জেনারেল রাইটিং :- ডাব ও নারিকেল চুরি করে খাওয়ার ঘটনা।

in hive-129948 •  9 months ago  (edited)
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আলোচনা করবো একটি গল্প , আর এই গল্পের নাম ডাব ও নারিকেল চুরি করে খাওয়ার ঘটনা।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...


Source


অনেক বছর আগের কথা যে সময় আমরা সবাই দল বেঁধে বেড়াতাম। আমাদের কাজ ছিল তিন বেলা বাসায় খাবার খেয়ে সারাদিন বোর্ডিংয়ে থাকা। সেখানেই আমরা লেখাপড়া করতাম সবকিছু সেখানেই চলত। আমাদের বোর্ডিং এর পাশে একটা পুকুর ছিল সেই পুকুরে গোসল করতাম কত আনন্দ সেখানে করতাম তারা বলে শেষ করা যাবে না। সেদিনের সেই সমস্ত স্মৃতিগুলো এখন মনে পড়লে অন্তরটা ফেটে যায়। বারবার মনে হয় সেই সময়টা যদি পেতাম। কিন্তু যেটা একবার চলে যায় সেটা তো ফিরে আসে না। সেই বোডিং এ আমরা ১০-১৫ জন ছেলে থাকতাম সেখানে প্রায় দশটা বছর কাটিয়েছি আমরা। এই দশ বছরের মধ্যে অনেকগুলো স্মৃতি আমাদের মাঝে রয়ে গেছে। এক একটা স্মৃতি যেন এক একটা ভালো লাগার ভালোবাসার সময়। যে সময় গুলো ইচ্ছা করলে ভুলে থাকা যায় না। মাঝেমধ্যে ঘুমের ঘরে স্বপ্নেও সেই সব স্মৃতি গুলো মনে পড়ে যায়। আর এসব স্মৃতিগুলো মনে পড়লেই মনটার ভিতরে কেঁদে ওঠে। অনেকগুলো স্মৃতির মধ্যে আজকে আপনাদের মাঝে একটা স্মৃতি শেয়ার করব আশা করি ভালো লাগবে।


সময়টা ছিল গরমকাল। ভীষণ গরম পড়তো সেই সময়। গরমের কারণে ঠিকমতো কারেন্ট থাকত না। তাই যতটুকু পারতাম লেখাপড়া শেষ করে আমরা সবাই বাইরে মাচালে বসে থাকতাম। আবার কখনো কখনো আমরা স্কুলের মাঠে বসে থাকতাম। আবার যখন কারেন আসতো তখন আবার পড়ার টেবিলে চলে আসতাম। এভাবে রাত বারোটা একটা বেজে যেত। যখন মনে যা চাইত তখন আমরা করে বেড়াতাম। সত্যি বলতে আমরা যারা ছিলাম সবাই পিতা মাতার অন্তরাজের বাইরেই ছিলাম বলা যায়। আর আমাদের পাড়ার যেসব মানুষগুলো ছিল সবাই জানত এই ছেলেরা একটু দুষ্টামি করে বেড়ায়। আসলে সত্যি কথা বলতে সেই সময় মানুষের অভাব ছিল কিন্তু ফল জাতীয় কোন জিনিসের অভাব ছিল না কারণ প্রত্যেকটা মানুষের বাড়িতে অনেক ধরণের গাছপালা থাকতো। একদিন হঠাৎ করে ছোট একটা ভাই বলে উঠল ভাই আজকে ডাব খেতে যাব। আমাদের মধ্যে একটা বিষয় সবসময় থাকতো সেটা হল আমাদের মধ্যে যদি কেউ একটা কথা বলতো সেই কথাটা আমরা পাশে এই কাজটা করতাম। ছোট ভাই কথা বলাতে আমরা বললাম আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আমরা আজকে পড়াশোনা করে এগারোটার পরে বা বারোটার দিকে যাব।


যার যার মত শেষে পড়াশোনা শেষ করে বারোটা বাজার পরে আমরা একটা বিশাল দড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলাম। আসলে দড়ি নেয়ার কারণ ছিল ডাবের কাঁধি কেটে নামিয়ে দিতাম এর জন্য। ঐদিন আমরা দশজনকে গিয়েছিলাম। সেখানে বিশাল নারিকেলের বাগান ছিল ওই বাগানের মধ্যে আমরা দুইটা নারিকেল গাছকে বেছে নিলাম। একটা গাছে আমি উঠেছিলাম আর একটা গাছে আমার বন্ধু আশরাফুল উঠেছিল। আমরা দুইজন গাছে ভেসে উঠতে পারতাম যে কোন গাছে যে কোন সময় উঠে পড়তেন। দুইজনে যে গাছে উঠেছিলাম ওই দুই গাছের দুই দুই চার কাঁধি ডাব ছিল। দুজনা কেটে নামিয়ে নিলাম দড়ি দিয়ে। এরপর দুইজন নিচে নেমে আসলাম। সত্যি বলতে এতগুলো ডাব ছিল আমরা ১০ জন খেয়ে শেষ করতে পারছিলাম না। আমরা যেগুলো গিয়েছিলাম আমরা জন প্রতি ছয় থেকে সাতটা করে এমনকি নয় টাও ডাব খেয়ে দেখার জন্য। এর মধ্যে হঠাৎ করে একটা ঘটনা ঘটে যায় হঠাৎ একটা শব্দে আমরা সবাই একটু চমকে উঠি। আমাদের মধ্যে একজন আতাই ছিল। আতাই বলছে যে কোন কিছুতে এসে একটু ভয় পেয়ে যেত। এই সব দেশের ঝেড়ে মারল দোড়। এতে করে সামনে গিয়ে সে হঠাৎ পড়ে যাবে মুখ থুড়ে পড়ে যায় এটা দেখে আমরা ভেবে যায় হাসি। আসলে হাসার কারণ ছিল ও এমন একটা বলদ ছিল সব সময় এমনটা করত। যেখানে আমরা দাঁড়িয়ে আছি আর সে ভয়তে দৌড় দিল।


এরপরে একটি নারিকেল গাছে উঠেছিলাম নারিকেল গাছে দড়ি দিয়ে যখন কাঁদিতে বেঁধে দিয়েছিলাম এরপরে কেটে দেয়ার সাথে সাথে সেটা দম করে নিচে পড়ে যায়। এতটাই বেশি শব্দ হয়েছিল আমরা ভেবেছিলাম এবার মনে আমরা সবাই ধরা পড়ে গেলাম। সেগুলো আমরা সবাই মিলে তাড়াহুড়াও করে হাতে নিয়ে ঝেড়ে দৌড়। যখন আমরা একত্রিত ছিলাম সেই সময় এমন বহু ঘটনা আমরা ঘটিয়েছি। ভালো-মন্দ সব মিলিয়ে আমাদের জীবন অতিবাহিত করেছি। সেই সময় স্মৃতিগুলো মনে পড়লে সত্যি ভীষণ খারাপ লাগে। আজকে সেই সময় আমরা যারা একত্রিত ছিলাম এখন বর্তমান আমরা সবাই বিচ্ছিন্ন। এখন সবার সাথে যে ঠিকভাবে দেখা করব সেই সময়টাও হয়ে ওঠেনা। মানুষের জীবনে এমন বহুরূপী। সব সময় এক থাকেনা জীবন সংসার টাকা পয়সার পিছনে ছুটতে গিয়ে আমরা অনেক কিছু হারিয়ে ফেলি। সত্যি বলতে বাস্তবতা কঠিন একটা জিনিস। বাস্তবতার মুখে যখন মানুষ পড়ে যায় তখন আর কোন কিছুই তার হয়ে ওঠে না। তবে সবকিছু মিলিয়ে জীবনের বাস্তবতা এবং ভালোলাগা ভালোবাসা সময়টা মানুষ কখনোই ভুলে থাকতে পারে না।


ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।


আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ডিভাইস poco M2
লোকেশন মেহেরপুর


👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


1666192548913_1666192548801_1666192548599_1666192548416_1666192548270_1666192548091_1666192547839_1666192547665_1666192022150.jpg

আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxFqYAEtmnwbJrshP4Tdaov4BmxkXJqLhx2USjht6Vy2soth7e34k1TKBQ2RZ2vXNJBF8X9uKH9aLNKFV...xU6W1ggWaLoBhkXz82k34bfNqfnFypapZe2oHzEHELJzLj6msr2RorLQSivfSXJaPiBZmUdQYzewFKsaGxDCyC6yRhEDYu8mNwzeEnkjmmjmpLrQEyQZKZnCTp.png

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

jion me

প্রত্যেকটা ছেলেদের এই একটাই অভ্যাস, সবাই একসাথে হলে কোন না কোন কিছু অবশ্যই ঘটাবে। আর আপনারা যেহেতু অনেক বছর একসাথে ছিলেন, তাই অনেক স্মৃতি আপনাদের মাঝে জড়িয়ে রয়েছে বুঝতে পারতেছি। আপনাদের ডাব চুরি করার এবং খাওয়ার গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। বুঝতে পারতেছি অনেকগুলো ডাব ছিল, তাই তো একজনে অনেকগুলো ডাব খেয়েছিলেন। চাইলেও কিন্তু সেই মুহূর্তগুলো আর ফিরে আসবেনা। আর এই ধরনের স্মৃতি মনে পড়লে ইচ্ছে করে আবারও সেই দিনগুলোতে ফিরে যাই।

