ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাটনা এবং পিষনি নিয়ে আলোচনা || by @rubayat02

in hive-131369 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম


Today 18- August -2023

০৩ই- ভাদ্র -১৪৩০ বঙ্গাব্দ


কেমন আছেন আপনারা, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন, আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে মাটির তৈরির পাটনা এবং পিসনি নিয়ে আলোচনা করব। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাটনা


1000007350-01.jpeg

মাটির তৈরি বাটনা আমাদের প্রাচীনকালের ঐতিহ্য। এই বাটনা আমাদের কাছ থেকে যুগ যুগ ধরে রয়েছে। গ্রাম অঞ্চলে রান্নার সময় পাটনা ব্যবহার করে না এমন মানুষ কখনো কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ তরকারি রান্না করতে হলে বাটনার অবশ্যই প্রয়োজন পড়ে। আমাদের কাছ থেকে প্রাচীন কালের অনেক কিছু জিনিসপত্র বিলুপ্ত হলেও বাটনা আমাদের কাছে এখনো আগের মতই রয়েছে। পার্টনার ব্যবহার একটুকুও কমে যায়নি। তবে শহর অঞ্চল গুলোতে কিছুটা হলেও বাটনার ব্যবহার কমে গিয়েছে। এবং আমি এটা আশা করি আমাদের গ্রামাঞ্চলে বাটনার ব্যবহার এখনো অনেক বছর থাকবে। কারণ এখনো বাটনার পরিবর্তে অন্য কোন প্রযুক্তি আসতে অনেক সময় লাগবে।


1000007332-01.jpeg
1000007330-01.jpeg1000007331-01.jpeg

এগুলো হলো মাটির তৈরি বাটনা, সেই প্রাচীন যুগ থেকে এরকম মাটির তৈরি বাটনা গ্রাম অঞ্চলে মানুষরা ব্যবহার করে থাকেন। মূলত এই বাটনা গুলো কুমাররা তৈরি করে থাকেন এবং সেই বাটনা গুলো ভ্যানে করে প্রতিটি গ্রাম অঞ্চলের মানুষদের কাছে পৌঁছে দিতেন। মূলত বাটনা যে কেউ তৈরি করতে পারেনা শুধুমাত্র কুমাররা বাটনা এবং মাটির জিনিসপত্র তৈরি করে থাকেন। কিন্তু এখন কোমাররা গ্রাম অঞ্চলে ভ্যানে করে মাটির জিনিসপত্র খুবই কম নিয়ে আসেন। তাই এখন এরকম মাটির তৈরি বাটনা কিনতে হলে আপনাকে বাজার থেকে কিনে আনতে হবে।


1000007340-01.jpeg1000007337-01.jpeg
1000007341-01.jpeg
শুধুমাত্র বারনা দিয়ে কোন কিছু তৈরি করা সম্ভব না। বাটনার সঙ্গে আমরা আরো একটি জিনিস ব্যবহার করে থাকি। যেটিকে আমাদের গ্রামের ভাষায় "নোরা" বলা হয়। তবে বেশিরভাগ জায়গা এটাকে পিষনি বলা হয়। পিষনি মূলত বাঁশের মুড়া দিয়ে তৈরি করা হায়। বাঁশ কেটে আনার পর মাটির তলে যে অংশটুকু থাকে সেই অংশটুকু দিয়ে পিষনি তৈরি হয়। বাঁশের পিষনি তৈরি করা যতটা সহজ ঠিক ততটাই কঠিন। সবাই বাঁশের পিষনি তৈরি করতে পারেন না। সহজ বলার কারণ হলো আমার বাঁশের মুড়া দিয়ে পিষনি তৈরি করতে পারেন। একটি বাঁশের পিষনি অনেক দিন যাবত ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও আমি কোন কোন জায়গায় দেখেছি পিষনির জন্য বড় শিল ব্যবহার করা হয়। তবে গ্রাম অঞ্চলে বেশিরভাগ মানুষ বাঁশের তৈরি পিষনি ব্যবহার করে থাকেন।


1000007333-01.jpeg1000007334-01.jpeg

মাটির তৈরি বাটনা আমরা অনেক কাজে ব্যবহার করে থাকি যেমনঃ কোন কিছু ভর্তা করতে হলে আমরা বাটনায় ভর্তা করে থাকি। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে আলুর ভর্তা, শুটকির ভর্তা, মাছের ভর্তা, বাদামের ভর্তা, কালোজিরার ভর্তা এবং কুমড়ো ভর্তা বেশি করা হয়। এছাড়াও আমরা অনেক প্রকারের ভর্তা করে থাকি। ভর্তা করা ছাড়াও পাটনা মসলা পিষার কাজে বেশি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও আমরা কাঁচা মরিচ এই বাটনা পিষে থাকি। বলতে গেলে রান্না করার সময় বাটনা আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে। এখানে আরেকটি জিনিস লক্ষ্য করবেন আমাদের আমাদের প্রাচীনকালের অনেক ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং কিছু কিছু জিনিসপত্র ব্যবহার অনেক কমে গিয়েছে। সেই জায়গা থেকে বাটনার গুরুত্ব কিন্তু এখন আগের মতই রয়েছে। আমি চাই আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী বাটনার ব্যবহার যুগ যুগ ধরে আমাদের কাছে থেকে যাক। আমার ব্লগটি এখানেই শেষ করলাম।


আমার ফোনের বিবরণ
পোস্টের বিষয়ঐতিহ্যবাহী মাটির বাটনা
ক্যামেরা মডেলrealme 9i
ফটোগ্রাফার@rubayat02
লোকেশনরংপুর বাংলাদেশ

প্রিয় বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাটনা এবং পিষনি নিয়ে আলোচনা , সবার প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জানিয়ে এখানেই বিদায় নিলাম, দেখা হবে আবার কোনো নতুন বিষয় নিয়ে, সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।


FrDSZio5ZCzUamf35asauSgs1tnNGCc8exBrDii52qi3JqqaFB2GnW5yVNodCtswB8EedAbTMPKcxh8DGMNUdQWhdKqxc6HEzAbJHTjR23...YXDiJ1FhQMpcnzAZ1j5XwnEqTpNS9qvgZfTFzPvPYLS5hLMpKGysnXjXrfDNEPWom7c6NZLKkiYqXhmtfrqzFVcV2VwLKc5uz8S8HdSnbyd6MoqzNodFnqxPh8.png

💞-খোদা হাফেজ-💞

FrDSZio5ZCzUamf35asauSgs1tnNGCc8exBrDii52qi3JqqaFB2GnW5yVNodCtswB8EedAbTMPKcxh8DGMNUdQWhdKqxc6HEzAbJHTjR23...YXDiJ1FhQMpcnzAZ1j5XwnEqTpNS9qvgZfTFzPvPYLS5hLMpKGysnXjXrfDNEPWom7c6NZLKkiYqXhmtfrqzFVcV2VwLKc5uz8S8HdSnbyd6MoqzNodFnqxPh8.png


UF7UDccXmKiRkXceCavGEKH3TNDM65wJtxFfBvK53mUcMEN1RtxDtd2qctmxbj85zamfAyPuQoVu5pH2hQSYC82VLsES2d3cmZ8aKnsxxU...ZRqX57aCNfBEVr8xP4ZVQvXtGnN9RTYY3tTRTP3iJsec9qp2U7UVz8sdPRmeySEvfJ4wcrT5G4DKYMC3jwNKSbfqbxJiCzMFawmJqraZZFqesWqtUQ4fXishWN.png

IMG_20230513_190258.jpg

আমি রুবাইয়াত হাসান হৃদয়, সোনালী বাংলাদেশে আমার বসবাস, বাংলা আমার মাতৃভাষা, পেশায় আমি একজন ছাত্র এবং এর পাশাপাশি আমি Steem For Tradition কমিউনিটির নিয়মিত একজন সদস্য, Steem For Tradition কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে সত্যি আমি অনেক গর্বিত, কারণ আমি এখনে আমার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারি, আমার আগ্রহ, আমি বাংলার ইতিয্য এখানে নতুন করে ফুটিয়ে তুলবো, এছাড়াও আমি ফটোগ্রাফি, অঙ্কণ, রেসিপি এবং DIY পোস্ট করতে অনেক ভালোবাসি, এবং এটা মন দিয়ে মানি যে মানুষ মানুষের জন্য।

UF7UDccXmKiRkXceCavGEKH3TNDM65wJtxFfBvK53mUcMEN1RtxDtd2qctmxbj85zamfAyPuQoVu5pH2hC82VLsES2d3cmZ8aKnsxxU...ZRqX57aCNfBEVr8xP4ZVQvXtGnN9RTYY3tTRTP3iJsec9qp2U7UVz8sdPRmeySEvfJ4wcrT5G4DKYMC3jwNKSbfqbxJiCzMFawmJqraZZFqesWqtUQ4fXishWN.png

you can also vote for @bangla.witness witnesses

IMG-20230513-WA0000.jpg

VOTE for @bangla.witness

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাটনা নিয়ে অনেক সুন্দর উপস্থাপন করছেন ভাই। আমার বাসায় এই বাটনা রয়েছে, মসলা বাটার জন্য সুন্দর একটি মাধ্যম। তুলনামূলক অনেক দাম কম এই মাটির বাটনার। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া

মাটির তৈরি বাটনা ও নোড়া দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মসলা বাটা হয়। মাটির এই বাটনাকে আমাদের এলাকায়'তাওয়া' আর বাঁশের তৈরি নোড়া কে 'ঘোটা' বলা হয়। আমাদের গ্রামের কম বেশি প্রত্যেকটি বাড়িতেই এই বাটনা ও নোড়া এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। বাটনা ও নোড়া নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ

হস্তশিল্পের একটি অন্যতম অংশ হলো মাটির তৈরি পিশনি।যুগ যুগ ধরে এই উপকরণটি আমাদের দেশে প্রচলন রয়েছে। মাটির তৈরি বাটনা নিয়ে দারুণ লিখেছেন আপনি।দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

ধন্যবাদ ভাইয়া

আমাদের এইদিকে এগুলোকে শাংকি ও নোরা বলে। আমাদের এই দিকে এগুলো র ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। আমার মা প্রতিদিন এগুলোতে মরিচ পিয়াজ মাঝে মাঝে অন্যান্য ধরনের সব মসলা এখানে পিষে থাকে। অনেক সুন্দর একটা পোস্ট করেছেন আপনি আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া

ঐতিহ্য বাহী মাটির বাটনা ও নোড়া নিয়ে আপনি দারুন উপস্থাপনা করেছেন।এগুলো আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য। বহুকাল ধরেই উত্তর বঙ্গের মানুষ এটি ব্যবহার করে আসছেন। এই বাটনার সুবিধা হল যে এটা দিয়ে খুব সহজে মিহি করা যায়।ছবিগুলো দারুণ তুলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাকেও ধন্যবাদ আপু মনি

বাটনা ও নোরা নিয়ে আপনি সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন।উত্তর অঞ্চলের মানুষরা এটা চিনে না, এমন হয়তো কাউকে পাওয়া যাবে না।মাটির তৈরি বাটনাতে মিহি করার জিনিস রেখে হাতের সাহায্যে নোরা দিয়ে অনোবরত শক্তি দিয়ে নাড়ানো হয়,এটাতে ভর্তা ও মসলা মিহি করা হয়,এছাড়াও বিভিন্ন যে কোনো কিছু মিহি গুড়ো করার কাজে ব্যবহার করা হয়।আপনার পোস্ট ও ছবি সুন্দর হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু

মাটির তৈরি বাঁটনা নিয়ে সুন্দর লেখছেন ভাই। মাটির তৈরি বাঁটনা আমাদের পুরনো দিনের ঐতিহ্য। আগে থেকেই আমাদের দেশে বাঁটনার প্রচালিত।গ্রাম অঞ্চলে এই বাঁটনার প্রচুর ব্যবহার হয়।এতে করে আমরা বিভিন্ন ধরনের ময়মসলা গুড়ো করতে পারি।আগের দিনে গ্রামে গ্রামে ঘুরে এগুলো জিনিস বিক্রি করতো।বর্তমান তেমন একটা দেখা যায় না। আপনি সুন্দর আলোচনা করছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া

Loading...

ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাটনাগুলো কমবেশি সকলের বাসায় দেখতে পাওয়া যায়। এই একটি মাত্র মাটির তৈরি আসবাবপত্র যা সবাই ব্যবহার করে। বর্তমানে প্রযুক্তির সাথে তাল মিলাতে গিয়ে আমরা মাটির তৈরি আসবাবপত্র ব্যবহার প্রায় বন্ধ করে দিয়েছি। আপনি বাটনা এবং নোরা নিয়ে অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই।

ধন্যবাদ ভাইয়া

বাটনা এবং নোড়া নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বাটনা এবং নোড়া আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। এসব জিনিসপত্র সেই প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের মাঝে রয়ে গিয়েছে। এগুলো হলো হস্তশিল্প জিনিসপত্র। গ্রামের কুমাররা এসব মাটির তৈরি জিনিসপত্র তৈরি করে থাকেন। এছাড়াও আপনার ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া

ধন্যবাদ ভাইয়া

ঐতিহ্য বাহী মাটি দিয়ে বানানো এই বাটনা এবং বাঁশের মুড়া দিয়ে বানানো নোড়া এগুলো গ্রামে অনেক প্রচলিত এবং এখনো ব্যবহার হয় কিন্তু শহরে এগুলো দেখাই যায়না ধীরে ধীরে তো এগুলো বিলুপ্তর পথে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

আপনাকেও ধন্যবাদ