
source
ফোবিয়া শব্দটি এসেছে গ্রীক ভাষা থেকে। এর অর্থ ভয় পাওয়া বা ভীত হওয়া। অযথা কোনো বিষয়ে ভয়, যেমন, পোকামাকড়ের ভয়, উঁচু স্থানে উঠতে ভয়, লোক সমাজে আসার ভয়, বক্তৃতা দিতে ভয় পাওয়া ইত্যাদি উপসর্গের মাধ্যমে এই রোগ প্রকাশ পায়। এধরনের অহেতুক ভয়কেই ডাক্তারী ভাষায় ফোবিয়া বলে। ফোবিয়া এমনই এক জীবন অতিষ্টকারী মানসিক রোগ যা আক্রান্ত ব্যক্তির জীবনকে করে তুলতে পারে দুর্বিসহ। ফোবিয়া বা অহেতুক ভীতি নানান বিষয়ে হতে পারে। যেমন কেউ উঁচুতে উঠতে গেলেই ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে, কেউ মাকড়সা দেখেই ভয়ে চিৎপটাং, কেউ আবার সোসাল ফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অচেনা মানুষের সামনে বেশ অশ্বস্তি বোধ করে।অহেতুক ভয় এই ভীতি বা ফোবিয়া মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্মকে ব্যাহত করে। এখানে আমি এমনই কিছু ফোবিয়ার সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিতে চেষ্টা করবঃ

source
Socialphobia (সামাজিকতাভীতি) : সোসাল ফোবিয়ায় আক্রান্ত মানুষ অচেনা মানুষের সামনে বেম অশ্বস্তি বোধ করে।
Acrophobia (অ্যাক্রোফোবিয়া, উচ্চতাভীতি): এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা উচু স্থানকে ভয় পায়। উচু যায়গায় গেলে তাদের মাথা ঘোরাসহ অন্য উপসর্গ দেখা দেয়। বহুতল বাড়ি বা উঁচু জায়গা থেকে নিচের দিকে তাকালে ভয়ে আতঙ্কিত হওয়া। এরা বিমানে এমনকি ফুট ওভার বৃজের ওপরও উঠতেও ভয় পায়।
Hydrophobia(হাইড্রোফোবিয়া) : পানি দেখলে বা পানিতে নামলে বা জলযানে চড়লে ভয়ে আতঙ্কিত হওয়াকে হাইড্রোফোবিয়া বলে।
Ablutophobia (অ্যাবলুটোফোবিয়া, গোসলভীতি): অ্যাবলুটোফোবিয়ায় আক্রান্তরা মানুষেরা গোসল করতে ভয় পায়। হয়ত গোসল করার সময় পূর্বের কোন খারাপ অভিঙ্গতা এর জন্য দায়ী। কিন্তু গোসল ছাড়া একজন মানুষের জীবন কতটা দুর্বিসহ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
Agorophopia (অ্যাগরোফোবিয়া, উন্মুক্তস্থানভীতি): খোলা স্থান যেমন বিস্তৃন মাঠে থাকতে ভয় পায়। আবদ্ধ বা জনাকীর্ণ স্থানে থাকতে পছন্দ করে।
Ailurophobia (এলুরোফোবিয়া): বিড়াল ভীতি। বিড়াল দেখলে অবস্থা খারাপ।
Cynophobia(সায়নোফোবিয়া): কুকুর ভীতি। এরা কুকুর দেখলে ভয়াবহ রকমের প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।
Hippophobia(হিপ্পোফোবিয়া): ঘোড়া ভীতি। ঘোড়ায় চড়তে এমন কি ঘোড়া দেখলেও এরা ভয় পায়। অবশ্য আমাদের দেশে ঘোড়ায় চড়ার কোনো ব্যাপার নেই বললেই চলে।
Claustrophobia (ক্লাস্টোফোবিয়া, বদ্ধস্থানভীতি): এই ফোবিয়া আক্রান্ত লোক আবদ্ধ স্থানে থাকতে ভয় পায়।
10 Nephophobia (নেফোফোবিয়া, মেঘভীতি): নেফোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি মেঘের ভয়ে আতঙ্কিত থাকে সারাক্ষণ। এমনকি তারা আকাশের দিকে তাকাতেও ভয় পায়।Caligynophobia(ক্যালিগাইনোফোবিয়া :সুন্দরী নারী ভীতি): এটা বেশ চমকপ্রদ। কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে যে সুন্দরী মেয়ে দেখলে তারা ভয় পায়।
Erotophobia (ইরোটোফোবিয়া : ভালবাসা ওযৌনতায় ভীতি): প্রেম-ভালবাসা ও যৌন জীবনে ভীতি একজন মানুষের জীবনে কতটা নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে তা বলাই বাহুল্য।
Spectrophobia (স্পেকট্রোফোবিয়ায়, আয়নাভীতি): স্পেকট্রোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন আয়নার ভয়ে দূর্দশাগ্রস্থ হয়ে ওঠে। আক্রান্ত ব্যক্তি আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বকে ভীষণ ভয় পায়। এই ফোবিয়ার ভিকটিম নিজের ব্যক্তিসত্ত্বা নিয়ে আতঙ্কে থাকে অথবা নিজের ত্বকের দাগ সহ্য করতে পারেনা। অনেকের আবার ভয়ঙ্কর কোন অতীত ঘটনা থেকেও আয়না-ভীতি তৈরি হয়।
Nyctophobia (নিকটোফোবিয়া : অন্ধকার/রাত ভীতি): অন্ধকার, রাত কিংবা অন্ধকার গুহা কুঠুরী ইত্যাদিক ভয় পাওয়া।
Anthophobia (অ্যান্থোফোবিয়া, ফুলভীতি): এই ধরনের ফোবিয়ায় আক্রান্ত মানুষ ফুল দেখলে বা ফুলের আশে পাশে থাকলে একধরণের মানসিক চাপ অনুভব করে। অনেকে আবার পুরো ফুলটাকে ভয় না পেয়ে ফুলের বিশেষ কোনো অংশ যেমন পাপড়ি বা রেণু ভয় পায়। কত অদ্ভূত ঘটনাই না ঘটে এই জগতে!
Hedonophobia (হেডোনোফোবিয়া, আনন্দভীতি): শুনতে অদ্ভুত শোনালেও এটাই সত্যি, পৃথিবীর কিছু মানুষের আনন্দভীতি আছে। এ ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি উপভোগ্য মূহূর্তগুলোকে ভয় পায়। তারা আনন্দ পেতে ও প্রকাশ করতে ভয় পায়। এ ধরণের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সমাজের সবার থেকে আলাদা থাকতে পছন্দ করে।
Heliophobia (হেলিওফোবিয়া,সূর্যের আলোভীতি): হেলিওফোবিয়া হলো সূর্য-রশ্মি ভীতি। এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত হলে ব্যক্তি সূর্য-রশ্মিকে ভয় পায়। স্কিন ক্যান্সার বা রোদে পুড়ে যাওয়ার ভয় থেকে হেলওফোবিয়ার সৃষ্টি হয়। দিনের বেলা তারা ঘরের ভেতরে রুম অন্ধকার করে থাকে এবং কখনোই সূর্যের আলোতে বাইরে বের হয় না। সামান্য সূর্য-রশ্মি ঘরে ঢুকলেও তারা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পরে। এটা খুবই ভয়াবহ ধরনের ফোবিয়া।
Thalassophobia(থ্যালাসোফোবিয়া: সমুদ্র ভীতি) সমুদ্র দেখলে বা সমুদ্র যানে চড়তে এদের বড় ভয়।
Tomophobia(টমোফোবিয়া/তের সংখ্যা ভীতি): এটা পাশ্চাত্যে দেখা যায়।পাশ্চাত্যে ১৩ কে অপয়া সংখ্যা মনে করা হয়। এই অপয়া ১৩ সংখ্যা নিয়ে অহেতুক অতিরিক্ত ভীতিকে টমোফোবিয়া বলা হয়।
Arachnophobia(এরাখনোফোবিয়া: মাকড়সা ভীতি ): মাকড়সা দেখে তীব্র ভয়ে আতঙ্কিত হওয়া।
Agoraphobia (এগোরাফোবিয়া: ভিড় দেখলে ভয় পাওয়া) : জনাকীর্ণ রাস্তায় ভিড়ে চাপাচাপি দেখে আতঙ্কিত হওয়াই এই ফোবিয়ার লক্ষণ ।
Trypanophobia (ট্রাইপ্যানফোবিয়া: সুই ভীতি) : ইঞ্জেকশনের সুই বা সিরিঞ্জ দেখেই ভয়ে আতঙ্কিত হওয়া।
Agyrophobia (এজিরোফোবিয়া: রাস্তা পারাপারে ভীতি) : রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে এরা খুবই ভয়ে ভয়ে থাকে । স্বাভাবিক সতর্কতার বাইরে অতিরিক্ত ভীতি।
Anablephobia (literally the fear of looking up: অ্যানাবলফোবিয়ায়): এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি উপরের দিকে তাকাতে ভয় পায়। আকাশ, বাড়ির ছাদ, উচু গাছ, এমনকি উঁচু বিল্ডিংয়ের দিকে তাকাতেও ভয় পায় তারা।
Trypophobia : এটি সবচেয়ে ভয়ংকর ফোবিয়া এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত মানুষেরা নিজের এবং অন্যের শরীরে অগনিত গর্ত দেখতে পাই। এবং হঠাৎই প্যানিক হয়ে যায় এবং অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকে এবং একসময় যন্ত্রণা সহ্য করতে না পারে নিজের শরীরে আঘাত করতে তাকে। সময়মতো কাউন্সিলিং না করলে এই ফোবিয়ায় মৃত্যর কারন হতে পারে (আত্মহত্যা).
চিকিৎসা: প্রায় সকল ফোবিয়ার চিকিৎসা সাইকোথেরাপি,বিহেভিয়ারাল থেরাপি, এক্সপোজার থেরাপি উল্লেখযোগ্য যা একজন সাইক্রাইট্রিস্ট প্রদান করে থাকেন তাছাড়া মেডিকেশন হিসেবে Beta Blockers এবং Sedatives দেওয়া হয়ে থাকে।
This post is chosen for a recommendation for booming curation support today. Continue creating quality content here at Steeming Community.
Thank You.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
!zen 30
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
the post has been upvoted successfully! Remaining bandwidth: 160%
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit