পকেটমার#
পরেরদিন আবারও বাসা থেকে অফিসের (কাওরানবাজার) উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। সাভার থেকে ছেড়ে আসা বাসটা অন্যান্য দিনের ন্যায় সরাসরি কাওরানবাজার না গিয়ে সবাইকে আসাদগেটে এসে নামিয়ে দিল। কি আর করা, আড়ংয়ের সামনে নেমে আরেকটা বাসে উঠে অফিসে যেতে হবে। এটা ভাবতে ভাবতেই সামনে একটা ৮ নং বাস এসে দাঁড়ালো, কোন কিছু না ভেবেই তাতে উঠে গেলাম। প্রচন্ড ভিড় (সকালে অফিস টাইমে সব বাসেই তখন এমন ভিড় থাকতো), ভেতরে ঠাসাঠাসি অবস্থা। কোনরকমে গেট পেরিয়ে ভেতরে উঠে উপরের রড ধরে দাঁড়িয়েছি। ততক্ষণে বাস ফার্মগেটের আগে খামারবাড়ি চলে গেছে। এখানে এসে আমার খেয়াল হলো পকেটে গতকাল নতুন কেনা ফোনের কথা। কারণ এতদিন বাটন ফোন ইউজ করতাম, পকেটেই থাকতো কখনো চুরির চিন্তা মাথাতেই আসেনি। সাথে সাথে পকেটে হাত দিয়ে দেখি ফোনটা নাই। মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল, মাত্রই গতকাল শখ করে এতগুলো টাকা দিয়ে কিনলাম। একটা দিনও ভালমতো ইউজ করতে পারলামনা, আজই হারিয়ে ফেললাম? নিজের উপর খুবই রাগ ও অভিমান হলো কেন তাড়াহুড়া করে এই বাসটাতে উঠতে গেলাম।
ভিড়ের মধ্যে যে নিয়েছে সে ততক্ষণে বাস থেকে নেমেও গেছে, আর তারা একজন থাকেনা, কয়েকজন মিলে এই কাজটা করে। বাসের হেলপার ও কয়েকজন যাত্রী খুব চেষ্টা করলো, কয়েকজনকে চেকও করলো কিন্তু হারানো ফোন কি আর পাওয়া যায়? মন খারাপ করে কাওরানবাজারে অফিসের সামনে নামলাম। কি করি ভাবতে ভাবতে অফিসে না উঠে সোজা আবারও বসুন্ধরা সিটির দিকে রওনা দিলাম। মানিব্যাগে ব্যাংকের কার্ড ছিল, ব্যাংকে কিছু টাকাও ছিল। আবারও সদ্য হারানো ঐ ফোনটাই কিনবো বলে মনস্থির করলাম। সেই অনুযায়ী বুথ থেকে টাকা তুললাম। সোজা মার্কেটে ঢুকে গতকালের সেই একই দোকানে গিয়ে ঐ সেইম ফোনটাই আবারও কিনে নিয়ে আসলাম। মার্কেটের নিচ তলায় হারানো দুটো সিমও রিপ্লেস করে নিলাম। অবশেষে নতুন ফোন হাতে নিয়েই অফিসে ঢুকলাম। কলিগদের সাথে গতকাল থেকে আজকের এই যাবতীয় ঘটনা শেয়ার করলাম, শুনে তারা তো থ' হয়ে গেল। এক ফোনের জন্য আমি দু-দুবারে ২৬,০০০/- টাকা খরচ করলাম।
এটা ছিল আমার প্রথম ফোন হারানোর ঘটনা। এরপর ২০১৭ সালে এসে আরেকটু বেশি বাজেটে ২৫,০০০/- টাকা দিয়ে শাওমি কোম্পানীর 'এম.আই-এ১' মডেলের ফোনটা কিনেছিলাম। এটাও খুব ভাল একটা ফোন ছিল। মোটামুটি হাই কনফিগারেশন ফোন ছিল বলা যায়। ৪ জিবি র্যাম, ৬৪ জিবি রম, পেছনে দু-দুটো ১২ মেগা পিক্সেল ক্যামেরা, সামনে ৫ মেগা পিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা ছিল। ফোনটা মোট ৩ বছরের মত চালাতে পেরেছিলাম। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে রংপুর যেতে গিয়ে বাসে ডাকাতির শিকার হয়ে শখের ফোনটা হারাই। তারপর আরও একটা ফোন কিনেছি যেটা এখনো বর্তমানে চালাচ্ছি। আমার বর্তমান ফোনটা হচ্ছে 'স্যামসাং গ্যালাক্সি-এ৩১' মডেলের। এটাও অনেক ভাল একটা ফোন, এটাও দাম নিয়েছিল ২৫,০০০/- টাকা। এতে রয়েছে ৬ জিবি র্যাম, ১২৮ জিবি রম, পেছনে চারটা ক্যামেরা, মেইন ক্যামেরা ৪৮ মেগা পিক্সেলের, সামনে ২০ মেগা পিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা ইত্যাদি। বর্তমানে এই ফোনটি দিয়েই আমার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
মোটামুটি এই ছিল আমার জীবনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের মোবাইল ফােনের আর্বিভাব ও সেগুলোর নষ্ট বা হারানোর গল্প, যা গত দুই পর্বে আপনারা জানতে পারলেন। তবে এর মাঝে আরও দুয়েকটা ফোন ইউজ করেছি, সেগুলো ছিল টেম্পোরারি এবং গিফট হিসাবে পাওয়া। আমাদের প্রায় সবার জীবনেই এমন ছোট-বড় গল্প রয়েছে জানি। আশাকরি পুরো ফিচারটা আপনারা পড়েছেন এবং নিজের জীবনের সাথে রিলেট করতে পারছেন।
লেখাটা অনেক ভাল হয়েছে, ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তৌহিদ ভাই ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন সবসময়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কবিতাটি খুবই সুন্দর। অসাধারণ প্রত্যেকটা লাইন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাগনে। ভালো থেকো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
লেখাটা খুব অসাধারণ হয়েছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দাদা ধন্যবাদ আপনাকে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit