আধুনিকতা জীবনে অনেক কিছু এনে দিয়েছে কিন্তু অনেক আনন্দ আজ হারিয়ে ও গেছে।

in hive-176627 •  3 years ago  (edited)

IMG-20210520-WA0024.jpg

বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আজ রবিবার বাঙালিদের ভুরিভোজের অন্যতম দিন। যদিও ভোজনরসিক বাঙালি নির্দিষ্ট কোনো দিন এর ধার ধারে না বিশেষ করে খাবার ব্যাপারে।
তবে আজ আমি পেট পুজোর কথা বলতে আসিনি, অন্য একটি বিষয় নিয়ে হাজির হয়েছি।
আজ টেলিভিশন এর পর্দাতে ৯০দশকের গান শুনছিলাম, এবং সেগুলো শুনতে শুনতে মনে হলো, আধুনিকতা জীবনে অনেক কিছু এনে যেমন দিয়েছে তেমনি অনেক আনন্দ আজ হারিয়ে ও গেছে আমাদের জীবন থেকে।

যে সময় এর কথা বলছি সেই সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা ছিল না আজকের মত, কাজেই চিঠির আদান প্রদান তখন ও অব্যাহত।

হয়তো শুনলে মনে হবে স্বাধীনতার আগের কথা বলছি, না সেটা নয়। ৯০ এর দশকেও মোবাইল আমাদের হাত এ আসে নি।

নিজের হাতের লেখা, কাছের মানুষকে পাঠানোর একটা অন্য অনুভুতি ছিল।

তারপর স্কুল , কলেজ পালিয়ে সিনেমা দেখা, যদিও আমি স্কুল পালিয়ে সিনেমা কোনোদিন দেখতে যাই নি, কিন্তু প্রতি বৃহষ্পতিবার একটাই ক্লাস থাকতো কলেজ এ কাজেই কলকাতার নাগের বাজার এ মৃণালিনী হল বাধা ছিল বৃহস্পতিবারের জন্য।

না শুধু একটা হল নয় অন্য আরো দুটো হল ছিল, জয়া এবং মিনি জয়া।
আমার সঙ্গী অবশ্য একটি বান্ধবী ছিল, পিয়ালী।
গার্লস কলেজে পড়েছি কাজেই ওই প্রেম ভালোবাসার সুযোগ হয় নি।

যাক এখন সবাই আমাজন প্রাইম, হইচই, নেটফ্লিক্স এই দেখে নিচ্ছে সিনেমা; কাজেই আজ সেই আমেজটি ও হাওয়া।

IMG-20210516-WA0025.jpg

তখন অনলাইন অর্ডার বলে কিছু ছিল না, কাজেই মার্কেটিং করাটাও একটা আনন্দের বিষয় ছিল, এবং সেটা করতে গিয়ে কলকাতার সব নামি দামি খাবার এর থেকেও রাস্তার খাবার (ফুচকা, ঘুগনি, কবিরাজি কাটলেট, মোগলাই আরো কত কিছু) প্রাধান্য পেতো।

আজ যতই পিৎজা অনলাইন অর্ডার করি না কেনো, আসল খাবার এর আমেজটা আজ আর সেই ভাবে পাই না।

আজ সুবিধা বেড়েছে, কিন্তু আনন্দ কমে গেছে ততোধিক।

স্কুল এ থাকার সময় , এক্ এক্ জন, এক একটা জিনিস বাড়ি থেকে এনে আলুকাবলী মাখা টিফিন পিরিয়ডে কেউ আজকাল ভাবতেই হয়তো পারবে না।

আজকাল ছেলে মেয়েদের কাছে এগুলো সময় নষ্ট।
আনন্দের সঠিক পরিভাষাটি এই যুগের ছেলে মেয়েদের জানা আছে কিনা আমি সে বিষয় সন্দিহান।

ফুচকা খেতে গিয়ে ফাও খাবার মজাটা আজকাল কেই বা বুঝবে! আমাদের কাছে সেটাই ছিল মজার।

আচ্ছা আমি যদি জানতে চাই, কটি ফোন নম্বর আপনার মুখস্ত?

বড়জোর দুটো কি তিনটে নম্বর বলতে পারবেন কারণ নাম দিয়ে মোবাইল এ সব সেভ করা তাহলে মনে রাখবো কেনো! কি উত্তর টা সেটাই আসবে নিশ্চই!
😃😃

ধরুন মোবাইলটা রাস্তায় চুরি হয়ে গেলো, বা কোনো কারণে পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেলো কোনো কারণে, তাহলে সেই খবরটা পৌঁছবেন কি করে বাড়িতে?

কেনো বললাম কারণ সুবিধা পেতে পেতে আজ আমরা অথর্ব হয়ে গেছি। আজ আর আমাদের ব্রেইন কে সেই ভাবে আমরা কাজে লাগাই না।

কিন্তু যখন মোবাইল ছিল না, কেবল ল্যান্ডলাইন ছিল, প্রত্যেকেই প্রায় একটা ছোট্ট নোটবুক এ জরুরি নম্বর গুলো নথিভুক্ত করে রাখতেন।

আজ অত বেশি কেউ পরিশ্রম করে না কারণ গুগল বাবাজীবন আমাদের জীবনে এসে গেছে।

IMG_20210516_220603.jpg

আমি আধুনিক প্রযুক্তির বিরুদ্ধে নই, কিন্তু যখন দেখি সেই পযুক্তির আড়ালে মানব সমাজ অথর্ব হয়ে পড়ছে এবং জীবন সঠিক ভাবে বাঁচার আনন্দ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করে রেখেছে; তখনই খারাপ লাগাটা কাজ করে।

যাক এই ছিল আজ আমার উপলব্ধি, আজ চলি, আবার আসবো আপনাদের মাঝে নিজের কথা ভাগ করে নিতে।

ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন সবাই এই কামনা করে আজ বিদায় নিলাম।🙏

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

@sonu98 ভীষণ সুন্দর ভাবে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। সত্যিই তাই এই প্রযুক্তির যুগে আমাদের জীবনের ছোট ছোট খুশী গুলো হারিয়ে গেছে।আলুকাবলির কথায় আমারও মনে পড়ল হারিয়ে যাওয়া স্কুলের দিনগুলো। ফোন নম্বর তো মাঝে মাঝে নিজেরটা ও মনে থাকে না আমার 😂। ভালো থাকবেন।

নিজেকে দয়া করে ভুলে যাবেন না @sampabiswas 🤭😂🤣

একদম বাস্তববাদী লেখনী। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকেও ধন্যবাদ আমার লেখা ভালো লাগার জন্য @simaroy

It is not a matter of just getting it in life. A lot is lost from life with time. it's natural.

Jibone jemon onk kisu peyesi tamon onk kisu hariyesi jibon theke. Thanks for ahare your opinion.