"নুতন করিয়া বসা আর ভাঙা পুরানো হাটের মেলা
দিবসরাত্রি নুতন যাত্রি নিত্য নাটের খেলা।
খোলা আছে হাট মুক্ত বাতাশে
বাধা নাই ওগো-যে যায় সে আসে;
কেহ কাঁদে কেহ গাঁটে করি বাঁধে ঘরে ফিরিবার বেলা
উদার আকাশে মুক্ত বাতাশে চিরকাল একই খেলা।"

উপরের কবিতার অংশটুকু কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের "হাট" কবিতা থেকে নিয়েছি। এই কবিতার লাইন পড়েই গ্রামের হাট বাজারে ধারণা পাওয়া যায়। আজকে লেখনীতে আমি যে বিষয়টি সম্পর্কে লিখব সেটি হলো গ্রামীণ হাট-বাজার।

^{Canva এর সাহায্যে তৈরি}

বাংলাদেশের হাটের দৃশ্য

একটি গ্রামে বেশকিছু করে হাত থাকে। সপ্তাহের নির্দিষ্ট একটি দিনে সেই হাট বাজার বসে। আর এই হাটে পাওয়া যায় নিত্য প্রয়োজনীয় সব রকমের সামগ্রী।হাট-বাজার মানে শুধু কাঁচা শাক সবজির বাজার নয়। হাট বাজারে পাওয়া যায় সবজি, শুকনো বাজার, মাছ, মাংস থেকে শুরু করে কাপড় পাওয়া যায় । তবে গ্রামীণ হাট বাজারে যে সামগ্রীগুলো বেশি প্রাধান্য পায় তা হলো সিজনাল ফসল, শাকসবজি, ফলমূল।

সবজি

---

শীতকালে হাট-বাজারের দৃশ্যগুলো চমৎকার দেখা যায় বাহারি রঙের সবজির কারণে। বিভিন্ন রঙের সবজি বিক্রি হওয়ায এ সবজিগুলো পুরো হাটকে আকর্ষণীয় করে তোলে। শীতকালীন সবজির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গাজর, বেগুন শিম, টমেটো, মটরশুঁটির, ফুলকপি, বাঁধাকপি ব্রকলি, মূলা, লালশাক, পুঁই শাক ইত্যাদি। গ্রামীনে সব হাটবাজারে সদ্য তুলে আনার টাটকা ফল এবং সবজি পাওয়া যায়।

নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী

---

গ্রামীণ হাট বাজারের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে এই হাট বাজারে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যায়। এসকল সামগ্রীর বেশিরভাগই হস্তশিল্প অর্থাৎ হাতে বানানো জিনিস। এর মাঝে রয়েছে বাঁশের তৈরি, ঝাড়ু, চালনি, কুলা, খাঁচাসহ বিভিন্ন জিনিস।
এছাড়া বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন দা, কাঁচি, বটি বটি এগুলো পাওয়া যায়। কামারেরা প্রতি সপ্তাহে তাদের তৈরিকৃত দ্রব্যাদি নিয়ে হাটে বিক্রি করতে বসেন।

---

শীতের কাপড়

---

শীতকালে গ্রামীণ হাট বাজারে বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় পাওয়া যায় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হাত মোজা, পা মোজা, কানটুপি এবং মাফলার। এরা হলেন খুচরা বিক্রেতা। প্রতিটি হাটে ইনারা তাদের ছোট্ট দোকান সাজিয়ে বসেন এবং এই সকল শীতের পণ্য বিক্রি করে সামান্য কিছু টাকা রোজগার করেন। এই দোকানে পাওয়া যায় বিভিন্ন সাইজ এর হাত মোজা, পা মোজা। গ্রামের মানুষেরা অতি আনন্দের সাথে এদের কাছ থেকে শীতের জন্য গরম কাপড় কিনে। প্রতি হাটেদুই থেকে তিন এর অধিক এরকম শীতের জন্য গরম কাপড় বিক্রেতা দেখ যায়।

---

দেশীয় ফলমূলের দোকান

---

গ্রামীণ হাতে দেশীয় ফল ফল বিক্রেতা দেখা যায়। এই সকল ফল তারা নিজের গাছ থেকে পেরে তারপর হাটে নিয়ে আসে বিক্রি করার জন্য। গ্রামীণ হাট বাজারে যেসব ফল পাওয়া যায় সবগুলোই দেশীয় এবং স্থানীয় ফল। সকল ফলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কলা, পেয়ারা, আনারস, বরই, আমড়া ইত্যাদি।গ্রামীণ হাটে কোন ধরনের বিদেশি ফল পাওয়া যায় না।

---

গ্রামীণ হাট বাজারের বিশেষত্ব

---

• গ্রামীণ হাট বাজারের সব টাটকা ফলমূল শাকসবজি ও কাঁচাবাজার পাওয়া যায়।
• সপ্তাহের নির্দিষ্ট একটি দিনে সকলের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়।
• এই হাট বাজারে সব পণ্য দ্রব্যের মূল্য থাকে কম।
• এই হাট বাজারে পণ্য বিক্রি করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে।
• সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এই হাটবাজারের মাঝে মাঝে যিনি ক্রেতা তিনিই বিক্রেতা। যেমন কেউ আলু বিক্রি করে কাঁচামরিচ কিনে আবার কেউ দা, বটি বিক্রি করে শীতের জন্য গরম খবর কেনে।
• তবে হাট-বাজারগুলো হলো বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য।
• এই হাটবাজারের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের সামাজিক সম্পর্কও মজবুত হয়।

---

এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রতিযোগিতার এনাউন্সমেন্ট লিংকটি নিচে দিচ্ছি। লিংক

সবাইকে ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য

Regards

@pea07