
ছোটো বেলার গল্প:-
আসসালামু আলাইকুম।
আজকে আমি আমার ছোটোবেলার কিছু গল্প শেয়ার করবো।এখন যদিও গল্পগুলো মনে পড়লে আগের মতো অনুভূতিটা অনুভব হয়না।তবুও গল্পগুলো ছোটোবেলায় খুব মজার বা কষ্টের গল্প ছিলো।মজার ব্যাপার হলো ছোটোবেলায় যা ভেবে বা যেসব ঘটনার জন্য কষ্ট পেতাম তা এখন মনে পড়লে খুব হাসি আসে।কিন্তু কথায় আছে Old is gold.যদিও ব্যাপারটা খুব একটা মিথ্যে নয়।ছোটোবেলা আসলেই সুন্দর ছিলো।

চিকেন পক্স:-
চিকেন পক্স নিয়ে আমার ছোটোবেলার খুব মজার একটা গল্প আছে।যা এখন মনে পড়লেই হাসি আসে যদিও ব্যাপারটা তখন খুবই দুঃখের ছিলো।চিকেন পক্স হলো সারা শরীরে গুটি বের হয় এবং তা খুব চুল্কায়,খুবই কষ্টদায়ক একটা ব্যাপার।

আপুদের চিকেন পক্স:-
যাই হোক,তো গল্পটি হলো।আমরা হলাম চার ভাইবোন।আমি সবার ছোটো।একদিন স্কুল এ যাওয়ার সময় শুনলাম বড় আপুর স্কুলে যেতে হবেনা ওর নাকি চিকেন পক্স হয়েছে।তো আমি স্কুল থেকে এসে দেখলাম আসলেই ব্যাপার খুব কষ্টের আপুর পুরা শরীরে গুটি গুটি মতন উঠেছে এবং খুব চুল্কাচ্ছে।দেখেই বমি চলে আসার জোগাড়।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আপু হু হু করে কান্না শুরু করে দিল।ব্যাপারটা যখন আব্বুর চোখে পড়লো তখন আব্বু আপুকে খুব আদর করলো,খেলনা কিনার জন্য টাকা দিলো।আম্মু দোকান থেকে ডাব আনালো তার পানি কিছু তাকে খাওয়ানো হতো আর কিছু দিয়ে মুখ ধুইয়ে দিতো।ছোটোমামা ছোটোকাকা ওকে দেখতে আসলো এবং সাথে অনেক ফলফ্রুট ও আনলো।ছোটোমামা ওর জন্য একটা ঠাকুমার ঝুলি গল্পের বই ও আনলো।সবাই খুব ব্যস্ত হয়ে পড়লো ওকে নিয়ে।ভাত খেতে না চাইলে আম্মু বিভিন্ন নাস্তা বানিয়েও খাওয়াতো।আপু এমন কয়েকদিন রোগে ভুগে সুস্থ হয়ে উঠলো তারপর হলো মেঝো আপুর এবং ছোটো আপুর।চিকেন পক্স রোগটি যে ছোঁয়াছে তখন টের পেলাম।আমার ছোটো আপু আবার একদম রোগ হইতে পারতোনা অল্পতেই বাড়ি মাথায় করতো।যথারীতি তাদের নিয়েও বাড়ির মানুষ ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লো।কেও ডাব আনছে, কেও তা কেটে খাওয়াচ্ছে কেও বাতাস করছে কেও গল্পের বই কিনে আনছে এমনকি আপুদের নতুন খেলনা ও কিনে দিলো যাতে কান্না না করে।মানে সবাই হুলুস্থুল ফেলে দিয়েছিলো।

আমার যখন চিকেন পক্স:-
আমার শরীরে হয়তো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু বেশিই।আমার হলো আরো কিছুদিন পরে।আমি তো মহা খুশি যদিও খুব চুল্কাচ্ছিলো সারা শরীর। তাও খুশি চেপে রেখে মুখ শুকনো করে আম্মুকে বললাম,
"আম্মু আমার তো চিকেন পক্স হইছে".
আম্মু বললো "হইছে নাকি? দেখি"
আমি বললাম "হ্যা আম্মু দেখো।"
তো দেখে আম্মু বললো আচ্ছা যা শুয়ে থাক।তারপর আমার রুমে যে ই আসছিলো তাকেই বলতে লাগলাম "জানো!আমার না চিকেন পক্স হইছে দেখো"।কেও আমার কথা ভালো করে পাত্তা দিলো বলে মনেই হলোনা।ডাব ও কিনলো না আপুদের জন্য আনা ছিলো তা থেকে খেতে দিলো।তা খেয়েই আমি শুয়ে শুয়ে শরীর চুল্কাতাম।পাশের রুমে আপুরা তাদের পাওয়া টাকা, গল্পের বই ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করতো, মজা করতো আর আমি শুনতাম।আস্তে আস্তে আমিও সুস্থ হয়ে গেলাম।তখন ভাবতাম এই শয়তান অসুখটা শেষে আমার ই হতে হলো।প্রথমে হলে কি হইতো?অসুখ ও যে আমার সাথে এমন দাগাবাজি করবে তা ভাবতে পারিনি।এরপরে তো আমি মনে মনে খুব মন খারাপ করে ছিলাম অনেকদিন।আর ভাবতে লাগলাম কিভাবে কোনো অসুখ আনা যায় শরীরে। একদিন অনেকক্ষণ গোসল করলাম ভাবলাম জ্বর আসবে তাও আসলোনা।তারপর একদিন দেখলাম স্কুলে বড়বড় ভাইয়ারা বলাবলি করছিলো যে কাচাঁ রসুন বগলের নিচে রাখলে নাকি জ্বর আসে।তো আমিও ভাবলাম এটাই কাজ এ লাগাই কারণ তাতে স্কুলেও যেতে হবে না আর জ্বর ও আসবেনা।তখন আবার স্কুলে যাওয়া খুব বিরক্ত লাগতো আমার কাছে।

কাচাঁ রসুন:-
*তার পরের দিন ই আমি আস্তে করে রান্নার ঘর থেকে এক কোয়া রসুন নিয়ে আসলাম আর সকাল হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগলাম।বললে হয়তো বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু ওই রাতে আমার একটুও ঘুম হয়নি এতোটা এক্সাইটমেন্ট কাজ করছিলো নিজের মধ্যে।তো যেই ফজরের আজান দিলো সাথে সাথে রসুনের কোয়াটা বগলের নিচে দিয়ে ঘুমের ভান ধরে শুয়ে থাকলাম। মনে হচ্ছিলো সময় যেনো যাচ্ছেইনা আর বারবার অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছিলাম কেনো আম্মু ডাকতে আসেনা এখনো।তো যথারীতি আম্মু ডাকতে আসলো আমি একটু গলা নরম করে বললাম, "আম্মু আমার মনে হয় জ্বর আসছে খারাপ লাগতেছে। "তো আম্মু আব্বুকে পাঠালো থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মাপতে আব্বু ও মেপে দেখলো জ্বর নেই। তো আমি চিন্তায় বললাম "আমি দেখি জ্বর", কারণ তখন আমি নতুন নতুন থার্মোমিটার এ জ্বর কিভাবে দেখে তা শিখেছিলাম।তো যেই আমি থার্মোমিটার নিতে গেলাম সেই সাথে সাথেই রসুন টা আব্বুর সামনে মাটিতে পড়ে গেলো।আর আব্বু রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো কিচ্ছুক্ষণ তারপর কি হলো তা তো আর বলার অপেক্ষা থাকেনা।এমন মারা মারলো যে সেদিন আর স্কুলে যেতে হয়নি, কারণ আমার আব্বু মিথ্যা কথা খুব বেশি অপছন্দ করে।তারপর থেকে আর ইচ্ছাকৃত শরীরে অসুখ আনার সাহস করিনি।কারণ ওই চিন্তা করলেই আব্বুর মারের কথা মনে পড়ে যায়। *

ছোটো বেলার গল্পের স্মৃতিচারণ:-
যদিও এখন খুব হাসি পায় ভাবলেই আর কারো চিকেন পক্স হয়েছে শুনলেই এই ঘটনা মনে পড়ে আর আমি মনে মনে হাসি।কারণ এক চিকেন পক্স এর কারণে শেষ পর্যন্ত মার ও খেলাম।ছোটোবেলায় আসলেই সব কিছু বিষ্ময়কর ছিলো।কিন্তু সুন্দর ছিলো,ভালো ছিলো। এখনো আব্বু ওই ঘটনা বলে হাসে আর আমিও ভাবিও ছোটোবেলায় কিসব চিন্তাটাই না করতাম।
https://twitter.com/Sahadat46306951/status/1383047166172749824?s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
You have been upvoted by @toufiq777 A Country Representative, we are voting with the Steemit Community Curator @steemcurator07 account to support the newcomers coming into steemit.
Follow @steemitblog for the latest update. You can also check out this link which provides the name of the existing community according to specialized subject
There are also various contest is going on in steemit, You just have to enter in this link and then you will find all the contest link, I hope you will also get some interest,
For general information about what is happening on Steem follow @steemitblog.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Hmmm vai
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জীবনে যার একবার হয় তার আর কখনও হয় না।আর যার এখনো এসব হয় না সে বলতে পারবে না এসবের কষ্ট কি জিনিস।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
hm
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit