বাংলায় তারার মেলা ডায়েরির পাতা থেকে - ৪ “ঢোপকল”

in hive-185999 •  2 years ago  (edited)

বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? ভালো আছেন আশা করি। চলুন আজ আমরা শুরু করবো বাংলায় তারার মেলা ব্লগে আমার ধারাবাহিক কবিতার আসর ডায়েরির পাতা থেকে নামক ধারাবাহিকটি। আজ থাকছে “ন্যায়ের পথে আহবান” কবিতাটি।

end-of-days-7332253_1920.jpg

Source

ঢোপকল

আমি যখন রাজশাহী আসতাম, তখন এগুলো দেখতাম, একদিন আমার জেঠুকে জিজ্ঞেস করলাম কি এগুলো? জেঠু তখন বললো, ঐতিহ্যের সাক্ষী এগুলো রাজশাহী মহানগরীর ঢোপকল। ঢোপকল- রাজশাহীর ইতিহাস ও ঐতিহ্য। জড়িয়ে আছে সভ্যতাও। অতীতে প্রমত্ত পদ্মা পাড়ের প্রাচীন নগরী রাজশাহীতে বিশুদ্ধ পানির অভাব ছিল।

নোংরা পানি খেয়ে ছড়িয়ে পড়ত মহামারী কলেরা আরও নানা ধরনের পানিবাহিত রোগে। অনেক মানুষ মারা যেত। এক সময় মহানগরীর মাটি রুক্ষ হয়, তখন হা-পিত্যেশ করতে হয় সুপেয় পানির জন্য। ১৯৩৪ সালে তৎকালীন পৌরসভা চেয়ারম্যান রায় ডি এন দাশগুপ্ত রাজশাহীতে সুপেয় পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেন। এগিয়ে আসে রাজশাহী এ্যাসোসিয়েশন। সে সময় পুঠিয়ার মহারানী ছিলেন হেমন্ত কুমারী। তাঁর কথা অনেক শুনেছি, কারণ আমাদের প্রাইমারি স্কুল তার প্রতিষ্ঠা করা, সেই গল্প আরেক দিন হবে। পৌরসভা ও এ্যাসোসিয়েশন মহারানী হেমন্ত কুমারীসহ দানশীল ব্যক্তিবর্গকে সহযোগিতার অনুরোধ জানান। এই ছবিটি সাহেব বাজার আর পদ্মার তীরের মাঝামাঝি, একদিন সকালে হাঁটতে গিয়ে তুলেছিলাম।

এখন যতগুলো ঢোপকল চোখে পড়ে তার মধ্যে ফুদকি পাড়ায় যেটা আছে সেটাই মানুষের ব্যবহার করতে দেখি। বাকি গুলো তেমন ভাবে দেখি না। মহারানী হেমন্ত কুমারী নিজে ৬৫ হাজার টাকা অনুদান দেন। জেলা বোর্ডের দানের জমিতে স্থাপিত হয় ‘হেমন্ত কুমারী ওয়াটার ওয়ার্কস’। এরপর শুরু হয় স্থাপন কাজ। পানি সরবরাহের পাইপগুলো হয় কাস্ট আয়রনে তৈরি, বাকি দ্রব্যগুলো পিতলের। আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বানিয়ে আনা হয় ব্রিটেন (ইংল্যান্ড) থেকে। ১৯৩৭ সালের আগস্টে মিনিস্ট্রি অব ক্যালকাটার অধীনে রাজশাহী ওয়াটার ওয়ার্কস নামে পানি সরবরাহ ও বিশুদ্ধকরণ কেন্দ্র নির্মিত হয়। সে সময়ে ব্যয় হয় প্রায় আড়াই লাখ টাকা। সেদিনের পৌরসভার প্রতিটি মোড়সহ একশ’ পয়েন্টে বসানো হয় হেমন্ত কুমারী ওয়াটার ওয়ার্কস। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন হাতে গোনা কয়েকটি আছে, সিটি কর্পোরেশন এর নগরায়ন হচ্ছে প্রতিনিয়ত যার জন্য এগুলো এখন বিলীন হয়ে গেছে আর যেগুলো আছে সেগুলো এখন দর্শনীয় বস্তু হয়ে গেছে। মানুষের ব্যবহার আর দেখা যায় না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

কবিতার বিষয়টা অনেক সুন্দর, আমাদের সবাইকে ভুল পথ থেকে সরে এসে ন্যায় ও সঠিক পথে আসার আহ্বান আছে কবিতাটিতে, খুব ভাল।

তৌহিদ ভাই শুভকামনা রইল

খুব সুন্দর কবিতা।
বাস্তবতা কে তুলে ধরেছে কবিতাটি।

তোমার অনুপ্রেরণা আমার পথ চলতে সাহস যোগায়। পাশে থেকো