সত্যি আপু জীবনের কঠিন একটা সময় আমরা পার করেছি। ওই সময়টা এত মজা মাস্তি করেছি বলে বোঝাতে পারবো না। এখন শুধু মনে হয় যদি ফিরে পেতাম তাহলে কত না ভালো হতো যদি অসম্ভব সেটা। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

ছোটবেলায় আমরাও প্রচুর ডাব চুরি করে খেয়েছিলাম। সব বন্ধুরা একত্রিত হওয়ার পর এই বিষয়টা একেবারেই মিস যেত না। সব বন্ধুরা মিলে একসাথে আবার এই কাজগুলো করতে ভালোই লাগতো। এটার মধ্যে আলাদা একটা ভালো লাগা কাজ করতো। আপনার আজকের এই পোস্ট পড়ে আমার নিজেরই আগের কথাগুলো মনে পড়ে গেল। সেই সময় গুলো যদি ফিরে পেতাম তাহলে আর কোন কিছুরই প্রয়োজন হতো না। কারণ সেই সময় গুলো ছিল জীবনের বেস্ট সময়।

আসলে ভাই বয়স এমন একটা জিনিস যে সময় সবাই বন্ধুরা একত্রিত মিলে অনেক কিছু করতে ভালো লাগতো। কিন্তু এখন ইচ্ছা করলেও সময় পাওয়া যায় না। আপনার এই কথাগুলো পড়তে আমার বেশ ভালো লাগলো ভাই। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আসলে ফেলে আসা কিছু স্মৃতি আছে যা কখনো ভোলা যায় না।বিশেষ করে বন্ধুদের সাথে কাটানো মূহুর্ত গুলো একদম ভোলা সম্ভব নয়।আপনার নারিকেল চুড়ি করে খাওয়ার গল্পটি ভিষণ ভালো লাগলো।এরকম ভুল গুলো অনেকেই করে থাকে। আসলে এমন বয়স গুলোতে ভুল,সঠিক বিচার করার ক্ষমতা থাকে না জন্য এরকম হয়।ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে।ধন্যবাদ আপনাকে স্মৃতিচারন করে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

আপু পুরনো দিনের সেই স্মৃতিগুলোর কথা যদি মনে পড়ে যায় এখনো মনটার মধ্যে বিষন্ন ছটফট করে। শুধু বারবার মনে হয় সেই দিনগুলোর যদি আবার ফিরে পেতাম আবারও যদি সেই সময় চলে যেতে পারতাম। জানেন চাইলেই পাবো না কিন্তু তারপরও অনেক ইচ্ছা লাগে। আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য

Posted using SteemPro Mobile

খুব সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন আপনি। আসলে আমরা এখনো ডাব ও নারিকেল চুরি করে খেয়ে থাকি৷ মাঝেমধ্যেই সকল বন্ধুরা মিলে এরকম প্ল্যান করা হয়ে থাকে৷ আজকে আপনার এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়টি জানতে পেরে খুব ভালো লাগলো৷ আপনার এই পোস্টটি পড়ে কিছুদিন আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল৷ অসংখ্য ধন্যবাদ।

আসলে বন্ধুরা সবাই একত্রিত হলে সব সময় মনে হয় কোন কিছু একটা করতে হবে হোক সেটা ভালো কিংবা খারাপ। প্রত্যেকটা মানুষের একটা বয়স থাকে, আর সেই বয়সে কোন কিছু বাধা মানে না। সব বাধা পেরিয়ে নিজেকে জয় করতে চাই।

Posted using SteemPro Mobile

ছোটবেলার এই স্মৃতি গুলো কখনো মুছে ফেলা যাবে না। এমন কিছু কিছু স্মৃতি রয়েছে যা মনে পড়লে খুব হাসি পায় আবার কিছু স্মৃতি রয়েছে যা মনে পড়লে কান্না চলে আসে। সেই সময়টায় যেমন পড়ালেখার চাপ ছিল না তেমনি কোনো শাসনবারণ ছিল না। যাই হোক আপনাদের ডাব ও নারিকেল চুরি করে খাওয়ার ঘটনা পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

সত্যি আপু একটা সময় ছিল যখন বন্ধুদের সাথে আড্ডায় সারাদিন কেটে যেতো। সেই সব স্মৃতি গুলো মনে পড়লে মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। আর বারবার মন বলতে থাকে যদি আবার সেই সময় গুলো ফিরে পেতাম। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile