পুরনো বাসার এক আনন্দঘন মুহূর্ত।
আসসালামালাইকুম,আজ বাচ্চাদের নিয়ে ঘুড়তে গিয়েছিলাম পুরনো বাসায় । অনেকদিন যাবত বাচ্চারা বলছিল ওরা পুরনো বাসায় যাবে । শৈশবের স্মৃতি, ওরা এখনো অবশ্য শৈশবেই আছে আর শৈশবে বেড়ে ওঠা শহরেই এখনো আছে । শুধু বদলেছে বাসাটা ।যে বাসাতে ওরা জন্মেছিল, জন্ম থেকে বড় হয়েছিল ।
পুরনো বাসার ড্রইংরুমে জানালার পাশে বসে আছে আমার মেয়ে রূপন্তী।
ছোট্ট একটি সবুজ মহল্লা। নীল আকাশের নিচে নীল রঙের একটি পাঁচ তলা বাড়ি। সেই বাড়ির দোতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতাম আমরা। ২০১৪ সালের মে মাস থেকে ২০২২ সালে অক্টোবর পর্যন্ত ।
পুরনো বাসায় আনন্দঘন মুহূর্তে বাচ্চারা।
অনেক স্মৃতি রয়েছে আমাদের সেই বাসায় । ঢাকা থেকে ২০১৪ সালের মে মাসে এ বাসায় এসে উঠি। তখন আমাদের শুধুমাত্র একটি বাচ্চা ।আমার মেয়ের নাম রূপন্তী।ওর বয়স তখন সবে তিন বছর । ওকে নিয়ে ঢাকা থেকে চলে আসলাম মুন্সীগঞ্জের এই ছোট্ট বাসায় । যদিও অনেক ঝামেলা হয়েছিল এ বাসায় আসতে । বাবা মার খুব মন খারাপ হয়েছিল, ছোট ভাই গুলো খুব মন খারাপ করেছে। তার পরেও নিজের চাকরির সুবিধার জন্য চলে আসলাম মুন্সীগঞ্জে, অফিসের কাছাকাছি একটি বাসায় ।
ছোট্ট বাসায় এসে শুরু করলাম আমাদের ছোট্ট সংসার ।
পুরনো বাসার গেট দিয়ে বেরিয়ে স্কুলে যাচ্ছে রূপন্তী।
মিশু, আমি আর রুপন্তী। তখন থেকেই বাসার প্রতিটি ঘটনার সাথে আমাদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এই বাসার মেইন গেট, কেচি গেট,
এই সিড়িটি ছিলো আমার বাচ্চাদের খুব পছন্দের।
এ বাসার টাইলস করা সিঁড়ি, এসএস করা সিড়ির হাতল, আমাদের বাসার মেইন দরজা, দুটো বারান্দা, চারিদিকে সবুজের মাঝে খোলা আকাশ। তখন আশেপাশে তেমন কোন বিল্ডিং হয়নি তাই যখন আমাদের ড্রইংরুমের মেঝেতে বসতাম তখন মনে হতো যেন খোলা আকাশের নিচেই বসে আছি ।পূর্ণিমাতে যখন আকাশে বড় চাঁদ উঠতো তখন আমার মেয়ে রুপন্তী, আমার স্ত্রী মিশু আর আমি মিলে সেই চাঁদের সৌন্দর্য দেখতাম উপভোগ করতাম কি যে ভালো লাগতো !
