পুঁথির শোপিস তৈরি করে সাবলম্বী গ্রামিন নারীরা।

in hive-131369 •  2 years ago  (edited)
স্টিম ফর ট্রেডিশন

স্টিম ফর ট্রেডিশন কমিউনিটির সকলেই কেমন আছেন? আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে গ্রামিন নারীরা পুথির কাজ করে সাবলম্বী হওয়া গল্পপ্রথম পর্ব তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

শুরুতে আজকের তারিখঃ
দিনমাসবছরধরন
২৩মার্চ২০২৩ইংরেজি
০৮চৈত্র১৪২৯বঙ্গাব্দ
৩০শাবান১৪৪৪হিজরি
কভার ফটো
IMG_20230323_165056.jpg

আমরা যারা এই পোস্টটি পড়ছি তার অবশ্যই বুঝতে পারছেন আজ বাংদেশের গ্রামীন নারীদের নিয়ে আমি কথা বলবো। আমাদের গ্রামের নারীরা পূর্বে অনেক পিছিয়ে ছিল। বর্তমানে আধুনিকতার এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তারা আজ পিছিয়ে নেই। জীবিকা নির্বাহের কাজ এখন নারীরা অনেক ভূমিকা পালন করছে। তাই পুথির শোপিস তৈরী করে গ্রামীন নারীরা আজ সাবলম্বী সেই সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে হারিজ হলাম আপনাদের সামনে। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

আমাদের দেশ স্বাধীন হাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সময় চরম বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। দারিদ্রতা, খিদা, কর্মের অভাব নানায় সমস্যার প্রতিকূলতা সৃষ্টি হয়েছে। জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি আজ নারীরা সমান ভূমিকা পালন করছে। দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে অনেক শ্রম দেয় দেশের গ্রামীন নারীরা। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের কাজের সুযোগ করে দেওয়া এবং গ্রামীন নারীদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতার জন্য দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সকলের উচিত নারীদের সকল কাজে কাজ করার সুযোগ প্রদান করা।

গ্রামীন নারীরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুঁথির কাজ শিখে

IMG_20230323_165148.jpg

প্রশিক্ষণ গ্রহণ বা শেখা শেষ হলে তারা পুঁথি দিয়ে বিভিন্ন রকমের শোপিস তৈরী করতে থাকে। এগুলো পরবর্তীতে বিক্রয় করে ভালো মুনাফা অর্জন করে গ্রামীন নারীরা। বিভিন্ন রকমের শোপিস তৈরী হয় পুঁথি দিয়ে। তবে সব নারী একই শোপিস তৈরী করে না বিভিন্ন জন বিভিন্ন শোপিস তৈরী করে থাকেন।

পুঁথির তৈরী তসবিহ
তসবিহ
IMG_20230323_165710.jpg

তাসবিহ আমাদের মুসলিম জাতির খুবই গুরত্বপূর্ণ অংশ। আল্লাহর প্রশংসা করার বাক্যই হলো তাসবিহ। তার নামের তাসবিহ যে কত মধুর ও শান্তিদায়ক তা আল্লাহ প্রেমিকরাই উপলব্ধি করতে পারে সালাত আদায় শেষ হলে অনেক মুসলিম ভাইয়েরা তসবিহ পড়ে থাকেন। পুঁথি দিয়ে বিভিন্ন রকমের তাসবিহ বানানো যায়। তাসবিহ তৈরী করে শহরের বা মেলার বড় বড় স্টলে এর জায়গা হয়। এটি তৈরী করে গ্রামীন নারীরা অনেক মুনাফা অর্জন করে থাকে।

সৈখিন ছেলে-মেয়েদের হাতের ব্রেসলেট
IMG_20230323_165957.jpg
পুঁথির তৈরী ব্রেসলেট
IMG_20230323_170309.jpg
পুঁথির তৈরী ব্রেসলেট
IMG_20230323_170453.jpg

সৈখিন যারা তারা প্রায়সই হাতে পুঁথির ব্রেসলেট ব্যবহার করে থাকে। করন পুঁথির ব্রেসলেট ব্যবহার করলে ছেলে মেয়েদের হাতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। তাই বাজারে চাহিদা ব্যাপক। সেই জন্য পুঁথির ব্রেসলেট তৈরী হলে ভালো মুনাফা দিয়ে নারীরা বিক্রি করতে পারে এবং তা পরে বাজরেও ভালো দামে বিক্রি হয়।

পুঁথির তৈরী টিস্যু কভার
IMG_20230323_165243.jpg

পুঁথির তৈরী টিস্যু কভার দেখতে খুবই সুন্দর হয়ে থাকে। ডাইনিং টেবিলে, ড্রসিং টেবিলে, টি-টেবিলে বা কাজের টেবিলে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে অনেক এই পুঁথির তৈরী টিস্যু কভার। এর বিভিন্ন রকম কালারের পুঁথি দিয়ে বানানো হয়ে থাকে। দাম হাতের নাগালে তাই এর চাহিদা অনেক। আমাদের গ্রামীন নারীরা পুঁথির তৈরী টিস্যু কভার তৈরী করে বাজার জাত করে থাকেন। এতে করে ভালো মুনাফা অর্জন করেন তারা।

পুঁথির তৈরী সীতাহার
পুঁথির তৈরী সীতাহার
IMG_20230323_170155.jpg

পুঁথির তৈরী সীতাহার অনেক মেয়ে ব্যবহার করে। অনেক সুন্দর দেখায় পুঁথির তৈরী সীতাহার। তবে পুঁথির তৈরী সীতাহার উঠতি বয়সের মেয়েরা বেশী ব্যবহার করে থাকে৷ বিভিন্ন বিয়ে অনুষ্ঠানে বা দাওয়াতের অনুষ্ঠানে মেয়েরা পুঁথির তৈরী সীতাহার পড়ে তাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি কারার জন্য। এটি শাড়ির সাথে পড়লে আরো ভালো দেখায়। আবার অনেক মেয়ে তার শাড়ির সাথে মিল করে কয়েক প্রকার পুঁথির তৈরী সীতাহার কিনে রেখে দেয়। এর চাহিদা বেশী থাকায় নারীরা এটি তৈরী করে থাকেন এবং ভালো দামে বাজারে বা অন্যজনের কাছে বিক্রি করেন। এতে করে নারীরা ভালো মুনাফা অর্জন করে।

পুঁথির তৈরী পার্টি ব্যাগ
IMG_20230323_211147.jpg

পুঁথির তৈরী পার্টি ব্যাগ অনেক চাহিদা বাজারে অর্থাৎ পুঁথির তৈরী পার্টি ব্যাগ তৈরীর অর্ডার সব সময় থাকে। পুঁথির তৈরী পার্টি ব্যাগ বিভিন্নরকম হয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ডিজাইনের চাহিদা হয়ে থাকে।

পুঁথির তৈরী নামের অক্ষর ব্যাগ
পুঁথির দিয়ে প্রিয়জনের নাম বা নামের অক্ষর লেখা ব্যাগ
IMG_20230323_165448.jpg

অনেক জন তাদের আপনজন বা প্রিয়জনের নাম বা অক্ষর দিয়ে ব্যাগ তৈরীর অর্ডার দিয়ে থাকে। বাজারে এর চাহিদা অনেক। তবে এই ধরনের ব্যাগের জন্য অর্ডার দিতে হয়। বাজারে কম সংখ্যক পাওয়া যায়। এই ধরনের ব্যাগগুলো ভালো সৌন্দর্য প্রকাশ করে। এতে করে প্রিয় জনের ভালোবাসা প্রকাশ পায়। আমাদের গ্রামিন নারীরা অর্ডার পেলেই পুঁথি দিয়ে আপনজন বা প্রিয়জনের নাম বা নামের অক্ষর দিয়ে ব্যাগ তৈরী করে দেয় এবং এতে ভালো মুনাফা অর্জন করে।

IMG_20230323_165056.jpg

আরো বিভিন্ন ধরনের শোপিস তৈরী করা যায় পুঁথি দিয়ে এবং তা থেকে গ্রামিন নারীরা উপার্জন করে থাকে। আসলো সব তুলে ধরা সম্ভব নয়। আমি ১ম পর্ব জুড়ে কিছু তুলে ধরলাম। পরবর্তীতে আরো ভালো সোপিস তুলে ধরবো। এই কাজ গুলো করে গ্রামিন নারীরা এখন অনেকে সাবলম্বী হতে পেরেছে।

আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। সকলের সুসাস্থ কামনা করে আমি পুঁথির শোপিস তৈরির সাথে গ্রামিন নারী সাবলম্বী হওয়ার বিস্তারিত তুলে ধরলাম। আর একটি পোস্টে এর ২য় পর্ব আপনাদের মাঝে তুলে ধরবে। সকলেই ভাল থাকবেন এবং পরবর্তী পোস্টে আবার দেখা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। ইনশাআল্লাহ



4i88GgaV8qiFU89taP2MgKXzwntUGAvkoQiKU7VxyD37q94i8e38qvF9HBknYTWLbKs3wg1cbtfZvU44CUYbBqLEEX6YDgQznQURMvBExn7FCAPjAUKLwJ1kpe.png

আমার পরিচয়
IMG-20230322-WA0015.jpg
আসসালামুআলাইকুম, আমার নাম মোঃ মাসুদ রানা। আমার স্টিমিট ইউজার নেম @masud-rana। আমি দিনাজপুর জেলার, পার্বতীপুর উপজেলার একজন বাসিন্দা। আমি পড়াশোনা করছি এখন ই-কমার্স ব্যবসার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতেছি। আমি ফটোগ্রাফি অনেক ভালবাসি।মাঝে মাঝে সময় পেলে যে কোন ধরনের ফটোগ্রাফি করি। আমি খেলা-ধুলা করতে ভালবাসি এবং তাছাড়া আমি ও নিজেই ভাল ভাল রান্না রেসিপি করি। সকলেই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ ও নিরাপদে থাকবেন।


4i88GgaV8qiFU89taP2MgKXzwntUGAvkoQiKU7VxyD37q94i8e38qvF9HBknYTWLbKs3wg1cbtfZvU44CUYbBqLEEX6YDgQznQURMvBExn7FCAPjAUKLwJ1kpe.png

You can also vote for @bangla.witness witnesses

3zpz8WQe4SNGWd7TzozjPgq3rggennavDx3XPY35pEAVnpvDGTmz6yM4BdeUwpQ8vMxtR3sQse9kG46R2Lk4NBaGfzPmL5tiA85DdFd7TDvbMGaNMAY2RBgSWfNp5kM1Qjr3515gWKvjxzADBcu4.png
Vote for @bangla.witness

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বাহ চমৎকার পোস্ট, পুঁথির তৈরি প্রতিটা শোপিস দেখে অনেক ভালো লাগলো পুঁথির তৈরি শোপিস গুলো খুবই সুন্দর, গ্রামের মেয়েদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য এসব শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। অনেক মানুষ এসব পুঁথির তৈরি জিনিসপত্র বানিয়ে জীবন নির্বাহ, আপনি অসাধারণ পোস্ট করেছেন, অনেক সুন্দর করে দেখিয়ে দিয়েছেন প্রতিটি আসবাবপত্র, আপানর পোস্ট আমার কাছে অসম্ভব ভালো লাগছে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য

আপনি বরাবরের মত এবারও অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে সাজিয়ে পোস্ট করেছেন ভাইয়া। পুতি আমাদের একটা ঐতিহ্যবাহী শিল্প প্রাচীনকাল থেকেই পুতি শিল্পের মাধ্যমে অনেক কিছু বানিয়ে আসছে আমাদের গ্রামের নারীরা । এই পুতি শিল্পের কাজ করে এখন গ্রামীণ নারীরা স্বাবলম্বী। আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।

হস্তশিল্পের এক বিশেষ অংশ হল এই পুথির কাজ। পুথির কাজ বর্তমানে গ্রাম বাংলার মহিলারা বেশ ভালই করতেছে। এসব পুঁথি দিয়ে তারা বিভিন্ন রকম জিনিসপাতি তৈরি করতেছে।তার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য হল ব্যাক পুতুল বিভিন্ন রকম খেলনা সরঞ্জাম ইত্যাদি যেগুলো তারা হাতের নিপুণতার মাধ্যমে বেশ ভালোভাবেই কাজ করতেছে। খুব সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই আসলেই দেখে খুব ভালো লাগতেছে। লেখাগুলো আসলেই খুব সুন্দর হয়েছে।ছবিগুলো তো আরো ভালো হয়েছে ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।

বর্তমানে পুঁথি এর ব্যবহার অনেকাংশে বেড়েই চলেছে। কারণ গ্রামীণ জীবনে এটি একটি ব্যহক হিসেবে জড়িত। এমনকি গ্রামের মা-বোন এ রা এই পুঁথির শোপিস বানিয়ে তারা তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করে থাকে। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আমাদের মাঝে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।

Loading...

চমৎকার একটি পোস্ট করেছেন। পুথির তৈরি মালার অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ ছাড়াও পুথির তৈরি তজবি অনকে পরিচিত। আমাদের বাসাতে কয়েকটা রয়েছে। ছোটো বেলায় কারেন্ট গেলে এই তজবির আলো নিয়ে খেলা করতাম অন্ধকারে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।

পুঁথির তৈরি হস্তশিল্প নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাইয়া।পুঁথির তৈরি হস্তশিল্পগুলো আমার ব্যক্তিগতভাবে খুব ভালো লাগে। এগুলো খুব ব্যায়বহুল ও কষ্টসাধ্য কাজ।এই কাজগুলো করতে অনেক ধৈর্য ও চিন্তাশক্তির প্রয়োজন। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা বাংলাদেশের মেয়েরা অধিক পরিশ্রমী।আমরা ঘরের কাজ ও বাইরের কাজ একসাথে সামলাই।পোশাক শিল্প খাতে প্রায় ৮০% ই নারী।তাছাড়া বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ পেশায়ও কিন্তু আমাদের দেশের নারীরা পিছিয়ে নেই। নারীদের তৈরি হস্তশিল্প নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি কন্টেন্ট তৈরি করেছেন। এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো থাকবেন।

আপনার সুন্দর আঙ্গুল দিয়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।

পুঁথির শোপিস নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন।এই পুঁথির শোপিস গুলো দেখতে অনেক সুন্দর। এই পুঁথির শোপিস দিয়ে মালা তৈরি করে অনেক মানুষ তা বাজারে বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের কাছে সেয়ার করেছেন।সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন।ধন্যবাদ।

সুন্দর মন্তব্য করেছেন আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ।