গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক কাঠের হামান দিস্তা

in hive-157557 •  last year 

আমি @maksudakawsar
ভেরিফাইড মেম্বার- " STEEM FOR TRADITIONN"

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালো আছেন। নতুন কমিউনিটিতে এসে নতুন সবাইকে পেয়ে বেশ ভালোই লাগছে। তাই তো আজ আবার চলে আসলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের সবার বেশ ভালো লাগবে।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক কাঠের হামান দিস্তা

image.png

সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জের ঐতিহ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সমস্ত বাংলায়।গ্রাম বাংলার অনেক ঐতিহ্য কিন্ত হারাতে বসেছে। তবে কিছু কিছু ঐতিহ্য আজকাল আবার ফিরে ফিরে আসছে। কারন মানুষ যতই আধুনিক হোক না কেন। নিজের শিকড়ের কাছে তো তাকে ফিরে আসতেই হবে। আজ আমি যে বিষয়টি নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি তা হলো একটি হামিনদিস্তা নিয়ে। আমি বিশ্বাস করি আপনারা সবাই অবশ্যই গ্রাম বাংলার এই জিনিসটির সাথে পরিচিত।

image.png

image.png

আমার মা যতদিন বেচেঁ ছিলেন তারও কিন্তু একটি হামিনদিস্তা ছিল। আর সেটা ছিল লোহার হামিন দস্তা। মা সেটা তো পান বানিয়ে খেত। তবে মা মারা যাওয়ার পর আর সেটার কোন খোঁজ নেই। আজ কাল বাজারে বা মেলায় কিন্তু কাঠের তৈরি প্রচুর হামিনিদিস্তা দেখা যায়। যদিও কাঠের তৈরি একটি মাঝারি সাইজের হামিনদিস্তার দাম বর্তমানে ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত। অবশ্য আমি আমার ঘরের জন্য একটি কিনে নিয়েছিলাম মেলা হতে। তাই দাম পড়েছিল ১৮০ টাকা। খারাপ হয়নি মনে হয়। কারন জিনিস টি আমার বেশ কাজে লাগে।

image.png

image.png

কোন এক সময়ে এই হামিনদিস্তা কে ব্যবহার করা হতো ঔষুধ বানানোর কাজে। কিন্তু আজ এই জিনিসটির নানাবিধ ব্যবহার দেখা যায়। কেউ ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় মসলা গুড়া করতে, কেউ বা ব্যবহার করে পান বানাতে। আবার কেউ বা ব্যবহার করে ঔষুধ গুড়া করতে। তবে এর আরও অনেক ব্যবহার আছে। আর কাঠের তৈরি করা বলে জিনিসটি কিন্তু বেশ সহজেই কাজে লাগানো যায়। আজকাল শহরের অনেক ক্রোকারিজের দোকানে খোঁজ করলেও এই হামিনদিস্তা পাওয়া যায়।

image.png

image.png

বিভিন্ন কাঠ ব্যবহার করে এই হামিন দিস্তা বানানো হয়। একজন কাঠমিস্ত্রি তার দক্ষতা দিয়ে কাঠ ‍কেটে এবং খোদাই করে এসব হামিন দিস্তা গুলো বানিয়ে থাকে। আর কাঠের তৈরি হামিনদিস্তার প্রচলন কিন্তু অনেক বেশী। কারন এটি যেমন বহন করতে সহজ, তেমন করে এই কাঠের তৈরি হামিন দিস্তা দিয়ে আবার কাজ করাও সহজ। তবে বড় বড় হামিন দিস্তা গুলো কিন্তু চাল, গম ভাঙ্গানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।

image.png

image.png

আমার কাছে মনে হয় বর্তমানে বাংলার মানুষগুলোর কাছে কাঠের তৈরি জিনিস গুলোর প্রচলন বেড়েই যাচেছ। আর হামিনদিস্তা হলো তাদের মধ্যে একটি। দিন যতই যাচ্ছে কাঠের তৈরি এই হামিন দিস্তার ব্যবহার বেড়েই চলছে। আর বাংলার ঐতিহ্য বহনকারী কাঠের তৈরি হামিনদিস্তা গুলো কিন্তু দেখতে বেশ দারুন। খুব সহজেই পিশে গুড়া করা যায় যে কোন মসলা। আশা করি বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক এই কাঠের তৈরি হামিন দিস্তার ব্যবহার আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে। আর বাংলার ঐতিহ্য ও তার অধিকার নিয়ে দাঁড়াতে পারবে।

image.png

image.png

আশা করি আমার আজকের পোস্টটি আপনাদের কাছে বেশ ভালো লেগেছে। কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের ব্লগটি ? আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের আশায় রইলাম। সবাই ভালো থাকবেন এবং সাবধানে থাকবেন।

পোস্টের বিবরন
ডিভাইসVIVO-Y22S
ফটোগ্রাফার@maksudakawsar
স্থানখিঁলগাও, ঢাকা, বাংলাদেশ

image.png

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঠিকই বলেছেন গ্রাম বাংলার অনেক ঐতিহ্য এখন হারাতে বসেছে।হামান দিস্তা নিয়ে বিস্তারিত অনেক সুন্দর লিখেছেন।আপনি দামও উল্লেখ করেছেন।হামান দিস্তার ব্যবহার সুন্দর করে বিস্তারিত উপস্থাপন করেছেন।ঠিকই বলেছেন কাঠের তৈরি জিনিস গুলোর প্রচলন বেড়েই যাচ্ছে।আপনার ছবি গুলো সুন্দর হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে

সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

কাঠের তৈরি হামান দিস্তা সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন। এরকম হামান দিস্তা গুলো আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। তবে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল উপকরণ আসার কারণে এমন হামান দিস্তা গুলো আজকে হারাতে বসেছে। আগের যুগে মানুষরা এরকম হামান দিস্তা গুলোতে পান সুপারি পিষে খেতো। তবে এখন আর এমন দৃশ্য কোথাও দেখা যায় না। আপনি কি অসংখ্য ধন্যবাদ আপু ঐতিহ্যবাহী একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

হামান দিস্তা একটি বেশ কাজের জিনিস।এগুলো দিয়ে অনেক কাজ করা যায়। এগুলো দিয়ে মসলা হালকা করে বেটে নেওয়া যায়। আমি বাড়িতে এটির সাহায্যে আদা বেটে নিয়ে চা তৈরি করে খাই। আপনি বেশ চমৎকার একটি ঐতিহ্যবাহী জিনিস নিয়ে আলোচনা করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এত চমৎকার একটি বিষয় তুলে ধরার জন্য।

ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

  ·  last year (edited)

হামানদিস্তা নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন আপু। এটি একটি গ্রামীণ ঐতিহ্য। এটা গদিয়ে গ্রামের মানুষরা মসলাসহ বিভিন্ন রকমের প্রয়োজনীয় সামগ্রী গুড়া করে। সিদল বানানোর জন্য কচু এই হামানদিস্তাতেই গুড়া করা হয়। আমাদের বাড়িতেও এইরকম একটি হামানদিস্তা আছে।

ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

আপনি টুইটারে পোস্ট শেয়ার করেননি।দ্রুত টুইটারে পোস্টটা শেয়ার করে, লিংক কমেন্ট করেন।

ঠিক করে দিয়েছি ভাইয়া।

DescriptionInformation
plagiarism-free
#steemexclusive
Ai Content - free

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.

ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি হামানদিস্তা নিয়ে দারুণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। হামানদিস্তা প্রায় সকলের বাড়িতেই পাওয়া যাবে।কারণ এগুলো মসলা গুড়ো করা সহ বিভিন্ন কাজে লাগে। আপনার মায়ের মত আমার দাদু ও পিতলের একটি হামানদিস্তায় পান পিষে খান। আপনি ঠিকই বলেছেন বড় হামান দিস্তা গুলোতে ধান থেকে চাল বের করা হতো। কিন্তু কাঠের ছোট হামানদিস্তাগুলো বেশি প্রয়োজনে পড়ে না।এগুলোতে পান ভালোভাবে পিষে খাওয়াই যায় না। আমরা বাড়িতে শুধু চা করার সময় আদা থেতলে নেওয়ার জন্য এই হামানদিস্তা টি ব্যবহার করি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

অনেক প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশে হামানদিস্তা ব্যবহার হয়ে আসছে। আমাদের বাসায় একটি লোহার হামানদিস্তা রয়েছে। বর্তমানে কিছু স্থানে কাঠের তৈরি হামানদিস্তা ব্যবহার করতে দেখতে পাওয়ায় যায়। কাঠের বানানো এই হামানদিস্তা গুলোর দাম লোগার বানানো হামানদিস্তা থেকে অনেক কম হয়ে থাকে। আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন।

গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

কাঠের তৈরি হামানদিস্তা নিয়ে দারুণ উপস্থাপন করছেন আপু, এই হামানদিস্তা গ্রাম অঞ্চলের ঐতিহ্য, গ্রামের মানুষ মসলা বাটার জন্য এই হামানদিস্তা ব্যবহার করে।, আগে মানুষ লোহার হামানদিস্তা ব্যবহার করতো এখন তেমন একটা দেখা যায় না। আপনি অনেক সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করছেন আপু, ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।

হামান দিস্তা সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন আপনি। আসলে আপনি ঠিক বলেছেন আমাদের মাঝ থেকে অনেক ঐতিহ্য এখন ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিশেষ করে এইসব আগের জিনিসগুলো তো এখন আর বেশি তা দেখা যায় না। এগুলো আগে অনেক কাজে ব্যবহার হতো বিশেষ করে মসলা গুড়া করার জন্য এগুলো বেশি ব্যবহার করা হতো এবং অনেকেই এগুলোতে মসলা গুড়া করে অনেকগুলো করে ফ্রিজে রাখে এবং ধীরে ধীরে রান্নার কাজে ব্যবহার করে। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সকলের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

আমাদের এই দিকে এটাকে হামু বলে থাকে কিন্তু ঢাকায় এটাকে ছিছুনি বলতে শুনেছিলাম যে মহিলাটা রান্না করে আমাদের। আমাদের বাড়িতে একটা লোহার আছে হামানদিস্তা সেখানে আমার মা মসলা ও সেই জাতীয় কিছু পিষে থাকে। আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামঞ্চল কিংবা শহরাঞ্চলে ঐতিহ্যে ভরপুর। প্রাচীনকাল থেকেই এখন পর্যন্ত যে জিনিসপত্র গুলো ব্যবহৃত হয়েছে বা বিলুপ্ত প্রায় সেগুলো ঐতিহ্য।হামানদিস্তা আমাদের দেশের প্রতিটি গ্রামেই কমবেশি সকলের বাড়িতে রয়েছে। হামানদিস্তার ব্যবহার সাধারণত মসলাগুঁড়া চূর্ণবিচূর্ণ করা এবং এতে করে পান বেঁটে ও খাওয়া যায়। হামানদিস্তা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন।

ধন্যবাদ ভাইয়া উৎসাহ মূলক একটি মন্তব্য করার জন্য।

গ্রাম বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ভেতর এই হামানদিস্তা হলো অন্যতম। আমাদের দেশের এটি রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়।সাধারণত মসলা বাটার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও অনেকেই পান থেতলানোর জন্য এটি ব্যবহার করে থাকে। তবে এগুলো বর্তমানে বিলুপ্তির পথে তেমন আর দেখা যায় না। দারুন একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন আপনি ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

চমৎকার একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আপু। বিভিন্ন ধরনের মসলা বাটার জন্য এই হামানদিস্তার ব্যবহার অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। তবে আমাদের এলাকাতে লোহার তৈরি হামানদিস্তা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। কাঠের তৈরি হামানদিস্তা গুলো দেখতে বেশ চমৎকার হয়। কাঠের তৈরি এই হামানদিস্তা নিয়ে চমৎকার লিখেছেন আপু। ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর হয়েছে। এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ আপু সুন্দর এবং গঠন মূলক একটি পোস্ট করে পাশে থাকার জন্য।