শীতল বাতাসের জন্য ব্যবহৃত হাতপাখা।।

in hive-131369 •  2 years ago 
আসালামু আলাইকুম
ঐতিহ্যমূলক পোস্ট
🤗Hello Bloggers 🤗
আশা করি ,মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ। আমি @rumana12 আজকে আলোচনা করবো গরম থেকে শরীর কে শীতল করার জন্য ব্যবহৃত হাত পাখা নিয়ে। আশা করি ,আপনাদের সকলকে আমার পোস্টটি ভালো লাগবে।চলুন তবে দেরি না করে শুরু করা যাক।

1000000929.jpg



বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। গ্রীষ্ম এই ছয় ঋতুর প্রথম ঋতু। গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন স্বাভাবিক ভাবেই শীতল আবহাওয়া খুঁজে বেড়ায়। প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত বাতাস সেই জনজীবনকে অনেক প্রশান্তি দেয়। কখনো কখনো প্রকৃতিও ভিন্ন রূপ ধারণ করে। আবহাওয়া প্রচন্ড গরম থেকে একটু শান্তির জন্য ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ধরনের হাতপাখা।


1000000629.jpg


এসব হাতপাখা বিভিন্ন রংবেরঙের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। পাখাটি তৈরির জন্য রংবেরঙের কাপড়ের পাশাপাশি প্রয়োজন হয় বাশের কয়েকটি অংশ। যেমন হাত ঘোরানোর জন্য ছোট অংশটিকে বাশের চিকন ফাপা অংশ পরিমাপ মতো কেটে ব্যবহার করা হয়। যাকে আমাদের গ্রামের ভাষায় চুঙ্গি বলে। এছাড়াও পাখাটিকে গোল আকার দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয় বাশের চিকন কোন মাঠানো অংশ যাকে চাকতি বলা হয়। এই চাকতি কে চারদিক থেকে কাপড় দিয়ে মোড়ানো হয়। অতঃপর বাতাস যেন চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এজন্য ব্যবহার করা হয় কাপড়ের রংবেরঙের তৈরি ঝুল বা ঝারল।

1000000625.jpg

অতপর হাতপাখাটি তৈরি হয়ে যায় । তবে শুধু কাপড়ের দুই হাত পাখা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের হাত পাখা পাওয়া যায়। যেমন- তালপাতার তৈরি হাত পাখা, খেজুর পাতায় তৈরি হাত পাখা ও প্লাস্টিকের বিভিন্ন আকারের তৈরি হাত পাখা ইত্যাদ। কেউ কেউ সৌখিনতার খাতিরে কাপড়ে বিভিন্ন রকমের ফুল অঙ্কন করে তা সেলাই করে বিভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে। হাত পাখাগুলো দেখতে অনেক সুন্দর হয়।
আমাদের বাড়িতেও বেশ কিছু হাত পাখা আছে। তবে আপাতত দুটি হাত পাখা ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা বেশির ভাগ সময়ই কারেন্ট না থাকলে এ হাত পাখা ব্যবহার করি।


1000000626.jpg

গ্রামের বাড়িগুলোতে এসব হাত পাখার ব্যবহার সব থেকে বেশি। তারা অতিরিক্ত গরমে এই হাত পাখা ঘুরিয়ে বাতাস করে। হাত পাখার প্রচলন গ্রাম অঞ্চলে অনেক আগে থেকেই। যদিও দিন দিনের ব্যবহার কমছে। এখন বিভিন্ন রকমের চার্জার ফ্যান এবং ব্যাটারি চালিত ফ্যান এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাতপাখার বিদ্যুতের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। এর ব্যবহার অত্যন্ত সহজ। তবে হাত পাখা ঘুরিয়ে বাতাস করতে কিছু পরিমাণ পেশি শক্তি ক্ষয় হয়। গ্রামের সহজ সরল মানুষেরা রাতে কারেন্ট না থাকলে এক জায়গায় বসে এই হাতপাখা ঘুরিয়ে বাতাস করে এবং বিভিন্ন রকম গল্প বা আলোচনা করে।


1000000627.jpg

1000000627.jpg


আমাদের সবার কাছে কম বেশি পরিচিত এই হাতপাখা। আমাদের মধ্যে যাদের বাড়ি গ্রামে তারা এই গ্রীষ্মকালে হাত পাখার ব্যবহার দৈনন্দিন করে। হাত পাখার বাতাস অনেক ঠান্ডা হয়। শরীর ঠান্ডা রাখতে এই হাত পাখার বিকল্প হিসেবে এখন ফ্যান ব্যবহারে আগ্রহী অধিকাংশ মানুষ। তবুও এই হাত পাখার ব্যবহার এখনো কমেনি।
আমার বাসায় ব্যবহৃত দুটি হাত পাখার ব্যবহার ও ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। যেগুলো আমার মা বাড়িতেই তৈরি করেছিলেন। এবং এগুলোর ব্যবহার অনেক দিন থেকে হয়ে আসছে আমাদের বাড়িতে।



1000000628.jpg



আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে ।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ।সকালে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেশের ঐতিহ্য কে ভালবাসবেন, যত্ন করবেন। হাত পাখার ব্যবহার আপনাদের বাড়িতে কেমন তা কমেন্ট করে করে জানাবেন।




ধন্যবাদ সবাইকে ।



1000000844.png


1000000848.jpg

আসসালামু আলাইকুম, আমার নাম রুমানা পারভীন। আমার steemit আইডি নাম @rumana12 আমার বাসা দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলায়।আমি দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করি। আমি ভ্রমণ করতে এবং নতুন কিছু শিখতে খুব পছন্দ করি। অবসর সময় গান শুনতে আমার অনেক ভালো লাগে। আমি steemit এ কাজ উপভোগ করি।

Black & White Minimalist Business Logo.png


You can also vote for @bangla.witness witnesses

3zpz8WQe4SNGWd7TzozjPgq3rggennavDx3XPY35pEAVnpvDGTmz6yM4BdeUwpQ8vMxtR3sQse9kG46R2Lk4NBaGfzPmL5tiA85DdFd7TDvbMGaNMAY2RBgSWfNp5kM1Qjr3515gWKvjxzADBcu4.png
Vote for @bangla.witness

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রাচীনকাল থেকে বাতাস খাওয়ার জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে। এইসকল হাতপাখা কিন্তু বর্তমান সময়ে কিছুটা কম ব্যবহার হয় । কিছুদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় আবারো হাতপাখা ব্যবহার করতে শুরু করেছে মানুষ। আপনার মা অনেক সুন্দর হাত পাখা বানিয়েছেন আপু।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

হাত-পাখা নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন। এগুলো আমাদের ঐতিহ্য। প্রচন্ড গরমের লোডশেডিং এর সময় এটি আমাদের একমাত্র ভরসা। তাছাড়া হাত পাখার বাতাস ঠান্ডা। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

আপনি সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

গ্রীষ্মকালীন সময়ে আমাদের প্রশান্তি এনে দেয় এই ঐতিহ্যবাহী হাতপাখা। লোডশেডিং এর সময় হাতপাখার গুরুত্ব অপরিসীম। আজ থেকে যখন ১৫-১৬ বছর আগে বিদ্যুৎ ছিল না গ্রামাঞ্চলে তখন একমাত্র পাখার মাধ্যমে বাতাস করতাম। আমরা ছোটবেলায় দাদিমার সাথে ঘুমাইতাম, দাদী মার হাত এমন মনে হয় রোবট। ঘুমের মাঝেও দাদীমার হাত একটুও থামেনা। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

একটা সময় যখন বিদ্যুৎ ছিলো না বা গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ এর সরবারাহ শুরু হয় নি তখন হাতপাখাই ছিলো গরমে মানুষের ঠান্ডা বাতাস খাওয়ার একমাত্র মাধ্যম। তবে কালের ক্রমে এগুলো হারিয়ে গেছে। কিন্তু সম্প্রতি অতিরিক্ত লোডশেডিং এর কারনে গ্রামের মানুষ আবারো হাতপাখার ব্যবহার শুরু করেছে। খুবই চমৎকার একটি পোস্ট করেছেন।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

প্রচণ্ড গরম এখন। তাছাড়া প্রচুর লোড শেডিংও হয়। এসময় হাতপাখা ছাড়া জীবন অতিষ্ট হয়ে যায়। হাতপাখা নিয়ে দারুণ লিখেছেন। ছবিগুলো আমার কাছে ভাল লেগেছে।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

হাতপাখা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন আপু। গরমের সময় প্রাকৃতিক বাতাসের একমাত্র মাধ্যম হলো এই হাতপাখা। কিন্তু এখন অনেকেই হাতপাখার পরিবর্তে চার্জার ফ্যান ব্যবহার করছে। ধন্যবাদ আপু হাতপাখা নিয়ে এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

  ·  2 years ago (edited)

কারেন্ট চলে গেলে বাতাস খাওয়ার মত এই হাতপাখায় একমাত্র অপরিহার্য উপাদান। গ্রামে প্রায় সব বাড়িতে নিজের হাতে এরকম হাতপাখা সবাই তৈরি করে। আমরা নিজেই প্রায় সময় এই হাতপাখা তৈরি করে থাকি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমাদের গ্রাম অঞ্চলের ছোট একটি হাতপাখাকে আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

হাত পাখা নিয়ে দারুণ উপস্থাপন করেছেন আপু। হাতপাখা আমাদের গরমের সময় শরীরে প্রশান্তি এনে দেয়। যখন বিদ্যুতের যুগ ছিল না তখন মানুষ তালপাতার হাতপাখা ব্যবহার করতো।এখন হরেক রকমের কাপড়ের তৈরি হাতপাখা ব্যবহার করে । হাতপাখা আমাদের গ্রামীন ঐতিহ্য, এখন নানারকম ইলেকট্রনিক ডিভাইস নামার কারণে মানুষ চার্জার ফ্যানের প্রতি বেশি আকৃষ্ট। দিন দিন মানুষ অলস হয়ে গিয়েছে, এখন আর কষ্ট করে হাতপাখা ঘুরাতে চায় না। সুন্দর লিখেছেন আপু। অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

গ্রামের বাড়িগুলোতে এসব হাত পাখার ব্যবহার সব থেকে বেশি। তারা অতিরিক্ত গরমে এই হাত পাখা ঘুরিয়ে বাতাস করে।

আপনি ঠিক বলছেন আপু।গ্রামের বাড়ি গুলোতে হাত পাখা বেশি ব্যবহার করা হয়।আর হাত পাখার ব্যবহার এটা অনেক আগের পদ্ধতি।বর্তমান যে গরম পরছে আমার মনে হয় সবাই হাত পাখা এখন ব্যবহার করতেছে।আপনি সুন্দর ভাবে বিস্তারিত আলোচনা করছেন।এবং কি ভাবে পাখা তৈরি করা হয় সেটারও সুন্দর আলোচনা করছেন আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

হাত চালিত পাখা আমাদের দেশের ঐতিহ্য বটে।হাতপাখা গরমে প্রশান্তি লাভের জন্য ব্যবহার করা হয়। হাতপাখা প্রতিটি বাড়িতেই দেখা যায়। বিদ্যুৎ যখন চলে যায় তখন হাতপাখা বিশেষ ভুমিকা পালন করে। হাতপাখা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

এই হাত পাখার ব্যবহার এক সময় অনেক বেশি ছিল।বর্তমানে অনেক কমে গিয়েছে। ছোটবেলা যখন গ্রামের বাড়িতে যেতাম সেখানে বিদ্যুৎ ছিল না।তখন এই হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতাম,অনেক ভালো লাগতো। চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন। শুভকামনা রইল

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

বর্তমানে গরমের একমাত্র বন্ধু হাত পাখা। তবে এই সময়ে যে পরিমাণে বিদ্যুৎ এর সমস্যা সেটা বলার ভাষা নাই। হাত-পাখা নিয়ে দারুণ লিখেছেন আপনি। ধন্যবাদ

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

হাতপাখা গুলোর দারুণ ফটোগ্রাফি করেছেন।