজন গল্পের জাদুকর ছিলেন!

in hive-129948 •  9 days ago 

“শুভ্র ",

“ তোমাদের এই নগরে " " এই আমি" যেন একযুগ পরে এলাম জানো! তুমি ছাড়া এই নগর যেনো “অন্যভুবন”, যেন একদম “শূন্য"। তুমিহীনা “ এইসব দিনরাত্রি" তে “ একা একা" আমার আর "বৃষ্টি বিলাস " কিংবা " সমুদ্র বিলাস " করা হয় না জানো? দিনের “ প্রথম প্রহর", “মধ্যাহ্ন ", “অপরাহ্ণ", কিংবা “ দিনের শেষে ” কেবলই “চক্ষে আমার তৃষ্ণা " জাগে সারাক্ষণ - “তোমাকে" দেখার তৃষ্ণা!

“এই শুভ্র! এই”,
“অনন্ত নক্ষত্র বীথি " জানে, তুমিই “আমার আপন আঁধার", তুমিই আমার “অন্ধকারের গান", তুমিই আমার “ ছায়াসঙ্গী"! তুমি আমায় “নির্বাসন" এ দিয়ে “মেঘের ওপর বাড়ি" বানিয়েছো ঠিকই, তবে তুমি “ ভয়" পেয়ো না। আমি “জনম জনম " “অপেক্ষা" করাবো না “ তোমাকে"! তোমার প্রিয় “ নীল অপরাজিতা" কিংবা “ বাদল দিনের দ্বিতীয় কদম ফুল" হাতে নিয়ে “ মাতাল হাওয়া"য় “কিছুক্ষণ " নাচতে নাচতে তোমার “প্রিয়পদরেখা" অনুসরণ করে “ এলেবেলে" পা'য়ে ঠিকই এসে দাঁড়াবো তোমার “ দরজার ওপারে"! খুব শিগগিরই....

ইতি,
তোমার “দেবী"।

হ্যাল্লো বন্ধুরা

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় পরিবারসহ সুস্থ আছি, ভালো আছি।আজ আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি। উপরের চিঠি টা পড়েই হয়তো অনেকে বুঝে ফেলেছেন! চিঠিটা লিখেছি প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর কিছু বই এর নামের অবলম্বনে। মূলত গতকাল ছিলো নন্দিত লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর জন্মদিন। তাই আজ প্রিয় লেখককে নিয়েই কিছু লেখা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলে এলুম। তো চলুন, আর বেশি কথা না বাড়িয়ে চলে যাই আজকের পোষ্ট টি তে.... ৷

IMG20241113223731.jpg


বাংলার একটা বড় সম্প্রদায়ের বই পড়ার আগ্রহ তৈরিই হয়েছে এই মানুষ টার বইয়ের হাত ধরে। কারণ হুমায়ুন আহমেদ এর বই একবার শুরু করলে তা নিজেই আপনাকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবে। আমার পড়া প্রথম হুমায়ুন আহমেদ এর বই এর ক্ষেত্রেও তাই ই হয়েছিলো, এবং সেই থেকে যে শুরু,, পরবর্তীতে পড়া তার সকল বইয়ের ক্ষেত্রে এই একই ব্যাপার টাই ঘটেছে! তার লেখা সবসময়ই খুব সহজেই পড়া যায়, বেশ অদ্ভুত কী যেনো একটা শক্তি যেন শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় এক বসাতেই! নইলে শান্তিই লাগে না!! অথচ কত কিছু যে ভাবাতে থাকে তার চরিত্রগুলো, সেটা পাঠকমাত্রই জানে!!


অনেকে এই বিষয় টাকে কেন্দ্র করেই বলে থাকেন যে হুমায়ুন আহমেদ সস্তা লেখক! বইবিক্রিই যার আসল উদ্দেশ্য! আবার তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কথার শেষ নেই! তা তাকে নিয়ে যতই সমালোচনা হোক না কেন, আমাদের মতো পাঠকের জন্য তার জায়গাটা একটু আলাদাই বটে। প্রচন্ড জ্বর কিংবা মাথা ব্যাথার সময়ে যখন মোবাইল টিপতেও ভালো লাগে না, তখনও অনায়াসে তার যে কোন বই পড়ে ফেলা যায়! আবার, কত কত এমন মানুষ আছেন, যারা তার চরিত্র হিমু হতে চায়, কেউ বা চায় মিসির আলি হতে! হুমায়ুন আহমেদ ই বিরাট একটি সম্প্রদায়কে ইট কাঠের এই নগরীর মাঝেও নতুন ভাবে বৃষ্টি বিলাস শিখিয়েছেন, জোছনা বিলাস শিখিয়েছেন! মানুষের সাইকোলজি যে কত অদ্ভুত হতে পারে, সাধারণ মানুষকে তা কতভাবে যে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন প্রায় প্রতিটি বইয়ের মাধ্যমেই !
তর্ক বিতর্ক যতই থাকুক, বিশাল একটি ফ্যানবেজ আছে তার, তিনি এই তথাকথিত সাধারণ সস্তা লেখা দিয়েই বিশাল পাঠক সম্প্রদায়ের মানের গভীরে এমন ভাবে জায়গা করে নিয়েছেন যে এত বছর পরেও তার লেখা যেন পুরানো হয় না!! পড়া বই ই আবারো নতুন ভাভে পড়তে গেলেও কখনো বোরিং তো লাগেই না, বরং অনেক সময়ই নতুন নতুন চিন্তা মাথায় উঁকি দেয়!! বিশাল সংখ্যক মানুষের চিন্তায়, কল্পনায়, পাগলামিতে তিনি আজও নানা ভাবে বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন! আমরা বহুযুগ পর্যন্ত গর্বের সাথেই বলতে পারবো, আমাদের একজন গল্পের জাদুকর ছিলেন!! শুধু যে গল্প তা না, নাটক/ সিনেমার ক্ষেত্রেও তার অবদান যথেষ্ট মর্যাদাপূর্ণই বটে! সে নিয়ে আমি কথা বাড়াবো না, আমি শুধু তার লেখার জন্যই বলছি! আমি একেবারে তার ডাইহার্ট ফ্যান যাকে বলে তেমন না, তবুও আমার গতকালকের সারাটাদিন ভীষণ মন খারাপ ছিলো শুধুমাত্র এইজন্যই যে মানুষ টা আর নেই এই আকাশের নিচে! তার লেখার আসলেই কত শক্তি যে তার নিচের লাইনগুলোর জন্যই বোধহয় আমার গতকালকের সারাটাদিন ভাবনায় কেটে গিয়েছে---

" পৃথিবীতে ফিনিক ফোটা জোছনা আসবে। শ্রাবণ মাসে টিনের চালে বৃষ্টির সেতার বাজবে। সেই অলৌকিক সঙ্গীত শোনার জন্য আমি থাকব না। কোনো মানে হয়?"

আজ আর আমি কথা বাড়াচ্ছি না। আমার জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো আপনাদের কাছে। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি।

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

PUSS.png

2ADPRBseKViTiLXUVCVcyKFFWwAQqRwPpNQSzHtUi2RNRAqmtaYXVePNznvthWTiKKFEk4EbRfwux6CuwsJ5AdzuSvjS6fzMA5fAA4Y1CW...qejroL7Ny1fgjD8vjRSRCARb7j8ome286FSutyVqFH96mi8ANj6PyFMjnWZcArE6PJDNk8DXMW8gVmYMokCaY4CX44YupoyUxF6CSnmBhY5cK3FBL7XWc4rv6.webp

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আমি এখনও হুমায়ুন আহমেদ এর বই পড়া শুরু করিনি। তবে দ্রুতই হুমায়ুন আহমেদ এ যাব। হুমায়ুন আজাদ বলেছিল উনার লেখায় নাকী গভীরতা নেই। যদিও ব‍্যাপার টা অনেক বিতর্কিত। তবে বাংলা সাহিত্যে উনার অবদান অনেক। শুধুমাত্র লেখক হিসেবে না একজন পরিচালক হিসেবেও উনার সৃষ্টিগুলো অন‍বদ‍্য। দারুণ লিখেছেন আপু।

একেবারেই ঠিক বলেছেন হুমায়ুন আহমেদ আমাদের বই পড়া শিখিয়েছেন। সহজ সরল ভাষায় লিখা বই এর মধ্যে একটা অন্য রকম কিছু আছে যা পাঠককে বইটি শেষ না করা পর্যন্ত ধরে রাখে। আর একই বই বার বার পড়লেও যেনো পুরানো হয় না। নতুন করে কিছু পাওয়া যায় পুরাতন বই।

আমি তো তার অনেক গুলো বই ই বারবার পড়ি। মাঝে অবশ্য বেশ অনেক দিনের গ্যাপ দেই। যখন অন্য কিছু পড়তে ভালো লাগে না, তখন ও তার বই নিয়ে পড়া শুরু করি।আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।