The Diary Game:: 23/08/2020

in hive-138339 •  4 years ago 

আর কত ঘুমাবি, নবাবজাদা, জমিদার। মনে হয় তোর বাপ জমিদারি রেখে গেছে?

জলদি করে উঠ। কোথায় গিয়ে ঠেকেছে বেলা সেদিক কোন খেয়াল আছে? এটা যেন আমার মত বেকার অলস মার্কা যুবকদের সকালের অভ্যর্থনা। এসব শুনেই তো সকাল শুরু হয় আমাদের মত আলসে দ্যা গ্রেট মার্কা যুবকদের।

যাদের কাছে প্রিয়তমার থেকে ঘুমটাই বেশি প্রিয়। এই ঘুমের কারনে কতবার প্রিয়তমার মনটা ভেঙ্গেছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। দুনিয়া ওলট পালট হয়ে যাক, লুঙ্গি মাথায় উঠুক, ঘুমের সাথে কোন কম্প্রমাইজ হবে না। ঘুম ছাড়া কিছুই বুঝে না তাদের কাছে সকালে ঘুম থেকে উঠা আর হিমালয় সৃঙ্গ জয় করা একই কথা।

যাক কষ্ট করে ঘুম থেকে উঠেই আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজের চোখ দুটো খুঁজে পাওয়া মুস্কিল হয়ে যায়। ভুরু দুটো টান টান করে খুব কষ্ট করে হয়তো দেখা যায়। আর এভাবেই রুম থেকে বার হয়ে ফ্রেশ হয়ে নাস্থা খেয়ে ভোদৌড় দিতে হয়ে।

20200825_120801.jpg

এটা তো আমার প্রতিদিনের কাজ। সেন্টারে আসো ক্লাস নাও। ইদানিং মেজাজটা ঠিক থাকছে না অল্পতেই খারাপ হচ্ছে। রাগ যেন নাকের ডগায় এসে বসে আছে। বাসার যাচ্ছি রিক্সায় আসতেই দেখি লোকজনের ভীর। প্রথমে দুর থেকে দেখে ভাবছিলাম হয়তো প্রাপ্ত বয়স্কদের খেলনার ডাক্তার বিভিন্ন তেল নিয়ে বসেছে। কাছে আসতেই বুঝতে পারলাম কাহিনী থোরা আলাগ হ্যায়। এক বয়স্ক রিক্সা ওয়ালাকে কালা চশমা পড়া এক দামড়া গাঁধা বোকা ঝোকা দিচ্ছে। এই সব দেখলে মাথা আর ঠিক থাকে না। রাগে দাঁত কিরমির করছিলাম ভাবছিলাম চোয়ালের দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে গুরো করে ওর মুখে ফু মেরে দেই। পরক্ষনে মন বলে উঠলো, ইসবার কে লিয়ে ছোর দো।

20200821_143456.jpg

কিন্তু রাগ কোন মতেই কমছে না। বাসায় চলে আসলাম। রান্না বাঁধা এখনো হয় নিই। মেজাজ আরো খারাপ। রাগটিকে কাবু কিভাবে করবো। শুনেছি কোন কিছু ভাঙ্গলে নাকি রাগ নিয়ন্ত্রণ আসে। ওমনি ওমনি হাতের কাছে বউয়ের চুরি ছিল। সব গুলো দিলাম আছাড়। যা শালা, এটা কি করলাম। এখন দ্রুত আমাকেই পরিস্কার করতে হবে এইসব। রাগ তো আরো বেড়ে গেলো। বিছানায় শুয়ে টিভির রিমোট নিয়ে একটার পর একটা চ্যানেল পাল্টাচ্ছি। ওমনি বাংলা সিনেমার টান টান উত্তেজনা চোখে পরলো। অনেকদিন ধরে দেখি নিই কোন বাংলা মুভি। যাক ভিলেন মিশা সওদাগর আর নায়ক মারুফ মুখোমুখি। মারুফ মিশা কে উদ্দেশ্য করে কুত্তার বাচ্চা বলে চিৎকার করতেই দেখলাম না রাগটা নিমিষেই গলে গেলো। বুঝলাম জোরে চিৎকার করে কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দিলে রাগটা দমে যায়। এবার একটু শান্তি। অন্য আরেকটি চ্যানেল পাল্টাতেই সামনে এসে হাজির এক মন্ত্রী। তিনি বলছেন বাংলাদেশে আর করোনার কোন ভ্যাকসিন দরকার নেই। করোনা এমনিতেই চলে যাবে। মারুফের সেই ওষুধটা ব্যবহারের উত্তম সময়। এতেই চলে আসলো বউ খাবার নিয়ে।

আজ সারাদিন অদ্ভুত সময় যাচ্ছে। ফেবুকে ঢুকতেই যশোরের ড্রিম গার্লের নিজের গায়ে হলুদের শোডাউনের ছবিতে ছয় লাভ। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মন্তব্য। রীতিমত মাতম শুরু করেছি চরিত্র হরনে লিপ্ত হয়ে পরেছি। এক একজন খাঁটি মুসলমান হয়ে ফতোয়া দেওয়া শুরু করেছি। ঐ মেয়ের বক্ষদেশীয় ছবি ক্রপ করে অনেক বড় শুশীল সাজছি। আমরা অন্যের মেয়েকে আড় চোখে লোভাতুর দৃষ্টিতে দেখে সাইজ নিয়ে গবেষনা করি। পরের মেয়ের সাইকেল চালানো দেখলে চরিত্রের দিকে আঙ্গুল তুলে নিজের বেলায় আধুনিকতার পরিচয় দিই। আমরা মহিলা নেতৃত্বে চলি মাইক হাতে নেত্রীর বন্দনা করতে করতে মুখের ফেনা তুলি কিন্তু নিজের মেয়ে কে নেতৃত্ব দিতে দেই না। আমরাই ধর্মকে নিয়ে খেলি। ধর্মের দোহাই দিয়ে বেরাই। নারীকে পন্য বানায় ফেলছি। নিজের মেয়েকেও সূক্ষ্মভাবে অন্যের মজার পাত্র বানিয়ে ফেলেছি। আমরা নিজেরাই কি চাই সেটা জানি না। সকাল হতে সন্ধ্যা পরিচর্যা করেই যাচ্ছি।

হায়রে এক হ-য-ব-র-ল বাঙ্গাল জাতী। আধুনিকতার বিচিত্রতা রয়েছে সমাজ ও শ্রেনীভেদে। এই হাস্যকর সমাজ নির্মান করে গেছেন আমাদের পূর্বজনেরা। আমরা বাহিরের দিক দিয়ে কিছুটা খোলস পাল্টিয়ে আধুনিকতার ভেক ধরেছি। কিন্তু বাস্তবে সেই চরিত্রই রয়ে গেছে।

যাই হোক আজকের দিনটা এভাবেই গেলো। বাসায় ইলেক্ট্রিসিয়ান কাজ করছিল। তাদের কাজ সহযোগীতা করলাম। তাদের কাজ সারতে সারতে রাত দশ টা বেজে গেছে। তারপর শুয়ে শুয়ে পোস্ট লিখতে বসলাম।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

গুড ওয়ার্ক