পুঁইশাক দিয়ে বড়ো কাঁকড়ার মজাদার রেসিপি

in hive-129948 •  7 months ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি রেসিপি পোস্ট শেয়ার করে নেবো। এই রেসিপিটা করেছিলাম গত সপ্তাহের দিকে। আর এই রেসিপিটা অনেকদিন বাদেই খেলাম অর্থাৎ কাঁকড়ার তরকারি। কাঁকড়া অনেকদিন খাওয়া হয় না, আসলে বড়ো কাঁকড়াগুলো সবসময় পাওয়া যায় না তেমন একটা। এই কাঁকড়াগুলো আবার পেলেও তেমন ঘিলু বা শাঁস থাকে না, কেমন সব জল জল ভিতরে। আর এইগুলো খেয়ে তেমন মজা পাওয়া যায় না। তবে এই কাঁকড়াগুলো দেখলাম বেশ ভালোই হয়েছিল। সব কাঁকড়ায় ঘিলু না হলেও শাঁস মোটামুটি ভালোই হয়েছিল। আসলে মাড কাঁকড়াগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটু শাঁস হয়, মানে যেগুলো মেদে কাঁকড়া। কাঁকড়া আসলে খুবই সুস্বাদু হয়ে থাকে খেতে, এই কাঁকড়াগুলো তরকারির থেকে কিন্তু সবথেকে ভাজা করে খেতে বেশি মজা লাগে। দেখবেন বিচে কিন্তু সব এই কাঁকড়াগুলো ভেজেই খেয়ে থাকে।

যাইহোক, এই কাঁকড়ার রেসিপিটা আমি পুঁইশাক দিয়ে করেছিলাম। পুঁইশাক এই আরেকটা এমন সবজি যে যেকোনো তরকারি মজতে বাধ্য, এ আমার যেকোনো তরকারিতে দিলে খেতে অনেক মজাদার হয়ে থাকে। আর পুঁইশাক এর তরকারি সেটা নিরামিষ কোনো কিছু হোক বা মাছই হোক না কেন একটু ঝোল ঝোল মতো করে খেতে কিন্তু বেশিই স্বাদ লেগে থাকে। এই রেসিপিতে আমি যদিও আরো কয়েকটা সবজি দিয়েছিলাম অর্থাৎ বেগুনও আরেকটা মজাদার সবজি দিয়েছিলাম। কাঁকড়াটাও খেতে মজাদার ছিল আর সেই সাথে এই পুঁইশাক আর বেগুন এর জন্য তরকারিটা আরো বেশি মজাদার হয়েছিল। যাইহোক, এখন এই রেসিপিটার মূল উপকরণের দিকে চলে যাবো।


❁প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❁

❦উপকরণ
পরিমাণ❦
বড়ো কাঁকড়া
৫ পিস
পুঁইশাক
২৫০ গ্রাম
গোল আলু
৫ টি
বেগুন
১ টি
পেঁয়াজ
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
৮ টি
গোটা জিরা
২ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
২ চামচ


বড়ো কাঁকড়া, পুঁইশাক, গোল আলু, বেগুন


পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ


❣এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


✠প্রস্তুত প্রণালী:✠


❖কাঁকড়াগুলো প্রথমে সব কেটে ধুয়ে রাখা ছিল। এরপর আমি পুঁইশাকগুলো কেটে ধুয়ে রেখে দিয়েছিলাম।

❖আলুগুলোর খোসা ভালোভাবে ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে পিস পিস করে ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর বেগুনটিকে পিস পিস করে ধুয়ে রেখেছিলাম।

❖পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে নিয়ে কুচি করে রেখেছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম।

❖কেটে রাখা কাঁকড়াগুলোতে লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর প্যানে তেল দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖এরপর তাতে কাঁকড়াগুলো দিয়ে দেওয়ার পরে হালকা করে জল অ্যাড করে দিয়েছিলাম। এরপর কিছুক্ষন ধরে কাঁকড়াগুলো ভালোভাবে ভাজা মতো করে নিয়েছিলাম।

❖কড়াইতে তেল দিয়ে আলুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আলুগুলো ভালোভাবে ভাজা হয়ে আসলে পরে তুলে নিয়েছিলাম।

❖আলু ভাজার পরে কড়াইতে তেল দিয়ে বেগুনের পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর বেগুন ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে তুলে নিয়েছিলাম।

❖কড়াইতে আরেকবার তেল দিয়ে গোটা জিরা এবং পরে কুচি করে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর জিরার সাথে পেঁয়াজও ভালো করে ভেজে নিয়েছিলাম।

❖এরপর তাতে কেটে রাখা পুঁইশাক দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে রাখা বেগুনের পিস এবং আলুর পিস দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖এরপর তাতে কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কা এবং পরে স্বাদ মতো লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖এরপর সমস্ত মশলা ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে রাখা কাঁকড়াগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং আরেকবার সবজির সাথে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

❖এরপর তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে সবজিগুলো সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম ভালোভাবে।

❖সেদ্ধ হয়ে আসলে তাতে জিরা গুঁড়ো দিয়ে আরো কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে নিয়েছিলাম তরকারিটা ভালোভাবে হয়ে আসার জন্য।

❖জ্বাল দিয়ে ঝোলটা খানিকটা কমিয়ে নেওয়ার পরে নামিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে পরিবেশনের আগে আরেকবার জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে একটি পাত্রে কিছুটা তুলে নিয়েছিলাম।


রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

পুঁইশাকের রেসিপি অনেক খেয়েছি তবে কাঁকড়ার রেসিপি আজও খাওয়া হয়নি । তবে আমার ইচ্ছা রয়েছে কাঁকড়া গলদা চিংড়ি এগুলো ফ্রাই করে খাব একদিন 🤭। যাই হোক, দাদা আপনার এই রেসিপিটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুবই সুস্বাদু। খুব সুন্দর এবং সহজ একটি প্রসেসে আপনি এটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ❤️❤️

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বেশ দারুন একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দাদা।আপনার রেসিপিগুলো বরাবরই ইউনিক হয়। পুঁইশাক দিয়ে এভাবে কাকড়া কখনো রান্না করে খাওয়া হয়নি তবে রেসিপিটি দেখেই মনে হয়েছে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। রেসিপির প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দরভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ দাদা ইউনিক একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

পুঁইশাক দিয়ে বড়ো কাঁকড়ার মজাদার রেসিপি দেখে খুবই সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আসলে দাদা আপনি মাঝেমধ্যে কাকড়া রেসিপি তৈরি করে থাকেন। আপনার রেসিপি পরিবেশন আমার খুবই ভালো লাগে। তবে কখনো কাকড়া রেসিপি খাওয়া হয়নি। আপনার এসিপি দেখে খুব লোভনীয় মনে হচ্ছে, তাই তৈরি করার ইচ্ছা জাগছে।

পুঁইশাক দিয়ে কাকড়া রেসিপি দেখে অনেক মজাদার মনে হচ্ছে। আসলে কাকড়া রেসিপি কখনো খাওয়া হয়নি। তবে কাঁকড়া ভাজি এবং ফ্রাই আমি খেয়েছি। আজকে আপনার এই পুঁইশাকের কাকাড়া রেসিপি দেখতে পেয়ে অন্য রকম একটা রেসিপি মনে হলো। ইউনিক রেসিপি দেখতে পেয়ে আমারো তৈরি করার ইচ্ছা জেগেছে। পরবর্তীতে তৈরি করবে।

বাহ রেসিপি দেখে তো খুব ভালো লাগলো দাদা। যেহেতু আপনার পছন্দের খাবার কাঁকড়া সেই সাথে আপনি পুঁইশাক দিয়ে বেশ মজার করে রেসিপি তৈরি করলেন। সত্যি তো পুঁইশাক যে কোন কিছুতেই বেশ ভালো মানাই। আর বিচে গেলে তো কাঁকড়া গুলো অনেক বেশি দেখা যায়। যখন বিকেল বেলায় সমুদ্র সৈকতে যাই বিশেষ করে কক্সবাজারের কবিতা চত্বর থেকে বিচে গেলেই এমন সুন্দর সুন্দর কাঁকড়া গুলো অনেক বেশি লক্ষ্য করি। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে কাঁকড়া আমার খাওয়া হয় না। তবে আমার পরিবারের অনেকে খেয়ে থাকেন। যদিও রান্না করি না তারা বাইর থেকে খেয়ে আসেন। যাক যেহেতু আপনার বেশ পছন্দের রেসিপি আমারও বেশ ভালো লাগলো দেখে। যখন কোন প্রিয় জিনিস নিজের পছন্দ মত করে রান্না করে খাওয়া যায় তার চেয়ে আনন্দের আর কিছু হতে পারেনা। নিজের মতো করে রান্না করে তৃপ্তি সহকারে খাওয়ার সুযোগ হয়। অনেক ভালো লেগেছে ধন্যবাদ আপনাকে।

প্রিয় দাদা চমৎকার একটি রেসিপি তৈরি করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই রেসিপি তৈরি করার প্রক্রিয়াটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। যদিও কাঁকড়া দিয়ে রান্না করা এরকম রেসিপি কখনোই খাওয়া হয়নি আমার। তবে আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হচ্ছে এরকম রেসিপি খেতে অসাধারণ সুস্বাদু লাগে।

দাদা , আপনার কাছ থেকে আজকে বেশ সুন্দর একটি রেসিপি পেলাম। বড় কাঁকড়া গুলো দেখতে কিন্তু বেশ ভালো লাগে। তবে আমি কিন্তু কখনো খেয়ে দেখিনি। আসলে আমাদের এদিকে খুব একটা পাওয়া যায় না। তাই জন্য আমার অভিজ্ঞতা নেই খাওয়ার। তবে পুঁইশাক সব সময় রান্না করা হয়। পুঁইশাক যেকোনো মাছ দিয়ে রান্না করলেই বেশি মজা লাগে। তবে আপনার আজকে রেসিপিটা দেখেও মনে হচ্ছে অনেক বেশি মজা হয়েছে খেতে। তাছাড়া অনেকদিন পরে যেহেতু খেয়েছেন তাই আরো বেশি ভালো লাগার কথা। আপনার প্রত্যেকটা রেসিপি দারুন হয়।

হ্যাঁ দাদা বিচে এমন কাঁকড়া গুলো ভেজে থাকে এবং খেতে কিন্তু দারুণ লাগে। কাঁকড়ার স্যুপ এবং ফ্রাই খেতে খুবই ইয়াম্মি লাগে। তবে কখনো সবজি দিয়ে রান্না করে কাঁকড়া খাওয়া হয়নি। যাইহোক পুঁইশাক আমার খুবই প্রিয়। বিশেষ করে চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁইশাকের ঝোল খেতে সবচেয়ে বেশি সুস্বাদু লাগে। রেসিপির কালারটা চমৎকার এসেছে দাদা। খেতেও নিশ্চয়ই দারুণ লেগেছিল। রেসিপিটা আমার কাছে বেশ ইউনিক লেগেছে। যাইহোক এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

দাদা আমি কাঁকড়া দেখলেই ভয় পাই,খাবো কি করে। সেজন্য কখনো কাঁকড়া খাওয়া হয়নি। তবে এটা ঠিক বলেছেন বিচে এই কাঁকড়া গুলো ভেজে বিক্রি করা হয়। যাই হোক কাঁকড়া না খেলেও পুঁইশাক ও বেগুন আমার খুব পছন্দ। বিশেষ করে চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁইশাক আর বেগুন খেতে দারুণ লাগে। যাই হোক আপনার রেসিপি মানেই ইউনিক কিছু খুঁজে পাওয়া। রেসিপির উপস্থাপনা দেখেই বুঝা যাচ্ছে আপনি খুব মজা করে খেয়েছেন। ধন্যবাদ দাদা ইউনিক রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

পুঁইশাক আর বড়ো কাঁকড়া দারুণ কম্বিনেশন দাদা।কিন্তু বড় কাঁকড়াগুলি আগের মতো শাস বা ঘিলু থাকে না ঠিকই বলেছেন।সবকিছু ভেজাল হয়ে যাচ্ছে যাইহোক তবুও বেশ জমে তরকারীগুলি।তবে পুইশাকের মধ্যে বেগুন দেওয়ার ব্যাপারটি আমার কাছে নতুন লেগেছে।কখনো এভাবে খাওয়া হয় নি, পুইশাক আমার খুবই প্রিয়।আপনার রেসিপিটি চমৎকার হয়েছে👌,ধন্যবাদ দাদা।

মাঝে মাঝে আপনার কাঁকড়ার রেসিপি দেখলে আমি লোভ লেগে যায়। যে কথাগুলো বলেন শুনে আফসোস হয় কেন কাঁকড়া খাইনি এখন পযর্ন্ত। পুইশাক ব‍্যাপার টা সত্যি বেশ দারুণ। যেকোনো রেসিপিতে মিশে যায়। দারুণ তৈরি করেছেন রেসিপি টা দাদা। প্রতিটা ধাপ সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ দাদা আমাদের সাথে রেসিপি টা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

আপনি এই রেসিপিটি গত সপ্তাহে করেছিলেন দাদা। আর আমি আজ পুঁই শাক চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করলাম।যেকোনো শাক খেতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আর সাথে যদি চিংড়ি বা কাঁকড়া দিয়ে রান্না করা যায় তবে খেতে কিন্তু দারুন মজা হয়।যদিও আমি কখনো কাঁকড়া খাইনি।তবে যারা খায় তাদের থেকে জেনেছি খেতে ভীষণ মজার। আমার ছেলেই তো পছন্দ করে খেতে।কিন্তু আমার ভয় লাগে কাঁকড়া দেখলে তাই বাসায় কখনো আনিনি।ভাবী রান্না করে ছেলেকে দিয়েছিল।ছেলে খেয়ে ভালো বলেছে।দেখেই তো ভয় লাগে তাই আমার খাওয়ার ও ইচ্ছে নেই। 😂কিন্তু আপনার রেসিপিটি দেখতে খুবই লোভনীয় হয়েছে।আশাকরি মজা করেই খেয়েছেন।সাথে আলু, বেগুন দিলেন।তাই আরো বেশী টেস্টি হয়েছে মনে হয়।দারুন স্বাদের এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।প্রতিনিয়ত দারুন সব মজার মজার রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।ভালো থাকবেন দাদা সব সময়।