ঋতুরাজ বসন্তের বার্তা নিয়ে আসে শিমুল ফুল।

প্রিয় ব্লগারবাসী,
আসসালামু আলাইকুম, স্টিম ফর ট্রেডিশন কমিউনিটির সকলকে জানাই আমার ছালাম। সকলেই কেমন আছেন? আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে ঋতুরাজ বসন্তের বার্তা নিয়ে আসা ঐতিহ্যেবাহী শিমুল ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

কভার ফটো

---

---

বাঙালি মানেই শীতের সমাপ্তিতে বসন্তের বার্তা নিয়ে আসা প্রকৃতি রাঙিয়ে ফোটে শিমুল ফুল। পুঞ্জিকার পাতায় বহুদিন চোখ রাখিনি খোঁজ রাখিনি বাংলা মাসের। পথের ধারে নিঃসঙ্গ শিমুল গাছের দিকে তাকালে আপনি বলে ফেলতে পারেন প্রকৃতিতে এখন কোন ঋতু। জ্বি ঠিক ধরেছেন আপনি। ঋতুরাজ বসন্তের বার্তা নিয়ে আসেছে শিমুল ফুল। এটি পাতাঝরা বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। গাছের উচ্চতা ১৫ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। কাণ্ডের চারপাশে সুবিন্যস্ত থাকে শাখা-প্রশাখা, তবে সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। গাছের গায়ে কাঁটা থাকে যার গোড়ার অংশ বেশ পুরু। তবে বয়স্ক গাছে তেমন কাঁটা থাকে না শুধু ডালে থাকে।

গ্রামীণ জনপদের প্রকৃতির অপরূপ শোভা শিমুল ফুল যুগ যুগ ধরে গ্রাম বাংলার পথে ঘাটে নদ-নদীর ধার, ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল, পুকুর পাড় পথে ঘাটে ফাঁকা মাঠে পথচারীদের দৃষ্টি কাড়ে শিমুল ফুলে। হালকা বাতাসে পথ চলতে শিমুল ফুলে মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায় সৌন্দর্যে। যুগ যুগ ধরে অযত্নে-অবহেলায় বেড়ে ওঠা শিমুল গাছে শিমুল ফুলে একবার চোখ পড়লে বার বার দেখতে ইচ্ছে জাগে। চিরচেনা এ ফুলের দিকে তাকালে মনে পড়ে পুরাতন দিনের অনেক কথা। সকালে ঘুম থেকে উঠে শিমুল গাছের নিচে। শিমুল ফুল সংগ্রহ করে বাড়ীর সামনে নাম লেখা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতাম এলাকার ছেলে মেয়েরা।

বসন্তের আগমনে ফাগুনের প্রথমেই শিমুল গাছে ফুটে উঠে লাল রঙের ফাগুন ঝরা ফুল আর চৈত্রের শেষে ফুটন্ত তুলা বাতাসের সঙ্গে উড়ে উড়ে প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখে। এই সময় পরিবেশটাও অন্যরকম লাগে দেখতে।

শিমুল ফুলের সাথে পাখির মিতালি

---

---

আমাদের দেশের কবি বলেন আর সাহিত্যিক বলেন শিমুলের গন্ধ আছে গল্পে, প্রবন্ধে, কাব্যেও। প্রাচীনকাল থেকেই কবিরাজি চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাছের আঠা, শিকড়-ছাল ও কচিপাতা ব্যবহার করে আসছে। রোগ নিরাময়ের জন্য উদ্ভিদকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার আদিকাল থেকেই চলছে। আধুনিক বিজ্ঞানীরাও ওষুধের উপকরণ উদ্ভিদ থেকে উদ্ভাবন করেছেন। বিশেষ করে, গাছকে আমাদের সুখ-দুঃখের পরম বন্ধু বললে কোনোক্রমে ভুল হবে না।

শিমুল তুলার ব্যবহার মূলত বালিশে, কিন্তু চাহিদা অনুপাতে জোগান কম থাকায় এবং দাম চড়া হওয়ায় শিমুল তুলার বিকল্প হিসেবে বাজারে পাওয়া যায় কৃত্রিম তুলা। পোশাক খাতে ব্যাপক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে গার্মেন্টস কারখানার ঝুট কাপড় থেকে তৈরি হতে থাকে তুলা।

বর্তমানে মানুষ শিমুল গাছকে তুচ্ছ মনে করে কারণে অকারণে কেটে ফেলছে। অতীতে ব্যাপকহারে নির্মাণ কাজ, নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি। ফলে এটি আজ বিলুপ্তির পথে। শিমুল গাছ উজাড় হওয়ার ফলে পরিবেশের উপরে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব।

এ গাছ অনেক উঁচু হওয়ায় কাক, কোকিল, চিল, বকসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি বাসা বেঁধে বসবাস করত। এ গাছ উজাড় হওয়ার ফলে এসব পাখিরা আবাসস্থল হারিয়ে পড়েছে অস্তিত্ব সংকটে। গাছ না থাকায় আবাসস্থলের অভাবে ধীরে ধীরে এসব পাখিরাও হারিয়ে যাচ্ছে।

লোকেশন:

• পার্বতীপুর (যশাই হাট-বছির বানিয়া বাজার পাকা রাস্তা)
• পার্বতীপুর (যশাইমোড়-যশাই হাট পাকা রাস্তা)
• খোলাহাটি-বদরগঞ্জ পাকা রোড সিও বাজার।

আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ

---

---