শুরুতে দেখানো হয় একটি রেল লাইন দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে। সেই ট্রেনে একজন বাবা আর ছেলে কথা বলছে। ছেলে তার বাবাকে জিগেস করছে তুমি যদি তোমার বন্ধুদের সাথে আবার দেখা হয় তাহলে কি তুমি তাদের কি বলবে তখন তার বাবার মনে পরে যায় আগের কথা। পরের দৃশ্যে দেখানো হয় কোন এক স্কুলে একটা ছেলে কাগজ হাতে নিয়ে ক্লাশে ঢুকলো। স্যার জিগেস করলো তোমার নাম কি আর এখানে কি?
সে বলল লাড্ডু। এই নাম শুনে সবাই খুব হেঁসে উঠে। স্যার বলে তার নতুন নাম দিবে। পরেরদিন তার নাম দেওয়া হয় রাশেদ হাসান। তারপর তার সাথে এক ছেলের মারামারি লেগে যায় নাম কাদের। একটু স্বাস্থ্য ভালো ছিলো মারামারি শুরু হওয়ার পর রাশেদের মুখ ফাটিয়ে দেয় নাক মুখের রক্ত লেগে থাকে।
তার সাথে কিছু বন্ধু হয়। তার মধ্যে একজন ছিলো ইবু। রাশেদ তার বাবাকে কিছুটা পাগল মনে করতো তার মা নেই। সে প্রায় সকল খবর রাখতো দেশের। একদিন স্কুল শেষ ইবু তার এলকায় আসতে বলে রাশেদকে তারা নাকি বিস্কুট বানাবে। তারপর তারা ভাবে ওষুধ বানাবে কিন্তু কিভাবে বানায় তা তারা জানে না তা জানতে শফিক ভাইয়ের কাছে যেতে হবে।
পরের দিন ওরা চলে যায় শফিক ভাইয়ের কাছে শফিক ভাই তখন অরু আপার সাথে কথা বলছে। ইবু শফিক ভাই কে বললো তারা ওষুধ বানায়তে চায়। শফিক ভাই বললো তোমরা কি ধরনের ওষুধ বানাতে চাও।
কথা শেষ তারা টেবলেট বানাবে শফিক বললো এর জন্য আমাকে একটু পড়তে হবে। যাওয়ার সময় শফিক বললো তোমরা জানো দেশের খবর কিছু?
রাশেদ বলে উঠে জী জানি ইয়াহিয়া খান কোন ভাবেই বাঙালি কে এই দেশ দিবে না। শফিক ভাই তার নাম জানতে চায় নাম বলে চলে আসে তারা।
২৫ মার্চ ১৯৭১ সাল,
যেটা বাংলার মানুষের কাছে কালো রাত। পাকিস্তানীরা ঝাঁপিয়ে পরে ঘুমন্ত বাঙালির উপর। ওই রাতে মেরে ফেলে হাজার মানুষ। এই খবর তখন ইবুর এলাকা পর্যন্ত পৌছে যায়। ইবুর বাবা খুব চিন্তিত হয়ে পড়ে এইদিকে রাশেদ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। তাদের এলাকায় পাকিস্তানীরা এসে ক্যাম্প তৈরি করে তাদের স্কুলে। তারা তাদের এলাকায় ঢুকার পর পর ই মেরে ফেলে একজন রাজাকার সহ ২ জন কে এটা রাশেদ লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে থাকে। রাশেদ তখন ইবুদের বাড়িতে চলে যায়। ইবুর বাবার সাথে দেখা হয় রাশেদের।
রাশেদ পানি খেতে চায় তারপর সে যা দেখেছে তা বলতে থাকে। তার পরের দিন ইবুকে এসে রাশেদ বলে ওই পারে নাকি মুক্তি বাহিনী এসেছে যাবি আমার সাথে যাবি?কীভাবে যাবো রাতে। তারা বুদ্ধি বের করে যে অরু আপার কথা বলে তারা যাবে। তারা যায় রাতে দেখা করতে। মুক্তি বাহিনীরা পাকিস্তানী ক্যাম্পের উপর হামলা চালাবে। তাদের পুরো অপারেশন টা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে দেখা হয় শফিক ভাই আর কাদেরের সাথে। তারাও ওই অপারেশনে থাকবে।
সকালে অরু আপা অনেক রাগারাগি করে ইবুর সাথে।
ইবু তখন শফিকের দেওয়া চিঠি দিয়ে বলে আমি কোথায় ছিলাম বলতে পারবো না আমি দেশের নামে কসম খাইছি। অপারেশনটি করা হয় রাতে। শফিকের সাথে ছিল রাশেদ আর ইবু আর বাকি সবাই সামনে দিয়ে অ্যাটাক করবে। সেই অপারেশনে ধরা পরে যায় শফিক তবে ক্যাম্পের অনেক টা উড়িয়ে দিয়ে আসে মুক্তিযোদ্ধারা। শফিকে ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হবে ওই সময় রাশেদ বুদ্ধি করে বলে মুক্তিযোদ্ধারা আসছে। তখন সব পাকিস্তানী সবদল নিয়ে সেখানের কাজ বন্ধ রেখে শফিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
রাশেদ ভাবতে থাকে কিভাবে শফিকে বাচানোঁ যায়। সেখান থেকে কীভাবে রক্ষা করবে তারা ৪ বন্ধু মিলে অনেক পরিকল্পনা করে বের করে নিয়ে আসে শফিকে। পাকিস্তানী ৭ জন নিহত হয় সেখানে। শফিক আবার যোদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়।এইদিকে শফিকের কাছে বন্দুকের গুলি কেউ পৌছাতে পারছে না এটা না হলে সব ঠিক মতো হবে না। তারা চার বন্ধু মিলে পৌছে দেই সেই বন্দুকের গুলি। শফিক খুব অবাক হয় এটা দেখে।
ইবুর বাবা গ্রামে চলে যেতে চায়। ইবুকে নিয়ে চলে যায় তার বাবা। এখানে ধরা পড়ে যায় রাশেদ চোখ বেঁধে নদীর ধারে নিয়ে যায়। তাকে বলতে বলা হয়, জয় পাকিস্তান কিন্তু সে বলে
জয় বাংলা,জয় বাংলা।
মেরে ফেলা হয় রাশেদ কে।
আর সেই বাবা যে নিজের গল্প বলছিলো সে ছিলো ইবু রকিবুল হাসান। আর তার ছেলের নাম রাখে রাশেদ।শেষে দেখানো হয় ইবু তার কল্পনায় রাশেদের সাথে কথা বলছে।
মূল কথা -
এখানে দেখানো হয় সেই যোদ্ধের সময় সাধারণ মানুষের কি অবস্থা ছিলো দেখানো হয় রাশেদের অসাধারন সাহসিকতা।
আমার মতামত -
আমি যতবার এই মুভিটি দেখছি তত বার চোখ ভিজে এসেছে। আপনি এতোটা মনোযোগ দিয়ে দেখবেন তাদের অসাধারন অভিনয় দেখার মতো ছিলো। শেষের দিকটা আসলেই মেনে নেওয়ার মতো ছিলো না। তবে এটা দেখার পর আপনার ভিতরে আপনি দেশ প্রেম লক্ষ্য করতে পারবেন। বাংলার যে ইতিহাস এটা তে অনেকটা দেখানো হয়েছে। আপনি এটা দেখার পর নিজেকে বাঙালি বলতে একটু হলেও গৌরব বোধ করবেন।
রেটিং -
IMDb rating - 8.3/10
IMDb rating এ বাংলা মুভি তে টপ ১৩ নাম্বারে আছেন।
মুভি লিংক -
এখানে ব্যবহার করা সকল ছবি স্কিনশট নেওয়া। আশা করি ভালো লাগবে।