আমার জিবনের তিনটি সেরা এবং তিনটি খারাপ মুহুর্ত।

in hive-170554 •  2 years ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম, আমি টুটুল বিশ্বাস, আমি একজন নতৃুন সদেস্য এই প্লাটফর্ম এর। আসা করি সবাই ভালো আছেন, আলহামদুলিল্লাহ আমি ও আপনাদের দোয়াতে ভালো আছি। আজকে এই কনটেস্ট এ যোগ দান করতে পেরে আমি খুব আনন্দিত এবং তার থেকে বেশি আনন্দিত একারনে যে জিবনে ঘটে যাওয়া কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেড়ে।

IMG_20230124_085632~2.jpg

জিবনে ঘটে যাওয়া ৩টি খারাপ মুহুর্ত।

নাম্বার ১।

IMG-20230130-WA0000.jpg
জিবনে একজন আর একজনকে পছন্দ করবে এটাই স্বাভাবিক। ঠিক তেমনই আমি ও ক্লাস ৯ এ থাকা কালিন একটা মেয়েকে খুব পছন্দ করে ফেলি। অনেক বার চেষ্টা করেছি প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য। পারিনি আমার আর তার আর্থিক অবস্থার দিকে তাকিয়ে, তারা অনেক বড়লোক আর আমরা গরিব। তার পর চিন্তা করলাম প্রেম না করতে পারি বন্ধুত তো করতে পারি। অনার্স আসার পর বন্ধু সুলোভ -আচরণ করতে থাকি, তবে মনে মনে ইচ্ছা ছিল জিবনে ভালো কিছু করতে পারলে বিয়ার প্রস্তাব দিব। তবে সেটি আর হলো না নিয়তি সঙ্গ দিল না। আমার এক বন্ধুর বাসায় যাওয়ার সময় রাত তখন ৮টা দেখলাম তার বাসার সব যায়গাতে বাতি দিয়া সাজানো, ফোন দিলাম ধরলো না। পাশে একজনকে জিজ্ঞেস করাতে বল্লো হ্যা মিম এর বিয়া কাল আজ গায়ে হলুদ, ওই সময় মনে হচ্ছিল আমার পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে গিয়েছে, খুব একা হয়ে গেলাম। অনেক কথা আছে যা লিখে প্রকাশ করা যায় না ঠিক তেমনই। আমার জীবনে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা

নাম্বার ২।

IMG_20221227_105003.jpg
আমি তখন এস এস সি পাশ করি, বাবা মা সবাই চাইতো আমি যেন জিবনে ভালো কিছু করি, ঠিক তেমনই বাবা মায়ে কথা মতো ডিপ্লোমা করতে চলে গেলাম, শরিয়াত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, মেস ভারা করলাম, সব কিছু ভালোই চলছিল, ২ মাস পরে হটাৎ এক বড় ভাই আমার রুমে ঢুকে গেল পরিচয় জানতে বল্ল। সে নাকি বাড়ি মালিক এর ভাইপো।কিছু সময় পড়ে আমার এক সহপাঠী এসে বল্ল টুটুল একটু বাইরে থেকে ঘুরে আয়। আমি জানতে চাইলাম কেন। সে আমাকে ধমোক দিয়ে বল্লো যা বলছি তাই কর।পরে জানতে পরলাম তারা আমার রুমে ঢুকে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে, তার পর এমন হলো তারা সপ্তাহে ৩-৪ দিন আমার রুমে ঢুকে এই সব পান করে। আমি নামাজ আদায় করে থাকি সেখানে এগুলো মেনে নিতে পারলাম না। অন্য মেস এ উঠতে চাইলাম কিন্তুু অন্য মেস গুলোতে বড় ভাইদের অমানবিক রেআ্যগ, বাসায় সব কিছু খুলে বল্লাম। বাসা থেকে আমাকে বল্ল চলে আসো, আমি ও চলে আসলাম, আর হলো না বাবা মায়ের ছোট্ট সপ্ন পুরোন করা আমার পক্ষে। নিজেকে সান্তনা দিয়ে এক বছর গেপ দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক এ পড়তে হলো।

নাম্বার ৩।

IMG_20230115_213518~2.jpg
গরিব মানুষের খারাপ মুহুর্তের শেষ নাই, পৃথিবি এক দিক আর দারিদ্র্যতা এক দিকে, খুব টানাটানি এর সংসার, দিন শেষে ভবিষ্যতের জন্য কোন সঞ্চয় রাখতে খুব কষ্ট করতে হয়। বাবা সামান্য শ্রমিক, দৈনিক কাজ ও পায় না। মা গৃিহিনি, আমি কিছু টিউশনি করে নিজের খরচ চালাই, বেশ কিছু দিন আগে যখন করোনা ভাইরাস এর জন্য মানুষ পগোল প্রায়, ঠিক তখন আব্বু কাজ পাচ্ছে না আর আামাকে টিউশনের বাসা থেকে বলা হলো, আর আসতে হবে না। ২ দিন পর বাসার বাজার শেষ হয়ে গেল, পাশের বাসা থেকে ধার করে ১ দিন চলা হলো কিন্তুু তার পর চিন্তায় পরে গেলাম কিভাবে চলবো সবাই কি খাবো আমরা? সবাই ১দিন না খেয়য় থাকা হলো,তারপর আব্বুর পরিচিত এক দোকানদার সব সুনে, ধারে ১০ দিন চলতে পারবো এমন ভাবে চাউল দিল। আর আমার মাটির ব্যাংকে থাকা ১২০ টাকা দিয়ে বাজার থেকে আনা ২কেজি আলু, ১কেজি লবন,২৫০ গ্রাম কাচা মরিচ, ২৫০ গ্রাম পিয়াজ কিনে আনি আমি, আর বাসায় থাকা অল্প পরিমান সরিষা তেল। আম্মু ভাত রান্না করলো, বাসায় দেখি ছোট বোন কান্না করছে আম্মু ও কান্না করছে, আব্বু তাদের সন্তনা দিচ্ছে, আমি জিজ্ঞেসা করলাম কি হয়েছে বল্লো। ছোট বোন সুধু আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খাবে না। কি আর করার অনেক বুঝতে বুঝতে খেল কিন্তুু রাতে ও তো তাই তখন.? আব্বু অনেক চেষ্টা করল কিছু করার পারলো না। আমারা টানা ৪ দিন আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খাই, তবে আল্লাহ রহমতে ৪র্থ দিন আব্বু কাজ পায়, মাশাল্লাহ তারপর আর এমন দিন দেখতে হয় নাই। তবে দুয়া করি ওই দোকানদার কে যে চাউল দিয়ে সাহায্যে করেছে।

জিবনে ৩টি সেরা মুহুর্ত।

নাম্বার ১।

FB_IMG_1675093538642~4.jpg
মানুষকে উপকার করার মতো সেরা মুহুর্ত আমার মনে হয় আর হয় না, আলহামদুলিল্লাহ এই পর্যন্ত ১২ বার রক্ত দান করেছি । যখন ৫ বার রক্ত দান করতে গেছিলাম তখন একটা বাচ্চাকে রক্ত দান করতে গেছি, বাচ্চার বাবা হটাৎ করে আমাকে জরিয়ে ধরলো র্নাস এসে রক্ত নিলো এবং বল্লো এই ব্যক্তি ১০-১২ বছর পর বাচ্চার বাবা হয়েছে আর বাচ্চার ২ বছর পুরতি বাচ্চার নিউমোনিয়া ও জটিল রোগ দেখা দিয়েছে যা একান্ত কাম্য নয়। পড়ে আমার খুব আনন্দ লাগছিল যে আমি আজ একটা বাবার মুখে হাশি ফুটিয়ে তুলতে পারছি। তারপর বাচ্চার কিছু দিন খোঁজ খবর নিলাম, মাশাল্লাহ কিছু দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে গিয়েছে।

নাম্বার ২।

জীবনে চলার পথে অনেক কিছুর সাথে আপনা আপনি দেখা হয়ে যায়, ঠিক তেমনি আমি, আমার কিছু বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় দেখতে পেলাম একটা কুকুর কি যেন খাবার খাচ্ছে কিছু সময় পর কুকুরটি হটাৎ সত্বদ্ধ হয়ে দারিয়ে রইলো আমার এক বন্ধুর একটু সন্দেহ হলো আমাদের বল্লো চলতো দেখি কি হয়েছে, গেলাম। দেখলাম কুকুরটির সাথে বৈদুতিক খাম্বার আর্থ লাইনের স্পর্শ হয়েছে । আমি তারাতারি আমরা প্যান্টের বেল্ট দিয়ে কুকুরটির ঘারে পেচিয়ে টান দিলাম, কুকুর চুপচাপ মাটিতে সুয়ে থাকলো, এক বন্ধু কুকুরটির বুকে ২টা চাপ দেওয়াতে কুকুরটি উঠে দৌড়ে চলে গেল। জিবনে ভালো কিছু করতে পারলে সত্যি এত আনন্দ লাগে তা বলার মতো না।

নাম্বার ৩।

IMG_20230106_130101.jpg
আমরা অনেকেই জানি ঈদ মানে আনন্দ /খুশি। ২০২০ সালের ঈদুল ফিতরের দিন। ফাকা ময়দানে নামাজ শেষে বাসায় এসে দেখাতে পাই আমার মামাতো ভাই বোন এবং আমার চাচাতো বোন আমাদের বাসাতে, সাথে তাদের বাচ্চা গুলো আমার বোনের সাথে খেলা করছে । আমাকে দেখা মাত্র সবাই মামা, চাচ্চু বলে আমাকে জরিয়ে ধরলো এবং বল্লো তাদের ঈদের সালামি দিতে, যেই কথা সেই কাজ দিতে হলো, বললাম আমার সালামি কই? সবাই এসে আমাকে একটা করে চুমু দিয়ে বলে এইটা সালামি।৷। তখন মনে হচ্ছিল এমন মুহুর্ত আর হয় না

IMG_20230124_110358.jpg
এই কনটেস্টের আয়োজকে অংশ ধন্যবাদ। জিবনের কিছু কথা এই কনটেস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাতে পেরে। এবং আমার জন্য সবাই দুয়া করবেন।

আমন্ত্রণ @Enamul17, @mdkamran99, @mostofajaman

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনেক সুন্দর লিখেছেন। আমি আপনার খারাপ দিন গুলো পড়েছি এটি আসলেই আমাকে বাক্ রুদ্ধ করেছে। আপনার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল। 🙋‍♂️🫂

জীবনের অনেক কঠিন দিক আপনাকে দেখতে হয়েছে। আল্লাহ্‌ আপনাকে ও আপনার পরিবারকে হেফাযত করুন।

Thank you for sharing posts, improve the quality of your posts and stay original.
Review |

DescriptionInformation
Plagiarism Free
#steemexlusive
Bot Free
Verified User
Support #burnsteem25
Voting CSI0
Period31/01/23
Transfer to Vesting0 STEEM
Cash Out
0
ResultClub nc

ভাল - খারাপ নিয়েই মানুষের জীবন। যত কষ্টই হোক সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আপনার জন্য দোয়া রইল আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন। আমিন।

প্রিয় বন্ধু, আমি সত্যিই তোমার খারাপ দিনগুলির জন্য দুঃখিত। আমি নিজেও একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে এবং আমিও ভালো করে জানি দারিদ্রতা কতটা কষ্টদায়ক জিনিস যা আমি অনেক কাছ থেকে দেখেছি। তবে ভাল দিকটি হলো তুমি মানুষের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মানুষের পাশে থেকে সাহায্য করো যেটি সত্যিই প্রশংসাযোগ্য। আমি তোমার জন্য দোয়া করি তুমি যেন সাফল্য অর্জন করতে পারো।