আমার মেয়ে রূপন্তী এই বাসায় যেয়ে খেলতে পছন্দ করতো।
যাইহোক সেই ভালো লাগার বিষয় নিয়ে না হয় আরেকদিন লেখা যাবে । আমরা এখনো আর বাসাতে নেই । গত অক্টোবরে বাসা পরিবর্তন করে ওর পাশে আরেকটা মহল্লায়, একটু বড় এপার্টমেন্টে চলে এসেছি। কিন্তু ওই বাসার স্মৃতি প্রায়ই আমার বাচ্চাদের মনে পড়ে। এই বাসার কথা ওরা প্রায় বলে । তাই আমার দুরন্ত শৈশবের দুই ছেলেকে নিয়ে ওই পুরনো বাসাতে আজ ঘুরতে এসেছি ।
সকাল থেকে প্রস্তুতি জারিফ এবং তারিফ পুরনো বাসাতে যাবে। জারিফ সাথে ওর সাইকেল নিয়ে যাবে । দুপুরে জুম্মার নামাজ পড়ে এসে খাওয়া-দাওয়ার পর একটু রেস্ট নিচ্ছিলাম ।কখন চারটা বেজে দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে টেরি পেলাম না । ঘুমের মাঝেই আলতো শব্দ শুনতে পেলাম । “বাবা উঠো, আমরা পুরনো বাসায় যাব”।জেগে দেখি আমার ছেলে জারিফ আমাকে ডাকছে । আমি গড়িমসি করছিলাম ,কিন্তু জারিফ আমাকে বলল “বাবা আমরা আসরের নামাজ পড়ে যাব, মাগরিবের নামাজটা ওখানকার মসজিদে পড়বো তারপর চলে আসবো” । আমিও ভাবলাম ঠিক আছে প্রস্তাবটা ভালই । দ্রুত তৈরি হয়ে নিলাম । জারিফ ও তারিখে নিয়ে রওনা হলাম ।জারিফ সাথে করে ওর সাইকেলটি নিয়ে নিল । লিফ্ট দিয়ে সাইকেলটি সহ নিচে নেমে গেলাম তিনজনে মিলে । জারিফ সাইকেল নিজে চালিয়ে চলতে শুরু করলো । তারিফ আর আমি হাটা শুরু করলাম মেইন রাস্তা ধরে । হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম সেই বাড়িতে।
তাওফির সাথে জারিফ ও তারিফ।
বাড়ির সামনে গিয়ে মেইন গেটে পৌছেই বাচ্চারা খুশি হয়ে গেলো।
পুরনো বাসার কেয়ারটেকার জিল্লুর সাথে জারিফ ও তারিফ।
কেয়ারটেকার জিল্লুর বাসায় ঢোকার কেচেগেট খুলে দিলো। এরমধ্যেই অবশ্য আমাদের পাশের ফ্লাটের প্রতিবেশি হক সাহেবের ছেলে তাওফির সাথে জারিফ ও তারিফের দেখা হয়ে গেলো।
তাওফির সাথে তারিফ, দূরে দাড়িয়ে জারিফ।
গেট খুলে উপরে যেতেই তিনজনে আনন্দিত ও খুশি হল। ওরা শুরুতেই চলে গেলো পাঁচ তলার উপরে থাকা ছাদে।
পুরনো বাসার ছাদের উপরে ওরা তিনজন।
ওরা ওদের পুরনো স্মৃতির জায়গাগুলো ঘুরে দেখলো। আবার আগের মত খেলায় মেতে উঠলো।
ওদের খেলাধুলার কয়েকটি মুহুর্ত।
পাঁচ তলার ছাদের উপরে আরেকটি অর্ধেক ছাদ রয়েয়েছে। তার উপর রয়েছে পানির টংকি।
বিদায়ের আগে সকল শিশুদের সাথে জারিফ ও তারিফ।
ওরা সেখানে উঠে গেলো। ওখানে ওরা ছবি তুললো। জারিফ সেখানে সূর্যকে ধরতে চাইলো।
সূর্যকে ধরার মধ্য দিয়ে যেন ভবিষ্যতকেই হাতের মুঠোয় আনছেন জারিফ।
মনে হচ্ছিলো এই শৈশবে বসেই দূর ভবিষ্যতকে নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসার চেষ্টা। ওদের তিনজনের চোখে মুখে শৈশবের দিপ্তি দেখলাম, আমার খুব ভাল লেগেছে।
সূর্য ডোবার মত করে শৈশবের স্মৃতিতে আরেকটি পালক যুক্ত করে শেষ হল ওদের মজার আরেকটি দিন।
লেখার শিরোনামের মত জারিফ ও তারিফকে ওদের শৈশব থাকতেই শৈশবের স্মৃতি ফিরিয়ে দিতে পেরে আমিও আনন্দিত। এ শৈশব একসময় রূপ নেবে তারুন্যে, যৌবনে। পিছনে পরে থাকবে এই না বলা স্মৃতিগুলো।
সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি। ভাল থাকবেন সবাই।
Photo: My iphone6
Thanks for reading this post.
Stay well.
@rezaulfdm
Some verified links are given below:
My achievement 1 link: https://steemit.com/hive-172186/@rezaulfdm/achievment-1-my-first-post-rezaulfdm
My achievement 2 link: https://steemit.com/hive-172186/@rezaulfdm/achievement-2-necessary-knowledge-of-basic-security-on-the-steemit-platform-rezaulfdm
Beauty of Creativity verified Link: https://steemit.com/hive-144064/@rezaulfdm/rezaulfdm
@rezaulfdm,
Welcome to the New Destination Community.
Your post is very nice. I have read and I like your writing very much.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit