ওয়েব সিরিজ রিভিউ: হোমস্টে মার্ডারস- ব্ল্যাকআউট ডেট ( পর্ব ২ )

in hive-129948 •  last year 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি 'হোমস্টে মার্ডারস' ওয়েব সিরিজটির দ্বিতীয় পর্ব রিভিউ দেব। এই পর্বের নাম হলো "ব্ল্যাকআউট ডেট"। গত পর্বে দেখেছিলাম যে কুহেলি নামক একজনকে রাতের আঁধারে গেস্ট হাউসে খুন করা হয়েছিল আর সেখান থেকে আজকের পর্বে দেখবো কি হয়।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
হোমস্টে মার্ডারস
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
ব্ল্যাকআউট ডেট
পরিচালকের নাম
সায়ন্তন ঘোষাল
অভিনয়
অর্জুন চক্রবর্তী, সোহিনী সরকার, সৌরভ দাস, পর্ণ মিত্র ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
১২ মে ২০২৩ ( ইন্ডিয়া )
সময়
২৫ মিনিট ( দ্বিতীয় পর্ব )
মূল ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


✠মূল কাহিনী:✠


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

খুনিটা আসলে অনেক্ষন ধরে লুকিয়ে অপেক্ষা করছিলো কুহেলি কখন গেস্ট হাউসের ভিতরে যাবে। আর এটা সম্ভবত একটা প্ল্যান করা ছিল আগের থেকে। কুহেলি যাওয়ার সাথে সাথে তো ইলেক্ট্রিসিটি চলে গিয়েছিলো, আর এমনিতে ঐরকম দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ইলেক্ট্রিসিটি যখন তখন চলে যাওয়াটা একটা স্বাভাবিক ঘটনা, তাই কেউ ওটাতে অতটা গুরুত্ব দেয়নি। আর এই জন্য ওখানে সবসময় মোমবাতির একটা ব্যবস্থা করা থাকে প্রত্যেক রুমে। কুহেলি মোমবাতি খোঁজার জন্য যখন ড্রয়ারটা খুললো তখন তার মুখটা চেপে ধরে প্রথমে অজ্ঞান করে ফেলে, আর এর ফলে সে কাউকে চিৎকার করে সংকেত দিতে পর্যন্ত পারেনি, যাকে বলে কোল্ড মার্ডার। আর এদিকে সেই সাথে ওই গেস্ট হাউসের owner কুনালও লাইট জ্বালানোর জন্য ভিতরে গিয়েছিলো আর ও টেরও পেয়েছিলো যে কেউ না কেউ এখানে প্রবেশ করেছে, কারণ তার পাশ দিয়ে কারো চলে যাওয়ার একটা আভাস সে পায়। যাইহোক এখন খুনি খুন করে সেখান থেকে অন্ধকারে ফারার হয়ে যায়। এরপর কুনাল কুহেলির রুমে গিয়ে দেখে এই অবস্থা। এরপর তার ওয়াইফ মিতাকে ডাকলে সে দেখে খুবই ভয় পেয়ে যায় এবং তার সাথে আস্তে আস্তে সবাই আসলে সবারই একই দুর্দশা হয়। তবে কিঞ্জল যেহেতু একজন পুলিশ অফিসার তাই সে বিষয়টা সেখানে হ্যান্ডেল করতে থাকে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

কিঞ্জল পুরো বিষয়টা সেখানে পরে লাইট জ্বালিয়ে দেখে আর সবাইকে কোনো কিছু ছুঁতে মানা করে, কারণ খুনির আঙুলের ছাপ সেখানে থাকতে পারে তাই অন্য কেউ যেন কিছুই সেখান থেকে না সরায়। আর কিঞ্জল অফিসে ফোন করে বাকি পুলিশদের আসতে বলেছে এখানে, ফলে কেউ চাইলেও এখন এই রহস্য উন্মোচন না হওয়া পর্যন্ত কোথাও যেতে পারবে না। আর ওই পাহাড়ি এলাকাটা রেড এলার্ট এর ভিতরে রেখে দিয়েছে, কারণ অনিরাপদ এই জায়গাটা সবার জন্য এখন, ফলে একা একা বেরোনোটাও রিস্ক সবার জন্য। কিঞ্জল আলাদা করে সবার সাথে এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলবে, কারণ যেহেতু এটি একটা পরিকল্পিত খুন তাই সন্দেহের বশে এটি যে কেউ করতে পারে। তাই কিঞ্জল কিন্তু নিজের জায়গায় ঠিক, কারণ সে কারো বন্ধু হওয়ার আগে কিন্তু একজন আইনের রক্ষক, তাই সে তার প্রোটোকল অনুযায়ী বাধ্য। যাইহোক, এরপর কুনাল এর কাছ থেকে কুহেলি সহ বাকি সবার ফোন নম্বর এবং এড্রেস চেয়ে নেয়, কারণ ইনভেস্টিগেশন এ তার এটি অতি প্রয়োজন। তবে দামিনী কিন্তু মনে মনে সেখানে কুনাল এর উপর সন্দেহ করতে থাকে, কারণ ইলেক্ট্রিসিটি চলে যাওয়ার পরে কিন্তু উনি একাই ভিতরে এসেছিলেন ইমার্জেন্সি লাইট নিতে। কিন্তু এটি এখন কেউ বিশ্বাস করতে রাজি না, এটাও হতে পারে উনিই এই কাজটা করেছেন।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

jew আর টনি এরা দুইজন আরো বেশি ভয় পেয়ে আছে, কারণ এরা দুইজন কলকাতার থেকে কোনো একটা কিছু চুরি করে এখানে পালিয়ে এসে গা ঢাকা দিয়েছিলো । আর এখন পুলিশ আসার কথা শুনে এই ভয়টা আরো পাচ্ছে, যে তারা না ফেঁসে যায়। আর jew মেয়েটার একটু টাকার লোভ আছে, সে কুহেলির ব্যাগে অনেকগুলো টাকার বান্ডিল দেখে লোভ সামলাতে না পেরে তাকেই মেরে দিয়েছে কিনা টনি এটাও তার উপর সন্দেহ করে। আর এই সন্দেহটা তার উপর করার আরো একটা প্রধান কারণ আছে, সেটি হলো কুহেলির যে ব্যাগে টাকা ছিল সেই ব্যাগটিই তাদের রুমে পাওয়া গেছে আর এটি টনিই একমাত্র জানে আর কেউ জানে না। তবে দামিনীর সন্দেহ এদের দুইজনের উপরেও গেছে, ফলে নজরে রাখছে সবসময়। অর্জুন তথা অনিমেষ আর দামিনী পরে বাইরে এসে এই বিষয়টা আলোচনা করতে থাকে যে এই গেস্ট হাউসে ভিতরে আসার তো আর কোনো জায়গা নেই তাহলে সবাই যখন এখানে ছিলাম তাহলে ভিতরে খুনি প্রবেশ করলো কখন, আর এটা হতে পারে না, তাই এখন পুরো বিষয়টা তাদের হিসেবে অনুযায়ী এটাই দাঁড়ায় যে এখানেই তাদের মধ্যে থেকে এমন কেউ চেনাশোনা লোক তাকে মেরেছে। এখন কোন মোটিভ এর জন্য তাকে মেরেছে সেটাও জানার বিষয়।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

আর শুধু যে টাকা পয়সার জন্য তাকে মারবে এত হতেই পারে না, কারণ যেভাবে ১০-১৫ টা ছুরির কোপ দিয়ে মেরেছে তাতে অন্য কোনো কারণ আছে এর পিছনে। কিঞ্জল যে পুলিশ অফিসারদের আসার কথা বলেছিলো তারা রাস্তায় আটকা পড়ে যায়, কারণ যেহেতু খুবই বৃষ্টি হচ্ছে তাই পাহাড়ি এলাকার রাস্তা দিয়ে আসতে সময় লাগবে আর তার উপর সেখানে নেটওয়ার্ক এর অবস্থাও খারাপ। যোগাযোগ করার তেমন সুবিধা পাওয়া মুশকিল বৃষ্টির সময়। যাইহোক, এরপর কিঞ্জল আর অনিমেষ দুইজন মিলে কুহেলির রুমের জানালার সামনে দেখতে যায় যে খুনি খুন করার পরে সেখানে ছুরিটা ফেলে দিয়েছিলো কিনা, তাহলে প্রমান বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর সাহায্যে খুনি পর্যন্ত পৌঁছানো যাবে। কিন্তু সেখানে ছুরিতো পায়নি, তবে পায়ের ছাপ পেয়েছিলো আর সেটা ছিল দামিনীর দরজার সামনে, ফলে তারা এটাও সন্দেহের ডায়েরিতে রাখে যে দামিনীও খুন করতে পারে।


✠ব্যক্তিগত মতামত:✠

এই মার্ডারের সাথে যে কেউ জড়িত থাকতে পারে আর সবাই সন্দেহের মধ্যে আছে। বিশেষ করে দামিনীই এই সন্দেহের তালিকায় বেশি। কারণ আসলে যখন লাইট চলে গিয়েছিলো তখন সেই অন্ধকারে অনেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিলো অর্থাৎ কেউ কেউ সেখান থেকে চলে গিয়েছিলো। ফলে যে কেউ একজন গিয়ে মারতে পারে। আর খুনি খুবই স্মার্টনেস এর সাথে খুন করে, কারণ খুন করার আগে বডিতে চাঁদর পেঁচিয়ে দিয়ে মারে যাতে রক্তের ছিটে কোথাও গিয়ে না লাগে, এতেই বোঝা যায় এখানে একদম ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত ভাবে খুনটা সাজানো। আর এই কুহেলির সাথে মনীষার একটা যোগসূত্র আছে, কারণ এরা দুইজনই এক সময় একই অফিসে কাজ করতো যেটার নাম ছিল অনন্যা। আর সেই নামের সাথে এই গেস্ট হাউসের নামও অনন্যা, ফলে কোনো না কোনো কিছুর একটা যোগ সূত্রের সাথে সন্দেহটা সেদিকেই যাচ্ছে। আর কুহেলিকে এই গেস্ট হাউসে ডেকে আনা হয়েছিল অর্থাৎ মনীষার কাছে যে লেখাটা দিয়েছিলো আর সে তো নেশার জন্য পড়তে পারেনি, তাই সেইটা কুহেলীকে দিয়ে তাকে এই গেস্ট হাউসে আসতে বলে না হলে তার বিপদ আছে বলে হুমকি দেয়। আর এইজন্যই সে প্রথমেই মিতাকে টার্গেট করে। এইসব বিষয় এখন কিঞ্জলকে সব খুলে বলে দেয় যাতে এই ঝামেলায় আরো গভীরে না পৌঁছায়। খুবই গভীর রহস্যের একটা বিষয় এখানে, এক কোথায় বলতে গেলে জোড়ালো সবকিছু।


✠ব্যক্তিগত রেটিং:✠
৭.৯/১০


✠ট্রেইলার লিঙ্ক:✠



শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দাদা ওয়েব সিরিজ হোমস্টে মার্ডারস এর দ্বিতীয় পর্বে এসে দেখতেছি রহস্য আরো বেড়ে গেছে। এখানে মার্ডারের সাথে যে কেউ জড়িত থাকতে পারে আর সবাই সন্দেহের মধ্যে আছে। বিশেষ করে দামিনীই এই সন্দেহের তালিকায় বেশি। কারণ আসলে যখন লাইট চলে গিয়েছিলো তখন সেই অন্ধকারে অনেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিলো অর্থাৎ কেউ কেউ সেখান থেকে চলে গিয়েছিলো। ফলে যে কেউ একজন গিয়ে মারতে পারে। আর খুনি খুবই স্মার্টনেস এর সাথে খুন করে, কারণ খুন করার আগে বডিতে চাঁদর পেঁচিয়ে দিয়ে মারে যাতে রক্তের ছিটে কোথাও গিয়ে না লাগে, এতেই বোঝা যায় এখানে একদম ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত ভাবে খুনটা সাজানো। দুই নাম এক সাথে হয়ে অনন্যার উপর গিয়ে পরে কিনা সেটাও দেখার বিষয়। যায়হোক দেখি তৃতীয় পর্বে কি আসে। ধন্যবাদ দাদা।

প্রিয় দাদা আপনার ওয়েব সিরিজ রিভিউগুলো পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে।হোমস্টে মার্ডারস- ব্ল্যাকআউট ডেট এর দ্বিতীয় পর্বের রিভিউটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। প্রিয় দাদা এই ওয়েব সিরিজের পরবর্তী পর্বের রিপোর্ট করার অপেক্ষায় রইলাম।

কুহেলির মৃত্যুর পিছনে অনেক রহস্য আছে। এই মৃত্যু হয়তো অনেক পরিকল্পনা করে করা হয়েছে। না হলে এত নিখুঁতভাবে সব পরিকল্পনা সফল হতো না। অন্ধকারের মাঝে যে কেউ খুন করতে পারে। তবে চাদর পেঁচিয়ে এরপর খুন করার আইডিয়া দেখে সত্যিই অবাক হলাম। যাতে করে রক্ত চারপাশে ছড়িয়ে না যায় এজন্য খুনি দারুন বুদ্ধি বের করেছে। কুহেলির সাথে মনীষার যেমন যোগসূত্র আছে তেমনি এই হোটেলের নামের সাথেও তাদের যোগসূত্র আছে। একটা সময় তারা যেহেতু একই অফিসে কাজ করতো তাই তাদের ভেতরে হয়তো অনেক গভীর রহস্য লুকিয়ে আছে। আর এই খুনের পিছনেও অনেক রহস্য আছে। অনেক পরিকল্পনামাফিক সবকিছুই করা হয়েছে। যাইহোক দাদা 'হোমস্টে মার্ডারস' ওয়েব সিরিজটির দ্বিতীয় পর্ব রিভিউ অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আশা করছি ধীরে ধীরে রহস্যের জট খুলতে থাকবে এবং আসল খুনি সামনে চলে আসবে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।