গ্রামের ঐতিহ্য বাহী ধানের গোলা ঘর

in hive-131369 •  last year  (edited)

মঙ্গলবার,
তারিখঃ ১২-০৯-২০২৩ ইং

আসসালামু আলাইকুম

প্রিয় সবাই কেমন আছো আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছো। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহপাক আমাকেও ভালো রাখছে।গ্রামে অতি প্রাচীন কাল থেকেই ধান রাখার জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে গোলা ঘর বা মাচা ঘর। আগেকার মানুষেরা এই গোলা ঘর দেখে অনেক কিছু নির্ধারণ করতো যেমন প্রথমত কোনো ছেলে বা মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব আসলে তারা আগে এসে দেখতো বাড়ির উঠানে ধানের গোলা ঘর আছে কিনা যদি আছে সেটা কত বড় গোলা ঘর তারপর তারা সিদ্ধান্ত নিতো ছেলে বা মেয়ে কে ওই বাড়িতে বিয়ে স্বাধী দিবে কিনা।

IMG-20230912-WA0005.jpg

আর এই গোলা ঘরের কারনে মানুষ বুঝতে পারতো কে কতটা অর্থবান বা গরিব। আর আগেকার মানুষ বাড়ির উঠানে গোলা ঘরের আঁকার বা কয়টা গোলাঘর আছে এটা দেখে বুঝতে পারতো যে এই বাড়ি ওয়ালা জমিদার।
এই গোলা ঘর বানাতে লাগে বাঁশ, মোটা গুনা, গোবরমাটি,সিমেন্টের ছোট ছোট বোল্ডার,ইত্যাদি। প্রথমে একটা টিনের তৈরী অথবা খড়ের তৈরী ঘর উঠাতে হবে। তারপর মাপ মতো বাঁশ কেটে সেগুলোকে গ্রামের ভাষায় বলে ছেচা তুলতে হবে। একটা বড় ধানের গোলা ঘর বানাতে ৩০ থেকে ৪০ টা বাঁশের ছেচা লাগবে।

IMG-20230912-WA0008.jpgIMG-20230912-WA0006.jpg

ছেচা বানা হয়ে গেলে সে গুলোকে ভালো করে রোদে শুকাতে হবে যেন বাঁশের রস ভালো করে শুকায়। ছেচা গুলো শুকিয়ে গেলে সেগুলোকে বাঁশের কাবারি দ্বারা একত্রে করে মোটা গুনা দারা বেঁধে বেঁধে ধানের গোলা ঘরের চাটি তৈরী করে। গোলা ঘরের চার দিকে লাগিয়ে দিতে হবে আর এই ধানের গোলা ঘরের চাটি উপরে ছোটো ছোটো করে কেটে দরজা বানাতে হবে।

IMG-20230912-WA0007.jpgIMG-20230912-WA0003.jpg

এখন গোলা ঘরের নিচে ছোট ছোট বোল্ডার শাড়ি বদ্ধ ভাবে বসাতে হবে তারপর এর উপরে লম্বা লম্বা বাঁশ দিতে হবে। এখন বাঁশ গুলোর উপরে ছেচা বিচিয়ে দিতে হবে। এভাবে ধানের গোলা ঘর তৈরী হয়ে গেলো। এখন গোলা ঘরের ভিতরে কিছু কাজ করতে হয় তা হলো বাঁশ কেটে যখন ছেচা বানিয়ে চাটি দেওয়া হয় তখন চাটির কিছু কিছু জায়গায় ফাক থাকে সেগুলো দিয়ে ধান পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে তাই এই ফাক গুলো বন্ধ করে মানুষ ব্যবহার করে থাকে।

