গ্রামীন শিল্প হাতে তৈরি উলের কাজ|| ৭ই মার্চ ২০২৩

in hive-131369 •  2 years ago 

প্রিয় বন্ধুরা আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আমি আজকে একটি বিশেষ ঐতিহ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব।



হাতে বুনা উলের কাজ

IMG_20230307_195454.jpg

হাতে তৈরির উলের শিল্প আজ নিলুপ্তির পথে। শীতকালীন সময়ে বাড়ির উঠোনে বা ছাদে বসে পিঠে রোদ লাগিয়ে কিংবা নানা লাজের অবসরের সময়ে ব্যাগ থেকে উল বোনার কাঁটা বের করে কর্মজীবী নারীরা আপন মনে বুনে থাকে ছুয়িটার, চাদর টুপি, সহ ট্রে ঢাকার জন্য চাদর। কিন্তু এখন আর সোয়েটার, টুপি বা মাফলার বানানোর এমনটি কাজ আর চোখে পড়ে না। নব্বই দশকের আগে এ ছিল একটি অতিচেনা দৃশ্য। সকালে ঘুম থেকে উঠে বা দুপুরে খাবারের পর কিশোরী থেকে বৃদ্ধার হাতে উঠত উলের কাঁটা। সেই কাটা দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বানাতো রুলের বিভিন্ন আসবাবপত্র৷ বাড়ির ছোট বড় এমনকি আত্মীয় স্বজন সহ পাড়া-প্রতিবেশীর জন্যও বোনা হতো উলের সকল প্রকার পোশাক। এই উলের শিল্প ছিল নারীদের শখ।

IMG_20230307_195549.jpg

খুব মনে পড়ে, আমাদের বাড়ির উঠোনে বসে মা, চাচি সহ সকলে হাতে উল নিয়ে বসে আড্ডা দিতো আর সেলাই করত মাথার টুপি ও চাদর। সকালে হালকা শীতের সময় তাড়াতাড়ি সবাই ঘুম থেকে উঠে গায়ে রোদ লাগানোর জন্য উঠোনে বসত সাথে পাশের বাসার কমবেশি সব আপা, ভাবিরা আসত হাতে ক্রুজকাটা নিয়ে উল বোনার জন্য। পাশেই আমরা বসে রোদে বই পড়তাম।

IMG_20230307_195700.jpg

আমি দেখেছি আমার মায়ের হাতের কাজ। আমার মা অনেক ভালো উল বুনত, গ্রামের অনেক মুরুব্বি কাকাদের বানানো টুপি মায়ের হাতের। পাশের বাসার এক ভাবিকে দেখতাম মায়ের সাথে গল্প করার জন্য আসত আর উঠোনে বসে মায়ের সাথে গল্প করত আর বুনত মাপলার সহ নানা রকম সামগ্রিক।

IMG_20230307_195630.jpg

এখন খুজলে হয়ত অনেকের বাসায় পাওয়া যাবে আবার অনেকের বাসায় হয়ত যাবে না নয়ত কারো বাসায় জং ধরে গেছে সেই পুরানো ক্রুজ কাটা। আমাদের গ্রামের অনেকের বাসায় খুজাখুজি করার পর অবশেষে আমার বাসায় মায়ের সাথে কথা বলে অনেক খুজাখুজির পর পেলাম সেই নব্বই দশকের আগের হাতে বুনা কিছু কাজ আর ক্রুজ কাটা। মা সেই কাটা নিয়ে কথা বলতেছিলো আর আমাকে বুজাইতেছিলো কেমন করে তারা কিশোরী বয়সে ক্রুজ কাটা বুজে তৈরি করত নানা প্রকার সামগ্রী। প্রায় ত্রিশ বছর আগের মায়ের হাতে বুজা কিছু কাজ অবশেষে মা আমাকে খুজে বাহির করাই দেয়।

IMG_20230307_195514.jpg

আজ প্রযুক্তির ভিড়ে এই শিল্প বিলুপ্তির শেষ প্রান্তের দারে দাঁড়িয়ে আছে। পুরা গ্রামে হয়ত কোনো বৃদ্ধার হাতে দেখতে পাওয়া যায় এই রকম উল নিয়ে মাপলার, টুপি বুনতে। এটি আমাদের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রথম এগিয়ে আসতে হবে আমাদের তরুন সমাজের মেয়েদের তবেই আবার সেই প্রাচীন শিল্পটি প্রাণ ফিরে পাবে।



বন্ধুরা এই ছিল আমার আজকের আলোচনার বিষয়। আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।



ডিভাইস - রেডমি নোট ১০প্রো।

লোকেশন - পার্বতীপুর,দিনাজপুর।



ধন্যবাদ সবাইকে



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
CategoryYes ✅ / No ❌
Club Status
plagiarism-free
#steemexclusive
Verified user
Bot-free
300 Words

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.


Regards
shamimhossain (Moderator)

উলের কাজ এখন আর তেমন দেখা যায় না। উল এর কাজ এর মাধ্যমে অনেক সুন্দর ডিজাইন কাপড়ের উপর তৈরি করা হয়। ধন্যবাদ আপনাকে এত ঐতিহ্য বাহী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ প্রিয় ভাই।

উলের কাজ হলো সময় সাপেক্ষ ও কারিগরি ধৈর্যের কাজ।উল দিয়ে বিভিন্ন রকম কাপড় তৈরি করা হয় এর ভেতর শীতের কাপড় গুলো অনেক চাহিদা রয়েছে। উলের কাজ নিয়ে খুব সুন্দর লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ ভাইয়া।

খুবই চমৎকার ঐতিহ্যবাহী উলের শিল্প নিয়ে পোস্ট করছেন ভাই, গ্রামের মা চাঁচিদের হাতের কারুকাজ অনেক সুন্দর। হাতের জাদু দিয়ে তাড়া নিখুঁত ভাবে উল বুনে, অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করছেন ভাই অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

শুকরিয়া বড় ভাই।

উল এর কাজ অনেক আগের ।উল দিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন ধরনের পোশাক পাওয়া যেতো আগে কিন্তু বর্তমানে একটু কম দেখা যায়।উল এর তৈরি এসব পোশাক বা ওয়ালম্যাট টেবিল ম্যাট অনেক সুন্দর দেখতে।আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ আপু।

গ্রামীন শিল্প হাতে তৈরি উলের কাজ নিয়ে খুবই চমৎকার পোস্ট করছেন ভাই। আপনার মা তৈরী করতে পারে কিন্তু আমার মা না পারলেও আমার শাশুরি পারপ। আমার শাশুরি এই উলের কাজ করতে পারে তিনি আমাকে গত রমজানে নিজ হাতে উলের তৈরী জায়নামাজ উপহার দিয়েছেন। আমি বাসায় নামাজ আদায় করলে সেই উলের তৈরী জায়নামাজে নামাজ আদায় করি। উলের তৈরী বিভিন্ন রকমের জিনিস তৈরী গ্রামের অনেক মহিলা আজ স্বাবলম্বী। তারা অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছলতা বয়ে আনছে। আপনি সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন ভাই। আপনাকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ ভাইয়া।

এই উলিজ কাজ দেখে আমি আসলেই অনেক মুগ্ধ হলাম ভাই, হাতের তৈরি এতো সুন্দর একটা উলিজ, খুব ভালো লাগলো ভাই, আপনি অনেক সুন্দর একটা পোস্ট করেছেন, আপনার পোস্ট পরে আমি অনেক কিছু জানতে পারলাম, আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটা পোস্ট করার জন্য

অসংখ্য ধন্যবাদ।

ছোটবেলায় দেখতাম সময় কাটানোর জন্য মহিলারা হাতের তৈরি উলের কাজ করতো। বর্তমানে এরকম দৃশ্য দেখাই যায় না। সবাই এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যস্ত তা না হলে টিভি দেখা নিয়ে ব্যস্ত। মানুষ কেমন যেন ধীরে ধীরে অলস হয়ে যাচ্ছে। অনেক ভালো লিখেছেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

শুকরিয়া বড় ভাই।