পুরো এক দিন হাতে থাকতেই প্রথম টেস্ট ম্যাচের সমাপ্তি ঘটলো

আজকে আপনাদের সাথে খেলাধুলা বিষয়ক একটি পোস্ট শেয়ার করে নেবো। গতকাল ভারত আর সাউথ আফ্রিকার মধ্যে প্রথম টেস্ট ম্যাচ শেষ হয়েছে। ইনিংস তেমন কোনো আকর্ষণীয় বা আনন্দদায়ক হয়নি। খেলাটা পুরো এক তরফা মতো হয়েছে অর্থাৎ সাউথ আফ্রিকার পাল্লা ভারী বোলিং হোক আর ব্যাটিং হোক, সব দিক থেকে। খেলাটা সেঞ্চুরিয়ান নামক একটি মাঠ খেলা হয়েছে, তবে এই পিচে কিন্তু মোটামুটি ভালোই বড়ো রানের একটা সম্ভাবনা আশা করা গিয়েছিলো উভয় টিমের কাছ থেকে। আর ইন্ডিয়া টেস্ট খুব ভালো খেলে, রানও অনেক করে থাকে। কিন্তু এই ম্যাচটাতে একটু অন্যরকম ঘটনা ঘটলো। সাধারণত সাউথ আফ্রিকা টসে জিতবে তাদের মাঠে এটাই স্বাভাবিক, আর এই টসটাও অনেকটা নির্ভর করে ম্যাচের পজিশন। পিচে ঘাস থাকলেও, এটা কিন্তু আবার সময়ের উপরেও নির্ভর করে, কারণ টেস্ট ম্যাচে সারা দিনে খেলার ফলে পিচের অবস্থা খারাপ হয়ে যায় আর ফলে ব্রেক টাইম-এ রোলার টানার ফলে একটু পরিবর্তনও হয়ে যায়।

তবে যাই হোক এইরকম হতাশা জনক ইনিংস খেলতে ইন্ডিয়ার আমি আগে দেখিনি। আসলে প্রথমে তাদের ব্যাটিং দেখে আমিও ভাবছিলাম যে, এটা বোলিং পিচ হতেও পারে, কারণ তাদের ব্যাটিং পজিশন খুবই বাজে অবস্থায় ছিল, টেস্টে যেন টি২০ এর মতো উইকেট পড়ছে তাদের। রোহিত একদমই টিকতে পারেনি। আসলে এটাও না বললে ভুল হবে যে সাউথ আফ্রিকার বোলাররা কম হার্ড বল করিনি, তাদের প্রত্যেকটা বলার যেমন লম্বা তেমনি বোলিং লেন্থও হাই। বেশি বাউন্স বল দিলে খেলা যেকোনো ব্যাটসম্যানের কাছে একটা কঠিন ব্যাপার, সেটা এক্সপেরিয়েন্স থাকলেও না। যেমন এখানে রোহিত, কোহলি এর মতো এতো অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যাটসম্যান রান করতে না পারা মানে তখন এই কথাটাই ভাবনায় আসবে। একমাত্র রাহুল এসে ম্যাচটা একটু ধরে ধরে খেলে, যার ফলে রানটা একটু বৃদ্ধি করতে পারে। তা নাহলে একদম লো স্কোর-এ যদি ৫-৬ উইকেট পড়ে যায়, তাহলে একজন ব্যাটসম্যান আর বাকি বোলারদের উপর ডিপেন্ড করে একটা ভালো স্কোর তৈরি করা সাউথ আফ্রিকার পিচে আগুনে ঝাঁপ দেওয়ার মতো বলতে গেলে।

তবে রাহুলও সেঞ্চুরি করে দ্রুততার সাথে, কারণ তাছাড়া উপায় ছিল না, বাকিদের কাছে স্ট্রাইক দিলে এই যে একটা ২৪৫ রানের স্কোর করতে পেরেছে সেটাও হতো না আর তার সেঞ্চুরিও হতো না। আসলে এখানে তার সেঞ্চুরিটা বড়ো একটা বিষয় থাকলেও তার থেকে বড়ো দায়িত্ব ছিল টিমের রান গঠন করা। তবে সে বোলারদের সাথে কমিউনিকেশন রেখে যতটা পেরেছে, ততটা করতে সক্ষম হয়েছিল। তবে ইন্ডিয়ার এই স্কোর দেখে আমি ভেবেছিলাম সাউথ আফ্রিকাও রান করতে পারবে না, তাদেরও সমস্যা তৈরি হবে এই পিচে। তবে যেটা ভেবেছিলাম সেটাই হচ্ছিলো, তাদেরও তেমন একটা ভালো পজিশন ছিল না। তবে এলগার নামের এক ব্যাটসম্যান একাই যদি সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি হাঁকাতে থাকে তাহলে আর কি করে হবে। আসলে টেস্ট ম্যাচ খুবই ধৌর্যের বিষয়, সেটা কিন্তু আমাদের আগের প্লেয়ার পুজারা ভালোভাবেই জানে, সে এমন একজন টেস্ট প্লেয়ার ছিল যে ২০০ বল খেলেও যদি ১০ রান করতে হয় তাও সে দাঁড়িয়ে থাকবে, এইরকম রেকর্ডও আছে।

তো এক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাত সেট করাটাই মেইন বিষয় সে যে পিচই হোক না কেন। তারা যে ৪০০ রানের একটা বড়ো স্কোর করেছে তার পিছনে প্রধান ভূমিকা এলগার এর রয়েছে। সে একাই ১৮৫ রান করে, তবে এ থাকলে আরো রানের সম্ভাবনা ছিল। তাছাড়া তাদের একজন বোলার ডিফেন্স খেলে খেলে ৮৪ রান করে, তাহলে আর কিভাবে হবে। যাইহোক, বেশি একটা রানের লিড দিতে পারেনি তাও, ১৬৩ রানের লিড দেয় ইন্ডিয়ার। এই দ্বিতীয় ইনিংসে আশা ছিল যে এই রান আরামসে তুলে আরো ভালো রানের একটা টার্গেট দিতে পারবে, কারণ হাতে এখনো ১ দিন পুরো ছিল। আমি আসলে খেলা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, উঠে দেখি ৮ উইকেট পড়ে গেছে, এইটা দেখে আমি হা হয়ে গেছিলাম হা হা। ভীষণ খারাপ ইনিংস ছিল একটা। একপ্রকার হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছুই ছিল না এই ইনিংসে। তবে যে রানটা লিড পেয়েছিলো সেটাও যদি তুলতে পারতো তাও হতো, কিন্তু এই ইনিংসে আবার একা কোহলি টিকে ছিল আর বাকিরা দমকা হাওয়ার মতো এসেছে আর গিয়েছে। সাউথ আফ্রিকা একপ্রকার ইনিংসটা অনেক সহজে জিতে গিয়েছে কোনোরকম চাপ ছাড়াই।