হ্যাজাক লাইট

in hive-129948 •  12 days ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

DALL·E 2024-11-12 00.37.32 - An image of a traditional Hajak lamp that can burn both kerosene and gas. The lamp has a sturdy, metallic body with a rounded base, brass or steel app.webp

Image Created by OpenAI

আজকে আপনাদের সাথে একটি স্মৃতিমূলক পোস্ট শেয়ার করে নেবো। এটি আসলে হ্যাজাক লাইট সম্পর্কে। অনেকে হ্যাজাক লাইট এর বিষয়ে জানবেন, যা একসময় অনেক জনপ্রিয় ছিল, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে। ইমেজটা ঠিকঠাক ক্রিয়েট হয়নি, মূলত এইরকম না হ্যাজাক লাইট। যাইহোক, এগুলো মূলত বেশি ব্যবহৃত হতো গ্রামের দিকেই। এইগুলো যদিও এখন তেমন একটা আর দেখা যায় না, হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন শুধুই একটা স্মৃতিময় বিষয় হয়ে রয়ে গিয়েছে আমাদের মধ্যে। এখনকার বর্তমান সময়ের ছেলেমেয়েরা হ্যাজাক লাইট কি জিনিস সেটাই জানে না। আসলে এই লাইটগুলো তখন গ্রামে ব্যবহার হতো, কারণ ওখানে ইলেক্ট্রিসিটির সাপ্লাই অনেক কম ছিল। আর কিছু কিছু জায়গায় থাকলেও লাইন চলে গেলে তা অনেক দেরিতে আসতো আর তখন পুরো গ্রাম একদম অন্ধকারে ছেয়ে যেত। ওই সময়ে একমাত্র এল জ্বালানোর প্রধান উৎস ছিল এই হ্যাজাক লাইট। যদিও অনেকে বাড়িতে হ্যারিকেন এইসব জ্বালাতো।

কিন্তু এই হ্যাজাক লাইট এর আলোর তীব্রতা অনেক বেশি ছিল। একটা জ্বালালে অনেক জায়গা জুড়ে আলোকিত হয়ে যেত। এছাড়াও এই হ্যাজাক লাইটগুলো তখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, পুজোয় বেশি ব্যবহার করা হতো। এই হ্যাজাক লাইটগুলো বিভিন্ন প্রকারের ছিল, যেমন কিছু হ্যাজাক লাইট ছিল যেগুলো কেরোসিনের মাধ্যমেও চলতো আবার কিছু ছিল যেগুলো গ্যাস ভরেও জ্বালানো যেত। গ্যাসেরগুলো সাধারণত হ্যাজাক লাইটের উপরের দিকে একধরণের কাঁচের আবরণের মতো দেখতে ছিল, যাতে দিয়াশলাই এর মাধ্যমে জ্বালানো হতো। আর এই লাইটগুলো একবার জ্বালালে উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত হয়ে যেত চারিদিকে, যেমনটা এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়ে থাকে। উৎসব আর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের এক অপরিহার্য ব্যবহারযোগ্য লাইট ছিল। এর ব্যবহার বর্তমানে কোনো অনুষ্ঠান বা উৎসবে আর ব্যবহার করা হয় না।

দিন দিন যত বিদ্যুতের সহজলভ্যতা বেড়ে গিয়েছে, সেই সাথে সাথে এইগুলোর কদর হারিয়ে গিয়েছে। তবে তখনকার সময়ে অর্থাৎ ১৯ দশক থেকে কুড়ি দশকের প্রথম দিক পর্যন্ত এই লাইট ঘরে বা বিভিন্ন অনুষ্ঠান ছাড়াও খেলাধুলা বা বয়স্করা গল্পগুজবের সময়ে ব্যবহার করতো। আমি দেখতাম যে উঠানে বা মাঠে অনেক সময় সবাই এই লাইট জ্বালিয়ে একত্রিত হয়ে গল্পগুজবে বা তাস খেলায় মেতে উঠতো। এই বিষয়গুলোর মধ্যেও একসময় এক অন্যধরণের আনন্দ ছিল।

তখন বর্তমান সময়ের মতো আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার এতো বেশি অগ্রগতি ছিল না, ফলে সবাই অনেক সময় এইভাবে হ্যারিকেন বা ল্যাম্প বা এই হ্যাজাক লাইট জ্বালিয়ে একত্রিত হয়ে সময় কাটাতো, গল্পগুজবে মাধ্যমে। বিষয়টা একসময় আমাদের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনধারার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। বর্তমানে এখন প্রযুক্তির অগ্রগতির কাছে এইধরণের বিষয়গুলো মুছে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্ম এইসব বিষয় থেকে অবগত। তাদের কাছে এই বিষয়গুলো একটা রূপকথা বা গল্পকথার মতো মনে হবে শুনলে।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আমাদের ছেলেবেলায় হ্যাজাগ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হতো। বিশেষ করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বা বিয়ে বাড়িতে এই ধরনের আলোর ব্যবহার বহুল প্রচলিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটি লুপ্তপ্রায়। এখন হ্যালোজেনের দাপট এই সমস্ত আলোকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। ছেলেবেলায় হ্যাজাকের আলো খুব অবাক করতো। কারণ অল্প একটি জায়গা থেকে অনেকটা সাদা আলো নিষ্কাশিত হতো।

হ্যাজাক লাইট, যেটা বর্তমান সময়ে কেবলমাত্র স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছে ইতিহাসের পাতায়। কেননা বর্তমান সময়ে এই লাইটের প্রচলন একদম নাই বললেই চলে। তবে আমি কিন্তু দাদা কেরোসিন দিয়ে হ্যাজাক লাইট জ্বালানো দেখেছি কিন্তু গ্যাস দিয়ে জালানো দেখিনি। এই লাইট দিয়ে অনেকেই মাছও মারতে যেত। যাইহোক পুরনো দিনের নিদর্শন নিয়ে চমৎকার একটি স্মৃতিচারণ করার জন্য ধন্যবাদ দাদা।

আমাদেরও বাড়িতে হ্যাজাক লাইট ছিল দাদা। সন্ধ্যের দিকে তো কারেন্ট বেশিরভাগই থাকতো না, তখন হ্যারিকেনে চল ছিল আর বড় পরিবার হেতু সবসময়ই আত্মীয়-স্বজন লেগেই থাকতো। তাই রোজ সন্ধের দিক করে এক লাইট জ্বালানোটা একটা নিয়মিত কাজ ছিল। সে আলোর কি জ্যোতি। আপনি আজ লিখেছেন বলেই মনে পড়ল নইলে তো আমি ভুলেই গেছিলাম হ্যাজাক লাইট বলে লাইট ছিল।

ছোটবেলায় আমিও হ্যাজাক লাইট দেখেছি এবং বিদ্যুৎ চলে গেলে হ্যারিকেন জ্বালাতেও দেখেছি। সেইদিন গুলো আসলেই মধুর ছিলো। মনের মধ্যে অন্য রকম আনন্দ কাজ করতো। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিনদিন হাসি আনন্দ হারিয়ে যাচ্ছে। এখন তো হ্যাজাক লাইট একেবারেই দেখা যায় না। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

আধুনিকতার সাথে সব কিছুই হারিয়ে গিয়েছে ছোটবেলায় আমিও হ্যাজাক লাইট হ্যারিকেন দেখেছি।বিদ্যুৎ চলে গেলে এই হ্যাজাক লাইট জালালে অনেক আলো হত । হারিকেন এখন আর কাউকে জ্বালাতে দেখি না। সেই সময়টা হয়তো অতটা আধুনিকতা ছিল না কিন্তু প্রচুর আনন্দ ছিল প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে। হ্যাজাক লাইট দেখেছি কিন্তু গ্যাস ও কেরোসিন দিয়ে এটা জ্বালানো হয় সেটা জানতাম না আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানা হয়ে গেল। অনেক ধন্যবাদ দাদা পোস্টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

এই হ্যাজাক লাইটগুলো আগে বেশ দেখা যেত গ্রামে।আগে যখন বাজার পাহারা দিত তখন এই লাইট ইউজ করতো পাহারাদার।কারণ আলোর তীব্রতা বেশি হওয়ায় অনেকদূর থেকে দেখা যেত যেকোনো জিনিস।এখন আর সেইভাবে দেখা যায় না এই লাইট।বিদ্যুৎ গ্রাম এলাকা থেকে শুরু করে সবজায়গায় সহজ লভ্য এজন্য।অনেক পুরোনো একটি ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন দাদা,ধন্যবাদ ভালো লাগলো পোস্টটি।