IMG-20230912-WA0004.jpgIMG-20230912-WA0000.jpg

গোবর আর মাটি আর এই গোবর আর মাটি পানি দিয়ে এক সাথে ভালো করে মাখতে হবে ভালো করে মাখা হয়ে গেলে সে গুলোকে ছেচার চাটিতে ভালো করে লেপে দিতে হবে এভাবে চাটিতে নিচে লেপা হয়ে গেলে ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে ধান রাখা সুরু করা যাবে। এই গোবর আর মাটির আরেকটা ভালো দিক আসে সেটা হলো ধানের গোলা ঘরের ধানকে শুরক্ষিত রাখে ধান কখনো ডেম হবেনা বা নষ্ট হবেনা ধানের, ওজন কমবেনা, ধানে কোনো প্রকার পোকামাকড় আসবেনা। আমরা জানি সেই প্রাচীন যুগ থেকেই ধানের গোলা ঘরে এই গোবর মাটির ব্যবহার চলে আসছে।

IMG-20230912-WA0002.jpg

ধন্যবাদ,

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমাদের গ্রাম বাংলার প্রাচীনকালের ঐতিহ্য হলো ধানের গোলা। ধান গম ভুট্টা ইত্যাদি সংরক্ষণ করার জন্য এসব গোলা তৈরি করা হতো।এই ধানের গোলাগুলো বাশ ও মাটি দিয়ে তৈরি করা হতো। এছাড়াও আমি কোন কোন গোলা কাঠ দিয়েও তৈরি করা দেখেছি। তবে বর্তমানে এসব ধানের গোলা বিলুপ্তির পথে তেমন আর দেখা যায় না।খুব সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

ধন্যবাদ।

বাঁশের তৈরি ধানের এই গোলাগুলো এখনও গ্রামাঞ্চলের বাড়িগুলোতে দেখা যায়। তবে আগের মতন মানুষ এখন আর এগুলোতে তেমন বেশি ধান রাখে না শুধুমাত্র গুটি কয়েক লোক যারা মূলত সারা বছরের জন্য চাল করে তারাই এগুলোতে ধারণা রাখে। ভালো লিখেছেন পোস্টটি আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

গ্রামের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা নিয়ে দারুন, উপস্থাপন করেছেন ভাই। ধানের গোলা গ্রাম গঞ্জের ঐতিহ্য। প্রাচীনকাল থেকে গ্রামের মানুষ ধানের গোলা ব্যবহার করে। ধান মাড়াই করার পর। রৌদ্রে শুকিয়ে সংরক্ষণের জন্য গোলা ঘরে রাখা হয়। গোলা ঘর মূলতো বাঁশের তৈরি থাকে। যার কারণে শুষ্ক আবহাওয়া প্রবেশ করতে পারে। তবে এখন খুব একটা দেখা যায় না এরকম গোলা ঘর। দারুন একটি পোস্ট করেছেন ভাই। ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে গোলা ঘর এখন বিলুপ্তের পথে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এই গোলা গুলো এখন প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে। এখন খুবই কম দেখা পাওয়া যায়৷ গোলা গুলতে ধান,গম,ভুট্টা প্রভূতি অনেকদিন মজুদ করে রাখতে ব্যবহার করা হয়। আমাদের বাসায় আগে এই গোলা ছিল। এখন আর নেই।

@md-sajalislam.

20230511_105644__01.jpg

ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি গেলাঘর নিয়ে আপনি দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। এরকম গোলা ঘর গুলো গ্রামাঞ্চলের আগে প্রত্যেক বাড়িতেই ছিল। আগে গোলায় বিভিন্ন ধরনের শস্য সংরক্ষণ করে রাখা হতো এবং যখন এগুলো বিক্রি করার সময় হয়ে যেত তখন এগুলো বিক্রি করে দেওয়া হতো। তাছাড়া এগুলোতে ধান, চাল, পেঁয়াজ, রসুন এ সবও রাখা হতো। এটাকে এক ধরনের স্টোর রুম বললেও ভুল হবেনা। আমাদের বাড়িতেও এমন দুটি গোলাঘর ছিল। এখন আমাদের বাড়ির গোলাঘর গুলো আর নেই। তবে এখন আর সেগুলো দেখা যায় না।গ্রামের গুটি খানেক বাড়িতে এই গোলাঘর দেখা যেতে পারে। আপনি দারুন কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

এই ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা গুলো আগের সময়ে প্রতিটি কৃষকের বাড়িতে ছিল। তবে এখন আর এরকম ধানের গোলা চোখে পড়ে না। এখন সবাই নিজের ফসল বস্তা জাত করে থাকার ঘরে অথবা অন্য কোন ঘরে রেখে দেন। তবে আগের মতো নির্দিষ্ট ভাবে এরকম ধানের গোলা ঘর দেখা যায় না। তবে পুরনো কিছু সংখ্যক কৃষকের বাড়িতে এখনো ধানের গোলা রয়েছে। এই ধানের গোলা ঘর গুলো আমাদের প্রাচীন যুগের অন্যতম ঐতিহ্য। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

DescriptionInformation
plagiarism-free
#steemexclusive
Ai Content - free

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.

image.png

আগের দিনের প্রতিটি কৃষকের বাড়িতে এমন ধানের গোলা ছিল। এখন এই ধানের গোলা গুলো বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। এখন কৃষক আর ধান মাড়াই করে গোলায় রাখে না। সেগুলো ইটের ঘরে অথবা ব্যবসায়ীদের কাছে আগেই দিয়ে রাখে পরে টাকা নিয়ে নেয়। আমাদের বাড়িতে এমন একটি ধানের গোলা ছিল। সেগুলোতে আমরা প্রতি বছর ধান মাড়াই করে রেখে দিতাম। এখন আর সেই গোলাটি নেই। আমরা এখন আর গোলাতে ধান রাখি না। আমরা গেলার বদলে সেই জায়গায় একটি ইটের ঘর তৈরি করে সেই ঘরে ধান রাখি। কারণ গোলা থেকে ধান পেড়ে ধান বাজারে বিক্রি করা খুবই কষ্টকর। তবে যাদের অনেক ধানের জমি রয়েছে তাদের বাসায় এখনো এমন ধানের গোলা রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে ধান রেখে দেয় এবং পরে দাম বাড়লে ধান বাজারে বিক্রি করে সেজন্য তারা এই গোলাটিকে রেখেছে। তবে অনেক কৃষক এখন ধান জমিয়ে রাখতে পারে না কারণ ধানের দাম কম হয়। ধান বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। তাতে দেখা যায় তারা ধান জমে রাখতে পারে না। ধন্যবাদ আপনাকে আপনি সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। অনেকেই গোলা চিনেনা এই পোষ্টের মাধ্যমে গোলা চিনে থাকবে এবং বিশেষ কিছু তথ্য জেনে থাকবে।

আমাদের গ্রামবাংলায় আগে প্রচুর পরিমাণে ধানের গোলা ছিল এবং সেটি ব্যবহৃত হতো। কিন্তু এখন যত দিন যাইতেছে ততই এগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাইতেছে। কারণ মানুষ এখন ধান বাড়িতে আনার পর সেটি হয়তো বস্তায় বাজারজাত করার জন্য রেখে দিতেছে নয়তো সাথে সাথে বিক্রি করতেছে। এজন্য তাদের গোলার প্রয়োজন হয় না। আর আপনি সেই বিষয়টি নিয়ে অনেক সুন্দর হবে তুলে ধরেছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

গ্রামের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই। একটা সময় গ্রামের মানুষের গোলা ভর্তি ধান ছিলো। তবে এখন জনসংখ্যা বাড়ার কারনে জমির মালিকের সংখ্যা বাড়ছে ফলে মানুষের জমির পরিমানও কমে যাচ্ছে। যার কারনে এখন সচারচর গোলা ভর্তি ধান খুব কম মানুষেরই দেখা যায়। তবে গ্রামে এখনো কিছু কিছু মানুষের গোলা আছে ও গোলা ভর্তি ধান আছে।

আগেকার দিনের সব আজব কান্ড ছিলো গ্রাম অঞ্চলে। আমিও শুনেছি মেয়ে বা ছেলে দেখতে আসলে তারা আগে বাড়িতে গোলা ঘর আছে কিনা তা দেখতো। চাটি দিয়ে ভিতরে গোবর এবং মাটির প্রলেপ দিয়ে সুন্দর করে গোলাঘর বানানো হয়। আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।